‘দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করেও ইন্টেরিয়রকে আকর্ষণীয় করা যায়; এটা আসলে ডিজাইনারের বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যাপার’

অনেকের কাছে ইন্টেরিয়র ডিজাইন মানে নাটক, সিনেমায় সাজানো ঘরের মতো করে নিজের ঘরটাকে সাজানো। আসলে ইন্টেরিয়র মানেই কেবল ঘর সাজানো নয়। আবাসস্থলে পছন্দের আবহ তৈরি করাটাও ইন্টেরিয়র। ঘরের দেয়াল, মেঝে, দরজা, জানালা, আসবাব, পর্দা, এমনকি পানির কলটা কেমন হবে, সেটাই ঘরের আবহ অনুযায়ী নির্ধারণ করাটাই ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং। ঘরের দেয়ালের রং, মানানসই আসবাবের ডিজাইন ও রং থেকে শুরু করে স্বল্প বা বৃহৎ পরিসরের জায়গাকে কীভাবে নান্দনিকভাবে ব্যবহার করা যায়, এ বিষয়ে যাবতীয় ডিজাইন ও এর বাস্তবায়ন করেন মূলত ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা।

মানুষ নিজের পাশাপাশি তার বাসস্থান, ভেতরের সাজসজ্জা, অফিস-আদালত, হাসপাতাল, বিদ্যালয় থেকে শুরু করে সবকিছুর ভেতরের ও বাইরের সৌন্দর্য বাড়াতে চায়। দেশি-বিদেশি নানা উপকরণ ব্যবহৃত হয় সৌন্দর্যবর্ধনে। ইন্টেরিয়রে কাঠ, টাইলস, লাইট, বোর্ড, স্যানিটারিসহ যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়, তার সিংহভাগই আমদানিনির্ভর। অধুনা ইন্টেরিয়রে দেশীয় উপকরণ বাঁশ, পাট, কাঠ, মাটি বা পাথরের ব্যবহারও হচ্ছে। তবে তা সংখ্যায় নগণ্য। কেন দেশীয় উপকরণের ব্যবহার সীমিত আর কী উপায়ে বা এর ব্যবহার বাড়ানো যায়, তা-ই ‘বন্ধন’কে জানিয়েছেন শান্তা-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্চারের লেকচারার জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইফুল হক মিঠু

বন্ধন: স্থাপনার ইন্টেরিয়র ডিজাইনে এখন অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। শৌখিন এ শিল্পে এখন কী ধরনের উপকরণ ব্যবহৃত হচ্ছে?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ধারণা বাংলাদেশে একেবারেই নতুন। একটা ভবন, দোকান বা ঘরকে যে নান্দনিকভাবে সাজানো যায়, তা অনেকেই জানত না। ইন্টেরিয়র ডিজাইন বলতে শুধু ঘর গোছানোকেই বুঝত। এ ধারণা বদলাতে শান্তা-মারিয়ামে চালু হয়েছে চার বছর মেয়াদি অনার্স কোর্স, যা কিন্তু আর কোথাও নেই। এখন অনেকেই পেশা হিসেবে ইন্টেরিয়র ডিজাইনকে বেছে নিচ্ছেন। ইন্টেরিয়র প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে।

পার্টিকেল বোর্ড ব্যবহারে নান্দনিক ইন্টেরিয়র

ইন্টেরিয়র ডিজাইন এখন অনেক বিস্তৃত। এখন একটা সাধারণ চায়ের দোকানকেও একটু অন্য রকম করে সাজানো হয়। যেখানে থাকে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। এখন অন্দরসজ্জার গুরুত্ব বোঝে মানুষ। সামান্য কিছু উপকরণ ব্যবহার করেও যে একটি ঘরকে অন্য রকম সাজানো যায়, আকর্ষণীয় করা যায়, এটা মানুষ এখন বুঝতে শুরু করেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নিজের ঘরের ইন্টেরিয়র করছে মানুষ। আর তাই ইন্টেরিয়র ডিজাইনের চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে বাংলাদেশে।

এখানে অন্দরসজ্জায় যে উপকরণসমূহ ব্যবহৃত হচ্ছে তা পুরোটাই আমদানিনির্ভর। চীন থেকে সৌন্দর্যবর্ধনের এসব উপকরণ আসছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম উপকরণ, কারুশিল্প, কার্পেট, পাথর, কাঠের জিনিসপত্র ইত্যাদি। আর আমাদের দেশের বাঁশ, দড়ি, কাঠ, এসব উপকরণও ব্যবহার করা হচ্ছে ঘর সাজানোর কাজে। এটা আসলে নির্ভর করে কে কীভাবে তাঁর ঘরটা বা ক্ষেত্রটা সাজাতে চান তার ওপর। ক্ল্যাসিক্যাল, মডার্ন, ভিনটেজ, ট্রেডিশনাল, মুঘলসহ নানা রকম স্টাইল বা শৈলী আছে। এসব শৈলীতে ঠিক হয় কী ধরনের উপকরণ ব্যবহৃত হবে। একটা সময় এই উপকরণগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যেত না। বিদেশ থেকেও আনার সুযোগ ছিল না। তবে এখন বাংলাদেশেই অনেক উপকরণ পাওয়া যায়, আবার বাইরে থেকেও আমদানি করা হয়।

রঙিন কাচ, কাঠের ফ্লোর, পাথরের ফ্লোর, টাইলস এসব বিদেশি উপকরণ আমরা ব্যবহার করছি। এইচপিএল বা হাইপ্রেশার লেমিনেটের বিভিন্ন উপকরণও এখন ব্যবহৃত হচ্ছে আমাদের রান্নাঘরে। এটা পানি, তাপ ইত্যাদি বহনে সক্ষম। টাইলস কিচেনশিটে এখন এইচপিএল ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে উপকরণগুলো হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী। আগে ওয়ালপেপার বা রং ব্যবহার করতাম, তবে আধুনিক নকশায় এখন ওয়াল লেদার ক্লাইডিং; কম্পোজিট প্যানেল, ইকোস্টিক প্যানেল ব্যবহৃত হচ্ছে।

বন্ধন: ইন্টেরিয়রে অধুনা দেশীয় ও প্রাকৃতিক (বাঁশ, কাঠ, মাটি, দড়ি) উপকরণের ব্যবহার কতটা? যদি না হয় বা কম হয়, তবে এর পেছনের কারণ কী?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা:
একদমই যে দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করছি না, তা কিন্তু নয়। বাঁশ, কাঠ, দড়ির পাশাপাশি প্রাকৃতিক পাথর ব্যবহার হচ্ছে ইন্টেরিয়রে। কোন স্টাইলটা ইন্টেরিয়রে ব্যবহার হবে, সেটার ওপর নির্ভর করে উপকরণগুলো। গ্রাহক বা ক্লাইন্ট যা চায়, সেটাই ইন্টেরিয়র ডিজাইনার ব্যবহার করেন। অনেক সময় ডিজাইনার দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করতে গ্রাহককে পরামর্শ দেন। কারণ আমাদের দেশীয় উপকরণগুলো তো দীর্ঘস্থায়ী। দড়ি কিংবা মাটি দিয়ে দারুণ কাজ করা যায়। এগুলোর ব্যবহারও হচ্ছে প্রচুর।

দেশীয় ক্রাফটস বা উপকরণ কম ব্যবহার হচ্ছে এর কারণ আছে। দেশীয় এই উপকরণগুলো টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এখানে কাজ করতে হবে, স্থায়িত্ব বাড়ানো গেলে দেশীয় উপকরণের চাহিদা অনেকাংশে বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস।

কেবিনেট ও পার্টিশন তৈরিতে ব্যবহার বাড়ছে বহুমুখি বোর্ডের

বন্ধন: বাংলাদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, প্রকৃতিকে ঠিক রেখে কীভাবে গ্রিন তথা পরিবেশবান্ধব উপকরণের ব্যবহার বাড়ানো যায়?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: দেশীয় যে উপকরণ আছে, সেগুলো ব্যবহারের অনেক উপকারিতা আছে। প্রথমত, এগুলো আবহাওয়া ও পরিবেশবান্ধব; দ্বিতীয়ত, এগুলো বারবার ব্যবহার করা যায়; তৃতীয়ত, এসব পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের কর্মসংস্থান হয়। দেশীয় উপকরণগুলো ব্যবহার করলে আবহাওয়া বা জলবায়ুতে ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বাঁশ, কাঠ এমন উপকরণ যেগুলো বারবার ব্যবহার করা যায়। নতুন করে রং করা হলে বা আকার পরিবর্তন করে এই উপকরণ ব্যবহার করা যায় সহজেই। বোর্ডের ক্ষেত্রে যেটা সম্ভব নয়। মাটি দিয়ে ফার্নিচার তৈরি করা যায়। আগের দিনে মাটির ব্লক দিয়ে ঘর বানানো হতো। ঘরগুলো আরামদায়ক ও তাপমাত্রা সহনীয় হতো। মানে গরমের দিন ঠান্ডা অনুভূত আর ঠান্ডার দিনে গরম তাপমাত্রার ব্যবস্থা করত ঘরগুলো নিজেই। মাটি দিয়ে হরেক ডিজাইনের ইন্টেরিয়র উপকরণ তৈরি করা যায়। বোর্ড বা অন্যান্য উপকরণ যেগুলো আছে, সেগুলো একটি সময় পরে নষ্ট হয়ে যায়। কারণ এসবে বিভিন্ন উপাদানের মিশ্রণ থাকে। শরীরের জন্যও এগুলো ক্ষতিকর।

আমরা এখন পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে গ্রিন আর্কিটেকচার (Biophilic Design) বা সবুজ স্থাপত্য তৈরি করছি। সবুজের সঙ্গে মানুষের জীবনের একধরনের মেলবন্ধন আছে। এই মেলবন্ধন বাড়াতে আরও বেশি সবুজ উপকরণ বা দেশীয় উপকরণের ব্যবহার বাড়ানো উচিত। কারণ দিনের অন্তত ৯০ ভাগ সময় আমরা ঘরে অবস্থান করি।

বন্ধন: কী কী ধরনের দেশীয় উপকরণ অধুনা ইন্টেরিয়র ডিজাইনে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: বাঁশ, মাটি, কাঠের কথা বলেছি। রিসাইক্লিং ও টেকসই উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারে। প্লাস্টিক রিসাইকেল করে টাইলস, ইট কিংবা ফেন্স বানিয়ে সেগুলো ব্যবহার করতে পারি। রিসাইকেল প্লাস্টিক থেকে অন্দরসজ্জার নানা ক্র্যাফট তৈরি করা যায়। এটা বাইরের দেশে হচ্ছে। আমাদের দেশেও শুরু হয়েছে। শুধু ইন্টেরিয়র না, এক্সটেরিয়রে রিসাইকেল প্লাস্টিক ব্যবহার করা যায়। ছাদে বা পার্কিংয়ে এই ধরনের প্লাস্টিকের কার্পেট, শেড ব্যবহার করা যায়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন রিসাইকেল প্লাস্টিক দিয়ে ফার্নিচার বানাচ্ছে। এ ছাড়া রিসাইকেলকৃত ইলেকট্রনিক পণ্যসমূহ ইন্টেরিয়রে ব্যবহার করা যেতে পারে। গাছের বাকল (Cork) দিয়েও অনেক পণ্য তৈরী সম্ভব। এছাড়াও নিউজপেপার উডও ব্যবহৃত হচ্ছে অনেক পণ্য তৈরীতে।

বন্ধন: গ্রিন উপকরণে অন্দর শুধু ক্ল্যাসিক লুক পায়? এই বিশেষণ কতটা যুক্তিযুক্ত, কীভাবে আধুনিকতার সন্নিবেশ ঘটানো যায়?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: গ্রিন উপকরণে অন্দর শুধু ক্ল্যাসিক লুক পায় এই কথাটা আসলে ঠিক নয়। আগে আমাদের জীবনধারণ থেকে শুরু করে সবকিছুই ছিল প্রাকৃতিক। গ্রিন মানেই প্রকৃতি। ভবনের ডিজাইন করা হয় মানুষের জন্য। মানুষের লাইফস্টাইল, সাইকোলজিক্যাল বিষয় সবকিছু ভেবেচিন্তে ডিজাইন করা হয় বা সবুজ উপকরণ ব্যবহার করা হয়। সবুজ উপকরণে বরং মানুষ বেশি প্রাকৃতিক ভাব অনুভব করে। মানুষ সতেজ থাকে, প্রশান্তি পায়।

ইন্টেরিয়র ডিজাইনে ভিন্নতা আনে বাঁশের ব্যবহার

সবুজ আর্কিটেকচার নামে নতুন ধারণা এখন ব্যবহার হচ্ছে চারদিকে। মানুষের আয়ু বাড়াতে, উদ্ভাবনী শক্তি বাড়াতে উন্নত দেশগুলো গ্রিন আর্কিটেকচার বা সবুজ স্থাপত্যে সবাই মনোযোগী হচ্ছেন। অধুনা ইন্টেরিয়রে ব্যবহৃত সবুজ উপকরণের ব্যবহার, গাছপালার সন্নিবেশ রূপ নিচ্ছে গ্রিন আর্কিটেকচারে। প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কোনো ডিজাইন করলে সেক্ষেত্রে আউটপুটটা বা প্রতিফলন ভালো হয়।

বন্ধন: অনেকেই অভিযোগ করেন দেশীয় উপকরণ টেকসই কম হয়, সেক্ষেত্রে কীভাবে এই উপকরণগুলোকে টেকসই করা সম্ভব?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: যে কাঠ আমরা ব্যবহার করি, সেগুলো সঠিকভাবে সিজন বা প্রক্রিয়াজাতকরণ কি না সেটা জানা প্রয়োজন। সেটা যদি না হয় তাহলে ইন্টেরিয়রের এই উপকরণটা টেকসই হবে না। আমাদের উৎপাদকেরা সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করেন না। সঠিকভাবে সেটা বার্নিশ বা শুকানো হয় না। এ কারণে দেখা যায় কাঠ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। যাঁরা কাঠের কাজ করেন, তাঁদেরও সঠিক প্রশিক্ষণ নেই। উন্নত প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে দেশীয় উপকরণগুলো টেকসই হয় কম। উৎপাদকদের যদি এই ব্যাপারে ধারণা দেওয়া যায় তবে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা রাখি।

বন্ধন: পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত ও ব্যয়সাশ্রয়ী ইন্টেরিয়র ম্যাটেরিয়াল স্থাপনায় ব্যবহার বাড়াতে কীভাবে শিক্ষার্থী ও ডিজাইনারদের আগ্রহী করে তোলা যায়?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: গ্রাহকেরা যা চান, ডিজাইনাররা সেভাবেই করবেন, এটাই স্বাভাবিক। ডিজাইনারদের একধরনের ক্ষমতা থাকা উচিত, যাতে তিনি গ্রাহককে প্রভাবিত করতে পারেন। কারণ ক্লাইন্ট বা গ্রাহক ডিজাইনারের কাছে তখনই আসে, যখন তিনি মনে করেন, ডিজাইনার অনেক ভালো জানে। অথবা ডিজাইনারের পোর্টফোলিও ভালো। ডিজাইনারের একজন গ্রাহককে বোঝানোর ক্ষমতা থাকতে হবে। কোনটা ভালো, কোনটা টেকসই বা কোনটা তাঁর ডিজাইনের জন্য পরিপূরক এটা বুঝিয়ে দিতে হবে। সবুজ উপকরণ যে পরিবেশসম্মত, টেকসই ও দারুণ লুক এনে দিতে পারে, এটা ডিজাইনার গ্রাহককে বোঝাবে। আর শিক্ষার্থী বা ডিজাইনাররা তো এই মাটিরই সন্তান। দেশীয় উপকরণ কেন তাঁরা ব্যবহার করবেন না। এ জন্য দেশীয় উপকরণ সহজলভ্য ও টেকসইয়ের দিকে উৎপাদকদের মনোযোগী হতে হবে।

বন্ধন: ইন্টেরিয়র ম্যাটেরিয়ালগুলো সংগ্রহের মাধ্যম কী? এ উপকরণগুলো আসলে কারা বানায়, আরও কী ধরনের উপকরণ ইন্টেরিয়রে যুক্ত করা যেতে পারে?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: বেশির ভাগ উপকরণই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় আমাদের। চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশ থেকে উপকরণ আসে। দেশীয় উপকরণসমূহ ছোট ছোট কিছু এসএমই তৈরি করছে। রিসাইকেল প্রোডাক্ট সহজেই যুক্ত করা যায় ইন্টেরিয়রে।

বন্ধন: দেশীয় সহজপ্রাপ্য, পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত ইন্টেরিয়র ম্যাটেরিয়ালের ব্যবহার যাপন সৌন্দর্যে কতটুকু প্রভাব ফেলে?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: সৌন্দর্য বিষয়টা আপেক্ষিক। ডিজাইনে গ্রাহকের কিছু চাহিদা থাকে, সেটা বিভিন্ন উপকরণের ব্যবহার করে একজন ডিজাইনার নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তোলেন। দেশীয় উপকরণ ব্যবহার করেও ইন্টেরিয়রকে আকর্ষণীয় করা যায়; এটা আসলে ডিজাইনারের বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যাপার, তিনি কীভাবে দেশীয় উপাদান ব্যবহার করে কী ধরনের ডিজাইন করবেন।

বন্ধন: দেশীয়, পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত ইন্টেরিয়র ম্যাটেরিয়ালের ব্যবহার বাড়াতে নবীন ও তরুণ স্থপতি; ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: আমি তাদের বলব, দেশীয় উপকরণ সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে। কীভাবে উপকরণগুলো সৃজনশীলভাবে ব্যবহার করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখা। নতুন কী ডিজাইন আসছে, সেগুলোতে দেশীয় উপকরণ কীভাবে ব্লেন্ড করবে, সেই বিষয়ে ধারণা রাখা।

রান্নাঘরের ইন্টেরিয়রে ব্যবহৃত হাই প্রেসার লেমিন্যান্ট

বন্ধন: যাঁরা ইন্টেরিয়র ডিজাইনার হতে চান, তাঁদের জন্য কী বলবেন?
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা: আধুনিক স্থাপনার অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যবর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা। প্রতিষ্ঠানের অন্দরমহলের সাজসজ্জা বৃদ্ধিতে ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের চাহিদা বুঝতে পারছে প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই বেড়েছে ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের চাহিদা।

যারা এই পেশায় আসতে চায়, তাদের জন্য পরামর্শ হলো- ইন্টেরিয়র ডিজাইন নিয়ে প্রচুর জার্নাল, বই, তথ্য ইন্টারনেটে আছে, সেগুলো পড়া। নান্দনিক যে স্থাপত্যগুলো আছে, সেগুলো দেখা, ধারণা নেওয়া। একটা খালি জায়গা কে কীভাবে ডিজাইন করবে, সেই বিষয়ে ভাবা। একটু-আধটু ড্রয়িং প্র্যাকটিস করা।

প্রকাশকাল: বন্ধন ১৩৬ তম সংখ্যা, ডিসেম্বর ২০২১

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top