উদীয়মান মেধাবী এক স্থপতি

আশরাফুল আজাদ রাসেল। একজন উদীয়মান তরুণ মেধাবী স্থপতি। ১৯৯৮ সালে মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং ২০০০ সালে নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগে। এখান থেকে পাস করে প্রবেশ করেন কর্মজীবনে। চাকরির পাশাপাশি ২০০৮ সালে ‘Aakor Architecture Workshop’ নামে একটি স্থাপত্য ফার্ম গড়ে তোলেন। ২০১০ সালে চাকরি ছেড়ে পুরো উদ্যমে মনোনিবেশ করেন নিজের ফার্মে। বর্তমানে তিনি স্থাপত্য ফার্মটির কর্ণধার ও প্রিন্সিপ্যাল আর্কিটেক্ট। সম্প্রতি মননশীল সৃষ্টিশৈলীর স্বীকৃতিস্বরূপ ‘6th Berger Award for Excellence in Architecture’ প্রতিযোগিতায় ঢাকার মিরপুর চিড়িয়াখানার ‘Animal Quarantine Shed’ ডিজাইনে ‘অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন বিশেষ পুরস্কার। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে তুলেছেন নান্দনিক সব স্থাপনা। স্থাপত্যের নানামুখী বিষয় নিয়ে কথা হয় তরুণ এই স্থপতির সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতার ভিত্তিতে লিখেছেন মারুফ আহমেদ

স্থাপত্য সৃষ্টিশীলতার আরেক নাম, যার পরিসর বিশাল। তাই একজন স্থপতি হিসেবে এ ক্ষেত্রে কাজে আপনার অনুভূতি কেমন?
আশরাফুল আজাদ : অনুভূতিটা অবশ্যই ভালো লাগার। আর ভালো লাগার সঙ্গে একটা দায়িত্ববোধের ব্যাপারও জড়িত। স্থাপত্য এমন একটা বিষয়, যা মানুষের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। স্থপতির তৈরি স্থাপনায় মানুষ থাকছে, কাজ করছে, স্পর্শ করছে। আবার অনেক স্থাপনা মিলে তৈরি হচ্ছে নাগরিক শহর। এ জন্যই বিষয়টার পরিসর ব্যাপক। এখানে অনেক বেশি দায়িত্ব ও যত্ন নিয়ে কাজ করতে হয়। স্থাপত্যকে বলা হয় ‘Utilitarian Art’। মানুষের চাহিদা, বিজ্ঞান আর শিল্পের সমন্বয়ে তৈরি হয় স্থাপত্য। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের সামাজিক বিষয়গুলো। স্থাপত্যের মধ্যে আনন্দটাও কম নয়। স্থপতির ডিজাইন করা স্থাপনা যখন ধীরে ধীরে বাস্তব রূপ পায়, তখন একধরনের অদ্ভুত আনন্দ অনুভূত হয়। এ আনন্দের ভাগীদার শুধু স্থপতি একা নন, যাঁরা ওই কাজটার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেই।

স্থপতি হওয়ার ইচ্ছেটা কখন থেকে?
আশরাফুল আজাদ : সত্যি বলতে কি, স্থাপত্য পড়ার আগে জানতামই না বিষয়টি সম্পর্কে। বুয়েটে স্থাপত্য বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে শুরু করি। এ বিষয়ে পড়ার সময় বুঝতে পারলাম এটিই আমার জন্য যথার্থ। আর এখন ধ্যান-জ্ঞান যা-ই বলেন না কেন, সবই একে ঘিরে।

স্থাপত্য ভালো লাগার কারণ কী?
আশরাফুল আজাদ : ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান বিষয়ে আমার অপার আগ্রহ। কেননা এটার সঙ্গে উদ্ভাবনের বিষয়টা জড়িত। তা ছাড়া অনেক ক্যালকুলেশনের ব্যাপারও রয়েছে। আর স্থাপত্য বিষয়টিতে একই সঙ্গে আছে বিজ্ঞান ও শিল্পের সংমিশ্রণ। যাঁরা  স্থাপত্য বিদ্যায় পড়ছেন কিংবা এখন স্থপতি, তাঁরাই জানেন সৃজনশীলতার মধ্যে একধরনের মজা আছে। এটাই তাঁদের সব সময় আকৃষ্ট করে। এর গভীরে একবার ঢুকলে যা টানে বারবার।

নির্মাণে পেশাদার প্রকৌশলী না স্থপতি কার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ?
আশরাফুল আজাদ : আমাদের এখানে আর্কিটেক্টদের অনেকেই আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার বলেন। দুটো কিন্তু আলাদা বিষয়। অনেকে এটাকে পৃথক করতে পারেন না। স্থাপনা তৈরি করতে গেলে স্থপতি ও প্রকৌশলী দুজনেরই ভূমিকা থাকে। প্রকৌশলীদের মধ্যে প্রকারভেদ আছে। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, প্লাম্বিং ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারসহ আরও কয়েক প্রকারের। স্থাপনা নির্মাণের সময় স্থপতি টিম লিডার হিসেবে কাজ করেন। একজন ক্লায়েন্ট প্রথমেই স্থপতির কাছে তাঁর কাজের প্রস্তাব নিয়ে আসেন। তখন ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী স্থপতি নকশা করেন। কিন্তু এই স্থাপনাটি দাঁড়াবে কীভাবে? রড, সিমেন্ট ও অন্যান্য উপকরণ কতটুকু লাগবে, সেটা দেখভাল করেন একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার। আবার কোথায় ফ্যান, লাইট ইত্যাদি লাগাতে হবে, এগুলো স্থপতি বলে দেন। কিন্তু ভেতরে ইলেকট্রিক ব্যবস্থা কেমন হবে, সেটা দেখেন একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। এভাবে প্রত্যেকের কাজই কিন্তু আলাদা ও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) বা অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করে যাঁরা স্থাপত্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন, তাঁদের কাজের সুযোগ ও ক্ষেত্র কেমন?
আশরাফুল আজাদ : অবশ্যই ভালো। কারণ, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। স্বভাবতই  এখানে কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে। তদুপরি, দেশটা ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে আবাসনের চাহিদা প্রচুর। সবাইকে আবাসনসুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীতে এ কারণে প্রচুর নির্মাণকাজ চলছে। অনেকে একে কংক্রিটের জঙ্গলও বলছেন। এটির একমাত্র কারণ, আমাদের থাকার তো জায়গা লাগবে। দেশটা ছোট কিন্তু মানুষ বেশি। সবাই শহরমুখী। ফলে কম জায়গায় নির্মিত হচ্ছে সুউচ্চ ভবন। এসব কারণে এ পেশায় নতুন যাঁরা আসছেন, তাঁদের কাজের সুযোগ অনেক বেশি। তাঁদের কাজের চিন্তাধারাও আধুনিক। সবাই সাধ্যমতো সৃষ্টিশীল কাজ করার চেষ্টা করছেন সুন্দর শহর গড়ার লক্ষ্যে।

আপনার স্থাপত্যকর্ম সম্পর্কে জানতে চাই? 
আশরাফুল আজাদ : ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ছোট-বড় মিলে বিভিন্ন ধরনের কাজ করেছি ও করছি। বিগত দিনে করা আমার উল্লেযোগ্য প্রজেক্টের মধ্যে রয়েছে- ঢাকার বাইরে কয়েকটি আবাসিক ভবন, যেগুলো অনেকটাই ‘Vacation House’ আদলের। মসজিদের ডিজাইন, হাসপাতালের নকশা করেছি। বর্তমানে মৌলভীবাজারে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কাজ চলছে আমার ডিজাইনে। এ ছাড়া পাবনা শহরে একটি আবাসিক ভবনের কাজ চলছে। এসবের বাইরে বিভিন্ন সময়ে আমি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও বাণিজ্যিক ভবনের ডিজাইনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলাম। আবার ভবনের নকশা করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে অনেক ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজও করেছি, এখনো করছি। এগুলোর মধ্যে অফিস, শো-রুম, আবাসস্থল রয়েছে।

কোন ধরনের কাজ করতে ভালো লাগে?
আশরাফুল আজাদ : আসলে এটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। সব ধরনের কাজের মধ্যেই আনন্দ পাই। যত বড় প্রজেক্টই হোক অথবা যত ছোট হোক না কেন, সব ধরনের কাজের মধ্যে সৃজনশীলতা খুঁজে পাওয়া যায়। একটা নির্দিষ্ট স্থাপনার ডিজাইনকে অনেকভাবে দেখা সম্ভব। অনেক চেষ্টার পরে যখন প্রযোজ্য সমাধানটা খুঁজে পাওয়া যায়। তখনই আসল ভালো লাগাটা কাজ করে।

একজন তরুণ স্থপতি হিসেবে এ দেশের স্থপতিদের সম্পর্কে মতামত কী?
আশরাফুল আজাদ : এটা খুব কঠিন প্রশ্ন। কারণ, আমি নিজেও তরুণ। তবে আমার মনে হয় তরুণরা এখন অনেক ভালো অবস্থানে আছেন। বাংলাদেশে এখন অনেক বড় বড় স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে, যা একসময় আমরা চিন্তাও করতে পারতাম না। মেধার ব্যাপারে বলতে গেলে বাংলাদেশ কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের স্থপতিরা এ দেশে ভালো ভবন নির্মাণ করতে পারবেন। কারণ, তাঁরা এ দেশেই থাকেন। এদিক থেকে বিদেশিরা হঠাৎ করে এ দেশে এসে ভালো করতে পারবেন না। সম্প্রতি বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি) আয়োজিত অনেক ডিজাইন কম্পিটিশনে দেখা গেছে ভালো কাজের ধারাবাহিকতায় তরুণদের গড়া ফার্মগুলো মেধাবলে দ্রুতই উঠে আসছে।

মিরপুর চিড়িয়াখানার নকশা ও কাজ সম্পর্কে কিছু বলুন?
আশরাফুল আজাদ : বুয়েট থেকে পাস করার পর আমি স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি। খুব বড় মাপের স্থপতি উনি। উনার কাছ থেকেই অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। চিড়িয়াখানার ক্লায়েন্ট তাঁর পরিচিত। তিনিই আমাকে চিড়িয়াখানার ডিজাইনের কাজটি করতে বললেন। প্রকল্পটির নাম ‘এনিমেল কোয়ারেন্টাইন শেড’ অর্থাৎ সংঘনিরোধ কেন্দ্র। চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণী অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার আগে এখানে রাখা হবে। অথবা বিদেশ থেকে বা বাইরে থেকে কোনো প্রাণী আনলে তাদের প্রথমে সরাসরি খাঁচায় না দিয়ে ৪০ দিন ‘কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ডে’ রাখা হয়। এ দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে অভ্যস্ত করে তোলার জন্য এ ধরনের কোয়ারেন্টাইন বিল্ডিংটি তৈরি করা হচ্ছে। এ দেশের পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে প্রাণীদের যাতে সমস্যা না হয় সেসব দিক খেয়াল রেখেই এই ভবনের নকশা তৈরি করা হয়। আর যেখানে এটি বসানো হয়, তার পারিপার্শ্বিক অবস্থাকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালের মে মাস থেকে প্রস্তাবনা শুরু করে ২০১২ সালের জুনের দিকে ভবনটার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।

এই প্রজেক্টটা আমার কাছে যখন প্রথম আসে, তখন থেকেই আমি খুব উত্তেজিত। খুবই চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে কাজটিকে। আর এর জন্য আমাকে আসলে অনেক পড়াশোনাও করতে হয়েছে। যেমন একটা প্রাণী দিনে কত লিটার পানি খায়, তাদের বিভিন্ন অভ্যাস- এ সবকিছু মেপে, জেনে এবং বুঝে আমাকে কাজটি করতে হয়েছে। সেখানকার পশু ডাক্তারদের কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখেছি। মানুষের ব্যবহৃত ভবনে যেমন আলো-বাতাস দরকার, তেমনি প্রাণীদের জন্যও সেটি সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই সব বিষয়ই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ডিজাইনটি করা হয়েছে। পরে ডিজাইনটি বার্জার ও আইএবির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘6th Berger Award for Excellence in Architecture’ প্রতিযোগিতায় ‘অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায়।

আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখে ভবন নির্মাণ ও এতে সবুজের সমারোহ কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে?
আশরাফুল আজাদ : সাধারণত স্থপতিরা যখন ডিজাইন করেন তখন আবহাওয়ার বিষয়টি শুরু থেকেই তাঁদের বিবেচনায় থাকে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন হলো, এ দেশে কতগুলো ভবন স্থপতিদের দিয়ে ডিজাইন করানো? তৈরি করা বিভিন্ন শ্রেণির ভবনের মধ্যে আবাসিক ভবনের সংখ্যাই বেশি। বেশির ভাগ মানুষ তাঁদের ভবন নিজেদের ইচ্ছামতো অথবা রাজমিস্ত্রির পরামর্শ অনুযায়ী নির্মাণ করেন। আবার দেখা যায়, একটা পরিকল্পনা পাস করিয়ে এনে পরে আর সেই অনুযায়ী কাজ করেন না। যেটুকু জায়গা ছাড়ার কথা সেটুকুও ছাড়েন না। ফলে আলো-বাতাস ঢোকার কোনো জায়গা থাকছে না। আবার দেখা যায়, অনেকেই শীতপ্রধান দেশের মতো কাচের বাক্স নির্মাণ করছেন। যেগুলো আমাদের দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এগুলোকে একেকটা ফ্রিজ বলা যেতে পারে। ভেতরে এসি দিয়ে ঠান্ডা করতে হচ্ছে আর বাইরে সেই এসির গরম বাতাস আরও উত্তপ্ত করে ফেলছে এ শহরকে। যদিও আইন করে সব সমস্যার সমাধান করা যায় না, তবুও আশার কথা হচ্ছে, বর্তমানে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করে কাজ করতে হয়, সেটাতে ভূমিতে অনেক জায়গা ছেড়ে উঁচু বাড়ি বানাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এটির যথাযথ প্রয়োগ করা হলে আমাদের নগরকে আরও সবুজ ও বসবাসের উপযোগী করা সম্ভব।

আমাদের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সংরক্ষণের ব্যাপারে করণীয় কী?
আশরাফুল আজাদ : আমাদের দেশের স্থাপত্যের ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। শত শত বছর আগের সভ্যতাও এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন সময়ে আমাদের এই উপমহাদেশে এসেছেন। তাই এই অঞ্চলে অনেক পুরোনো স্থাপনা আছে। যেগুলো এখানকার রাজা-মহারাজা অথবা ঔপনিবেশিকদের তৈরি। এসব স্থাপনা আমাদের ইতিহাসের ধারক। সংরক্ষণের অভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মনিটরিংয়ের অভাবে ঠিকমতো সংরক্ষণও করা হচ্ছে না। এসব দিকে সবারই দৃষ্টি দেওয়া উচিত। ইতিহাসকে উপেক্ষা করে সামনে এগোনো যায় না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পুরোনো স্থাপনা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। যথাযথ উদ্যোগ নিলে আমাদের দেশীয় এসব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা পর্যটন খাতকেও সমৃদ্ধশালী করবে।

পরিকল্পিত ঢাকা শহরের ডিজাইন করার প্রস্তাব যদি আপনাকে দেওয়া হয় আপনি কী করবেন? 
আশরাফুল আজাদ : এখন তো আর ঢাকা শহরের সবকিছু ভেঙে ঢেলে সাজানো সম্ভব নয়। যা আছে সেটার মধ্যেই কাজ করতে হবে। প্রথমে শহরের মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। পরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান করতে হবে। ঢাকা শহরের যাতায়াত সমস্যা একটি বড় ও প্রধান সমস্যা। এটার সমাধান আগে করতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য চিন্তা করতে হবে। শহরটা শুধু গুটিকয়েক উচ্চশ্রেণির মানুষের জন্য নয়। এই শহরের সবকিছুতেই এই শহরে বসবাসকারী সবার সমান অধিকার আছে। এটাকে মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। সম্ভব হলে অব্যবহৃত জায়গাগুলো বের করে ছোট-বড় সবুজ পার্ক তৈরি করা যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বাংলাদেশকে ঢাকার মধ্যে না ঢুকিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন করতে হবে।

এ দেশের স্থাপত্য কি নতুনভাবে বহির্বিশ্বে এ দেশকে ফুটিয়ে তুলতে পারছে?
আশরাফুল আজাদ : উত্তরে বলব, হ্যাঁ পারছে। অনেক জায়গা থেকেই পেরেছে। আমাদের জাতীয় সংসদ ভবন বিখ্যাত স্থপতি লুই আই কানের ডিজাইন করা। অনেক দেশের মানুষ এই ভবনের কারণে আমাদের দেশকে চেনেন। এই স্থাপনাটা অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। এ ছাড়া আমাদের দেশের স্থপতিরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পুরস্কার পাচ্ছেন তাঁদের স্থাপত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে। এটা নিঃসন্দেহে বড় ধরনের গর্বের বিষয়।

আপনাকে ধন্যবাদ
আপনাকেসহ বন্ধন-এর সবাইকে ধন্যবাদ।

প্রকাশকাল: বন্ধন ৫৪ তম সংখ্যা, অক্টোবর ২০১৪

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top