প্রকৌশলী আফতাব উদ্দিন আহমেদ
অভ্যন্তরীণ দেশীয় নির্মাণশিল্পের বিকাশ এবং এ শিল্পে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বার্থ সংরক্ষণ ও গুণগতমান নিশ্চিতকরণে কাজ করছে বিএসিআই

প্রকৌশলী আফতাব উদ্দিন আহমেদের জন্ম ১৯৪৫ সালের জানুয়ারিতে, মানিকগঞ্জের নাগরপুরে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে। স্থানীয় স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন শেষে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। এখান থেকে আইএসসি পাস করেন। এর পর ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেন ১৯৬৭ সালে। এর পর যোগ দেন পারিবারিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সামছুদ্দিন মিয়া অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মূলত যাঁদের হাত ধরে আজকের বিএসিআই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে, তিনি তাঁদের অন্যতম।

সিভিল, পাইপলাইন, মেকানিক্যাল কনস্ট্রাকশনে তাঁর রয়েছে ৪৫ বছরের অভিজ্ঞতা। কনস্ট্রাকশনের নানা কাজে বিভিন্ন সময়ে হয়েছেন প্রশংসিত। তিনি ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি)-এর আজীবন সদস্য। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণকাজ, বিশেষ করে গ্যাস পাইপলাইন তৈরিতে দেশে তাঁর প্রতিষ্ঠানকেই পুরোধা মানা হয়। পেশাগত কাজে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ নানা দেশ ভ্রমণ করেছেন। সদাহাস্যোজ্জ্বল গুণী এ প্রকৌশলী নির্মাণশিল্পে নানামুখী সমস্যা আর সম্ভাবনার কথা বলেছেন বন্ধন-এর মুখোমুখি হয়ে। সে কথাই জানাচ্ছেন ম. শাফিউল আল ইমরান

একটি নির্মাণাধীন প্রকল্প

বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই) ভূমিকা সম্পর্কে কিছু বলুন

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি, যা সংক্ষেপে বিএসিআই (BACI) নামে সর্বাধিক পরিচিত। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি দেশের নির্মাণশিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী সরকার অনুমোদিত বাণিজ্যিক সংগঠন এবং এফবিসিসিআইয়ের এ ক্যাটাগরির সদস্য, যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টরেট অব ট্রেড অরগানাইজেশন (ডি.টি.ও লাইসেন্স নং : ৮৮)-এর লাইসেন্সপ্রাপ্ত। অভ্যন্তরীণ দেশীয় নির্মাণশিল্পের বিকাশ এবং এ শিল্পে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বার্থ সংরক্ষণ ও গুণগতমান নিশ্চিতকরণে কাজ করছে বিএসিআই। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজে সংগঠনটি নিয়োজিত। 

বিএসিআই International Federation of Asian & Western Pacific Contractor’s Association (IFAPWCA)-এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের কনস্ট্রাকশন ঠিকাদারদের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলার অভিপ্রায় নিয়ে ৫০ বছর আগে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় IFAPWCA গঠিত হয়েছিল। বিএসিআই,  IFAPWCA-এর সদস্য হিসেবে, ৭ থেকে ১০ মার্চ, ২০০৯ তারিখে ঢাকায় ৩৭তম IFAPWCA সম্মেলন আয়োজনের গৌরব অর্জন করে। কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির উন্নতির জন্য বিএসিআই বিভিন্ন সময় সেমিনার, কনস্ট্রাকশন মেলা, ট্রেইনিং এবং ওয়ার্কশপের আয়োজন করে থাকে। তা ছাড়া বিএসিআই প্রতিবছর বার্ষিক সাধারণ সভা ও বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং ত্রৈমাসিক কনস্ট্রাকশন পত্রিকা প্রকাশ করে থাকে। 

বিএসিআই একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। সংগঠনের সদস্যদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা রক্ষা করা, কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির উন্নতি সাধন এবং উন্নয়নকাজ ত্বরান্বিত করাই বিএসিআইয়ের প্রধান লক্ষ্য। একটি বাণিজ্যিক সংগঠন হিসেবে এর সম্মানিত সদস্যদের সব ধরনের সমস্যার সমাধানের নিমিত্তে বিএসিআই বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। 

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই) কতটা পথ পেরোল?  বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই) ২৫ জানুয়ারি ১৯৯৬ সালে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজের অধীনে প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ১৮ বছর দেশীয় অভ্যন্তরীণ নির্মাণশিল্পের বিকাশ এবং এ শিল্পে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বার্থ সংরক্ষণ ও গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

রাস্তা নির্মাণ কাজ

সংগঠনটির আওতাভুক্ত নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ কী কী?

বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের সঙ্গে কর্মরত বেশির ভাগ সুখ্যাতিসম্পন্ন ও সমাদৃত নির্মাণপ্রতিষ্ঠানসমূহ বিএসিআইয়ের সম্মানিত সদস্য। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উচ্চমানসম্পন্ন পেশাদারি এবং নিজ নিজ কার্যক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষ। 

প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মানের ব্যাপারে আপনাদের কোনো নীতিমালা আছে কি?

হ্যাঁ, আছে। নির্মাণপ্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা যেমন- তাদের কাজের গুণগত মান, সময় অনুযায়ী কাজ শেষ করার সক্ষমতা, কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাব্যবস্থা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে নির্মাণপ্রতিষ্ঠানসমূহকে এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।  

সংগঠনটির গঠনতন্ত্র সম্পর্কে কিছু বলুন

বাণিজ্য সংগঠন আইন অনুযায়ী বিএসিআই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টরেট অব ট্রেড অরগানাইজেশনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত। এই অনুযায়ী বিএসিআইয়ের রয়েছে একটি সংবিধান, যা দ্বারা সংগঠনটি পরিচালিত হয়। 

আবাসনশিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে নির্মাণশিল্পের ভূমিকা কতটুকু?

নির্মাণশিল্প দেশের চতুর্থ বৃহত্তম রাজস্ব প্রদানকারী খাত। দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে নির্ধারিত সব অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম নির্মাণপ্রতিষ্ঠানসমূহ বাস্তবায়ন করে থাকে। বিএসিআইয়ের সদস্যরা আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, রাস্তা ও জনপথ, ব্রিজ ও কালভার্ট, বাঁধ,  বিমানবন্দর, শিল্পাঞ্চল, ফ্লাইওভার ইত্যাদি নির্মাণের সঙ্গে জড়িত। 

ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প

নির্মাণশিল্প প্রসারের সংকট বা অন্তরায় কী কী?

নির্মাণশিল্পের প্রসারে প্রধান প্রতিবন্ধকতা-

  • প্রকিউরিং এনটিটিসমূহের PPR ২০০৮-এর আলোকে দরপত্রে Price Adjustment Clause সন্নিবেশ না করা। 
  • চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তিপত্রে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী দর সমন্বয় করার বিধান না থাকা। 
  • বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশ-১৯৬১-এর Sec.13(1)(a), বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-১৯৯৪-এর বিধি-৭ এবং বাণিজ্য সংগঠন আইন-২০১১-এর ধারা : ২৬ (১) (২) (প্রস্তাবিত) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনের সদস্যভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক না করা।
  • সেন্ট্রাল রেজিস্ট্রেশন অব কন্ট্রাক্টর পদ্ধতি চালু না করা। দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন মাত্রার কারিগরি ও আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন  ঠিকাদারদের একটি কেন্দ্রীয় ডেটা ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মানেই হচ্ছে সেন্ট্রাল রেজিস্ট্রেশন অব কন্ট্রাক্টর পদ্ধতি।
  • নির্মাণকাজের চলতি বিল পরিশোধে উৎসে VAT এবং IT কর্তনের সময় Quoted Price-কে ভিত্তি মূল্য ধরা হয়, যা মূলত VAT Inclusive Price । ফলে, প্রতিষ্ঠানসমূহ VAT (Quoted Price-এর মধ্যে VAT যোগ করা থাকে) এর ওপর VAT ও IT প্রদান করে, যা কোনোভাবেই বিধিসম্মত নয়।
  • উৎসে নির্মাণশিল্পসমূহকে উচ্চহারে মূল্য সংযোজন কর প্রদান করতে হওয়ায় এ শিল্পের জন্য এটি অন্যতম প্রধান অন্তরায়। 

এ সমস্যা উত্তরণে করণীয় কী? 

  • প্রতিটি দরপত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বিবেচনা ব্যতিরেকে পিপিআর অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় মূল্য সমন্বয় ধারা (Price Adjustment Clause) সন্নিবেশিত করে কার্যকরী করা। এবং এ ব্যাপারে বিভিন্ন নির্বাহী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারী, অজ্ঞতাপ্রসূত এবং পিপিআর ২০০৮-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক আরোপিত শর্তাবলি দরপত্রে প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান। 
হোটেল রেডিসন ওয়াটার গা‍র্ডন, এয়ার‍পো‍র্ট রোড, ঢাকা
  • চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের চুক্তি মূল্য, নির্মাণসামগ্রীর বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে পার্থক্য নির্ণয়পূর্বক দর সমন্বয় করে বাংলদেশের নির্মাণশিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
  • পিপিআর-২০০৮ (সংশোধিত এপ্রিল ২০১০)-কে বাস্তবমুখীকরণ এবং এর সঠিক বাস্তবায়ন যেমন সব কাজের ক্ষেত্রে মূল্য সমন্বয় ধারা (Price Adjustment Clause) কার্যকর করা।
  • বর্তমান পরিবর্তিত বিশ্ববাজার পরিস্থিতিতে, বৈশ্বিক অর্থ মন্দার প্রভাবে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতিটি নির্মাণকাজের প্রাক্কলনে ‘প্রাইস কনটিনজেন্সির’ আওতায় প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ রাখা।
  • পূর্তকার্য সম্পাদন ও সেবা সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসমূহকে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনের সদস্যপদ বাধ্যতামূলক করা। 
  • সেন্ট্রাল রেজিস্ট্রেশন অব কন্ট্রাক্টর পদ্ধতি চালু করা। 
  • দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ও অর্থনীতিতে নির্মাণশিল্পের প্রয়োজনীয়তা ও বিকাশের স্বার্থে বর্তমান আয়কর হার অন্তরায় বিধায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে উৎসে আয়কর কমিয়ে আগের মতো ৪ শতাংশ করার ব্যবস্থা করা।
  • মূল্য সংযোজন কর ধার্যের ক্ষেত্রে VAT Exclusive Price-কে ভিত্তি মূল্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া। 
  • শিল্প হিসেবে নির্মাণের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে যদি বলেন? 
  • বর্তমান জিডিপিতে নির্মাণশিল্পের অবদান ৮ শতাংশ এবং এই শিল্পের জিডিপি বৃদ্ধির হার ১২ শতাংশ। 

নির্মাণসামগ্রীর দাম ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতায় রাখতে আপনাদের কোনো উদ্যোগ আছে কি? 

উন্মুক্ত বাজারে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য নির্ধারণে আমাদের ভূমিকা নেই। কারণ, মূল্য চাহিদা ও জোগানের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। তবে নির্মাণসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা সরকারের কাছে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে অনুরোধ জানাতে পারি। 

সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায় থেকে সংগঠনের কর্মকাণ্ডে আপনারা কী ধরনের সহায়তা পান? 

আমাদের সংগঠনের কর্মকাণ্ডে বেসরকারি পর্যায়ে কোনো রকম সহযোগিতা নেই বা সরকারি পর্যায় থেকেও সহযোগিতা খুবই অপ্রতুল।

আপনার কর্মোদ্যোগ বা ভূমিকা সম্পর্কে কিছু বলুন

বিএসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে এর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। ইন্ডাস্ট্রির সুনাম বজায় বাখা, কন্ট্রাক্টরদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা রক্ষা করা, ঠিকাদারদের সকল প্রকার অধিকার রক্ষা করা এবং কনস্ট্রাকশন সম্পর্কিত আইনকানুন, অর্থনৈতিক প্ল্যান ও টেকনোলজির উন্নতি সাধন ইত্যাদি কাজে ভূমিকা পালন করাই সংগঠনটির উদ্দেশ্য। এ ছাড়া বিএসিআইয়ের লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে-

  • কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সকল প্রকার আইনকানুন এবং কাজের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞাত থাকা ও মূল্যায়ন করা। 
  • সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নির্মাণশিল্পের উন্নয়ন/অধিকার/সমস্যাসংক্রান্ত সুপারিশমালা প্রেরণ করা। 
  • ঠিকাদারি ব্যবসার উন্নতির অন্তরায়সমূহ ও ব্যবসা ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধে করণীয় এবং কনস্ট্রাকশন প্রযুুক্তির উন্নয়ন বিষয়ে গবেষণা ও নির্দেশনা প্রদান করা।  
  • কনস্ট্রাকশন উপকরণের চাহিদা বা জোগান ও শ্রমিকের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা। 
  • মানব সম্পদের যোগ্যতা নিরূপণপূর্বক সব স্তরের জন্য হাতে-কলমে শিক্ষার আয়োজন করা। 
  • বিএসিআই মেম্বার ও বৈদেশিক ঠিকাদার এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি সংগঠনের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। 
  • গবেষণা ও নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রায়োগিক বিশেষ দক্ষতাকে ধারণের মাধ্যমে কনস্ট্রাকশন ব্যবসাকে উৎসাহিত করা। 
  • সব বিএসিআই মেম্বার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে বিএসিআইয়ের ত্রৈমাসিক পত্রিকার মাধ্যমে সকল প্রকার তথ্য ও কর্মবিষয়ক বিশেষ দক্ষতা বিষয়ে অবগত করা। 
  • সরকারি কার্যাদেশের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়নে ন্যায়সংগত আচরণ ও ব্যবসায় নৈতিকতা বজায় রাখা নিশ্চিতকরণ। 
  • নির্মাণকাজের গুণগতমান নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট গুণবিধি প্রতিষ্ঠা করা। 
  • নির্মাণশিল্পে ব্যবহৃত দেশীয় তৈরি নির্মাণসামগ্রী ও আমদানি করা নির্মাণসামগ্রী এবং অন্যান্য ব্যবহৃত উপকরণের গুণগত মান নিশ্চিতকরণ।

সংগঠনের সফলতা সম্পর্কে যদি বলেন

সংগঠনের সফলতা বলতে প্রথমেই আমি একটি আন্তর্জাতিক মানের ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করার কথা বলতে পারি, যা দেশে দক্ষ শ্রমিক অথবা জনবল গড়ে তোলায় ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া বিএসিআই সরকারের National Skill Development Council (NSDC)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক নির্মাণ সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের নির্মাণশিল্পকে পরিচিত করার মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে, যা দেশের নির্মাণশিল্পকে প্রতিনিধিত্ব করছে। তা ছাড়া এসব সংগঠনের সহযোগিতায় দেশের নির্মাণপ্রতিষ্ঠানসমূহ উন্নত দেশের নির্মাণপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নতুন নতুন সক্ষমতা অর্জন করতে পারছে। 

ভৈরব ব্রিজের নির্মাণ কাজ

বিএসিআইয়ের ভবিষ্যৎ কর্মতৎপরতা সম্পর্কে জানতে চাই। 

বিএসিআই যেসব প্রতিষ্ঠার যে বিষয়গুলো কাজ করছে- 

  • পরিপূর্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতাসম্পন্ন ও বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (যেমন- সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ইত্যাদি) সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের নির্মাণশিল্পে গড়ে তোলা। 
  • সময়ে সময়ে বিভিন্ন প্রকার মানদণ্ড উৎসাহিত করার মাধ্যমে পরে তা নির্মাণশিল্পের স্বার্থ রক্ষাকারী বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। 
  • সদস্যদের মধ্যে কোনো প্রকার বিরোধ সৃষ্টি হলে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করা এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কমিটি গঠন করা। 
  • আইনসংগত বাণিজ্যিক বিবাদ অথবা চুক্তির বাধ্যবাধকতা পালনে সৃষ্ট সমস্যা অথবা সদস্যদের দাবির সমাধানকল্পে সাহায্য ও সহযোগিতা বজায় রাখা। 
  • যেসব আইনকানুন নির্মাণশিল্পে অথবা নির্মাণশিল্পের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিরূপ প্রভাব ফেলে তা পরিবর্তন বা পরিবর্ধন কিংবা পরিমার্জনের মাধ্যমে শিল্পবান্ধব করে গড়ে তোলা। 
  • উদ্দেশ্য সাধনে সহযোগী এবং কাজে বিশেষ সুবিধা ও স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সরকারের (যথা- পৌর/স্থানীয়/অন্যান্য) সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা করা। 
  • তথ্যসমৃদ্ধ এবং সদস্যের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে অবগত করানো। যেমন : ট্যাক্স আইন/আইনে যেকোনো পরিবর্তন/আমদানি আইন ইত্যাদি।
  • বেআইনি চর্চার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য উচ্চমানসম্পন্ন পরিচালনা নীতি মেনে চলা এবং সদস্যদের মধ্যে দক্ষতাকে উৎসাহিত করা। 
  • চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণকাজের দায়িত্ব এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের রক্ষণের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নিয়মকানুন পালনের নিমিত্তে সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা।

আপনাকে বন্ধনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

  • প্রকাশকাল: বন্ধন ৪৫ তম সংখ্যা, জানুয়ারি ২০১৪

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top