ভবিষ্যৎমুখী স্থাপত্যের ভিন্ন স্থাপনা

প্লাস্টিক ফিশ টাওয়ার (দক্ষিণ কোরিয়া)

প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে আবর্জনার এমন এক স্তূপ আছে, যার আকার সমগ্র সাগরের ৮.১ শতাংশ। একে বলা হয় The Great Pacific Garbage Patch (GPGP) এবং ধারণা করা হয়, এটা ১০০ মিলিয়ন টন আবর্জনায় পূর্ণ। এসব আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় জমা হয়। সমুদ্রের স্রোত যেটা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে নেয়, যা মারাত্মক ক্ষতি করে পারিপার্শ্বিক ইকো-সিস্টেমের।

‘প্লাস্টিক ফিশ টাওয়ার’ একটা বৃত্তাকার কাঠামো, যা GPGP-এর সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠে ভাসমান অবস্থায় থাকে। এটা ভাসমান প্লাস্টিককে সংগ্রহ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ করে। হিসাব করে দেখা যায়, GPGP-এর শতকরা ৯০ ভাগ পানি। সামুদ্রিক প্রাণী ও মাছ যদি এগুলোকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, তবে এটা তাদের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট। এ টাওয়ারের বড় এক বেষ্টনী বা বেড়া কাঠামোটির চারপাশে বৃত্তাকার ১ কিলোমিটার ব্যাস জুড়ে পানির নিচে থাকবে। যেটা যাবতীয় ভেসে আসা প্লাস্টিককে আটকে রাখবে। কাঠামোর ভেতরে প্লাস্টিকগুলোকে রিসাইকেল করা হবে এবং বাস্তুসংস্থান বা ইকোসিস্টেমকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রক্রিয়াজাতকৃত প্লাস্টিককে মাছের খামারে জড়ো করা হবে। দূষণ কমানোর ক্ষেত্রে মাছের খামারের দুটি বাড়তি সুবিধা রয়েছে-

প্লাস্টিকগুলোর উপস্থিতির ফলে মাছের খামারের উপাদানগুলো পর্যাপ্ত প্লাবতা লাভ করে। এতে করে সম্পূর্ণ কাঠামোটি ভাসমান অবস্থায় থাকতে পারে। তদুপরি, প্লাস্টিক কিন্তু যথেষ্ট ভাসমান বস্তু। (২) এটা ভ্রমণকারীদের ভ্রমণের জন্য একটা আকর্ষণীয় জায়গা হতে পারে। ভ্রমণকারীদের GPGP আসলে মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। ভ্রমণকারীদের ওই স্থানে আনা-নেওয়া করা হবে যে জাহাজে তার জ্বালানি পাওয়া যাবে প্রক্রিয়াজাতকৃত প্লাস্টিকের রাসায়নিক পদার্থ থেকে। যদিও এই পদ্ধতিটি এখন অবধি আবিষ্কার করা যায়নি।

নিউ টাওয়ার অব বাইবেল (পোল্যান্ড)

নিউ টাওয়ার অব বাইবেল (পোল্যান্ড)

আমরা এমন একটা সময়ে রয়েছি যখন বড় বড় ভবন ও এর কাঠামোগুলো মানুষকে তার চাহিদা থেকে বঞ্চিত করে কেড়ে নিচ্ছে মানবতাবোধও। ‘টাওয়ার অব বাইবেল’ সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে ‘নিউ টাওয়ার অব বাইবেল’ তৈরি করতে চেয়েছে, যা উচ্চাকাক্সক্ষী জীবনের প্রতীকী স্তম্ভ। ভবনটি বর্তমানে নির্মাণাধীন হলেও এই স্তম্ভের দ্বারা স্থাপত্যবিদ্যার নানা কৌশল প্রদর্শন করা হবে। আকাশচুম্বী ভবন (Skyseraper) বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এটা বিশেষ ধরনের এক কাঠামো, যা ১৯৫৫ সালে পোল্যান্ডের ওয়ারশা-এর কেন্দ্রে নির্মিত। যদিও এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের স্মৃতি ধারণ করে চলছে। তবুও এটা ওয়ারশা-এর সবচেয়ে বড় পরিচয়বাহী ও বিতর্কিত এক কাঠামো। কেননা অনেকের কাছে এটা সোভিয়েত আধিপত্য আর গোলিনা জাতির দাসত্বের প্রতীক। এটা গতানুগতিক এক সাম্প্রদায়িক কাঠামো বা স্তম্ভ, যা স্বদেশি স্থাপত্য এবং উন্নত নগর পরিকল্পনা অগ্রাহ্য করেছে বিধায় এটা একটা পাথরের স্তম্ভ হিসেবে শহরের ওপর স্থাপিত।

মাউনটেন সিটি (সুইজারল্যান্ড)

শহরের উচ্চমাত্রার চাপে আজ আমরা প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক হারাতে বসেছি। শহরগুলো ধীরে ধীরে বড় আর দীর্ঘ হওয়ার ফলে বাড়ছে জনসংখ্যার চাপ। ফলে প্রকৃতির সঙ্গে সখ্য হারিয়ে যাচ্ছে। নগর পরিকল্পনাবিদ এবং স্থাপত্য বিশেষজ্ঞরা পার্ক বানিয়ে কিংবা রাস্তার পাশে গাছ লাগিয়ে শহরগুলোতে প্রকৃতি পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করছে। শহরের মধ্যে নির্মিত ক্ষুদ্র সবুজ এই অংশ প্রকৃতির আসল অবস্থার কোনো পরিবর্তন করতে পারছে না।

মাউনটেন সিটি (সুইজারল্যান্ড)

জোর করে প্রকৃতিকে নগরে নিয়ে আসার চেয়ে আমাদের উচিত শহরগুলোকে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে গিয়ে প্রকৃতির স্পর্শে নগরগুলোকে সাজিয়ে তোলা। আমরা জানি, নগরায়ণ উলম্বভাবে বা ঊর্ধ্বমুখী হলে তা ক্রমবর্ধমান ঘনত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে সক্ষম। মাউনটেন সিটিতে শহরের পরিকল্পনা বা নকশা একটা পাহাড়ের ভেতর এবং পাথুরে মাটিতে করা হয়েছে, যাতে প্রকৃতির উন্নয়ন এর চারপাশকে ঘিরে হয়। সবুজ প্রকৃতি ও উদ্ভিদ হচ্ছে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান, যেটা শহরটাতে শক্তি জোগাবে। এমন ধরনের শহর নির্মাণের প্রধান শর্ত এটার অবস্থান এমন একটা ভৌগোলিক অঞ্চলে হবে, যাতে সক্রিয় টেকটনিক এবং আগ্নেয়গিরিপূর্ণ এলাকা থাকবে।

কয়েল পাওয়ার প্লান্ট মিউটেশন (রোমানিয়া)

কয়লার দ্বারা পরিচালিত কারখানাগুলো আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর কী ধরনের ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলছে তা সবারই জানা। কিন্তু এখনো পৃথিবীর ৫০ হাজার কারখানায় জ্বালানি হিসেবে প্রতিদিন ব্যাপক হারে কয়লা ব্যবহার করা হচ্ছে। যেহেতু সবুজ প্রযুক্তি পর্যাপ্ত শক্তি উৎপাদনের মাধ্যমে জীবাশ্মকে জ্বালানিতে প্রতিস্থাপন করতে পারছে না। ‘কয়েল পাওয়ার প্লান্ট মিউটেশন’ প্রকল্প কয়লার দ্বারা পরিচালিত কারখানাগুলোর জন্য একটি উত্তম বিকল্প হতে পারে। এই প্রকল্পটি একটা আকাশচুম্বী ভবন ও পুরোনো ফ্যাক্টরির ওপর নির্মিত, যা ক্ষতিকর আবর্জনার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।

কয়েল পাওয়ার প্লান্ট মিউটেশন (রোমানিয়া)

আকাশচুম্বী কয়লা পরিষ্কারকগুলো তিনটি লম্বা, নলাকার পা সমন্বয়ে গঠিত যার অংশগুলো কারখানার চিমনির সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে অধিক উচ্চতায় গিয়ে বাতাসের সংস্পর্শে আসে। যাতে পরিত্যক্ত আবর্জনাকে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যায়। সম্পূর্ণ কাঠামোটা বহুমুখী কার্বণ তন্তু ও লোহার অংশ দ্বারা তৈরি, যা পূর্বে স্থাপিত শক্তি উৎপাদন কারখানার সঙ্গে যুক্ত। চিমনিগুলো বাতাসে ১০০ মিটার উঁচুতে থাকে এবং ধোয়ার কুণ্ডলী চিমনি বেয়ে ওপরে উঠে আসে। চিমনিগুলোয় বিভিন্ন উচ্চতার বায়ু ছাঁকনি যুক্ত নল স্থাপন করা হয়। এগুলো আনুভূমিকভাবে বাইরে যুক্ত থাকে। বাষ্পগুলো এতে ঘনীভূত হয়ে প্রাপ্ত জলীয় অংশ একত্র করে বণ্টন করা হয়। এই বিশেষ পদ্ধতির কারণে ধোঁয়াগুলো বাতাসে অপেক্ষাকৃত কম দূষণ ঘটায়।

স্কাইস্কাপার অব লিবারেশন (যুক্তরাষ্ট্র)

যুদ্ধের সময় দুটো এলাকার সীমান্তবর্তী প্রান্তে যারা থাকে তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। স্বভাবতই এরাই বেশি মাত্রায় শান্তিপ্রত্যাশী। প্রায়ই যুদ্ধরত এলাকায় প্রতিদ্ব›দ্বীরা নিজেদের ভেতর বড় দেয়াল স্থাপন করে কিন্তু এসব দেয়াল কি আসলেই সংঘাতের সমাধান করে? ‘স্কাইস্কাপার অব লিবারেশন’ প্রকল্পের নকশাবিদদের ধারণা, এসব দেয়াল পারস্পরিক বোঝাপড়া সৃষ্টির পরিবর্তে সংঘাতকে আরও তীব্রতর করে তোলে।

স্কাইস্কাপার অব লিবারেশন (যুক্তরাষ্ট্র)

এই প্রকল্পটি করা হয়েছে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের সীমানা সংঘাতের কথা ভেবেই। যেখানে রয়েছে তিনটি ভাগ, একটা ইসরায়েলি অংশ, একটা ফিলিস্তিনি অংশ আর তৃতীয়টা এমন এক এলাকা যেখানে সীমানাগুলো একটা দেয়াল দিয়ে পৃথক করা। এই দেয়ালগুলো সরিয়ে স্কাইস্কাপার দিয়ে তা প্রতিস্থাপন করা হবে। যাতে করে বিচ্ছিন্ন এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকায় একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করে। স্কাইস্কাপার অব লিবারেশন-এ শুধু শান্তিকামী ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলের অধিবাসীরা প্রবেশ করতে পারবে, যা পরিচালিত হবে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে। যা দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে বলে এ প্রকল্পের নকশাবিদদের বিশ্বাস।

ব্রিজ অব হোপ স্কাইস্কাপার (স্পেন)

দ্য ব্রিজ অব হোপ (The Bridge of Hope) একটা প্রতীকী কাঠামো, যেটা ডেড সি বা মৃত সাগরতীরে জর্ডান ও ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্য নির্মাণ করা হবে। সেতুর গঠন সাগরের দুই পাড় থেকে শুরু হয়ে মাঝখানে গিয়ে একত্রে মিলিত হবে। এর ফলে আরব এবং ইহুদিদের মধ্যে একটা শান্তির সম্প্রীতি স্থাপিত হবে।

ভার্টিক্যাল গ্রাউন্ড (গ্রিস, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জর্দান)

ডেড সির পানির স্তর প্রতিবছর এক মিটার করে কমে যাচ্ছে। এ কারণে জর্ডানীয়রা পরিকল্পনা করছে পাইপের সাহায্যে একে রেড সি বা লোহিত সাগরের সঙ্গে যুক্ত করে পানির স্তর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার। সেতু নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রকল্পে জলীয় নল স্থাপনের প্রস্তাব রয়েছে, যা ইসরায়েলে মেডিটেরিয়ান সাগর থেকে পানি আনবে। এই জলীয় নলগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে, যাতে পানির প্রবাহ ৪০০ মিটার পর্যন্ত কমায় পানির লবণাক্ততা অনেকাংশে কমে যাবে। ফলে একে সেচকাজে ব্যবহার সম্ভব হবে। এবং অবশিষ্ট পানি ফেলা হবে ডেড সিতে। লবণাক্ত পানির আধার (সাধারণ মাত্রায় লবণযুক্ত পানি) নির্মাণ করা হবে ডেড সিতে মাছ চাষের জন্য এবং অন্য জলাধারগুলো নির্মাণ করা হবে বিভিন্ন খনিজ দ্রব্য চাষের উদ্দেশ্যে (পটাশিয়াম সারের জন্য ব্রোমিন)।

ভার্টিক্যাল গ্রাউন্ড (গ্রিস, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জর্দান)

এই প্রকল্পটি কলেজ সংগঠনগুলোর আদর্শ পুনঃপরীক্ষা ও পর্যালোচনা সাপেক্ষে গৃহীত। বর্তমানে ছাত্ররা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং পারস্পরিক যোগাযোগের মধ্যে থাকতে চায় কিন্তু গতানুগতিক কলেজ প্রাঙ্গণগুলো আনুভূমিকভাবে বিন্যস্ত হওয়ায় উন্নয়নের জন্য বড় আকারের জমির প্রয়োজন, যা শহর এলাকায় ক্রমেই বিরল হয়ে পড়ছে। আর তাই এর পরিবর্তে যদি কলেজ প্রাঙ্গণকে উলম্বভাবে বিন্যস্ত করা যায়। তবে কলেজগুলো ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থানের কারণে বিভাগীয় ছাত্রদের সঙ্গে পারস্পরিক সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভালো সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে।

ছোট শহরতলিতে অবস্থিত একটা কলেজ ক্যাম্পাসে সাধারণত ২০ হাজার শিক্ষার্থী থাকে। যেখানে উঁচু সব ভবন থাকায় এরা বিভিন্ন উচ্চতায় সেতুর সাহায্যে নিজেদের মধ্যে যুক্ত থাকতে পারে। ভবনগুলোতে যথাযথভাবে চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা গেলে এসব উলম্ব ক্যাম্পাসই শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং অন্যদের সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগে সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করবে।

এয়ারপোর্ট স্কাইস্কাপার (চীন)

এয়ারপোর্ট স্কাইস্কাপার (চীন)

সাম্প্রতিক এক জরিপের মতে, ২০২০ সালের মধ্যে চীনের বিমান বন্দরগুলোর শতকরা ৯৭ ভাগ পুনঃনির্মাণ করতে হবে। যার জন্য প্রচুর অর্থ আর জমির প্রয়োজন হবে। খুব শিগগিরই চীন বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। বিমানবন্দরের নকশাবিদেরা নতুন বিমানবন্দরের জন্য মূল্যবান জমি ব্যবহার না করে প্রকল্পটিকে ৪৫০ মিটার উঁচুতে নির্মাণের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। বিমানবন্দরটি ডজন খানেক সরু টাওয়ারের ওপর ভিত্তি করে স্থাপন করা হবে, যা প্রশস্ত মঞ্চের সাহায্যে বিমানবন্দরের সব স্থাপনার সঙ্গে যুক্ত থাকবে। বিমানবন্দরটি এত উচ্চতায় নির্মাণ করার সুবিধা অনেক। অন্য ভবনগুলোর উচ্চতা আর বিমান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। অবশ্য বাতাসের গতি সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ার ফলে জায়গা কমিয়ে বিমানের রানওয়ের দৈর্ঘ্য অনেক কমানো সম্ভব হবে। 

প্রকৌশলী সনজিত সাহা

[email protected]

প্রকাশকাল: বন্ধন ৪৩ তম সংখ্যা, নভেম্বর ২০১৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top