বোমা বিস্ফোরণরোধী কংক্রিট

সন্ত্রাসী হামলা ক্রমেই বাড়ছে। আতঙ্ক ও ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা বাড়াতে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য ভবন উড়িয়ে দেওয়া। এ জন্য তারা বেছে নিচ্ছে বিমানবন্দর, পাতালরেল, সিনেমা হলসহ অন্যান্য গণপরিসর। বিষয়টি ভাবাচ্ছে প্রকৌশলীদের। ভূমিকম্প, সুনামি, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধী স্থাপনা নির্মাণে সফলতা এলেও বিস্ফোরণরোধক স্থাপনা নির্মাণের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো কিনারা হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় সময় এসেছে স্থাপত্য নকশা ও নির্মাণকৌশলে পরিবর্তন এনে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ নিয়ে চলছে গবেষণা। তবে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি এবং যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীরা বিস্ফোরণরোধী কংক্রিট ও নির্মাণকৌশল বিষয়ে পেয়েছেন দারুণ সফলতা।

সাধারণত সরকারি ভবন, সেনা স্থাপনার ক্ষেত্রে আগে থেকেই এ ধরনের সতর্কতা নেওয়া হলেও আমেরিকার টুইন টাওয়ার হামলার পর থেকে বাণিজ্যিক ভবন বা আবাসনের ক্ষেত্রেও বিস্ফোরণরোধের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। তাই ভূমিকম্পের মতো বোমা বা এ জাতীয় বিস্ফোরণও এখন ভবন নির্মাণের নকশা প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়।

বিস্ফোরণে একটি ভবনের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে তা আসলে পূর্বানুমান করা বেশ কঠিন। সাধারণত গ্রাউন্ড ফ্লোরে হামলা হলে সার্ফেস ব্লাস্ট হয়। প্রাথমিক শক ওয়েভ প্রতিফলিত ও বর্ধিত হয়ে গ্রাউন্ড সার্ফেসে ছড়িয়ে পড়ে। এটি বাতাসের ধাক্কার মতো নয় বরং এটির গ্রাউন্ডের বিস্ফোরণের স্থান থেকে উৎপন্ন প্রতিফলিত শক ওয়েভ মূল ওয়েভের সঙ্গে মিলিত হয়ে একটিমাত্র ওয়েভ তৈরি করে। ফলে সেটি আরও শক্তিশালী হয়ে আঘাত হানে। বেশির ভাগ সন্ত্রাসী হামলা শহর ও ঘনবসতি এলাকায় হয়ে থাকে। যে কারণে বিস্ফোরণের ধাক্কা বেশি দূর ছড়িয়ে পড়তে পারে না। স্বল্প জায়গাতে এর কম্পন অনেক বেশি হয় এবং ভবনের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে। এ ধরনের বিস্ফোরণকে ‘কনফাইন্ড এক্সপ্লোশন’ বলে। কনফাইন্ড বা অবরুদ্ধ এলাকার আয়তনের ওপর এর ধ্বংসযোগ্যতা নির্ভর করে। সংকীর্ণ এলাকায় বিস্ফোরণ হলে তা শক ওয়েভের পাশাপাশি যে সম্মিলিত গ্যাসের ধোঁয়া এবং রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, সেটি ভবনের ওপর অতিরিক্ত চাপ এবং ধাক্কা তৈরি করে। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বহুগুণে বেড়ে যায়। কনফাইন্ড এক্সপ্লোশন বেশ কয়েক ধরনের হতে পারে-

বিস্ফোরক দ্রব্য যদি কোনো স্ট্রাকচারাল কম্পোনেন্টের সঙ্গে (যেমন কলাম ইত্যাদি) ঘটে সে ক্ষেত্রে এর কম্পন ও ধসযজ্ঞ অনেক ভয়াবহ হবে। বিস্ফোরণ অবরুদ্ধ না অবারিত ছিল সেটি আর তখন মুখ্য থাকে না, বিস্ফোরণে আক্রান্ত কলাম মুহূর্তেই ধসে পড়বে।

কংক্রিটে ফাইবার ও বিভিন্ন মেটালের ব্যবহার

বিভিন্ন প্রকার উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া যায়। এগুলোর প্রতিটির বিস্ফোরণের ধরন ও ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষমতাও ভিন্ন। টিএন্ডটি (TNT-Trinitrotoluene) কে প্রমিত মান হিসেবে ধরা হয় যেখানে বিস্ফোরণকে টিএন্ডটির ভরের সমান হিসেবে প্রকাশ করা হয়। বহুল প্রচলিত প্রক্রিয়া হচ্ছে বিস্ফোরণের নির্দিষ্ট শক্তিকে টিএন্ডটির অনুপাত হিসেবে প্রকাশ করা।

যখন কোনো গ্যাস, তরল বা কঠিন পদার্থের মধ্য দিয়ে দ্রুত রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে, তখন বিস্ফোরণ ঘটে। আর বিস্ফোরণের মুহূর্তে এর উৎসে গ্যাসীয় উপাদান অতি উচ্চমাত্রার তাপ ও চাপ সৃষ্টি করে। এই উচ্চ চাপের গ্যাসীয় উপাদান বাতাসের সঙ্গে মিশে খুব দ্রæত এর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিস্ফোরক তরঙ্গের উৎপত্তি ঘটায়। বিস্ফোরণের ধ্বংসমাত্রা এর চারপাশের কম্প্রেসড বাতাস আর গতির ওপর নির্ভর করে। বিস্ফোরণের উৎস থেকে এটি যত দূরে ছড়িয়ে পড়ে, বাতাসের চাপ কমে যাওয়ার ফলে এর শক্তিও সেই অনুপাতে কমতে থাকে এবং ধ্বংসের অনুপাতও উৎস থেকে কম হয়। আনুমানিক এক কেজি বিস্ফোরক প্রায় এক ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদন করতে পারে। যখন এটি বাতাসের সঙ্গে মিশে যায় তখন যে উচ্চ চাপ ও তাপ উৎপন্ন হয় সেটিই এর বিস্ফোরণ ঘটাতে সহায়তা করে।

বিস্ফোরণ নিরোধক বিল্ডিংয়ের নকশা প্রণয়নের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বিস্ফোরণের ক্ষয়ক্ষতি থেকে ভবন ও এর অধিবাসীদের যতটা সম্ভব রক্ষা করা। এর একটি মৌলিক দিক হচ্ছে বড় ধরনের দুর্যোগ বা বিশাল অংশ ভেঙে পড়া থেকে ভবনকে সুরক্ষা দেওয়া, যাতে করে বিস্ফোরণ তরঙ্গ যেন বেশি জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এ কারণে দেখা যায়, এ ধরনের কাঠামোর নকশা করতে গিয়ে অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে হয়। যেমন- ভবনের সৌন্দর্য, নির্গমন ও বহির্গমনের সীমাবদ্ধতা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এমনকি নির্মাণের বাজেটও।

ভবনের নকশা প্রণয়নের শুরুতেই এই বিষয়গুলো বিবেচনা করলে বিস্ফোরণ নিরোধ অনেকটা ফলপ্রসূ হয়। যেমন- সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার ধরন, কাঠামো ও অবকাঠামোগত উপাদানের নিরাপত্তা, এর অধিবাসীর সংখ্যা, ভবনের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ আলোচনা ও ব্যবস্থাপনা করা। বাইরে থেকে হামলার আশঙ্কার ক্ষেত্রে ভবনের চারপাশে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গার সংকুলান করাও একটা পূর্বসতর্কতা যেন সহজেই উদ্ধারকাজ চালানো যায়। কিন্তু শহর এলাকা বিশেষত ঢাকার মতো এমন জনবহুল শহরে এমন ভবনের নকশা করা বেশ কষ্টসাধ্য, কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব। তারপরেও যতটুকু সম্ভব এটি মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। এমন ক্ষেত্রে বর্ণিত নকশার মডেল অনুসরণ করা যেতে পারে।

বোমারোধী প্রি-ফেব্রিকেটেড কংক্রিট দেয়াল

একটা ভবন কতটুকু চাপ সহ্য করতে পারবে তা অনেকটা এর গঠনের ওপরেও নির্ভর করে। যেমন খিলান ও গম্বুজ, ঘনাকার কাঠামোর থেকে বেশি চাপ সহ্য করতে সক্ষম। তাই ভবনের আকৃতির নকশা করার ক্ষেত্রেও সতর্কতা প্রয়োজন। জটিল ধরনের নকশার ভবন যেগুলোতে তরঙ্গ প্রতিফলিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি, সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া বুদ্ধিদীপ্ত হবে। এ ছাড়া দেখা গেছে প্রজেক্টিং ছাদ বা মেঝে ইংরেজি ইউ আকৃতির ভবন এ ক্ষেত্রে অনুপুযুক্ত। এমনকি বহুতল ভবনের থেকে একতলা ভবন বোমারোধে বেশি উপযুক্ত। আংশিক বা পুরোটাই মাটির সঙ্গে গাঁথা ভবনও বিস্ফোরণ রোধে বেশ কার্যকরী। মাটির বিস্ফোরণরোধী উপাদান এমনকি নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণেও সুরক্ষার কাজ করে।

ইন্টার্নাল লে-আউট আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি এমনভাবে করা উচিত যেন তা বহিঃআক্রমণের ক্ষতি থেকে এর অভ্যন্তরীণ মূল্যবান বস্তুকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে সক্ষম হয়। যেমন, বড় হল রুম বা এ রকম এলাকা রেইনফোর্স কংক্রিটের মাধ্যমে সুরক্ষিত করা, ডাবল-ডোর ব্যবহার করা, যেন বাইরের চাপ ভেতরে সহজে প্রবেশ করতে না পারে, প্রবেশমুখ ভেতরের দালান থেকে একটু দূরত্বে রাখা ইত্যাদি। দালানের ভেতরে ভূ-গর্ভস্থ করিডর বা কার পার্কিংয়ের জন্য জায়গা না রাখাই উত্তম অথবা এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন। একটি ভবনের অভ্যন্তরীণ লে-আউটের নকশা দেওয়া হলো-

বোমারোধী নির্মাণসামগ্রী
লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল প্রকৌশলী পাবলিক প্লেসে বিস্ফোরণের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর উদ্দেশ্যে একধরনের অতি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ফাইবার রেইনফোর্সড কংক্রিটের (Ultra High Performance Fiber Reinforced Concrete (UHPFRC) পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। গবেষকগণ দেখেছেন যে এ ধরনের কংক্রিট সাধারণ কংক্রিটের থেকে প্রায় এক হাজার গুণ বেশি শক্তি শোষণের ক্ষমতা রাখে। এই কংক্রিটের পেছনের প্যানেলে কোনো প্রকার শার্প্নেল সৃষ্টি না করেই অতি উচ্চমাত্রার বিস্ফোরণের ক্ষেত্রেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। অস্ট্রেলিয়াতে সরকারি ভবন নির্মাণে ইতিমধ্যে এ ধরনের কংক্রিটের ব্যবহার শুরু হয়েছে।

বিস্ফোরণ সহ্য ক্ষমতাসম্পন্ন কংক্রিট দেয়াল

বুলেটপ্রুফ কাচ সাধারণত পলিকার্বোনেট (Polycarbonate), থার্মোপ্লাস্টিক (Thermoplastic) এবং লেমিনেটেড গ্লাসের (Laminated glass) স্তর দিয়ে তৈরি করা। এর উপাদানগুলো এই কাচকে এমন দৃঢ়তা প্রদান করে যে সেটি বোমা বিস্ফোরণের ক্ষেত্রেও সমভাবে কাজ করে। বুলেটপ্রুফ কাচকে আরও উন্নত করার জন্য বিভিন্ন গবেষণা অব্যাহত আছে। মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয় (University of Missour) এবং সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় (University of Sydney) এ উদ্দেশে যৌথভাবে কাজ করছে।

ব্লাস্টপ্রুফ ফেব্রিক (BLAST-PROOF FABRIC) আরেকটি নির্মাণসামগ্রী। এই জেটিক্স ফেব্রিকের (Zetix Fabric) স্রষ্টা এবং অজিটিক্স লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক প্যাট্রিক হুড, হেলিক্যাল অজিটিকস (Helical-Auxetics) এর প্রধান বৈশিষ্ট্য বস্তুর টেনশনের সঙ্গে সঙ্গে এর নিজের আয়তন বৃদ্ধির এই নীতি এটি তৈরিতে কাজে লাগিয়েছে। এই ফেব্রিকের শুধু বহুবিদ ব্যবহার রয়েছে তা-ই নয় এটি, বেশ ব্যয়সাশ্রয়ী।

বোমপ্রুফ ওয়াল পেপার (BOMB-PROOF WALLPAPER) আরেকটি যুগান্তরী আবিষ্কার। এটি বেরি প্লাস্টিক (Berry Plastics) এবং ইউএস আর্মি করাপস অব ইঞ্জিনিয়ার্স (U.S. Army Corps of Engineers) এর যৌথ আবিষ্কার। এই এক্স-ফ্লেক্স অ্যাডহেসিভ শিট (X-Flex Adhesive Sheets) এবং পেস্ট যেকোনো দেয়ালে খুব সহজেই লাগানো যায়। এটি দেয়ালকে বিস্ফোরণের কারণে কুঁচকে যাওয়া বা ভেঙে পড়া থেকে সুরক্ষা দেয়।

বোমা নিরোধক সাইটের স্কেমেটিক লে-আউট

বিস্ফোরণ খুব স্বল্প সময়ে ঘটে এবং মাত্রাতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি করে, যা কি না একটি ভবনের সহনসীমার মধ্যে নাও থাকতে পারে। যা হোক, সঠিক নকশা প্রণয়ন এবং সঠিক উপাদানে ভবন নির্মাণ করলে বিস্ফোরণের রাসায়নিক ও কিনেটিক প্রতিক্রিয়া ও ক্ষয়ক্ষতি থেকে এটি রক্ষা করা সম্ভব।

ব্লাস্ট রেসিস্টেন্ট ভবনের জন্য কাঠামোগত সমাধান

  • মেঝের সাপোর্টিং কলাম বা দেয়াল থেকে যেন ধসে না পড়ে সে জন্য প্রি-কাস্ট কংক্রিট ব্যবহার করা যেতে পারে। সাপোর্টিং বিমের মধ্যে শিয়ার কানেক্টর, সংযোজন প্লাক, কংক্রিটের স্লাব ইত্যাদির ব্যবহার মেঝের কংক্রিটের দৃঢ়তা বাড়ায়।
  • বিম বা বাইরের কলামের সঙ্গে কড়ির সংযোগ নিয়মিত হারে বানাতে হবে, যেন সংযোগগুলোর মাঝের কবজা কড়ির প্লাস্টিক ক্যাপাসিটির থেকে বেশি হয় এবং যদি এটা ভেঙেও পড়ে তা যেন প্লাস্টিক কবজার কারণে হয়, সংযোগস্থলের দুর্বলতার জন্য নয়।
  • প্রধান বিমাগুলো যেন কাঠামোজুড়ে হয় এবং বাইরের কলামের সঙ্গে যেখানে যুক্ত হবে সেখানকার সংযোগের ধারণক্ষমতা মূল বিমের থেকে বেশি হবে না। এর ফলে অতিরিক্ত চাপ বিমকে বাঁকিয়ে ফেললেও এর কবজাগুলো চাপ সহ্য করে নেবে এবং সময়ক্ষেপণ করবে। ততক্ষণে বিস্ফোরণের মাত্রা কমে আসবে এবং সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে ভবন রক্ষা পাবে।
  • বাইরের প্রধান কলাম সম্প্রসারণশীল এবং মজবুত হবে যেন তা প্রধান বিমের প্লাস্টিক কবজার সঙ্গে জোড়া লাগানো অবস্থায়ও চাপ নিতে সক্ষম হয়। কলামের শিয়ার ক্যাপাসিটি বিমের মোমেন্ট কানেকশন জোন থেকে বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • অনেক সময় প্রধান বিম অভ্যন্তরীণ কলামের মাঝ দিয়ে যায়, যেটা নিচের দিকে এবং বিমের ওপরের দিকে আটকানো থাকে। এই ধরনের জোড়ার ক্ষেত্রে দেখতে হবে তা যেন যথেষ্ট মজবুত হয় এবং কলামের সঙ্গে বিমের পূর্ণ মোমেন্ট কানেকশন থাকে।
  • নিচ তলা ও একতলার কলাম সবচেয়ে বেশি ভার বহন করে। এটাই হামলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকে। এগুলো অন্যান্য তলার কলামের থেকে দীর্ঘ হয়। এদের স্থায়িত্ব অন্যদের থেকে একটু কম থাকে কেননা এদের মাঝে দূরত্বও বেশি হয়। তাই এগুলো নির্মাণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মেঝের বিম বা স্লাবের সঙ্গে এগুলো সামঞ্জস্য থাকা বাঞ্ছনীয়।
বিমান হামলায় বিধ্বস্ত টুইন টাওয়ার

যদি এইগুলো ঠিকভাবে করা সম্ভব হয়, তাহলে যদি দু-একটা কলাম ভেঙে পড়ে বা বিকৃত যায় তবুও বিমের গ্রিলেজ এবং প্রতি তলার কড়িকাঠ ও স্লাব বাকি ভারবহনে সক্ষম।

বোমারোধী ভবন নির্মাণে তাই এর নকশা থেকে শুরু করে নির্মাণ উপাদানের দিকেও নজর রাখতে হবে। এগুলো সঠিকভাবে করা গেলে সম্পূর্ণরূপে একটি ভবন বিস্ফোরণরোধক হিসেবে নির্মাণ করা না গেলেও আশা করা যায় এর ফলে সৃষ্ট জানমালের ক্ষয়ক্ষতিকে সর্বনিম্ন পর্যাযে রাখা সম্ভব হবে।

মহুয়া ফেরদৌসি

প্রকাশকাল: বন্ধন ৭৫ তম সংখ্যা, জুলাই ২০১৬

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top