‘বিদ্যুতের বিকল্প উৎস হিসেবে নবায়নযোগ্য সৌরশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে’
অধ্যাপক ড. সাইফুল হকের জন্ম ঢাকার টিকাটুলিতে, ১৯৫৮ সালের ১২ ডিসেম্বর। বাবা মুজিবল হক, মা আম্বিয়া খাতুন। বাবার কাছেই লেখাপড়ার হাতেখড়ি। ১৯৭৪ সালে এসএসসি ও ১৯৭৬ সালে নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন বিভাগে ভর্তি হন। অনার্স-মাস্টার্স শেষে একই বিষয়ে সৌরশক্তিতে নেন ডক্টরেট ডিগ্রি। প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
ড. সাইফুল হক বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবায়নযোগ্য শক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য। এ ছাড়া National Committee on Renewable Energy and Energy Efficiency, Ministry of Energy, Power and Mineral Resources (MEPMR)-এর অন্যতম সদস্য। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থায় তিনি নবায়নযোগ্য সৌরশক্তি বিষয়ে পাঠদান করেন। অংশ নিয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সৌরশক্তির ওপর অনুষ্ঠিত কর্মশালা ও প্রশিক্ষণে। দেশীয় সৌর প্যানেল উন্নয়নে কাজ করছেন প্রায় ৩০ বছর ধরে।
দেশ-বিদেশের জার্নালে নবায়নযোগ্য সৌরশক্তির ওপর তাঁর অনেক প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সৌরশক্তি সমিতির সম্পাদক এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল)-এর টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য। পাশাপাশি বাংলাদেশ গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করছেন। গুণী এ মানুষটি দেশে সৌরশক্তির বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ কার্যক্রমসহ নানামুখী প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন বন্ধন-এর সঙ্গে। আলাপচারিতার সঞ্চালক ছিলেন ম শাফিউল আল ইমরান।

বাংলাদেশের সৌর বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু বলুন?
বাংলাদেশে সৌর বিদ্যুতায়নের কয়েকটি দিক আছে, যার অন্যতম সোলার হোম সিস্টেম। যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ নেই সেসব এলাকার বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুৎ বসানো হয় এ পদ্ধতিতে। অন্যটি বায়োগ্যাসভিত্তিক সোলার পাওয়ার হোম। এ পদ্ধতিতে বায়োগ্যাস প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বিদ্যুৎ জেনারেটর সাহায্যে ওই সব বাড়িতে সরবরাহ করে বিদ্যুৎসুবিধা নিশ্চিত করা হয়। এর ব্যবহার ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এ ছাড়া কয়েক বছর ধরে শহরাঞ্চলে সোলার সিস্টেম বসানো হচ্ছে। বিশেষ করে অফিস এবং আবাসিক ভবনের ছাদে। এ ছাড়া আছে মিনিগ্রিড। মিনিগ্রিডে এক জায়গায় সোলার বেজড পাওয়ার প্ল্যান্ট বসিয়ে অনেক বাড়িতে সংযোগ দেওয়া যায়। সোলার প্রক্রিয়ার এ কয়েকটি পদ্ধতি আমাদের এখানে প্রচলিত। আর এর ফলে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে প্রায় ১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
গ্রামে প্রতিমাসে ৫০ হাজারের অধিক বাড়িতে নতুনভাবে সৌর বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এর মানে প্রতিমাসে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সৌর সেক্টর থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩০ লাখের বেশি বাড়ি সোলার হোম সিস্টেমের আত্ততায় এসেছে। আর বর্তমানে সরকারি নিয়মানুসারে নতুন যেকোনো বিল্ডিংয়ে যুক্ত হচ্ছে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ। সরকারি বর্তমান নিয়মে নতুন বিল্ডিংয়ে সৌরবিদ্যুৎ না থাকলে তাতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া যাবে না।
সোলার প্যানেল স্থাপন অত্যন্ত ব্যয়বহুল; সবার পক্ষে যার ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। তাহলে বাংলাদেশের মতো দেশ বিদ্যুৎসুবিধা পেতে এ পন্থা বেছে নিল কেন?
আমাদের এখানে এখনো প্রায় ৪০ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুৎসুবিধা নেই। কিছুদিন আগেও ৬০ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না, এটা একটা বড় বিষয়। তদুপরি কিছু কিছু জায়গা অনেক দুর্গম, যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সত্যিই কঠিন। এর কারণ মূলত বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীনালার কারণে ওই সব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া কঠিন। যদিও বা এ জায়গাগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়, তা হবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আরেকটি বিষয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেসব জ্বালানি লাগে যেমন- গ্যাস, তেল, কয়লা প্রভৃতি আমাদের দেশে কম। আর যে গ্যাস আছে তা উত্তোলন করা হচ্ছে আর কয়লা যা আছে তা বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি।
এ কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাথমিক যে এনার্জি দরকার, সেগুলো আমাদের দেশে তুলনামূলকভাবে কম। তা ছাড়া যতটুকু আছে তাও বহুল ব্যবহারে নিঃশেষ হচ্ছে। বিদ্যুতের বিকল্প উৎস হিসেবে নবায়নযোগ্য সৌরশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। স্বভাবতই এ দিকে যদি আমরা না যাই, তবে পিছিয়ে পড়ব। দেশে প্রত্যন্ত যেসব দূরবর্তী অঞ্চল রয়েছে, যেখানে গ্রিড লাইন যায় না, সেসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সোলার প্ল্যান্ট স্থাপন দারুণ কার্যকরী উদ্যোগ। আর প্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রতিযোগিতার ফলে ধীরে হলেও সোলার সিস্টেমের দাম কমে সাধারণের নাগালের মধ্যে আসছে।
সৌরবিদ্যুৎ ব্যতীত তুলনামূলক কম খরচে বিকল্প কোনো ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব?
সৌরবিদ্যুৎ ব্যতীত অন্য সবকিছুই সৌরবিদ্যুতের আত্ততাধীন। এর বাইরে আছে বায়ু গ্যাস, নদীর স্রোত, উইন্ডমিলের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন পদ্ধতি। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, এগুলো কোনোটিই সৌরবিদ্যুৎ ছাড়া সম্ভব নয়। সূর্য না থাকলে বাতাস হবে না আর বাতাস না থাকলে সমুদ্র্রের ঢেউ হবে না। কারণ, সূর্যই সব শক্তির আধার। তবে কিছু কিছু জ্বালানি আছে, যা বিকল্প জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
সরকারি কোনো অনুদান, প্রণোদনা এই খাতে রয়েছে কি? যদি না থাকে তবে যুক্ত করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে?
সরকারি সোলার হোম সিস্টেম ও বায়োগ্যাসে সরকারের কিছু অনুদান পাওয়া যায়। আর শহরাঞ্চলে যেসব আছে সেগুলোকে ঠিক সেভাবে অনুদান দেওয়া হয় না। তবে ভবিষ্যতে দেওয়ার চিন্তাভাবনা আছে।

বাংলাদেশে আমদানিকৃত সোলার প্যানেল কতটা মানসম্মত?
বাংলাদেশে প্রচলিত যে সোলার প্যানেলগুলো আমদানি করা হয়, এগুলো মান নির্ধারণের কোনো ব্যবস্থা নেই। এখন ভালো আবার খারাপ দুই মানেরই পাওয়া যায়। বর্তমানে মান সম্পর্কে কেউই সঠিক তথ্য দিতে পারছে না। এটার সার্বিক অবস্থা এমন ‘ভালো আছে কম, খারাপ আছে বেশি’। বাংলাদেশে কোনো সোলার প্যানেল টেস্ট ল্যাবরেটরি নেই।
সোলার এনার্জি নিয়ে আপনারা যাঁরা কাজ করছেন, এর মান নিশ্চিত করতে আপনাদের কোনো উদ্যোগ আছে কি?
এ জন্য কিছু আইন করা হয়েছে, ল্যাবরেটরি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই এটির উদ্বোধন করতে পারব। বুয়েট, সায়েন্স ল্যাবরেটরি বছর খানেকের মধ্যে সৌর ল্যাবরেটরি তৈরি করবে। ল্যাবরেটরি হয়ে গেলে এখানে আমরা সৌর প্যানেল টেস্ট করতে পারব।
গ্রামে সোলার প্যানেল স্থাপনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত অর্থনৈতিক সংস্থা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) অনুমোদন নিতে হয় না কিন্তু শহরের ক্ষেত্রে এমন বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি কেন?
গ্রামে সোলার সিস্টেম বসাতে ইডকলের অনুমোদন নিতে হয় না। এখানে যে কেউ যেকোনো সময় এটি বসাতে পারে। কিন্তু ইডকল থেকে যে ভাতা পাওয়া যায়, সেটা নিতে চাইলে ইডকলের পার্টনার অরগানাইজেশনের কাছ থেকে অনুমোদনের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে যারা ইডকলের নিয়ম মেনে সোলার সিস্টেম বসায়, তারা ওই ভাতা-সুবিধাটা পায়। এটা আবার কিস্তিতে দেওয়া যায়। এই কিস্তিতে দেওয়ায় তারা ইডকলের কাছ থেকে বাড়তি কিছু সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। তা ছাড়া যে কেউ ইচ্ছে করলে বাড়িতে কিংবা অফিসে সোলার সিস্টেম বসাতে পারে।
এ জন্য কোনো ধরনের অনুমতির প্রয়োজন নেই। তবে সম্প্রতি সরকার নিয়ম করেছে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে গেলে বাড়িতে অবশ্যই সোলার সিস্টেম থাকতে হবে। এখানে আরেকটি বিষয় জেনে রাখা ভালো যে পুরোনো সংযোগের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়াতে চাইলেও বাড়িতে অবশ্যই সোলার সিস্টেম সংযোগ থাকতে হবে।
সোলার প্যানেল একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপনসহ আরও কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয় কিন্তু সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এগুলো মানছে কি? না মানলে এগুলো দেখভালের দায়িত্ব কার?
ব্যাপারটা গ্রাহকের। যারা সরবরাহ করবে কিংবা বিক্রি করবে, তারা বিক্রয়োত্তর সেবা দেবে। সংযোগকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যারা নতুন সংযোগ নেবে, তারাই এ বিষয়গুলো খেয়াল করবে। যার বাসা বা স্থাপনায় বসানো হবে তারও বিষয়গুলো জানা দরকার। কারণ তথ্যগুলো খুব সহজ। এটা জানা থাকলে নিজেও খেয়াল রাখতে পারবে জিনিসগুলো ঠিকভাবে বসানো হচ্ছে কি না।
যে লক্ষ্য নিয়ে দেশে সোলার সিস্টেম চালু করা হয়েছিল তা কতটুকু পূরণ হয়েছে? যদি না হয় তার কারণটা কী?
যদি আমরা সরাসরি বলি তাহলে বলব এর বড় অংশই পূরণ হয়েছে। তবে আরও কিছু নিয়মনীতির প্রয়োজন, যাতে আগ্রহী হবে মানুষ। যে ভুলত্র“টি রয়েছে তা শুদ্ধ করতে হবে।
দেশে সৌরবিদ্যুৎ প্রসারে আপনাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সোলার এনার্জি সোসাইটির (BSES) ভূমিকা সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?
সারা দুনিয়ায় উন্নয়নের পথিকৃৎ হচ্ছে জ্বালানি শক্তি। আর এ জ্বালানি শক্তি যদি হয় পরিবেশবান্ধব তথা নবায়নযোগ্য, তবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সবুজ সুন্দর পৃথিবী উপহার দেওয়া সম্ভব। জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের মূল অন্তরায় টেকসই জ্বালানিস্বল্পতা। এই সংকট নিরসনে দেশের সর্বস্তরের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক মহলের সমন্বয়ে টেকসই জ্বালানিবিষয়ক সেল গঠন করে টেকসই জ্বালানি শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে চিহ্নিত করে কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।
এ যাবৎ দেশে নবায়নযোগ্য শক্তির পরিমাণ প্রায় ১১৫ মেগাওয়াট এবং জলশক্তি ২৩০ মেগাওয়াট। ভবিষ্যতে এতে আরও ৫০০ মেগাওয়াট সংযোজনের আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ সোলার এনার্জি সোসাইটি এ ব্যাপারে নানাভাবে মানুষকে সচেতন করে কীভাবে বিকল্প শক্তি সঞ্চয় করে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। কাজটি শুরু হয়েছে ১৯৯০ সাল থেকে।
বাংলাদেশ সোলার এনার্জি সোসাইটি সৌর বিদ্যুতায়নে কীভাবে কাজ করছে?
প্রচার-প্রচারণা, জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, সরকারি নিয়মনীতি যারা প্রণয়ন করে কাজের মাধ্যমে তাদের এ ব্যাপারে মোটিভেট করাসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অন্যান্য দেশ কীভাবে এই শক্তিটাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এসব বিষয়ে তথ্য দিয়ে সংগঠনটি সহায়তা করে থাকে।
সৌরবিদ্যুৎকে জনপ্রিয় করাসহ এর প্রচার এবং প্রসারে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
এর সুফল পেতে বর্তমানের কিছু ভুল আগে ঠিক করতে হবে। যেমন- সরকারি কিছু নিয়মনীতি ঠিকভাবে না নেওয়ায় শহুরে বাসিন্দারা অনেকেই এর ওপর ভীষণ বিরক্ত। ক্ষেত্রবিশেষে এটা তাদের কাছে বোঝার মতো। তবে এখন কিন্তু বোঝার সময় এসেছে এটা তাদের জন্য বোঝা না উপকারি। এর উপকারিতা পেতে তাদের ভালো সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তারা যেন বোঝে এটা নিলে আমার এই এই লাভ এবং সরকার থেকে আমি বিশেষ এই সুযোগ-সুবিধা পাব। এটি করতে হলে সরকারি নিয়মনীতিতে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যাতে তারা এটি ব্যবহারে উৎসাহী হয়।

দেশে সোলার প্যানেল তৈরির কোনো পরিকল্পনা আপনাদের বা সরকারের আছে কি? এ ধরনের কোনো গবেষণা এখানে হয়েছে কি?
দেশে এখন ছয় থেকে সাতটি কোম্পানি সোলার প্যানেল তৈরি করছে। ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। আশার কথা, আমাদের এখানে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান সোলার সিস্টেম তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করছে। এই কোম্পানিগুলো বাইরে থেকে যন্ত্রাংশ এনে দেশেই তৈরি করছে সোলার প্যানেল, যা রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। তবে দেশে এ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্র খুব সীমিত, যাও বা হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারেই অপ্রতুল। আর গবেষণার জন্য যে টাকা বরাদ্দ তাও কম। তা ছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই টাকা অন্যত্র কাজে লাগানো হচ্ছে।
বাংলাদেশের সোলার এনার্জি সোসাইটির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই?
আমাদের পরিকল্পনাটা হলো দেশে প্রযুক্তিটার ব্যাপক প্রচার ও প্রসার। দেশ-বিদেশের নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত এখানে এনে মানুষের মধ্যে তা প্রচার করা। সরকারি নীতিনির্ধারক পর্যায়ে বিষয়টির সহজ প্রয়োগে উপকৃত হয় মানুষ। সহজ নিয়মনীতি বলতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল বোঝায়, যেমন- একটা জায়গায় সোলার সিস্টেম লাগানোর কিছুদিন পর সরকার বিদ্যুৎ লাইন দিল। এতে কিন্তু সরকারের বিরাট অঙ্কের অর্থের অপচয় হলো। অথচ জায়গাটি ছিল সোলার সিস্টেমের উপযুক্ত। তা ছাড়া সরকার যে বিদ্যুৎ দিচ্ছে, সেটা গ্যাস থেকে দেবে, ডিজেল থেকে দেবে নাকি সোলার থেকে দেবে, সেটা ঠিক করতে হবে। বিদ্যুৎ সরকার কোন ধরনের এনার্জি থেকে দেবে, সেটা আগে ঠিক করতে হবে।
বন্ধনকে সময় দেওয়ায় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
তোমাকেও ধন্যবাদ।
- প্রকাশকাল: বন্ধন ৪৬ তম সংখ্যা, ফেবু্রুয়ারি ২০১৪