বিল্ডিংয়ের ভিত্তি স্থাপনে কাস্ট ইন সিটু পাইল

ভবন থেকে আসা সব লোডকে মাটির শক্ত ভারবহনকারী স্তরে ফুটিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি যদি উত্তম ভারবহন ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো স্তর পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে অগভীর ভিত্তিই যথেষ্ট; অন্যথায় প্রয়োজনীয় ভারবহন ক্ষমতাসম্পন্ন স্তর পাওয়ার জন্য মাটির অনেক গভীরে কাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করা হয়। তা ছাড়া কাঠামোর দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্যও অনেক সময় গভীর ভিত্তির প্রয়োজন। 

প্রকারভেদের রকমফের

সাধারণত নির্মাণকৌশল অনুযায়ী গভীর ভিত্তি তিন প্রকার। যথা-

ক) পাইল ভিত্তি (Pile Foundation)

খ) কফার ড্যাম (Coffer Dams)

গ) কেইশন (Caisson)

যেখানে স্প্রেড ফুটিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় গভীরতা পাওয়া যায় না, সেখানে পাইল ভিত্তি করা হয়। সংকোচনশীল জলাবদ্ধ এবং ভরাট মাটির ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের কাঠামোর জন্য পাইল ভিত্তি নিরাপদ। বিল্ডিং, পাওয়ার হাউস, ট্রেসল ব্রিজ (Trestle Bridge), পানিসংলগ্ন কাঠামোসহ যেকোনো ভারী কাঠামো নির্মাণের জন্য পাইল ব্যবহৃত হয়। সাধারণত প্রকল্প এলাকায় সব ধরনের সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় পাইল ভিত্তি। বর্তমানে আধুনিক দালানে আরসিসি পাইল ভিত্তির ব্যবহার সর্বাধিক।

কাস্ট ইন সিটু পাইল স্থাপন

কংক্রিট পাইল প্রধানত তিন প্রকার-

১। কাস্ট ইন সিটু পাইল (Cast in situ Pile)

২। প্রি-কাস্ট কংক্রিট পাইল (Pre-cast Concrete Pile)

৩। প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট পাইল (Pre-stressed Concrete Pile)

বর্তমানে ঢাকা এবং তার পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতে কাস্ট ইন সিটু পাইলের অধিক ব্যবহার পরিলক্ষিত হওয়ায় এবারের বিস্তারিত আলোচনা কাস্ট ইন সিটু পাইল নিয়ে। আসুন প্রথমেই জেনে নিই কাস্ট ইন সিটু পাইল কী?

কাস্ট ইন সিটু পাইল বা স্বস্থানে ঢালাইকৃত কংক্রিট পাইল

পাইল বসানোর স্থানে মাটির মধ্যে নির্দিষ্ট গভীরতা পর্যন্ত গর্ত খনন করে যে ঢালাই করা হয়, তাকে কাস্ট ইন সিটু পাইল বলে। এই পদ্ধতিতে পাইল বসানোর স্থানে পাইল তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে হয়। প্রথমে পাইলের পয়েন্টে নির্দিষ্ট মাপের বোরিং করতে হয়, এরপর ডিজাইন অনুযায়ী কংক্রিট স্থাপন করা হয়। বোর হোল করার পরে কংক্রিট স্থাপন করার জন্য কোনো পীড়ন বা stress সৃষ্টি হয় না। তাই কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই পাইলে রড ব্যবহার না করেও ডিজাইন করা হয়। কিন্তু যেখানে পাইল কলাম হিসেবে কাজ করে এবং পার্শ্বস্থ চাপ প্রতিরোধ করে, সেখানে রডের ব্যবহার অপরিহার্য।

কাস্ট ইন সিটু পাইলের সুবিধা

  • এই পাইল লেন্থ বা দৈর্ঘ্য সয়েল টেস্ট রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ডিজাইন এবং নির্মাণ করা হয়। তাই সময়, অর্থ এবং নির্মাণসামগ্রীর অপচয় হয় না।
  • পাইল ঢালাইয়ের সময় কোনো ব্লেস বা আঘাতের প্রয়োজন হয় না। ফলে নির্মাণকাজ নিখুঁতভাবে করা যায়।
  • পরিবহন খরচ নেই, সেহেতু কংক্রিট সাইটেই নির্মাণ করা যায়।
  • কিউরিংয়ের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই।
  • পাইলের প্রস্থচ্ছেদ এবং কংক্রিটের গুণাগুণ বৃদ্ধি করে অধিক লোড বহনের উপযোগী পাইল তৈরি করা যায়।
  • পাইলের গভীরতা এবং মাটি স্তরের ভারবহন ক্ষমতা জানা থাকে বলে সঠিকভাবে পাইল ডিজাইন করা হয়।

কাস্ট ইন সিটু পাইলের প্রকারভেদ

কাস্ট ইন সিটু পাইল সাধারণত দুই ধরনের-

 কেইসড কাস্ট ইন সিটু পাইল (Cased cost in situ)

 আন কেইসড কাস্ট ইন সিটু পাইল (Uncased cost in situ)

কেইসড কাস্ট ইন সিটু কংক্রিট পাইল (Cased cost in situ Concrete Pile)

এই পাইল সব ধরনের মাটিতে স্থাপন করা সুবিধাজনক। ম্যানড্রেলের (Mandrel) সাহায্যে স্টিলের শেলকে (Steel Shell) মাটির মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তারপর ম্যানড্রেলকে উত্তোলন করে ফাঁপা শেলের মধ্যে কংক্রিট দিয়ে ধাপে ধাপে পূর্ণ করা হয়। 

এই পাইল পাঁচ প্রকারের হয়ে থাকে। 

১। রে-মন্ড পাইল (Ray-mond Pile)

২। ম্যাক-আর্থার কেইসড পাইল (Mac-arthur Cased Pile)

৩। মনোটিউব পাইল (Monotube Pile)

৪। সোয়াগ পাইল (Swage Pile)

৫। বাটন বটম পাইল (Button Bottom Pile)

রে-মন্ড পাইল (Ray-mond Pile)

এই প্রকারের কাস্ট ইন সিটু পাইল সাধারণত ৬ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাইলের ওপরের ব্যাস ৪০ সেমি থেকে ৬০ সেমি এবং নিচের ব্যাস ২০-৩০ সেমি হয়ে থাকে। এই পাইল তৈরির জন্য পাতলা করোগেটেড স্টিল দিয়ে শেল প্রস্তুত করা হয়। যার নিচের প্রান্ত বন্ধ থাকে। পাইল স্থাপনের জন্য স্টিল শেলের মধ্যে অনুরূপ একটি স্টিল ম্যানড্রেল প্রবেশ করানো হয়। তারপর শেলসহ ম্যানড্রেলকে মাটির ভেতরে প্রয়োজনীয় গভীরতায় প্রবেশ করানো হয়। পরে ম্যানড্রেলকে উঠিয়ে স্টিল শেলের নিম্নপ্রান্তে স্টিল বুট দিয়ে আবদ্ধ করা হয় এবং শেলটি খাঁড়া আছে কি না পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে তখন রডের খাঁচা প্রবেশ করিয়ে কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ করা হয়। এভাবে রে-মন্ড পাইল তৈরি করা হয়।

ম্যাক-আর্থার কেইসড পাইল (Mac-arthur Cased Pile)

এ ধরনের পাইলের ব্যাস ওপরে এবং নিচে একই ধরনের হয়। রে-মন্ড পাইলের মতো করোগেটেড স্টিলকে শেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রথমে পুরু স্টিল কেসিংয়ের মধ্যে ম্যানডেলের সহযোগে মাটির অভ্যন্তরে প্রয়োজনীয় গভীরতা পর্যন্ত প্রবেশ করানো হয়। তারপর ম্যানড্রেলকে বের করে ওর মধ্যে নিচের প্রান্ত আবদ্ধ করোগেটেড স্টিল শেল প্রবেশ করানো হয় এবং কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ করা হয়। পাইল তৈরি শেষ হলে স্টিল কেসিংকে ওঠানো হয়; এভাবে তৈরি হয় ম্যাক-আর্থার কেইসড পাইল।

সোয়াগ পাইল (Swage Pile)

সোয়াগ পাইল চারটি স্তরে তৈরি করা হয়। স্তরগুলো হলো-

প্রথম স্তর : একটি পাতলা স্টিলের পাইপকে (শেল হিসেবে) পূর্ব ঢালাইকৃত কংক্রিট প্লাগের (Precast Concrete Plug) ওপর স্থাপন করা হয় এবং একটি স্টিল কোরকে শেলের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়।

দ্বিতীয় স্তর : এই স্তরে পাইপকে আঘাত করে বসানো হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না কোর প্লাগের ওপরে আসে। পাইপ প্লাগের অভ্যন্তরে এমনভাবে প্রবেশ করানো হয়, যাতে এর মধ্যে পানি প্রবেশ করতে না পারে।

তৃতীয় স্তর : শেলসহ কোরের ওপর আঘাত করে প্রয়োজনীয় গভীরতা পর্যন্ত প্রবেশ করানো হয়।

চতুর্থ স্তর : প্রয়োজনীয় গভীরতা পর্যন্ত পৌঁছানোর পর শেলের মধ্যে থেকে কোরকে উত্তোলন করে বাইরে আনা হয় এবং শেলের মধ্যে কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ করা হয়। এভাবে সোয়াগ পাইল তৈরি করা হয়।

রে-মন্ড পাইল

বাটন বটম পাইল (Button Bottom Pile)

ভার বহনের জন্য যেখানে তলদেশের ক্ষেত্রফল বাড়ানোর প্রয়োজন, সেখানে এই জাতীয় পাইল ব্যবহার করা হয়। এই পাইলের তলদেশে কংক্রিটের প্লাগ ব্যবহার করা হয়, যা দেখতে বাটনের মতো। এই পাইল প্রায় ২৩ মিটারের মতো লম্বা। চারটি স্তরে এই পাইল তৈরি করা হয়।

প্রথম স্তর : প্রথমে কংক্রিট বাটনের ওপর ১২ মিমি পুরু স্টিলের কেসিং স্থাপন করা হয়। বাটনের ব্যাস পাইলের ব্যাসের চেয়ে ২৫ মিমি বড়।

দ্বিতীয় স্তর : বাটনসহ পাইপকে প্রয়োজনীয় গভীরতায় স্থাপন করা হয়।

তৃতীয় স্তর : করোগেটেড স্টিল শেলকে পাইপের মধ্যে স্থাপন করা হয় শেলের নিচে একটি প্লেট ওয়েল্ডিং করে দেওয়া হয়।

চতুর্থ স্তর : কেসিং পাইপকে উঠিয়ে ফেলা হয় এবং শেলের মধ্যে কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ করা হয়। প্রয়োজন হলে রডও ব্যবহার করা হয়।

২) আনকেইসড কাস্ট ইন সিটু পাইল (Uncased Cast in site Pile)

এসব পাইল তৈরি করতে আলাদা কেসিং (Casing) ব্যবহার করা হয় না। তবে নির্মাণ করার সময় দক্ষ মিস্ত্রির প্রয়োজন হয়। যেখানে গর্ত খনন করলে মাটি ভেঙে পড়ার বা পানি লিকেজের আশঙ্কা থাকে না। সেখানে এই জাতীয় পাইল নির্মাণ করা হয়। প্রথমে ম্যানড্রেল বা শেলকে মাটির ভেতরে আঘাত করে প্রবেশ করানো হয়। তারপর শেলের মধ্যে কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ করা হয় এবং শেলকে (shell) কিছু দূর ওঠানো হয়। এমনিভাবে পাইল তৈরি করা হয়। এই পাইল চার প্রকারের হয়ে থাকে। যথা-

১। সিমপ্লেক্স পাইল (Simplex Pile)

২। ফ্রাংকি পাইল (Franki Pile)

৩। ভাইব্রো পাইল (Vibro Pile)

৪। প্যাডেস্টাল বা বাল্ব পাইল (Pedestal on Bulb Pile)

সিমপ্লেক্স পাইল (Simplex Pile)

সিমপ্লেক্স পাইল নরম অথবা শক্ত মাটিতে বসানো যায়। ২০ মিমি পুরু একটি ফাঁপা গোলাকার স্টিলের পাইপ মাটিতে বসানো হয়। পাইল বসানোর সুবিধার জন্য স্টিল পাইপের নিম্নপ্রান্তে কাস্ট আয়রন বা স্টিল শু লাগানো হয়। আয়রন শুর সাহায্যে মাটি কেটে পাইপকে নিচের দিকে বসানো হয়। এই ফাঁপা পাইপকে কেসিং পাইপ বলে। যখন রড ব্যবহার করা হয়, তখন কেসিংয়ে মাচা প্রবেশ করানো হয়। তারপর পাইপে এক মিটার গভীরতা পর্যন্ত কংক্রিট ঢালা হয় এবং ভালোভাবে র‌্যামিং করার পর কেসিং পাইপকে এক মিটার ওঠানো হয়। আবার এক মিটার গভীরতায় কংক্রিট ঢালা হয় এবং র‌্যামিং করার পর কেসিং পাইপ আবার এক মিটার ওঠানো হয়। এভাবে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ কংক্রিটটি ঢালাই সম্পূর্ণ হয় এবং কেসিং উঠিয়ে নেওয়া হয়। কংক্রিট দ্বারা ভরাটকৃত এ রকম পাইলকে সিমপ্লেক্স পাইল বলে। স্টিল অথবা মেটালিক শু (Steel on Metallic Shoe) পাইপের নিম্ন প্রান্তে থেকে যায়। এ জন্য প্রতি পাইপের জন্য একটি করে শু প্রয়োজন।

ফ্রাংকি পাইল (Fronki Pile)

ফ্রাংকি পাইলের একটি বর্ধিত ভিত্তি এবং ঢেউ তোলা স্টেম (Stem) থাকে। দানাদার মাটি এ এই পাইল স্থাপন করা খুবই সুবিধাজনক। প্রথমে একটি ফাঁপা স্টিল পাইপকে মাটির ওপর খাঁড়াভাবে রাখা হয়। তারপর এর তলদেশে ৬০ থেকে ৯০ সেমি উঁচু করে কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ করা হয়, যা কংক্রিট প্লাগ নামে পরিচিত। এই কংক্রিট শক্ত হলে ড্রপ হ্যামারের সাহায্যে বারবার আঘাত করার ফলে কংক্রিট ঘন ও দৃঢ় হয়ে নিরেট প্লাগের সৃষ্টি হয়। ড্রপ হ্যামারের সাহায্যে প্লাগের ওপর আঘাত করে কেসিং পাইপকে মাটির ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। রড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে রডের খাঁচা পাইপের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তারপর ঢালাই করা হয়। পাইল ধাপে ধাপে অর্থাৎ এক মিটার পর পর র‌্যামিং করে। এভাবে সম্পূর্ণ বোর হোল পূর্ণ হলে ঢালাইকার্য সমাপ্ত হয়।

ভাইব্রো পাইল (Vibro Pile)

নরম মাটির ক্ষেত্রে সেখানে কংক্রিটের পার্শ্বপ্রবাহকে বাধাদানকারী বল খুব কম, সেখানে মাটি এবং পাইলের মধ্যকার ঘর্ষণ বল বৃদ্ধি করার জন্য এই পাইল ব্যবহার করা হয়। ভাইব্রো পাইলের পার্শ্ব বৃদ্ধি পেয়ে পাইলের ভারবহন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মাটির ভারবহন ক্ষমতা কম থাকার ফলে পর্যাপ্ত গভীরতা পর্যন্ত পাইল বসানোর জন্য কোনো প্রকার বাধা না হলে ভাইব্রো এক্সপানডেড পাইল ব্যবহার করা হয়। এই প্রকার পাইলের ভারবহন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অনেক সময় পাইলের শেষ প্রান্তের ব্যাস বৃদ্ধি করা হয়। প্রথমে কেসিং পাইপের নিম্নপ্রান্তে কাস্ট আয়রন কনিক্যাল শু লাগিয়ে পাইপকে মাটির মধ্যে প্রয়োজনীয় গভীরতায় প্রবেশ করানো হয়। তারপর কেসিং পাইপটি কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ করা হয় এবং পর্যায়ক্রমে নিম্নমুখী হাতুড়ির আঘাত এবং ঊর্ধ্বমুখী কেসিং পাইপের উত্তলোর ক্রিয়া চলতে থাকে। এই পদ্ধতিতে দ্রুত ঢালাই সম্পন্ন হয় এবং সর্বত্র সমঘনত্বের কংক্রিট পাওয়া যায়।

কাস্ট ইন সিটু পাইলের রড বাইন্ডিং

পেডেস্টাল বা বাল্ব পাইল (Pedestal on Bulb Pile)

এই পাইলের পেডেস্টাল স্প্রেড ফুটিংয়ের মতো ক্রিয়া করে। একটি কেসিং পাইপ এবং একটি স্টিল কোর এই পাইল নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। কেসিংয়ের মধ্যে এক মিটার গভীরতায় কংক্রিট ঢালা হয়। পুনরায় কোর কেসিংয়ের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে কেসিং দিয়ে কংক্রিটের ওপর আঘাত করা হয়। বারবার আঘাত করার ফলে পাইলের নিম্নপ্রান্তের কংক্রিট ঘনীভূত হয়ে পেডেস্টাল বা বাল্বের আকার ধারণ করে। র‍্যামিং করার সময় কেসিং পাইপকে ০.৭৫ মিটার উত্তোলন করা হয়। তারপর পুনরায় কোরকে উঠিয়ে এক মিটার উচ্চতায় কংক্রিট ঢালা হয় এবং র‍্যামিং করা হয়। এভাবে সম্পূর্ণ কোর কংক্রিট দিয়ে পূর্ণ হলে কেসিং পাইপকে ঢালাই থেকে ওঠানো হয় এবং পাইলের কাজ সমাপ্ত হয়।

পরিশেষে বলা যায়, কাস্ট ইন সিটু পাইল নিরাপদ এবং শক্তিশালী ভিত্তি কিন্তু প্রায়ই পাইল নির্মাণের অসাবধানতার জন্য বহু কাক্সিক্ষত নির্মাণ কোনো কাজেই আসে না। অর্থাৎ ডিজাইনকৃত লোড সে বহনের ক্ষমতা অর্জন করতে পারে না। কারণ, কাস্ট ইন সিটু পাইল নির্মিত হয় মাটি বা কাদার মধ্যে। তাই ঢালাইয়ের মান খুবই নিম্নমানের হয়ে থাকে, যদি তা নিয়ম অনুযায়ী না করা হয়। তাই কাস্ট ইন সিটু পাইলিংয়ের কাজের জন্য অবশ্যই একজন দক্ষ প্রকৌশলীর সহায়তা নিতে হবে।

প্রকৌশলী সুবীর কুমার সাহা

[email protected]

প্রকাশকাল: বন্ধন ৪২ তম সংখ্যা, অক্টোবর ২০১৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top