প্রকৌশলী এ কে এম এ হামিদ কারিগরি ও সমাজ চিন্তাবিদ। জন্ম ১০ জুন ১৯৪৮ ঢাকার কেরানীগঞ্জে। ১৯৬৯ সালে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা-ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। তিনি ঢাকা ওয়াসায় কর্মজীবন শুরু করে সংস্থায় উপ-সহকারী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০৬ সালে অবসরগ্রহণ করেন। তিনি উচ্চশিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য জাপান, রাশিয়া, লাটভিয়া, চীন, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করেন।
তিনি দেশের বৃহত্তম পেশাজীবী সংগঠন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি, সমাজ ও প্রযুক্তিবিষয়ক পত্রিকা কারিগর-এর সম্পাদক, ঢাকা ওয়াসা ও পিজিসিবি পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক এবং সার্ক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল ও বর্তমান কো-চেয়ারম্যান, মিড লেভেল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরাম অব এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক কান্ট্রিজের মেম্বার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন। আইডিইবির দু-তিনজন প্রতিষ্ঠাতার মধ্যে তিনি অন্যতম এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২৮ বছর দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন পদে প্রায় ৪০ বছর দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।
সমাজসেবামূলক কাজেও তিনি অবদান রেখে চলেছেন। কেরানীগঞ্জের হযরতপুর জনকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনসহ বহু জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত। শিক্ষানুরাগী হিসেবে তিনি কেরানীগঞ্জস্থ কবি নজরুল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও মুসীরখোলা উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রযুক্তি ও সমাজচিন্তা-বিষয়ক লেখালেখির সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রকৌশলী হামিদ জাতীয় পানি কাউন্সিলের সম্মানিত সদস্য এবং বিভিন্ন জাতীয় কমিটিতে কাজ করে দেশের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি বাহিনী দুইবার তাকে গ্রেপ্তার করে এবং নির্যাতনের পর মুক্তি পান। মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষানুরাগী এ প্রকৌশলী বন্ধন-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশের সমসাময়িক প্রকৌশলবিষয়ক ভাবনা নিয়ে। তার ভাবনার কথাই জানাচ্ছেন ম. শাফিউল আল ইমরান।

বন্ধন : দেশের সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকৌশলীদের ভূমিকা সম্পর্কে আপনার মতামত জানাবেন…
এ কে এম এ হামিদ : এ কথা অনস্বীকার্য যে দেশের সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকৌশলীরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। এককথায় বলা যায়, প্রকৌশলী বিশেষ করে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সম্পৃক্ততা ব্যতীত দেশের কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হয় না।
বন্ধন : আইডিইবির চলমান সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে যদি কিছু বলেন…
এ কে এম এ হামিদ : স্বল্প পরিসরে আইডিইবির ব্যাপকভিত্তিক চলমান কার্যক্রম এখানে উপস্থাপন সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে পাঠকের সুবিধার্থে ইনস্টিটিউশনের মৌলিক কিছু বিষয়ে অবতারণা করা যেতে পারে। আপনারা জানেন, ঔপনিবেশিক ধারাবাহিকতায় এ দেশে শ্রমজীবী-কর্মজীবীদের প্রায় সংগঠনের কার্যক্রম নিজস্ব দাবিদাওয়াকেন্দ্রিক ছিল। সে ক্ষেত্রে আইডিইবি প্রতিষ্ঠালগ্ন চিন্তা-চেতনায় দেশ ও জাতির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সংগঠনটি মূল দর্শন নির্ধারণ করেছে ‘দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থ সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা’। এ দর্শনের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে ইনস্টিটিউশনের সামগ্রিক কার্যক্রমের শতকরা ৭৫ ভাগ দেশ ও জনগণের স্বার্থে এবং মাত্র শতকরা ২৫ ভাগ সদস্য প্রকৌশলীদের পেশাগত সংশ্লিষ্টতায় পরিচালিত হচ্ছে। দেশ ও জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য বিবেচনায় সংগঠনের দাবি আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে গুণগত মৌলিক পরিবর্তনের চিন্তা-চেতনা থেকে নেতিবাচক আন্দোলনের পরিবর্তে ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ে তোলার প্রত্যয় যেমন রয়েছে, তেমনি স্বাধীন দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের সুনির্দিষ্ট কিছু মতামত ও কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যেমন- স্বাধীন দেশোপযোগী দাবি আদায়ের আন্দোলনের ক্ষেত্রে ভাঙচুর, হরতাল, ধর্মঘট ইত্যাদি নেতিবাচক কর্মসূচির পরিবর্তে ইতিবাচক আন্দোলনের সংস্কৃতি গড়ে তোলা।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে শাসন-শোষণ বন্ধ করাসহ প্রযুক্তিতে গণমানুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭২ সাল থেকে প্রযুক্তি ভাবনাযুক্ত রাজনীতি প্রবর্তনের আহ্বান জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে গুণগত মৌলিক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। জাতীয় উন্নয়নে এডহকইজমের পরিবর্তে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে সরকারকে সর্বক্ষেত্রে পরিকল্পিত উন্নয়নে উৎসাহিত করা হয়েছে।

সভ্যতার মূল অনুঘটক পানি। জীবন ও উন্নয়নের জন্য পানির বিকল্প নেই। স্বাধীনতার পর সহজলভ্য এ পানিসম্পদের যথার্থ নীতিমালা না থাকায় ভূ-উপরিস্থ পানির পরিবর্তে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ফলে পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে দেশ মরুময় হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে শিল্পবর্জ্য অপরিশোধিত নিষ্কাশন সুপেয় পানির নিশ্চয়তাকে ক্রমেই দুরূহ করেছে। সার্বিক বিবেচনায় চাষাবাদের ক্ষেত্রে ভূ-উপরিস্থিত পানি ব্যবহার ও পানিদূষণ রোধে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সেচকাজে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
জীবন-জীবিকার জন্য জীবনমুখী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম হলেও স্বাধীন বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা বিস্তার উপেক্ষিত হয়েছে। ফলে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি না হয়ে জনগোষ্ঠী ক্রমেই জনসমস্যায় পরিণত হয়েছে। অথচ মানবসম্পদই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তাই আমরা জীবন ও জীবিকার তাগিদে কারিগরি শিক্ষা তথা মধ্যম স্তরের শিক্ষার প্রসারের দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের অব্যাহত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার শিক্ষানীতিতে কারিগরি শিক্ষাকে বেশ গুরুত্বারোপ করেছে।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও নগরসভ্যতা গড়ে উঠলেও স্বাধীন দেশে নদী রক্ষায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছিল না। ফলে অবৈধভাবে নদী দখল, যত্রতত্র সেতু, বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীর গতিপথ পাল্টিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেছে, অন্যদিকে নদীর নাব্যতা রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ না করায় অনেক নদী মৃত্যুপ্রায়। আমাদের অব্যাহত জনসচেতনতামূলক আন্দোলনের ফলে সরকার নদীর অবৈধ দখলমুক্তকরণসহ নদী রক্ষায় এগিয়ে আসছে।
বর্তমান বিশ্ব সভ্যতায় তথ্যপ্রযুক্তির একক আধিপত্য। এ তথ্যপ্রযুক্তির গণমুখী ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে পারলে দেশের গ্রামগঞ্জে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন সম্ভব। আমরা মনে করি, ইন্টারনেট প্রযুক্তি গ্রামে সহজলভ্য করতে পারলে একদিকে জনগণ সহজে নাগরিকসেবা পাবে, অন্যদিকে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।
সভ্যতার অন্যতম চালিকাশক্তি প্রযুক্তি। প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহার ও সর্বজনীন আবেদন নিশ্চিত করার জন্য এ সম্পর্কে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। গ্রামকেন্দ্রিক বাংলাদেশকে বিশ্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রযুক্তির আবেদন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কৃষি ও কৃষিজাত উপকরণ সংরক্ষণ, বণ্টনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আবি®কৃত প্রযুক্তি গণমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারলে গ্রামবাংলায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে এবং গণমানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ত্বরান্বিত হবে। এ লক্ষ্যে আইডিইবির প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে এবং আইডিইবি দেশব্যাপী বিনা মূল্যে প্রযুক্তি পরামর্শকেন্দ্র চালু রেখেছে।
বন্ধন : দেশের প্রকৌশলীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন বলে আপনি মনে করেন কি?
এ কে এম এ হামিদ : প্রকৌশলীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন, এ কথা হলফ করে বলা যাবে না। কারণ, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, আমলাতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক প্রভাব প্রকৌশলীদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বা অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া দেশে কর্মশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় সর্বক্ষেত্রে একজনের কাজ অন্যজনে করেন। ফলে উভয় কাজই সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন হয় না। একইভাবে প্রকৌশলীরা প্রকৌশলিক কাজের চেয়ে প্রশাসনিক কাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন, যা কাক্সিক্ষত নয়।
বন্ধন : স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন কি আপনি যথেষ্ট মনে করছেন? যদি না হয়, তবে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে? এ মুহূর্তে করণীয়ই বা কী?
এ কে এম এ হামিদ : স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে এ উন্নয়ন সামগ্রিকভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। আপনি লক্ষ করে থাকবেন, আমাদের প্রান্তিক পর্যায়ে এখনো রাস্তাঘাট কাক্সিক্ষত মাত্রায় নির্মিত হয়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রে সেতু-কালভার্ট বা রাস্তাঘাট এমন অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়েছে, যা কৃত্রিম জলাবদ্ধতার মতো সমস্যা সৃষ্টি করছে। যত্রতত্র বাড়িঘর নির্মাণের ফলে যেমন নাগরিকসুবিধা কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তেমনি অপরিকল্পিত গ্রামীণ আবাসনের ফলে মূল্যবান কৃষিজমি ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হচ্ছে, যা জাতির খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভাবিয়ে তুলছে। সবার জন্য পরিকল্পিত আবাসনের জন্য গ্রাম ও শহরে প্লটের পরিবর্তে বহুতল আবাসন নির্মাণ করা প্রয়োজন। যাতে অপেক্ষাকৃত কম ভূমিতে অনেক লোকের একত্রে বাসস্থান নিশ্চিত করা যায়। অবকাঠামো উন্নয়নে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
বন্ধন : দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রধান বাধা কী এবং কীভাবে এসব বাধা দূর করা সম্ভব?
এ কে এম এ হামিদ : অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনেক বাধা বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। স্বল্প পরিসরে তা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। তবে এককথায় বলা যায়, উন্নয়নের সামগ্রিক মাস্টার প্ল্যান ও প্রয়োজনীয় তহবিল সংকটই অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমাদের অগ্রাধিকার প্রকল্প চিহ্নিত করতে হবে এবং অগ্রাধিকার অনুযায়ী পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের জোগান দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনাবিদদের দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে হবে। তবে অপ্রিয় হলেও সত্য, আমাদের পরিকল্পনাবিদদের মধ্যে সুদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনার অনেক ঘাটতি রয়েছে। রয়েছে সামাজিক পশ্চাৎপদতা ও উন্নত দৃষ্টিভঙ্গির যথেষ্ট অভাব। লক্ষ করে থাকবেন, যখন যা তখন তা সেভাবেই আমাদের বেশির ভাগ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে করে দেশের অনেক অর্থ ও সময় অপচয় হচ্ছে, যা কাক্সিক্ষত নয়। আমাদের শ্রেণীবিভক্ত আত্মকেন্দ্রিক চিন্তা-চেতনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সুদূরপ্রসারী মাস্টার প্ল্যানের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে।

বন্ধন : মানের বিচারে বিশ্বের উন্নত দেশের প্রকৌশলীদের সঙ্গে এ দেশের প্রকৌশলীদের কর্মদক্ষতার তুলনামূলক পরিপ্রেক্ষিত সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?
এ কে এম এ হামিদ : বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের প্রকৌশলীদের সঙ্গে এ দেশের প্রকৌশলীদের কর্মদক্ষতা তুলনামূলক খুব নিম্নমানের বলা যাবে না। দেশে ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষণামূলক কাজে কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় বিশ্বের উন্নত দেশের প্রকৌশলীরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। দুর্ভাগ্য হচ্ছে দেশের অধিকাংশ প্রকৌশলী গবেষণা ও স্টাডি কার্যক্রমে উৎসাহবোধ করেন না। বরং এক্সিকিউশন, সুপারভিশন কাজেই তাঁরা বেশি আগ্রহী। ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞানে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ছি। এ ক্ষেত্রে ভাবনার সময় এসেছে। প্রকৌশলীদের প্রচলিত চিন্তা-চেতনা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।
বন্ধন : বাংলাদেশে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে আধুনিক ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কোন পর্যায়ে হচ্ছে, এ সম্পর্কে জানতে চাই?
এ কে এম এ হামিদ : বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আশানুরূপ। তবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এখনো সীমিত।
বন্ধন : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে জনশক্তি হিসেবে প্রকৌশলীদের চাহিদা বাড়ছে, বাংলাদেশ এ সুযোগ কতটুকু কাজে লাগাতে পারছে?
এ কে এম এ হামিদ : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে জনশক্তি হিসেবে প্রকৌশলীদের চাহিদা রয়েছে এবং দিন দিন তা বেড়েই চলছে। আমরা এ সুযোগ শতভাগ কাজে লাগাতে পারছি, এ কথা বলা যাবে না। কারণ, আমাদের প্রকৌশলীদের রয়েছে অনেক সীমাবদ্ধতা, রয়েছে আধুনিক ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের অদক্ষতা ও অনভিজ্ঞতা। ব্যক্তিগতভাবে আমি মেধা পাচারের ঘোর বিরোধী। এরপরও চাই রাষ্ট্র যেহেতু বিশাল জনশক্তির কর্মসংস্থান করতে পারছে না, তাই নবীন প্রকৌশলীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করে বিদেশে পাঠানো উচিত। এটি করতে পারলে রাষ্ট্র ও ব্যক্তি উভয়ই লাভবান হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বন্ধন : পল্লী এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে আইডিইবি কী ধরনের ভূমিকা রাখছে?
এ কে এম এ হামিদ : পল্লী এলাকায় সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো উন্নয়নে আইডিইবির সদস্য প্রকৌশলীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা মনে করি, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে পল্লী এলাকার উন্নয়নে সরকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এর জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে জরুরি ভিত্তিতে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট বা সেকশন গঠন করা দরকার। গণপূর্ত বিভাগের আদলে সেখানে একজন ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনাল অফিসার (উপ-সহকারী প্রকৌশলী) নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। ইউনিয়ন পর্যায়ের অবকাঠামো উন্নয়নে এ সেকশন থেকে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন ও তার ভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণ করলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের নামে বর্তমানে অর্থের যে অপচয় ও অপব্যয় হচ্ছে, তা অবশ্যই বন্ধ হবে। আপনি লক্ষ করে থাকবেন, আমাদের অনেক সদস্য প্রকৌশলী পল্লী এলাকায় স্ব-উদ্যোগে ছোট ও মাঝারি শিল্প-কারখানা স্থাপন করছে। তাতে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় তহবিল বা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় তাঁদের সেই উদ্যোগ অনেক ক্ষেত্রে ব্যাহত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দেশে প্রথম যখন উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনে সরকার উদ্যোগী হয়, তখন উচ্চ ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা কেউই উপজেলায় যেতে চাননি। তখন আইডিইবি উদ্যোগী হয়ে ৪৬০ উপজেলায় সদস্য প্রকৌশলীদের উদ্বুদ্ধ করে গ্রামগঞ্জে প্রেরণ করেছে। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধা চর্চার ফলে দেশের সব উপজেলার সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং গ্রাম পর্যায়ে উন্নয়নের গতিধারা সৃষ্টি হয়েছে।
বন্ধন : দেশের তৃণমূল পর্যায়ের প্রযুক্তিসেবা পৌঁছে দেওয়াসহ অবকাঠামো উন্নয়নে আপনাদের নতুন কোনো কর্মপরিকল্পনা আছে কি?
এ কে এম এ হামিদ : দেশের তৃণমূল পর্যায়ে অবকাঠামো উন্নয়নে আইডিইবি নতুন চিন্তা-চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির অপরিহার্য কৃষিজমি রক্ষায় সম্প্রতি আমরা ‘কৃষিজমি রক্ষা কর, পরিকল্পিত গ্রাম গড়’ প্রতিপাদ্যটি সরকার ও দেশবাসীর সম্মুখে উপস্থাপন করেছি। আমরা পরিকল্পিত গ্রাম গড়ার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কৃষিজমি রক্ষার্থে পরিকল্পিত গ্রাম গড়ার সুপারিশে পরিকল্পিতভাবে গ্রামীণ রাস্তাঘাট উন্নয়ন, বাড়িঘর স্থাপন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়ন, সুপেয় পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃপ্রণালি, হাটবাজার উন্নয়ন ইত্যাদির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ কাজ করার জন্য আমরা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম গ্রামপর্যায়ে বিস্তৃত করার প্রস্তাব করেছি। একইভাবে জাতীয় গৃহায়ণ নীতিমালাকে সংশোধনপূর্বক (১) গ্রামীণ গৃহায়ণ নীতি, (২) শহরের গৃহায়ণ নীতি প্রণয়নের সুপারিশ করেছি।
দেশের প্রতিজন সচেতন মানুষকে বিষয়টি গভীরভাবে ভাবতে হবে। কেননা, আমাদের মাত্র ৮ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন হেক্টর কৃষিজমি রয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ হেক্টর কৃষিজমি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ৫০-৬০ বছরের মধ্যে পুরো দেশ বাড়িঘরে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। পরিণামে দেশ ভয়াবহ খাদ্য সংকটে পড়বে। তাই পরিকল্পিত গ্রামীণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
প্রশ্নের প্রথমাংশের উত্তরে বলা যায় যে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে গ্রামবাংলার জনগণকে অবশ্যই প্রযুক্তিসেবা পৌঁছে দেওয়া উচিত। আর তা করতে হলে প্রযুক্তি ও প্রযুক্তির অন্তর্নিহিত শক্তিকে গ্রামীণ জনপদে জনপ্রিয় করতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন ব্যাপক মোটিভেশন কার্যক্রম। প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে? প্রযুক্তি তো নিজে হেঁটে গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারবে না!
আমরা মনে করি, প্রযুক্তিকে গ্রামে নিতে হলে প্রথমে গ্রামবাংলায় প্রযুক্তিকর্মীদের নিয়ে যেতে হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজে সকল শাখায় এখনই দু-একটি কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। এসব বিষয় পড়ানোর জন্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। তাতে শিক্ষার্থীরা কারিগরি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করবে। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষকেরা বিভিন্ন প্রযুক্তিসেবা গণমানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সমর্থ হবেন। শুধু হাইস্কুল বা কলেজে নয়, আমরা মনে করি প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।
বন্ধন : পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে বিশ্বের কোন কোন সংস্থার সঙ্গে আপনাদের সংগঠনের সম্পৃক্ততা রয়েছে?
এ কে এম এ হামিদ : আপনারা জানেন, আইডিইবি দেশের বৃহত্তম পেশাজীবী সংগঠন। এ সংগঠনের উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে ‘সার্ক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরাম’ গঠিত হয়েছে। ইতিমধ্যে সংগঠনটি সার্ক সেক্রেটারিয়েট স্বীকৃতি দিয়েছে। সার্ক অঞ্চলের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যম স্তরের প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে ‘মিড লেভেল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরাম ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক’ গঠিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠনের সঙ্গেও আইডিইবির সম্পৃক্ততা রয়েছে।
বন্ধন : বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশেও দুর্যোগের ধরন পরিবর্তন হয়েছে, তা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নির্মাণ কাঠামোর পরিবর্তনে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায় বলে আপনি মনে করেন?
এ কে এম এ হামিদ : জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জলবায়ুজনিত কারণে দুর্যোগের ধরনও দিন দিন ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে। বাড়ছে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার ভয়াবহতা, ভূমিকম্পের প্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়সহ সব প্রকার দুর্যোগ সহনশীল বাড়িঘর নির্মাণসহ সব আবাসন নির্মাণে কাঠামোগত পরিবর্তনে উদ্যোগী হতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ সব গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। আইডিইবিতে ক্লাইমেট চেঞ্জ-বিষয়ক একটি সেল এ বিষয়ে কাজ করছে।
বন্ধন : জাতীয় উন্নয়নে সরকারের কাছে আপনাদের প্রস্তাবিত সুপারিশ ও দাবিসমূহ কী পর্যায়ে রয়েছে?
এ কে এম এ হামিদ : জাতীয় উন্নয়নে সরকারের কাছে আমরা অনেক সুপারিশ উপস্থাপন করেছি। ইনস্টিটিউশনের সদস্য প্রকৌশলীদের পেশাগত দাবির ব্যাপারে তেমন অগ্রগতি না থাকলেও আমরা লক্ষ করছি যে বর্তমান সরকার আমাদের কিছু জনকল্যাণকর সুপারিশ রাষ্ট্রীয়নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘বৃহত্তর ঢাকা শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প, ছোট ছোট বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নির্মাণ প্রকল্প, আর্সেনিকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষায় গভীর নলকূপ ব্যবহার সীমিতকরণ, ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার বৃদ্ধি, নদী ডেজিং ইত্যাদি।
বন্ধন : প্রকৌশল শিক্ষার মানোন্নয়নে আপনাদের গৃহীত উদ্যোগের কথা জানতে চাই?
এ কে এম এ হামিদ : প্রকৌশল বা কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়নে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। বাস্তবভিত্তিক কারিগরি শিক্ষার মানসম্মত সিলেবাস প্রণয়নে আমরা কর্তৃপক্ষকে অব্যাহত সহযোগিতা করে যাচ্ছি। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সব কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা কাজ করছি।

সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছু বলুন?
এ কে এম এ হামিদ : আপনারা জানেন, আইডিইবি দেশের বৃহত্তম পেশাজীবী সংগঠন। একটি জাতীয় ইনস্টিটিউশন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমনষ্ক জাতি গঠনসহ জাতীয় উন্নয়নের বিভিন্ন সেক্টরের বিষয়ে এই ইনস্টিটিউশনের বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিকল্পনা রয়েছে। ইনস্টিটিউশন থেকে সরকার গৃহীত সব প্রকল্পের সুফল ও কুফল সম্পর্কে মতামত দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশের বৃহৎ সব প্রকল্প স্টাডি করে এর সুফল ও কুফল সরকার এবং জনগণের কাছে তুলে ধরারও পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের স্টাডি ও রিসার্চ কার্যক্রম এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও ব্যাপকভিত্তিক করার পরিকল্পনা রয়েছে। জাতীয় ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়ে জনমত গঠনেও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
বন্ধন : প্রবাসী প্রকৌশলীরা দেশের জন্য কীভাবে অবদান রাখছেন?
এ কে এম এ হামিদ : প্রবাসে আমাদের ব্যাপকসংখ্যক প্রকৌশলী কর্মরত রয়েছেন। তাঁরা বিভিন্ন দেশের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রকল্প ও সেবা খাতে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। দেশের জন্য মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন, যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ ছাড়া বিদেশ থেকে ফিরে অনেকেই অর্জিত জ্ঞান ও অর্থ বিনিয়োগ করে দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-কারখানা স্থাপন করছেন। এতে দেশ উপকৃত হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে দেশ ও জাতি অনেক বেশি উপকৃত হতে পারবে বলে আমি আশাবাদী।
বন্ধন : অনেক ব্যস্ততা সত্ত্বেও বন্ধনকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
এ কে এম এ হামিদ : আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে বন্ধনের সব পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
- প্রকাশকাল: বন্ধন ৩৭ তম সংখ্যা, মে ২০১৩