নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে…

ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে স্বল্প বৃষ্টিপাতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। বর্ষার এ সময়ে জলাবদ্ধতা যেন এ নগরের নিয়তি লিখন। অনেকটাই অভিশাপের মতো, যা  থেকে কোনোভাবেই মুক্তি নেই নগরবাসীর। জলাবদ্ধতার এ শাপান্ত থেকে মুক্ত নয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামও। প্রতিবছর লক্ষ কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দ থাকলেও জলাবদ্ধতা নিরসনে নেই কার্যকর উদ্যোগ। মিরপুরের সাড়ে এগারোর পল্লবী একসময় পরিচিতি ছিল ঢাকার সবচেয়ে উঁচু এলাকা হিসেবে। ঢাকার এ অংশটা একসময় ছিল টিলা। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় যখন শ্যামলী, কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর তুরাগ নদের অতিরিক্ত পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল, তখনো পল্লবী বন্যা প্লাবিত হয়নি। অথচ এখন মাত্র আধা ঘণ্টা বৃষ্টিতে পল্লবী তলিয়ে যায় হাঁটুপানিতে। জুনে মাত্র ঘণ্টা খানেকের বৃষ্টিতে রীতিমতো খালে রূপ নিয়েছিল শান্তিনগর। ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা প্রাথমিক অবস্থায় কিছু অঞ্চলে সীমিত থাকলেও তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে নগরজুড়ে। 

জলাবদ্ধতা যে কারণে

  • অপরিকল্পিত নগরায়ণ।
  •  ঢাকার জলাশয়-নদী ধ্বংস করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায়।
  •  ডিসিসির স্বতন্ত্র ড্রেনেজ সিস্টেমের অভাব।
  •  ডিসিসি কর্তৃক নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা।
  •  পানি পরিবহনকারী ড্রেনের সঠিক ও উপযুক্ত নকশার অভাব।
  •  জনসচেতনতার অভাব।
  •  সঠিক ও যুগোপযোগী পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার অভাব।
  •  নগরের বিভিন্ন স্থান অপরিকল্পিতভাবে বর্ষা মৌসুমে খোঁড়াখুঁড়ি করায়।
  •  পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পাম্পের অভাব।
  •  পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত অবকাঠামোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব।
  •  সঠিক কর্মপরিকল্পনার অভাব।
  •  লেকগুলো নিয়মিত খনন করে পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা না থাকা।
  •  নগর পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় উন্মুক্ত জায়গার অভাব।
  •  ড্রেনেজ ব্যবস্থা সব জায়গায় পুরোপুরি কাজ না করা।

জলাশয় ভরাটকরণ
একসময় ঢাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মূলে ছিল শহরের অভ্যন্তরে বয়ে চলা শতাধিক খাল। যেগুলোর সংযুক্তি ছিল নগরের চারপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদের সঙ্গে। খালগুলো দিয়ে নগর অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের পাশাপাশি নৌযানের মাধ্যমেই মালামাল পরিবহন ও বাণিজ্যিক প্রসার ঘটছে।

সময়ের ক্রমবিবর্তনে প্রচলিত উন্নয়নের নামে অধিকাংশ খালের অস্তিত্ব আজ বিলীন প্রায়। আর অবশিষ্টগুলোর অবস্থাও সংকটাপন্ন। খালের সঙ্গে নদীর যে যোগাযোগ ছিল, তাও আজ বিচ্ছিন্ন। খাল হারানোয় বাড়ছে জলাবদ্ধতা। দেখা দিচ্ছে পানি সংকট; হ্রাস পাচ্ছে মৎস্য সম্পদ ও জীব-বৈচিত্র্য। খালগুলো ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে ভবন, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, ড্রেন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ফলে বৃষ্টির পানি নিষ্কাষিত হয়ে জমা হওয়ার জায়গা পাচ্ছে না। বৃষ্টির পানি এক জায়গায় আবদ্ধ হয়ে সৃষ্টি করছে জলাবদ্ধতার, যা নাগরিক সমস্যাকে করছে প্রলম্বিত।

স্বতন্ত্র ড্রেনেজ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা
মূল সড়কের নিচ দিয়ে ওয়াসার প্রবহমান পাইপের বাইরে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) ফুটপাতের তলা বা তার পেছন দিয়ে আরেকটি সারফেস ড্রেন বা খোলা ড্রেন তৈরি করেছে। এক হাজার ৫২৮ কিলোমিটারের রাজধানীতে পানি নিষ্কাশন নালা বা ড্রেন রয়েছে মাত্র ২৬৪ কিলোমিটার। আর ঢাকা সিটি করপোরেশনের পানি নিষ্কাশন নালা বা ড্রেন ঘণ্টায় মাত্র ১০ মিলিমিটার বৃষ্টির পানি ধারণ করতে পারে। যেখানে ঢাকায় বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হয় সর্বোচ্চ ৮৫ মিলিমিটার। যে কারণে বর্ষাকালে খুব সহজেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাই শুধু তড়িঘড়ি করে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে এর সমাধান করতে চাওয়ায় যা পর্যবসিত হচ্ছে ব্যর্থতায়। ডিসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করে না। এদের নিয়মিত রাস্তা ও পানি পরিবহনকারী ড্রেন বা নালা পরিষ্কার করে রাখার কথা কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা লক্ষ করা যায় না। আবার অনেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী রাস্তা ও ড্রেন পরিষ্কার করে ড্রেনের আবর্জনা রাস্তা বা ড্রেনের পাশে স্তূপ করে রেখে দেয়। কিন্তু ডিসিসি এসব ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের যথাযথ উদ্যোগ নেয় না যথাসময়ে। ফলে বৃষ্টি চলাকালে বৃষ্টির পানির সঙ্গে সব ধরনের আবর্জনা আবার ড্রেনে প্রবেশ করে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। এসব আবর্জনা ড্রেনে প্রবেশ করায় পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ বা সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় বৃষ্টির পানি সহজে সরে যেতে না পারায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার।

আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেও পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত পাইপ নেটওয়ার্কের মধ্যে ইমারত নির্মাণসামগ্রী, চিপস, ট্রেটাপ্যাক বিস্কুটের প্যাকেট পড়ে যে ভরাট হচ্ছে এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরত রাখার আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেই আর থাকলেও নেই তার যথাযথ প্রয়োগ। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি প্রয়োজন মানুষের মনস্তাতাত্ত্বিক পরিবর্তন আনয়ন। শুধু জলাবদ্ধতার অজুহাত দেখিয়ে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করলে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। চিপসের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অ্যালুমিনিয়াম কয়েল বা জুসের ট্রেটাপ্যাক, পলিথিন সোলা, গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলে খোলা ড্রেন বন্ধ করে রাখলে যত পদক্ষেপই গ্রহণ করা হোক না কেন পরিস্থিতির তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না।

ওয়াসার অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা
রাজধানী ঢাকার ১৩৬ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ সিস্টেম রয়েছে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার, যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। ওয়াসার পানি নিষ্কাশনের জন্য দরকার আরও প্রায় ১২০ কিলোমিটার ড্রেনেজ সিস্টেম। এ ছাড়া বক্স কালভার্ট রয়েছে ১২ কিলোমিটার, ওপেন ক্যানেল ৬৫ কিলোমিটার, তিনটি শাখা স্টেশনসহ বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ওয়াসার লাইন রয়েছে ২৫০ কিলোমিটার। কিন্তু দরকার এরও দ্বিগুণ। তা ছাড়া জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী পয়োবর্জ্য পরিশোধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি ঢাকা ওয়াসা। প্রতিদিন গড়ে ১০ লাখ ঘনমিটার পয়োবর্জ্য উৎপাদিত হলেও পরিশোধন হয় মাত্র ৫০ হাজার ঘনমিটার পয়োবর্জ্য। বর্ষা মৌসুমে এসব বর্জ্য পানির সঙ্গে মিশে আবাসস্থলে পৌঁছায়। ড্রেনেজ লাইনের সঙ্গে একাকার হয়ে পানি সরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সৃষ্টি করে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা। তাই শুধু বর্ষা নয়, যেকোনো সময় স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। কারণ, এখনকার ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থার পক্ষে ১০ মিলিমিটার থেকে ২০ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব নয়।

অপরিকল্পিত নগরায়ণ
জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ। ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান বা ড্যাপ বাস্তবায়ন না হলে এবং ঢাকার জলাভূমিগুলোকে পুনরুদ্ধার করা না গেলে জলাবদ্ধ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। ১৯৯৩ সালে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রণীত হয়। অথচ ২০১০ সালেও সেই বিধিমালা না মেনে ঢাকা শহরে ঘরবাড়ি উঠছে রাজউকের চোখের সামনেই। গত ১০ বছরে নগরে বহুতল ভবনের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। কিন্তু সেই অনুপাতে স্যুয়ারেজ ও পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এমনকি সংস্কারের অভাবে অনেক স্থানের পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা  বন্ধ হয়ে আছে।

অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট পানি বেরোনোর জন্য আগে কিছু স্লুইচগেট নির্মাণ করা  হয়েছিল। সেগুলোর অধিকাংশই এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অর্থাৎ বন্ধও হয় না। খোলাও যায় না। ফলে ভারী বৃষ্টি হলে যে পানি জমে, তা বের হওয়ার কোনো উপায় থাকে না। আবার নদীতে বন্যার সময় পানি ঢোকাও বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু এগুলো সংস্কারে সরকারের নেই কার্যত কোনো উদ্যোগ। যার দরুন অল্প বর্ষণে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা।

১৯৮৮ সালে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন কিছু পানি নিষ্কাশনকারী পাম্প কিনেছিল। অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশনের জন্য এই সব পাম্প চালাতে গিয়ে পড়তে হতো নানা সমস্যায়। এসব পাম্পের সংস্কার বা পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা বাড়ানোর নেই কোনো ধরনের সরকারি উদ্যোগ। যার ফলে প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় বাড়ছে নাগরিক দুর্ভোগ।

জনসচেতনতার অভাব
ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির জন্য নগরবাসীর কোনো দোষ বা দায়িত্ব নেই তা কিন্তু নয়। নগরের বসবাসরত প্রতিটি পরিবারে প্রতিদিন গৃহস্থালি বর্জ্য হয়। এসব বর্জ্য কোথাও না কোথাও ফেলতে হয়, ঘরে জমিয়ে তো আর রাখা যায় না! কিন্তু এসব বর্জ্য ফেলতে হয় নির্দিষ্ট স্থানে। যত্রতত্র এসব আবর্জনা ফেলার দরুন বৃষ্টির পানির সঙ্গে বর্জ্যগুলো পানি নিষ্কাশনকারী ড্রেন বা নালায় গিয়ে জমা হওয়ার ফলে ব্যাহত হয় পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা; সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার।

অভাব আধুনিক পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার
শহরে আগত মানুষের আবাসন চাহিদা পূরণে একের পর এক নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন। এসব বহুতল ভবনের অধিকাংশ সঠিক নিয়ম মেনে ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া নির্মিত হচ্ছে। শহরে আধুনিক ভবন নির্মিত হলেও এসব ভবনের নেই আধুনিক পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা। তদুপরি যেসব জায়গায় নতুন শহর ক্রমেই বাড়ছে, সেসব স্থানে পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা প্ল্যান অনুযায়ী গড়ে উঠছে না। ফলে জলাবদ্ধ সমস্যা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

বর্ষা মৌসুমে যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি
বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিভাবে শুরু হয় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। ঢাকা ওয়াসা ও ডিসিসির ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন বা সংস্কারের নামে চলে এসব খোঁড়াখুঁড়ি। ঢাকা শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত নকশা প্রণয়ন করে না করায় এক স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি করলে আশপাশের বেশ কিছু স্থানের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে। তা ছাড়া সংস্কারকাজ বর্ষা মৌসুমে করায় অনেক জোড়াতালি দিয়ে তড়িখড়ি করে শেষ করা হয়। এই ধরনের সংস্কারকাজে কোনো ধরনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রকৌশলীর উপস্থিতি ছাড়াই শুধু কন্ট্রাক্টরের তত্ত্বাবধানে নির্মাণশ্রমিক দ্বারা করা হয়। এতে করে সংস্কারকাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় তা থাকে ত্রুটিপূর্ণ। এটি সংস্কার হয় দীর্ঘস্থায়ী। ফলে প্রতিবছরই কিছু নির্দিষ্ট স্থানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য খোঁড়াখুঁড়ি বা সংস্কারকাজ পরিচালনা করতে হয়। অদক্ষ জনবল দিয়ো ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণকাজ সম্পন্ন করায় সম্পূর্ণ ড্রেনেজ সিস্টেম তার ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করতে না পারায় বৃষ্টির পানি সরাতে দীর্ঘ সময় লাগে। এতে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয়।

সঠিক কর্মপরিকল্পনার অভাব
নগরের জলাবদ্ধতা সৃষ্টিতে সঠিক কর্মপরিকল্পনার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। নগরের পানি নিষ্কাশন বা পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার সংস্কার বা নির্মাণ করার প্রয়োজন হলে  আগে থেকেই কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে বর্ষা মৌসুমের অনেক আগেই কাজ শুরু করা উচিত।

খাল পুনর্খনন না করা
আগে এ ঢাকায় মোট খাল ছিল ৪৭টি, যার মধ্যে ১২-১৩টি খাল কোনো রকমে এখন তাদের অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। যার মধ্যে অধিকাংশ খাল বর্তমানে ভূমিদস্যুদের দখলে। এর মধ্যে কিছু খাল আবার সরকারি প্রতিষ্ঠানের দখলে। উত্তরার পশ্চিমে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত হরিরামপুর ইউনিয়ন ও অন্যান্য এলাকার প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার জলাভূমি রাজউক নিজে ভরাট করেছে। যেখানে কিছুদিন আগেও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলত। এ তো গেল খাল দখলের কথা। এগুলো পুনরুদ্ধারে সরকার কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না তা কেউ বলতে পারে না। কিন্তু যে খালগুলো এখনো টিকে আছে, পুনর্খনন করে সেগুলো পানি ধারণক্ষমতা বা নাব্যতা বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। 

প্রতিকারে যা করণীয়
ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার কারণ খতিয়ে দেখে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে জাপান হতে পারে খুব ভালো উদাহরণ। জাপানের Underground Discharge Channel এ দেশের জলাবদ্ধতা নিরসনে হতে পারে চমৎকার মডেল। ঢাকার মতো চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় শহরগুলোতে জমির পরিমাণ কম কিন্তু খুবই ঘনবসতিপূর্ণ। যার ফলে ভূমির উপরিভাগে পানি সংরক্ষণকারী ট্যাঙ্ক নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই জাপানের প্রকৌশলীরা Underground Discharge Channel নির্মাণের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়েছে। পৃথিবীর অনেক ঘনবসতিপূর্ণ শহর এই পদ্ধতি অবলম্বনের চিন্তা করছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে জাপানি মডেল
জাপানের রাজধানী টোকিওর পাশে বিশ্বমানের Underground Discharge Channel নির্মাণ করা হয়েছে। বন্যার কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে টোকিওকে রক্ষা করাই এর প্রধান লক্ষ্য। এই ট্যানেলটি ভূমির উপরিভাগ থেকে প্রায় ৫০ মিটার গভীরে নির্মিত, যা প্রায় ৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই ট্যানেলে খাঁড়া উলম্ব বৃহৎ আকৃতির শেফট (Shaft) রয়েছে বন্যার পানি সংরক্ষণের জন্য, যা দেখতে অনেকটা বৃহৎ আকৃতির ট্যাঙ্কের মতো। এই শেফটগুলোর নিচে রয়েছে বিশাল আকৃতির পানির ট্যাঙ্ক, যা ৫০০ টন ওজনসমৃদ্ধ পিলার দিয়ে ধারণ করা। এই ডিসচার্জ চ্যানেলটি এমনভাবে কর্মক্ষম করে নির্মাণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে বন্যা আক্রান্ত স্থান থেকে পানি বিশাল আকৃতির পাঁচটি খাঁড়া শেফট দিয়ে টেনে আনা সম্ভব। পরবর্তী সময়ে এটির দ্বারা এই পানি শেফটের সঙ্গে সংযুক্ত টানেল দিয়ে নদীতে নিয়ে ফেলা হয়। সিলিন্ডারের মতো শেফটটি প্রায় ৭০ মিটার লম্বা এবং সবচেয়ে বড় শেফটের ব্যাসার্ধ প্রায় ৩০ মিটার, যার মধ্যে খুব সহজেই Space Shuttle অবতরণ করতে পারে। যার সংযোগ স্থাপনকারী টানেলটি প্রায় মাটির ৫০ মিটার নিচে অবস্থিত এবং এর ব্যাসার্ধ প্রায় ১০ মিটার। সব মিলিয়ে টানেলটি প্রায় ৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই টানেল দিয়ে পানি নদীতে নিষ্কাশনের আগে চাপ নিয়ন্ত্রণকারী একটি বিশাল আকৃতির ট্যাঙ্কের মধ্যে সম্পূর্ণ পানি সংরক্ষণ করা হয়। এই ট্যাঙ্কটি এমনভাবে নির্মিত, যাতে করে এটি কার্য সমাধানে সক্ষম হয়। যেমন- এটি নিষ্কাশন করা পানির চাপকে নিয়ন্ত্রণ করে চলমান পানির চাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে, যাতে করে যেকোনো মুহূর্তে কোনো পাম্প অকেজো হয়ে গেলেও চলমান পানির চাপ একই থাকে। পানি সংরক্ষণকারী ট্যাঙ্কটি ১৭৭ মিটার লম্বা এবং ৭৮ মিটার চওড়া এবং এটি মাটির উপরিভাগ থেকে প্রায় ২২ মিটার নিচে অবস্থিত, যা আকৃতিতে একটি ফুটবল খেলার মাঠের চেয়েও বড়। এই ট্যাঙ্কটি ১৮ মিটার লম্বা ৫৯টি পিলারের সাহায্যে দাঁড়িয়ে থাকে, যা দেখতে মাটির নিচে নির্মিত কোনো মন্দিরের মতো। 

বিশ্বমানের এই চ্যানেলটি প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২০০ ঘনমিটার পানি নিষ্কাশন করতে পারে। যদি অন্যভাবে বলা হয় তবে ২৫ মিটার গভীরতাসম্পন্ন কোনো সুইমিংপুলের পানি এক সেকেন্ডে নিষ্কাশন করতে সক্ষম। এই চ্যানেলটি নির্মিত হয় ২০০৮ সালে টোকিওতে। প্রবল বর্ষণেও এই চ্যানেলটি প্রায় ১২ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি নিষ্কাশন করে নদীতে ফেলতে সক্ষম। জাপানের টোকিওর মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে এমন টানেল নির্মাণ করা গেলে ঢাকাতে কেন নয়? প্রতিবছর বন্যা ও জলাবদ্ধতার দরুন যে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয় তার থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব এ প্রযুক্তি প্রয়োগে। তা ছাড়া নিষ্কাশনব্যবস্থা সংস্কারের নামে প্রতিবছর যে হাজার হাজার কোটি টাকা পানিতে যাচ্ছে, তারও একটা সহজ সুরাহা হতো এ পদ্ধতি ব্যবহারে।

জলাশয় সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ
স্বাধীনতার আগে ঢাকায় খাল ছিল ৪৭টি। এসব খালের বেশির ভাগেরই প্রস্থ ছিল ১৫০ ফুটের বেশি। এগুলো ব্যবহৃত হতো বৃষ্টির পানি ধারণ ও নিষ্কাশনের কাজে। মাত্র চার দশকের ব্যবধানে রাজধানী ঢাকার অনেক খালই বিলুপ্ত হয়েছে। যেগুলো আছে তার বেশির ভাগই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ঢাকা ওয়াসার হিসাবমতে, বর্তমানে ঢাকায় ২৬টি খাল আছে। অদূরদর্শিতা ও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা উপেক্ষা করে কিছু মানুষ মুনাফার চিন্তায় খালগুলো ভরাট করে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনছে। যাতে বিপন্ন হয়ে পড়ছে মহানগরের বিদ্যমান খালগুলোর অস্তিত্ব।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা বা পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার যতই উন্নত করা হোক না কেন, বৃষ্টি বা বন্যার দ্বারা জমাকৃত পানি নিষ্কাশিত করে কোথাও না কোথাও তো ফেলতে হবে। নগরে যদি কোনো জলাশয়ই অবশিষ্ট না থাকে তবে পানি নিষ্কাশন করে ফেলবে কোথায়? তখন ড্রেনেজ ব্যবস্থার যতই উন্নয়ন করা হোক কিংবা আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক না কেন, সবকিছু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। তাই নগরে বিদ্যমান জলাশয় সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপের পাশাপাশি নগরবাসীকে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে নতুবা জলাবদ্ধতার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেবে ভয়াবহ পরিবেশ-বিপর্যয়।

খাল পুনর্খনন ও পুনরুদ্ধার
ঢাকার যেসব খাল ভূমিদস্যুর দখলে হারিয়ে যেতে বসেছে, সেগুলো উদ্ধারের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে সচেষ্ট হতে হবে। এসব খাল পুনরায় উদ্ধার করা না গেলে বাকি খালগুলোকেও টিকিয়ে রাখাটা কষ্টকর হবে। তাই খালগুলো উদ্ধার করার জন্য সরকারের এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তা ছাড়া বিদ্যমান খালগুলোর অবস্থাও দারুণ নাজুক। পানি, আবর্জনা ও দখলদারদের প্রভাবে খালগুলো তাদের স্বাভাবিক পানি ধারণক্ষমতা বা নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। এখন খুব দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে খালগুলোকে পুনরায় খনন করে তাদের স্বাভাবিক নাব্যতা ও পানি ধারণক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে হবে। যাতে করে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি খুব সহজেই খালগুলো বেয়ে নেমে যেতে পারে।

পরিকল্পিত নগরায়ণ
মানুষের চাহিদার কারণে খুব দ্রুত নগরের বিস্তার ঘটছে। তাই যেকোনো দিকে নগরের বিস্তার ঘটানোর আগে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুসারে নগরের বিস্তার ঘটানো উচিত। প্রথমে সম্পূর্ণ এরিয়ার পয়োনিষ্কাশন ও পানি নিষ্কাশনব্যবস্থার সুপরিকল্পিত নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করে পরবর্তী সময়ে নগর বিস্তারের অনুমোদন বা ছাড়পত্র দিতে হবে। নগর বিস্তারের আগে পানি নিষ্কাশনের জন্য যথাযথ জলাশয় বিদ্যমান আছে কি না সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে।

পর্যাপ্ত ড্রেনেজ সিস্টেম
ওয়াসার সূত্রমতে, ঢাকায় ১৩৬ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ড্রেনেজ সিস্টেম রয়েছে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। ঢাকা নগরের জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের জন্য সম্পূর্ণ নগরকে একটি ড্রেনেজ নেটওয়ার্কের আওতায় আনা দরকার। এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব পুরোনো ড্রেন ও নালাসমূহের সংস্কার এবং যেসব স্থানে এখন ওয়াসা ও ডিসিসির ড্রেনেজ সিস্টেম নেই, সেসব স্থানে নতুন ড্রেনেজ সিস্টেমের ব্যবস্থা করতে হবে। ড্রেনেজ সিস্টেমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যানহোলের ব্যবস্থা করা একান্ত জরুরি। ম্যানহোলের সঙ্গে সংযোগকৃত পাইপ ও ড্রেনের এলিভেশন যাতে সঠিকভাবে থাকে, এ জন্য সাইটে প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে এর নির্মাণকাজ পরিচালনা করা উচিত।

ডিসিসি বর্জ্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা
প্রতিদিন নগরে যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদন হয়, তা সংগ্রহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ডিসিসির নেই। নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ডিসিসিকে করতে হবে। অন্যথায় এসব বর্জ্য রাস্তায় জমে থাকলে তা একসময় বৃষ্টির পানি বা অন্য কোনোভাবে বিভিন্ন ড্রেনে গিয়ে পৌঁছে পানি নিষ্কাশনব্যবস্থাকে ব্যাহত করবে।

সঠিক কর্মপরিকল্পনা
ড্রেনেজ সিস্টেমের সংস্কার বা নির্মাণকাজের আগে সঠিক কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে তবেই কাজ শুরু করা উচিত। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নগরে বৃষ্টি হবে এবং কী পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে তা আগের বছরগুলো থেকে খুব সহজেই ধারণা পাওয়া যায়। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার বা নির্মাণ বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই শেষ করা উচিত। তা ছাড়া ডিসিসি কর্তৃক নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা যে ড্রেন পরিষ্কার করে বর্জ্য রাস্তায় স্তূপ করে রেখে দেয়, সেগুলো সময়মতো সংগ্রহের ব্যবস্থা ডিসিসিকেই করতে হবে।

পানি সংরক্ষণব্যবস্থা গড়ে তোলা
নগরের প্রতিটি বাড়ির ছাদে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণব্যবস্থাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। এই পানি দিয়ে গোসল, হাত, মুখ ধোয়া, বাথরুমের কাজে ব্যবহারের ব্যাপারে সবাইকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। এতে করে ড্রেনেজ সিস্টেমের ওপর যেমন পানির চাপ কমবে, ঠিক তেমনি পানির চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব হবে।

করতে হবে আইন প্রণয়ন ও কার্যকর
ঢাকা ও এর আশপাশে অবস্থিত জলাশয়সমূহকে রক্ষা ও পুনরুদ্ধার করতে প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। আর যদি মনে হয় বা প্রয়োজন পড়ে, তবে নতুন আইন প্রণয়ন করে দোষী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে সুপারিশ যত

  • খাল, বিল, নদীসহ বিভিন্ন জলাশয় ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করতে হবে।
  • নদীনালা, খালবিল, পুকুরসহ সব ধরনের জলাশয় রক্ষায় সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালা প্রয়োজনে সংশোধন ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে।
  • খাল ও নদীর মাঝে সৃষ্ট বাধা দূর করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
  • দখল করা খালসমূহ পুনরুদ্ধার করা এবং খাল পুনরায় খনন করে এর পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
  • সঠিক কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
  • ডিসিসি ও ওয়াসার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
  • খাল, নদীসহ সব জলাশয়ে ময়লা ও আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত রাখতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে।

বৃষ্টি হলেই রাজধানীবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হবে, এ যেন তাদের অদৃষ্ট নিয়তি। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টিতেই নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবন হয়ে পড়ে বিপন্ন। এর নেপথ্য কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ। আর জলাবদ্ধতা দূরীকরণের নিমিত্তে যেসব ড্রেন আছে, তা ময়লা আর আবর্জনা মুক্ত করতে হবে। ফলে বর্ষা মৌসুমের সেই চিরচেনা জলাবদ্ধতা আর সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের দুর্ভোগের কারণ হবে না। নগরের জলাবদ্ধতা নগরবাসীকে শারীরিক, মানসিক ও নৈতিকভাবে যে নিদারুণ দুর্ভোগের সম্মুখীন করে, তা থেকে পরিত্রাণ পেতে উদ্যোগী হতে হবে এখনই।

প্রকৌশলী সনজিত সাহা
sonjit7022@gmail.com

প্রকাশকাল: বন্ধন ৫২ তম সংখ্যা, আগস্ট ২০১৪

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top