সরকার সহায়তা করলে সাহারার মতন স্যাটেলাইট সিটি আমরাও করতে পারব

প্রকৌশলী তানভীরুল হক প্রবাল। জন্ম ১৯৬৩ সালের ২৯ অক্টোবর। পিতা প্রয়াত আনোয়ারুল হক ও মা খালেদা এদিব চৌধুরী। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ব্যাচেলর ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (পুরকৌশল) উত্তীর্ণ। রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বিল্ডিং ফর ফিউচার লিঃ-এ কর্মরত। এ ছাড়াও এফপিডি, এইচটিএল, টাইমপাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান, পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মতো দায়িত্বপূর্র্ণ পদে কাজ করেছেন। স্থাপত্য ও নির্মাণ পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। এ দেশে বিদেশী বিনিয়োগ, আবাসন খাতের সমস্যা, সমাধান ও এর সম্ভাবনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন বন্ধনের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিস রহমান

আবাসন শিল্পের বর্তমান অবস্থাকে কিভাবে দেখছেন?

দেশের আবাসন ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। এ ব্যবসার অবস্থা এখন শেয়ার ব্যবসার চেয়েও খারাপ। গত ২ বছর ধরে বেচাকেনা একদম কম। রয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাব। লোকজন পুরাতন ফ্ল্যাট খুঁজছে। নতুন ফ্ল্যাট কেনার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের সংযোগ না থাকলে কেন একজন লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে এমন একটি ফ্ল্যাট কিনবে। প্রয়োজনীয় সংযোগ না থাকায় এসব ফ্ল্যাট ভাড়াও হচ্ছে না। দিন দিন বাড়ছে আবাসন ব্যবসায়ীদের ভ্যাট ও ট্যাক্সের পরিমাণ। এক কোটি টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনলে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ১২-১৪ লক্ষ টাকা। এসব কারণে নতুন ফ্ল্যাটের প্রতি উৎসাহ হারাচ্ছে অনেকেই। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে আবাসন ব্যবসায়ীদের উপর। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা, আবাসন সেক্টরে হাউজিংয়ের মতো লোন দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। লোন ব্যবস্থা আরো সহজ করতে হবে। আবাসনের সাথে জড়িত নির্মাণসামগ্রী যেমনÑ সিমেন্ট, রড, কাঠ, টাইলস, গ্লাসসহ অন্যান্য উপকরনের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে হবে।

আবাসন শিল্পের বর্তমান অবস্থা যে খুব একটা ভালো নয় সেটি আপনি, আমি সবাই বেশ ভালো করেই জানি। তার পরও একজন প্রফেশনাল হিসেবে দীর্ঘদিন যেহেতু এ সেক্টরে কাজ করছি, তাই সামাজিকভাবে একটা দায়বদ্ধতা যেমন আছে তেমনি শুধু আমিই নই বরং খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম পেশাজীবী সকলেরই রুজি রোজগারের বিষয়টিও এখন এ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। তাই এক কথায় বলতে পারি কোনমতে চালিয়ে নিচ্ছি আর কি! তা ছাড়া সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও এখন ভীষণ নাজুক। প্রতিটি সেক্টরই সংগ্রাম করে কোনো রকমে টিকে আছে। এ রকম একটি প্র্রেক্ষাপটে হাউজিং সেক্টরে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, মন্দাভাব বিরাজ করবে সেটিই বোধহয় স্বাভাবিক।

বিদ্যুৎ সংযোগ শর্তসাপেক্ষে দেওয়া হলেও গ্যাস সংযোগ এখনও বন্ধ। ফ্ল্যাট হস্তান্তরের কাজ এগোচ্ছে কিভাবে?

দেখুন বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগ নিয়ে আমরা অনেক দেন-দরবার করেছি। সরকার বিদ্যুৎ সংযোগের সাথে সোলার প্যানেলের বিষয়টিকে শর্ত হিসেবে জুড়ে দিয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি সোলারের বিপক্ষে নই। তবে সবাইকে বুঝতে হবে যে, সোলার প্যানেলই বর্তমান সমস্যার কার্যকর কোনো সমাধান এনে দেবে না। উন্নত দেশগুলোতে বহু আগে থেকেই সোলার সিস্টেম কার্যকর, আমাদের এখানেও সেটি কার্যকর হতে পারে। তবে একেবারে রাতারাতি নয় বরং ধীরে ধীরে এটিকে কার্যকর করতে হবে। আর গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে সিলিন্ডারের প্রচলন এটিও খুব দূরদর্শী কোনো সিদ্ধান্ত বলে আমি মনে করি না। কারণ সিলিন্ডার একটি ভারি জিনিস, ১৫ থেকে ২০ তলা একটি বিল্ডিংয়ে এগুলো ওঠানো-নামানোও বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ অবস্থায় আমার পরামর্শÑ রাজধানীতে সিলিন্ডার স্টেশন তৈরির পাশাপাশি বিদ্যমান গ্যাসের মূল্যকে প্রয়োজনে অনেকগুণ বাড়িয়ে হলেও অব্যাহত রাখা এবং শহরের বাইরে গ্রামাঞ্চলে সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা উচিত। সরকারকেও চলমান সঙ্কট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং সেটি বিশাল এই সেক্টরটিকে বাঁচানোর স্বার্থেই। না হলে লক্ষ লক্ষ লোক বেকার হয়ে পড়বে, অর্থনীতিতে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বাংলাদেশের আবাসন শিল্প এবং পরিবেশের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে কিছু বলুন?

বাংলাদেশের আবাসন শিল্পের বয়স প্রায় ৩০ বছর। রিহ্যাব প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে। শুরুর সময় এর সদস্য ছিল ৫ থেকে ৭। ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রায় ১৮ বছর হয়ে গেছে। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১২০০-এর উপরে। একসময় আবাসন শিল্প শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক ছিল। মজার ব্যাপার হলো, এখন এই শিল্প আর ঢাকা কেন্দ্রিক নেই। এটি এখন সারা দেশের বড় বড় শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার বাইরে যেমনÑ চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, নোয়াখাালী, চাঁদপুর, ফেনী, বরিশাল, পটুয়াখালী, রংপুর, বগুড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ৭ থেকে ৮ বছর আগে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে এই শিল্পের যাত্রা। বর্তমানে এ শিল্পের একটি বড় বাজার রয়েছে সিলেটে। সেখানে অনেক কাজ হচ্ছে। গত চার পাঁচ বছরে ঢাকার বাইরে ছড়িয়েছে এ শিল্প। এটি এখন বিকাশমান একটি শিল্প। পরিবেশের উপর এর প্রভাব বলতে গেলে অনেক কিছু বলা যাবে। ঢাকা শহরে প্রথম দিকে রাজউক থেকে একটি অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করা হতো। ইচ্ছা মতো তখন ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০০৩-০৪ সাল থেকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা নিয়ে কাজ শুরু হয়। আর এই বিধিমালার মূল কাজ ছিল পরিবেশের উপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না এমন আবাসনস্থল নির্মাণ করা। আমি তখন এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। এখন এ আইনের আওতায় রয়েছে, কেউ বাড়ি নির্মাণ করতে চাইলে তাকে কিছু নিয়ম পালন করতে হবে। তা না হলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। গ্রামেগঞ্জে বা যেখানেই বড় কোনো বাড়ি নির্মাণ করা হবে সেখানেই অনুমতি নিয়ে একটি নিয়ম অনুসরণ করলে এ কাজের কোনো খারাপ প্রভাব থাকবে না।

তৎকালীন সরকার ও রিহ্যাব নেতারা একাধিক বার বসে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করেন। এই বিধিমালা সরকারের পক্ষ থেকে চ‚ড়ান্ত করা হয়। অনেক আলোচনার পর ২০০৮ সালে এটি চ‚ড়ান্ত হয়; যাকে বলা হয় এফএআর। এফএআরের একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে। রাস্তার উপর নির্ভর করে আপনার ভবনের আকার ছোট বড় করতে হবে। রাস্তা ছোট হলে আপনি বড় ইমারত নির্মাণ করতে পারবেন না। এখন পর্যন্ত এটিই সর্বশেষ বিধিমালা। আর এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের আবাসন খাতের উন্নয়ন পরিবেশের জন্য হুমকি হবে না। এখন ভবন তৈরির ক্ষেত্রে অনেক খোলা স্থান রাখতে হচ্ছে। ফলে ভবনে আলো বাতাস প্রবেশ করছে সহজে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খোলা স্থান রাখলে বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাবে। আপনি যদি নিচের দিকে স্থান ছেড়ে দেন তা হলে আপনি ৫ তলা ভবনের স্থানে ৭ তলা ভবন নির্মাণ করতে পারবেন। এটির অনেক ভালো দিক রয়েছে। বর্তমান সময়ে পরিবেশের উপরে বিরূপ প্রভাব কমে আসছে। ঢাকার বাইরে এফএআর অনুসরণ করতে হয় না। পরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য সারা দেশে এ আইন থাকা প্রয়োজন। আজকের এই ঢাকার মতো অন্য কোনো নগর হোক তা আর কারো কাম্য নয়।

ঢাকার বাইরে যে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে সরকারের নজর দেওয়া উচিত। তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ইচ্ছা মতো ভবন নির্মাণ হচ্ছে। কক্সবাজারের জন্য সরকারের বিধিনিষেধ রয়েছে। বেসরকারি সেক্টর তো আর বসে থাকবে না। তারা উন্নয়ন কর্মকাÐ চালিয়ে যাবে। আমি সরকারকে বলব, যত দ্রুত সম্ভব ঢাকার বাইরের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে। তা হলে এই সেক্টরের আরো উন্নয়ন হবে। সরকারের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। সরকার তার দায়িত্ব পালনে দেরি করলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় আবাসন বিষয়টা কিভাবে রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

সরকারি ও বেসরকারি নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সেক্টরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক যেমনÑ স্থাপত্য ও পুরকৌশল বিষয় পড়াশোনা হচ্ছে। আবাসন শিল্পের সাথে শুধু স্থাপত্য কিংবা সিভিল জড়িত নয়। এখানে জড়িত আছে অ্যাকাউন্টিং, মার্কেটিং, প্লানিংসহ নানান সেক্টর। এসব বিষয়ে মৌলিক শিক্ষা দানের প্রয়োজন রয়েছে। আবাসনে জমিজমা নিয়ে অনেক কাজ থাকে। থাকে আইনগত অনেক বিষয়। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিছুদিন আগে এর উপর একটি বিষয় খুলেছে। সেখানে এসব দিক বিবেচনায় রেখে পড়ানো হচ্ছে। সেখানে পড়ানো হবে আবাসন নিয়ে যেসব আইন রয়েছে সেসব সম্পর্কে। জমিজমার নানান কাজ সম্পর্কে তাদের মৌলিক জ্ঞান থাকবে। ফলে তারা সামনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারবে।

স্থাপত্য শিক্ষায় এ দেশের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও পরবর্তীতে কাজের সুযোগ ও কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে বলুন?

আগে এ বিষয়টি শুধু বুয়েটে পড়ানো হতো। শিক্ষার্থী ছিল মাত্র ৩০ জন। এখন সব মিলিয়ে অনেক শিক্ষার্থী। কেউ তো আর বসে নেই। সবাই কাজ করছে। স্থাপত্য শুধু ভবন নির্মাণ ও ডিজাইন করাই নয়। এর সাথে শৈল্পিক অনেক কাজ রয়েছে। ভবনের ডেকোরেশনের কাজ নির্ভর করে একজন স্থপতির সৃজনশীলতার উপর।

স্থপতিরা সুন্দর একটি আবাসন উপহার দেন। এখনকার অফিসের ডেকোরেশন অনেক সুন্দর। ব্যাংকের অফিসকক্ষগুলো দেখতে অনেক ভালো, এটা স্থপতিদের অবদান। দেশের বাইরে এদের কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে। ভালো ছবি আঁকতে পারে বা যে ভালো গণিত বোঝে তারই স্থাপত্য নিয়ে পড়া উচিত। একজন কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক কিংবা একজন চিত্রশিল্পীর ভাবনা যেমন একজন স্থপতির ভাবনাও ঠিক তেমনই।

আবাসন ব্যবসা কি পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ? আপনার ভাবনাটা কী?

দুই রকমের হয়ে থাকে। এক হচ্ছে ভ‚মির ব্যবসা অন্যটি অ্যাপার্টমেন্টের ব্যবসা। যারা ভ‚মি বা ল্যান্ড ব্যবসা করে তাদের অনেক আইন মেনে চলতে হয়। প্রথমত ভ‚মি উন্নয়ন বিধিমালা আর জলাধার আইন। জলাধার আইন যারা ভঙ্গ করছে তাদের কাজ পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ ব্যাপারে বিস্তারিত পত্রিকা দেখলে বোঝা যায়। জলাধার ভরাট করে অনেকে জমি বিক্রি করছে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে। এ ব্যাপারে সরকারের অনেক কিছু করার আছে। তা না করে সরকারই বরং এ কাজের সাথে জড়িত। পূর্বাঞ্চল প্রকল্পে সরকার নিজে জলাধার ভরাট করে প্রকল্পের জমি তৈরি করেছে। রাজউক করেছে অতীতে, প্রাইভেট সেক্টরও করছে। এ দুটির সমন্বয় হওয়া উচিত। আমার মনে হয়, জলাধার আইন মেনে চলা উচিত। আমাদের দেশে জমির স্বল্পতা রয়েছে। সবাই যদি জলাধার আইনে পড়ে তা হলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এটা একটি বড় সমস্যা। প্যারিসের মতো শহরের মাঝ দিয়ে জলাধার চলে গেছে। তারা সেভাবে উন্নয়ন করেছে। তবে এগুলো ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। আমরা এই মুহ‚র্তে করতে পারব না। তবে এগুলো ভবিষ্যতে কাজে লাগানো যাবে। আমাদের দেশে যেসব নতুন নতুন প্লানার ও স্থপতি কাজ করছে তারা ভালো করছেন। নিশ্চয়ই ভালো কিছু হবে আমাদের দেশেও। এ অবস্থা আর বেশি দিন থাকবে না।

আমাদের দেশের অবাসন খাতের উন্নয়নে করণীয় কী? 

এটা খুব সাধারণ একটা প্রশ্ন। আবাসন খাতের উন্নয়নের সাথে অন্যান্য সেক্টরের উন্নয়নও জড়িত। এ শিল্পের সাথে সাথে যুক্ত নির্মাণসামগ্রীর মূল্য স্থিতিশীল রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রড, সিমেন্টের মূল্যকে স্থিতিশীল না রাখতে পারলে খুবই অসুবিধা হবে।

আবাসন খাতের উন্নয়নে জমির ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের সেদিকে নজর দিয়ে কাজ করে যেতে হবে। বেসরকারিভাবে এ কাজ করার চেয়ে সরকারিভাবে করলে ভালো হয়। বেসরকারি সেক্টর হলে তারা বেশি বেশি কাজ করতে পারে। সরকার তাদের জমি দিয়ে সহায়তা করতে পারে। ব্যাংকগুলো ঋণের ব্যবস্থা করতে পারে। একটি ফ্ল্যাট কিনতে ১৬-১৭ ভাগ সুদ দিতে হলে কেউ তা নিতে চাইবে না। যদি একজন দেখেন ৫-৬ ভাগ সুদে একটি ফ্ল্যাট নেওয়া যাচ্ছে তবে সে সহজে তা নেবে। আবাসন মানুষের মৌলিক অধিকার। সরকারের উচিত সে অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনগণকে সহায়তা করা। আমাদের সংবিধানে বলা আছে, আমাদের আবাসন ব্যবস্থা এবং এর নিশ্চয়তা দেবে সরকার। ফকির থেকে শুরু করে ধনী সকলের অধিকার রয়েছে নিজস্ব বাসস্থানে থাকার। 

১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে একজনকে যেন একটি ফ্ল্যাট দেওয়া যায় তার জন্য সরকারকে এ ধরনের বাজেট রাখতে হবে। এবারের বাজেটে এমন কিছু দেখতে পাইনি। এবারের বাজেটে রিহ্যাবের প্রস্তাব ছিল দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা। কিন্তু তা আমরা দেখিনি।

আমি যদি ঢাকা থেকে কুমিল্লা আধা ঘণ্টায় পৌঁছতে পারি, তা হলে ঢাকায় থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি কুমিল্লা থেকে ঢাকা অফিস করতে পারব। বহু দেশে বড় বড় শহরের পাশের শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার বা তারও অধিক দূর থেকে এসে অফিস করছে কর্মজীবী মানুষ।

জনসংখ্যার সাথে নগরায়ণ ও গৃহ সংস্থানের সম্পর্কটা কী?

আমাদের দেশে চার থেকে পাঁচ শতাংশ হারে নগরায়ণ হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে এ হার এক ভাগ। তাদের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়ে গেছে। আমরা একটু ধীরে ধীরে নগরায়ণের দিকে এগোচ্ছি। আগে যেখানে ৩০ লাখ লোক বাস করত, সেখানে এখন বাস করছে এক কোটি ত্রিশ লাখ লোক। এই হার বাড়ছে দ্রুতই। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, যেখানে মোবাইল চলে এসেছে কিছুদিন পর হয়তো পাতাল রেল চলে আসবে। রয়েছে এসি বাস ট্রান্সপোর্ট সুবিধা। সে জন্য জনসংখ্যার সাথে সাথে বাড়বে নগরায়ণও সেইসাথে বাড়াতে থাকবে বাসস্থানের সাথে এর সম্পর্কটা। দেখুন, জীবিকার তাগিদেই কিন্তু ফ্লাইওভারগুলো হচ্ছে। ফ্লাইওভারগুলো হলে যানজটের কেমন অবস্থা হবে? তখন কিন্তু অনেক লোক অনায়াসেই ঢাকার বাইরে গিয়ে থাকবে। যদি উত্তরা থেকে পান্থপথ আসতে আমার ২ ঘণ্টা সময় লাগে আর যদি দেখি উত্তরা থেকে কুমিল্লা যেতে ৩০ মিনিট লাগে তখন চাপও কমে আসবে নগরায়ণে। তখন ওদিকে চাপ বাড়বে সে জন্য ডিসেন্ট্রালাইজেশন বা বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে; এদিকে সরকারের কিছু কাজ আছে। সরকার যেটা করতে পারে, বিভিন্ন অফিস আদালত ঢাকার বাইরে নিতে পারে। সবাই ঢাকায় থাকতে চায়। সেকেন্ড ক্যাপিটাল হতে পারে জাহাঙ্গীরনগর। কিছু ডিপার্টমেন্ট কুমিল্লা, কিছু ময়মনসিংহ এবং কিছু কাছাকাছি রেখে সুন্দর পরিবেশ, সুন্দর স্কুল কলেজ স্থাপন করা যেতে পারে। এখন অনেকেই ভালো স্কুল কলেজের জন্য ঢাকা কেন্দ্রিক হয়। নগরায়ণ বলতে কিন্তু ভালো স্কুল কলেজ, রেস্টুরেন্ট, সিনেমা হল, সবকিছুকেই বোঝায়। এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে পরিবহনের। এটিও কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্র্ণ বিষয়।

একজন সাধারণ মানুষ বাড়ি নির্মাণের পূর্বে কোন্ দিকগুলো বিবেচনায় নেবে?

আমি ধরে নিলাম যিনি বাড়ি বানাবেন তার জমি আছে। জমি নিয়ে কথা বলে লাভ নেই। নির্মাণের সময় প্রথমেই মাটি টেস্ট করাবেন, দেখবেন তা ভ‚মিকম্প প্রতিরোধক কিনা এবং সেখানে বিল্ডিংয়ের পাইলিং হবে কিনা। অবশ্যই একজন ভালো প্রকৌশলী দিয়ে মাটি পরীক্ষা করাতে হবে। দ্বিতীয়ত একজন প্রোপার আর্কিটেক্ট দিয়ে ডিজাইন করাতে হবে। একজন সাধারণ মিস্ত্রি দিয়ে করালে হবে না। যে সব এসটিআর রুলস আছে তা মেনে চলতে হবে এবং পরিবেশবান্ধব কিছু করবে যেখানে আলো বাতাস ঢুকবে। তো আমি মনে করি যে কোনো লোক বাড়ি নির্মাণের সময় একজন ভালো আর্কিটেক্ট নিয়োগ দেবেন। মাটি পরীক্ষা করাবেন, তার পর উনি অবশ্যই রাজউক থেকে প্লান পাস করাবেন যদি ঢাকা শহর হয়, চিটাগাং হলে সিডিএ বা কেডিএ থেকে কিংবা মফস্বল হলে জেলা অথবা উপজেলা থেকে পাস করাবেন। আপনার প্রশ্ন আমি ধরে নিচ্ছি ঢাকা শহরের তিনি তার চাহিদা অনুযায়ী বাড়ি করবেন তার কী বাজেট আছে তিনি কয়তলা বাড়ি নির্মাণ করবেন। ওই এলাকায় কয়তলা করার অনুমতি আছে। এখানে ভ‚মিকম্পের জন্য কী ধরনের ম্যটেরিয়ালগুলো ব্যবহার করাবেন? তার ভবিষ্যত পরিকল্পনাটা কী? ছেলেমেয়ে কয়জন, ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদা ফ্ল্যাট তৈরি করতে হবে কিনা এ সব বিষয় মাথায় রেখে বাড়ি নির্মাণ করতে হবে। আমাদের দেশে সবাই বিলাসবহুল বাড়ি চায়। একটা ছোট ফ্ল্যাট, তিনটা টয়লেট চায় অথচ আপনি বাইরে লন্ডন কিংবা অন্য বড় শহরে যান, দেখবেন সব জায়গাতে ২টা টয়লেট। আমরা এখানে কাজের লোকের জন্য আলাদা টয়লেট চাইব। এই টয়লেটের জন্য অনেক টাকা ব্যয় হয়। এখন ডিজাইনের ইস্যু। উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম বাতাসের ইস্যুগুলো থাকে। সবগুলোকে মাথায় রেখে যা ক্যাপাসিটি তা বিবেচনায় নিয়ে অবশ্যই বিধিমালা মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে। বিএনবিসি মেইনটেইন করতে হবে। তবেই একটা সুস্থ, সুন্দর ও পরিবেশবান্ধব ভ‚মিকম্প প্রতিরোধক বিল্ডিং হতে হবে। এ জিনিসগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করতে কী কী করা যেতে পারে? একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার ভাবনাটা কী? 

নগরায়ণ বলতে তো শুধু হাউজিং নয়, নগরায়ণ বলতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল, মানুষের হাঁটার জায়গা, লেক থেকে শুরু করে সবই আসলে নগরায়ণের সাথে সম্পৃক্ত। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে ভাবতে হবে আমাদের জমির পরিমাণ কম। আমি যদি ভারতের মতো ভাবি, আমি যদি আমেরিকার নগরায়ণের মতো ভাবি তবে হবে না। আমাকে ভাবতে হবে হংকংয়ের মতো করে। আমি ঠিক সিঙ্গাপুরের মতো করেও যদি ভাবি তাহলেও হবে না। ওদের অনেক জমি ছাড়ার স্কোপ আছে। তার পর তারা পরিবেশবান্ধব গৃহ নির্মাণ করে।

জনগণকে রাস্তায় সুন্দরভাবে চলাচলের নিশ্চয়তা দিতে হবে। সে রাস্তায় হাঁটার সময় ছিনতাইকারী তাকে ধরবে না। ফুটপাথে চলার সময় রাস্তার গাড়ি এসে তাকে আহত করবে না বা রাস্তার ধুলা তাকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে ফেলে দেবে না। শিক্ষার্থী হেঁটে স্কুলে যাবে এবং আসবে, তাকে কেউ সমস্যায় ফেলবে না। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। যে কোনো শিক্ষার্থী কিংবা তার পরিবারকে এমন নিশ্চয়তা তো সরকারকেই দিতে হবে। এটা তো খুব বেশি চাওয়া না সরকারের কাছে। একজন সাধারণ মানুষ সরকারের কাছে এমনটি আশা করতেই পারে। আমরা আশা করতে পারি, আমাদের জন্য থাকবে একটি নিরাপদ ঢাকা শহর।

স্যাটেলাইট শহর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দেশীয় কোম্পানির বিনিয়োগ কি যথেষ্ট বলে মনে করেন?

ঢাকার চারপাশে সাহারা গ্রুপ যে স্যাটেলাইট সিটি করবে, আমাদের দেশের আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোরও এ ব্যাপারে যথেষ্ট সামর্থ্য ছিল। আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাজ এখন বিশ্বমানের। আমি আমাদের দেশের বিদেশী বিনিয়োগটাকে ভালোভাবে দেখছি। কিন্তু এটা যদি আবাসন খাতের বাইরের অন্য কোনো খাতের হতো তা হলে ভালো হতো। আবাসন খাতের উন্নয়নের জন্য সাহারার সাথে চুক্তি হতে দেখছি। এ চুক্তি করার আগে সরকার রিহ্যাবের সাথে আলোচনা করতে পারত। আমরা গত ১৮ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে আবাসন উন্নয়নে বাংলাদেশে কাজ করছি। এ খাতে উন্নয়নে আমাদের কোনো বাধা থাকবে না। তবে সরকারের একক এ সিদ্ধান্তটিকে ভালোভাবে দেখছে না রিহ্যাব।

এ সেক্টরের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক কোটি লোক জড়িত। এমন একটি সেক্টরের উন্নয়নে সরকারের একক সিদ্ধান্ত কতটা কাজে আসবে সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। 

সরকার যদি সাহারাকে জমি দেয় তাহলে কম মূল্যে সাহারা জমি কিনে ব্যবসা করবে। আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সুযোগটা দেওয়া হচ্ছে না। তারা বলছে, যে পরিমাণ বিনিয়োগ তারা করবে আসলে সে পরিমাণ করে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের দেশীয় নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। যেমন সিমেন্ট ও রডসহ অন্যান্য উপকরণ। এসব বিষয় চ‚ড়ান্ত করা উচিত। কোনো দেশে বিনিয়োগ করতে হলে দেশটিতে যে আইন রয়েছে সে সব আইন মেনে সাহারা আমাদের দেশে ব্যবসা করতে এসেছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ কারো সুবিধা দেওয়ার জন্য এমনটি যেন না হয়।

সাহারা গ্রুপ কি সরকারের তরফ থেকে জমি পাচ্ছে?

আমার মনে হয়, সরকার এমন কাজ করবে না। তবে সাহারার চেয়ারম্যানের বক্তব্যে এমনটা মনে হয়েছে। আমাদের দেশে ব্যবসা করতে হলে আমরা যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি সেও সেটা পাবে। তার জন্য আলাদা আইন করে ব্যবসা করালে আমরা লাভবান হতে পারব না। আমাদের দেশের কাজের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক অনেক জটিলতা পোহাতে হয়। তারাও সেটা পোহাবে। তাদের জন্য নিশ্চয় নতুন কোনো আইন থাকবে না। সরকার যদি তাদের কারণে এ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেন তার ফল তো আমরাও ভোগ করব। সরকার সহায়তা করলে সাহারার মতন স্যাটেলাইট সিটি আমরাও করতে পারব।

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য কী? অর্থাৎ দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের কোন্ কোন্ বিষয়কে বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন?

এ বছরের ১৮ এপ্রিল আমাদের প্রতিষ্ঠানের (বিল্ডিং ফর ফিউচার লিঃ) বয়স ১৮ বছর পূর্র্ণ হলো। আমরা এই ১৮ বছরে ছোট বড় অনেক প্রজেক্ট করেছি এবং সেগুলো সবই দীর্ঘস্থায়ী প্রকল্প। আমাদের কোনো ল্যান্ড প্রজেক্ট নেই। আমরা প্রজেক্ট করার সময় অবশ্যই নীতিমালা মেনে চলার চেষ্টা করি এবং আমরা সময়মতো হস্তান্তর করার চেষ্টাও করে থাকি। আল্লাহর রহমতে আমাদের মার্কেটে কোনো প্রকার বদনাম নেই। সবাই জানে যে, বিল্ডিং ফর ফিউচার লিঃ-এর কাজের মান ভালো। এর কাজের কোয়ালিটি ভালো এবং আমাদের বৈশিষ্ট্য দূর থেকে দেখলেও বোঝা যায়। আমাদের প্রকল্পে অনেক গাছপালা থাকে। আমরা যখন প্রকল্পগুলো হস্তান্তর করি তখন বাউন্ডারিতে কিছু গাছপালা রোপণ করি। ছাদের উপরও বাগান করার চেষ্টা করি। বিষয়টিতে আমরা অনেক জোর দিয়ে থাকি। যদিও সরকার গত ১/২ বছর ধরে ছাদের উপর সোলার প্যানেল বসানোর কথা বলে আসছে। সোলার প্যানেল না বসালে বিদ্যুৎ সংযোগ দেবে না। এটা সবার জন্যই। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি এটা সমর্থন করি না। কেননা সোলার প্যানেল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তা কখনোই শহরে ব্যবহার করা উচিত নয়।

সোলার প্যানেলের ব্যবহার গ্রামে করা উচিত। মাঠের মধ্যে সোলার প্যানেল স্থাপন করলে জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা যাবে। সোলার দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, এমনকি তা ন্যাশনাল গ্রিডেও বিদ্যুৎ যোগ করবে। আমাদের এ রকম চিন্তা থাকা উচিত অথচ আমরা একটা বিল্ডিং করছি সেখানে ছোট একটা ছাদ যেখানে প্যানেল বসিয়ে জায়গাটা নষ্ট করছি। আমরা আমাদের এ প্যানেল বসানোর আগের কথা বলছি। আমরা ছাদে প্যানেল বসানোর চেষ্টা করতাম। কিন্তু এখন ঢাকার বাইরে করি। আমাদের বৈশিষ্ট্য আমরা ভবনসমূহে যথেষ্ট আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাননীয় চেয়ারম্যান সাহেব কাজী আনিস উদ্দিন ইকবাল প্রধান স্থপতির দায়িত্ব পালন করেন। আমরা বর্তমানে কিছুটা হাইরাইজ বিল্ডিং করছি। এখন আমাদের ২৫ তলা বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে। এ ছাড়াও ১৫ ও ১৮ তলা বিশিষ্ট ভবনের কাজ বেশি। তবে সত্যি কথা বলতে কী, বর্তমানে যারা বিল্ডিং করছে এফএআরের কারণে সবার বিল্ডিং ৯-১০ তলা হয়ে যাচ্ছে।

রিহ্যাবের সঙ্গে আপনার সম্পৃক্ততা নিয়ে কিছু বলুন?

শুরুর দিকে আমরা রিহ্যাবের সদস্য ছিলাম মাত্র ৫-৭ জন। এখন আমরা ১২০০ সদস্যের এক বিশাল পরিবার। শুরু থেকে আমরা আজ এই পর্যায়ে এসেছি। আমার সম্পর্কে যদি বলতে হয় তা হলে বলব আমি ২০০২-২০০৩ সালের রিহ্যাব কমিটিতে তৌফিক ভাইয়ের মাধ্যমে আসি। এর আগে আমি একজন সাধারণ সদস্য ছিলাম। অর্থাৎ অনেক বছর আগে থেকেই আমি রিহ্যাবের সাথে জড়িত। এর পর ২০০৪-২০০৫ সালে যখন যুগ্ম সচিব হলাম এবং দায়িত্ব পালন করতে হলো, তখন থেকেই জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে আমাকে তৈরি করা হচ্ছিল। এর পরই মূলত কাজ শুরু। এক সময় সভাপতি হলাম। এখন পর্যন্ত কাজ করছি আবাসন মালিকদের এ সংগঠনটিতে।

প্রকৌশলী তানভীরুল হক প্রবাল

প্রকাশকাল: বন্ধন ২৭ তম সংখ্যা, জুলাই ২০১২

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top