সভ্যতার সাথে পানির সম্পর্ক অকৃত্রিম এবং অপরিহার্য। বাংলাদেশে পানীয় জলের প্রধান উৎস মাটির নিচে। ভূগর্ভস্থ পানি মূলত গভীর নলকূপের মাধ্যমে তুলে সরবরাহ করা হয়। এ ক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির গুণগত মান অন্য উৎসের পানির চেয়ে ভালো। এতে আবার অনেক ক্ষেত্রেই পানির পরিশোধন করতে হয় না। রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে দ্রুত বাড়ছে নিরাপদ পানির চাহিদা। এ বিপুল পরিমাণ পানি চাহিদার ৮৭ ভাগ বা ১৯৫ কোটি ৭৫ লাখ লিটার পানি গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূ-অভ্যন্তর থেকে উত্তোলনের কারণে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর গড়ে ১০ ফুট করে নিচে নামছে মত ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডব্লিউএম)। ধীরে ধীরে পানির স্তর ১ হাজার থেকে ১২শ’ ফুট গভীরে নেমে গেছে। এতে পানিশূন্য হয়ে পড়ছে ঢাকাসহ দেশের ভূগর্ভস্থ একটি বড় অংশ।
বিশ্বব্যাপী পানির অবস্থা
জাতিসংঘ তথ্য অনুসারে আগামী ২০ বছরের কম সময়ের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির চাহিদা ৫০% বৃদ্ধি পাবে। ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ (৪৮টি দেশের ২.৮ বিলিয়ন মানুষ) বিশুদ্ধ পানি সমস্যার সম্মুখীন হবে। পৃথিবীর প্রায় ৯৭% পানি লবণাক্ত। ব্রাজিল, কানাডা, চীন, কলম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া বিশ্বের বিশুদ্ধ পানির অর্ধেক ভান্ডার ৬টি দেশের অধীনে। যদিও বিশ্বের ৬০% মানুষ বসবাস করে এশিয়ায় এবং মধ্যপ্রাচ্যে। বিশ্বের ৭০% পানি ব্যবহার হয় কৃষি কাজে, ২২% ব্যবহার হয় শিল্প কারখানায় এবং ৮% ব্যবহার হয় মিউনিসিপ্যালিটি ও জনগণের ব্যবহারের জন্য। আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর মোট ৯শ’ ৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ৭শ’ কোটিই পড়বেন পানির সমস্যায়। তার মানে প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে দু’জনই নিরাপদ পানির সংকটে ভুগবে। তখন বিশ্বব্যাপী দেখা দেবে ভয়াবহ পানি সংকট। আর তাই পানির গুরুত্ব স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ জীবনের জন্য পানি ২০০৫-২০১৫ আন্তর্জাতিক পানি দশক এবং ২২ মার্চকে বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
২০২০ সালে বাংলাদেশে পানির প্রয়োজন হবে ২৪,৩৭০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার। মাটির ওপর এবং নিচে থেকে আমরা যে পানি পাব তার পরিমাণ ২৩,৪৯০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার। অর্থাৎ প্রয়োজনের চেয়ে ৮৮০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার কম। এর মধ্যে সিংহভাগ পানি খরচ হবে কৃষি সেচের জন্য।
ভূগর্ভস্থ পানি
সাধারণত মাটির নিচে একটি নির্দিষ্ট গভীরতার পরে মাটির কণার ফাঁকে পানির পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে শতভাগ ফাঁকা জায়গা পানি দ্বারা পূর্ণ থাকে। যদি সেই পানি সহজে পরিবহনযোগ্য হয় (সাধারণত যেখানে বালি মাটি থাকে সেখানে পানি সহজে পরিবাহিত হয়) তাহলে তাকে এক্যুইফার বলে। এই এক্যুইফার সাধারণত দুই ধরনের :
১. আন-কনফাইন্ড এক্যুইফার যা কিনা মাটির উপরের দিকে থাকে। ২. কনফাইন্ড এক্যুইফার যা আসলে মাটির অনেক নিচে দুটি অপরিবহনযোগ্য স্তরের মাঝামাঝি অবস্থান করে (নিচের ছবিটি দেখুন)। আন-কনফাইন্ড এক্যুইফার সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি ভূগর্ভে প্রবেশ করে তাই সে সময় এই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর উপরে ওঠে আর শুষ্ক মৌসুমে তা আবার নিচে নামে। অন্যদিকে কনফাইন্ড এক্যুইফারে এই ওঠানামা অনেক ধীর গতির।
চিত্র : এক্যুইফার (উৎস উইকিমিডিয়া কমন্স)
এক্যুইফারে পানি আসে মূলত দুটি উৎস থেকে।
১. বৃষ্টির পানি, যা কিনা উলম্বভাবে মাটির উপর থেকে,
২. আশপাশের নদী বা জলাভূমি থেকে পানি, যা মাটির কণার ফাঁক দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখন এই এক্যুইফারের পানির ব্যবহার হচ্ছে নগরের জন্য প্রয়োজনের পানির জোগানো। বিষয়টি একটি সহজ সমীকরণে বোঝানো যাক
এক্যুইফারের পানির স্তরের পরিবর্তন = পানির ইনপুট পানির আউটপুট
এ ক্ষেত্রে ইনপুট যদি আউটপুট থেকে বেশি হয় তাহলে পানির স্তর উপরে উঠবে আর ইনপুট যদি আউটপুট থেকে কম হয় সে ক্ষেত্রে পানির স্তর নিচে নামবে।
যে কারণে নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর
ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকা হয় পিচ না নয় সিমেন্টের আচ্ছাদনে ঢাকা। অল্প কিছু পার্ক বা মাঠ আছে যেখানে মাটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সুতরাং বলাই বাহুল্য নগরীর বৃষ্টির পানির অধিকাংশই যায় খালে আর সেখান থেকে গড়িয়ে নদীতে। সুতরাং বৃষ্টির পানি থেকে এক্যুইফারে ইনপুট অনেক কম। বর্ষাকালে নিম্নাঞ্চলে জমে থাকা পানির একটি বিশেষ অংশ এক্যুইফারে প্রবেশ করে। কিন্তু এই নিম্নাঞ্চল ভরাট করে নগরায়ণ করা হচ্ছে। ফলে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে এর পরিমাণ। সুতরাং সামষ্টিকভাবে ঢাকায় এক্যুইফারে পানির ইনপুট যৎসামান্য।
উপরের সহজ সমীকরণে দেখানো হয়েছে কিভাবে এক্যুইফারে পানির স্তর ওঠানামা করে। এখন যেহেতু ঢাকার এক্যুইফারে ইনপুট আউটপুট থেকে অনেক অনেক কম। সে কারণেই ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। কিন্তু এই নেমে যাওয়ার হার আশঙ্কাজনক। নিচের লেখচিত্রে দেখানো হলো ১৯৮৫ সাল থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে পানির স্তর কিভাবে দ্রুত নেমে যাচ্ছে তার নমুনা। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ওয়াসার পর্যবেক্ষণ নলকূপের উপাত্তের ভিত্তিতে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। নিচের গ্রাফটি লক্ষ করুন। বছরে প্রায় ৩ মিটার করে নেমে যাচ্ছে ঢাকা শহরের পানির স্তর।
চিত্র : ঢাকার ক্রমহ্রাসমান এক্যুইফার
একই ধরনের ফলাফল দেখা যায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন সংস্থার (বিএডিসি) গবেষণায়ও। নিচের গ্রাফে তা সুস্পষ্ট
চিত্র : ঢাকার ক্রমহ্রাসমান এক্যুইফার (বিএডিসি)
বিগত ১২ বছরে ঢাকা নগরীর পানির স্তর আরও ৩৫ মিটার নিচে নেমে গেছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ১১ বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৩৩ দশমিক ১২ মিটার নিচে নেমে গেছে পানি। ১৯৯৬ সালে ২৬ দশমিক ৬ মিটার মাটির নিচে ঢাকা শহরে পানি পাওয়া যেত। সেখানে ২০০০ সালে সেই পানির স্তর আরও নিচে নেমে ৩৪ দশমিক ৮৬ মিটারে গিয়ে পৌঁছে। ২০০৬ সালে তা ৫৯ দশমিক ৭২ মিটারে পাওয়া যায়। বর্তমানে পানির স্তর অবস্থান করছে ৬১ দশমিক ১৮ মিটার গভীরে। অথচ সত্তর দশকে মাত্র ১১ দশমিক ৩ মিটার নিচে পানি পাওয়া যেত। ১৯৯৬ থেকে ২০০৭ এই সময়ের মধ্যে বছরে গড়ে তিন মিটার করে পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০০৪ ও ২০১০ সালের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার তুলনামূলক চিত্র নিচের লেখচিত্রে
বিএডিসির গবেষকদের মতে, এমন ঘটনার কারণ হচ্ছে অব্যাহত গতিতে দ্রুত ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়া ও ভূগর্ভস্থ পানির রিচার্জ হওয়ার প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়া। বন্যা, বৃষ্টি, কিংবা ভূগর্ভস্থ স্রোতের মাধ্যমে পানির একটি জোগান রয়েছে। তবে এ প্রাকৃতিক সরবরাহের তুলনায় উত্তোলনের ব্যাপারটি মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এ জন্য আস্তে আস্তে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নিচে নেমে যাচ্ছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও। আগামী ২০ বছর পর ঢাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের গড় গভীরতা হবে প্রায় ১০০ মিটার, যা থেকে পানি উত্তোলন সম্ভব না-ও হতে পারে।
ভূগর্ভস্থ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ও রাজধানী ঢাকা
পৃথিবীর ভূত্বক গঠনের ইতিহাসে তৃতীয় মহাযুগের এয়োসিন ও মায়োসিন যুগে মাটি ভরাটের প্রক্রিয়া চলে ১৪ কোটি বছর থেকে ৫০ লাখ বছর আগ পর্যন্ত। মাটির এ স্তরটিই ‘ধূপীটিলা’ নামে বাংলাদেশের মাটির গভীরে থাকা ভূগর্ভস্থ পানির আধার হিসেবে পরিচিত। এ পানি অফুরন্ত। কেননা ভূ-উপরিস্থ পানির দ্বারা এ আধার সর্বদা পূরণ হয়ে মাটির গভীরে বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের ভূগর্ভস্থ পানিকে সাধারণত তিনটি প্রধান স্তরে ভাগ করা হয়, যথা (১) অগভীর স্তর, (২) গভীর স্তর এবং (৩) অতি গভীর স্তর। অগভীর স্তর (৫ ফুট থেকে ১৫০ ফুট) থেকেই সারাদেশে শ্যালো টিউবওয়েলের মাধ্যমে পানি তুলে গ্রামে খাওয়ার জন্য সরবরাহ করা হয় বা জমিতে সেচ দেওয়া হয়। তবে এ পানির স্তরটি ভূগভীরে মাটির প্রকারভেদ অনুযায়ী কখনো পাতলা বা মোটা হয় এবং আধারে পানির পরিমাণও কমবেশি হয়। উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালের পর থেকে শীতকালে বোরো ধানের চাষ অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে বাংলাদেশে খাল-বিলগুলো ক্রমে শুকিয়ে যায়। অগভীর স্তর থেকে পানি তুলে সেচ দেওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে। এর ফলে অগভীর স্তরের অনেক স্থানে আধারস্থিত পানি নিঃশেষ হয়ে গিয়ে টিউবওয়েলগুলো অকেজো হয়ে যায়। অগভীর নলকূপের মাধ্যমে অতিমাত্রায় পানি তোলার ফলে ভূগর্ভস্থ পানির উচ্চতাও নেমে যায়।
বাংলাদেশে ভূগর্ভস্থ পানির গভীর স্তর (১৫০ থেকে ৫০০ ফুট) থেকেই ডিপটিউবওয়েলের মাধ্যমে পানি তুলে শহরে খাওয়ার জন্য সরবরাহ করা হয়। ঢাকা মহানগরীতে ক্রমবর্ধমান হারে ডিপটিউবওয়েলের মাধ্যমে পানি তোলা হচ্ছে। এ কারণে এখানকার ভূগর্ভস্থ পানির গভীরতা, যা ১৯৭০-এর দিকে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২ মিটার ছিল (চৈত্র মাসে) তা এখন ৬০ মিটারেরও বেশি হয়ে গেছে।
বাংলাদেশে অতি গভীর স্তরের পানি (৫০০ ফুট থেকে আরও গভীর) ডিপটিউবওয়েলের মাধ্যমে তুলে উপকূলীয় এলাকায় সরবরাহ করা হয়।
তবে বাংলাদেশের মানুষ অগভীর স্তরের পানির ওপরই সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে, যার সঙ্গে ভূ-উপরিস্থ পানির একটা সরাসরি সংযোগ রয়েছে। এ অগভীর স্তরের পানি এখন শিল্পবর্জ্যরে কারণে ভয়ঙ্করভাবে দূষিত। অনেকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অধিকহারে নেমে যাওয়াকে প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখেন। ঢাকা মহানগরীর এখনকার চাহিদার ৮৫ ভাগ পানি (দৈনিক ১৬০ কোটি লিটার) এ গভীর স্তর থেকে টিউবওয়েলের মাধ্যমে তোলা হচ্ছে, যা নিকট ভবিষ্যতে দূষণের শিকার হলে ঢাকা নগরবাসী ভয়াবহ সংকটে পড়বে।
১৫৩০ বর্গকিলোমিটারের ঢাকা শহরে প্রায় দুই কোটি লোকের নিত্যদিনের বাস। ১৯৬০ সালে ঢাকায় প্রতিদিন পানির চাহিদা ছিল ১৫০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার। ১৯৯৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫০০ কিউবিক মিলিয়ন লিটার। ২০০৫ সালে দৈনিক চাহিদা ছিল ২১০০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার। বর্তমানে ঢাকায় দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ২৫০০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার। অথচ প্রতিদিন জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে ১৯০০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার। আর দৈনিক পানির চাহিদার বিপরীতে ৬০০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার পানির শর্টেজ বা অভাব রয়ে যাচ্ছে। এ অভাব যতই দিন যাচ্ছে ততই পাহাড়সম আকার ধারণ করছে। ঢাকার পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসার তথ্য মতে, ২০৩০ সালে ঢাকায় দৈনিক পানির চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ৫০০০ মিলিয়ন লিটার। ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করতে পারবে ২০০০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার, যা ভূগর্ভস্থ পানির স্তর থেকে জোগান দেওয়া যাবে ১৭০০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার এবং সারফেস বা ভূ-উপরিভাগ থেকে জোগান দেওয়া হবে বাকি ৩০০ মিলিয়ন কিউবিক লিটার। দৈনিক চাহিদা মেটাতে গিয়ে ২০৩০ সালে শতকরা মাত্র ৪০ ভাগ পানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
ঢাকা শহরে পানি সরবরাহের একমাত্র বৈধ প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসা। ওয়াসার রিপোর্ট মতে, ঢাকা শহরের ৮৪% ভাগ পানি সরবরাহ হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি থেকে আর বাকি ১৬% হচ্ছে নদী থেকে। তবে ২০০২-এ সায়েদাবাদ পানি পরিশোধন কেন্দ্র্র চালুর আগে এ পরিসংখ্যান ছিল ৯৫% ভূগর্ভস্থ থেকে আর বাকি ৫% নদী থেকে অর্থাৎ ঢাকা শহরের এক্যুইফার থেকে আমরা অনবরত পানি উত্তোলন করে চলেছি। একই পরিসংখ্যান অনুসারে, ঢাকা ওয়াসা দিনে ১১৬০ মিলিয়ন লিটার পানি উত্তোলন করে থাকে এর ৩৮৯টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে।
ঢাকা মহানগরীতে পানির চাহিদা দৈনিক ১৪০ কোটি লিটার। ঢাকা ওয়াসার ৩১১টি গভীর নলকূপের মাঝে সচল রয়েছে ২০০টি। এগুলো থেকে দৈনিক পাওয়া যাচ্ছে ১১৯ কোটি লিটার পানি। এর শতকরা ২২ ভাগ সিস্টেম লস মিলে ৫০ কোটি লিটার পানি কম সরবরাহ হওয়ায় পানি সংকটের শুরু। এখন নলকূপের পানি পেতে ৮শ’ থেকে ১২শ’ ফুট গভীরে যেতে হয়।
অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর সমুদ্রের পানির উচ্চতার চেয়ে ৩-১০ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে যাচ্ছে। ভূগর্ভ থেকে প্রতিবছর যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে তা বৃষ্টি ও বন্যার মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে না বলেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ওয়াসার সরবরাহ করা পানির ৮৭ শতাংশই তোলা হচ্ছে মাটির নিচ থেকে। ওয়াসা ছাড়াও ভূগর্ভের পানি তোলা হচ্ছে বৈধ-অবৈধ গভীর নলকূপের মাধ্যমে। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। জলাধার, খাল ভরাট করে ফেলায় ভূগর্ভে পানি আবার ফিরে যেতে পারছে না। কমছে ওয়াসার গভীর নলকূপগুলোর উত্তোলন ক্ষমতা। তৈরি করছে পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কা। এ অবস্থা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে দেখা দেবে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। ভবন দেবে যাওয়া ও ধসে পড়ার ঝুঁকিও বাড়বে। ভূগর্ভ থেকে অনবরত পানি উত্তোলনের ফলে মাটির অভ্যন্তরে ফাঁকা জায়গা বেড়ে যাবে। সাধারণত একটি স্থাপনা মাটির উপরে যে চাপ দেয় তা মাটি ও মাটির অভ্যন্তরস্থ পানির উপরে ছড়িয়ে পড়ে। এখন পানি অপসারণ করা হলে সেই চাপ পুরোপুরি মাটির উপরে বিস্তৃত হবে। এ ক্ষেত্রে ওয়াটার মাইনিংয়ের ফলে ভূমিধস কিংবা বিশেষ করে ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধসের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
উপরের ছবিতে বিভিন্ন সময়ে ঢাকার এক্যুইফারের কন্টোর ম্যাপ দেওয়া আছে। লক্ষ করলে দেখা যায়, ওয়াটার মাইনিংয়ের ফলে আস্তে আস্তে এক্যুইফারে একটি শঙ্কুর মতো ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে (বাঁয়ে নিচের দিকে) এবং ২০০২ সালের ম্যাপে তা স্পষ্ট। সুতরাং ভূমিধস কিংবা ভূমিকম্পের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এর সাথে ভূ-অভ্যন্তরের পানি মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আসছে আর্সেনিক নামের মরণদূতও।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) জরিপ মতে, আগামী এক থেকে দেড় দশকে ঢাকার ভূগর্ভের ফাঁকা জায়গা প্রাকৃতিক নিয়মে পূর্ণ করবে সমুদ্রের লোনা পানি। রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় দেখা দেবে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। ওয়াসার হিসাবে ভূমির গভীর থেকে ক্রমাগত পানি তোলায় প্রতিবছর ২ থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এ ভয়াবহতা নিয়ে খোদ ওয়াসাও শঙ্কিত।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সাম্প্রতিক এক জরিপ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বঙ্গোপসাগরের পানির গড় উচ্চতার তুলনায় ইতিমধ্যে ১৪০-১৬০ ফুট নিচে নেমে যাওয়ার কারণে সাগরের লোনা পানি অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে ঢাকা শহরের ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ‘দি প্রোগ্রাম অব ফোরকাস্টিং স্যালাইন ওয়াটার ইরিগেশন, ইরিগেশন ওয়াটার কোয়ালিটি অ্যান্ড ওয়াটার লগিং ইন সাউদার্ন এরিয়া’ প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত এ জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি এখনই এ বিষয়ে সমন্বিত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়; তাহলে আগামী ৮ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ ফাঁকা জায়গা লবণাক্ত পানিতে পূর্ণ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই বিএডিসির ৪ হাজার পর্যবেক্ষণ নলকূপের মধ্যে ২ হাজার ৩০০টিতে সমুদ্রের লোনা পানির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আর এরই ফলে ঢাকা শহরে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট আরও প্রকট হবে। পানযোগ্য সুপেয় পানির অভাবে শহরের জনজীবনে মারাত্মক অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। মতিঝিল, মিরপুর, রামপুরা, ধানমন্ডি, বনানীসহ বেশ কিছু এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বেশি নিচে নেমে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে ঢাকার উত্তরাঞ্চলসহ চারদিক থেকে ভূগর্ভস্থ পানি এসে ঢাকার ভূ-অভ্যন্তরের ফাঁকা স্থান পূরণ করত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবত অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টিপাত, অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং এর সাথে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধীরে ধীরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দক্ষিণের লবণাক্ত পানি দ্রুতগতিতে উত্তর দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।
চিত্র : অঞ্চলভিত্তিক ভূগর্ভস্থ পানির স্তরবিন্যাস (২০১০)
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, এভাবে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে দেশের বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা, ফুলপুর, গাজীপুর সদর (জয়দেবপুর), কালীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর, শেরপুরের নালিতাবাড়ী, টাঙ্গাইলের মধুপুর, মির্জাপুর, মানিকগঞ্জের ঘিওর, হরিরামপুর, শিবালয়, নেত্রকোনা সদর, পূর্বধলা এবং যশোরের নওয়াপাড়া, মনিরামপুর, বাঘারপাড়া, যশোর সদর, ঝিকরগাছা, শার্শা, চুয়াডাঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া, চান্দিনা, দেবীদ্বার, মুরাদনগর, ঢাকার সাভার, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ উপজেলার অনেক স্থানেই শুকনো মৌসুমে অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিলের দিকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর সমুদ্রের পানির উচ্চতার চেয়ে ৩-১০ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে যায়।
এখানে আরো উল্লেখ্য, রাজবাড়ী ও ফরিদপুরসহ পদ্মার দক্ষিণপাড়ের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর এখনো সমুদ্রের পানির গড় উচ্চতার উপরে থাকলেও মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলার কিছু কিছু স্থানের পানির স্তর সমুদ্রের নিচে অবস্থান করছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ক্ষুদ্র সেচ তথ্য সার্ভিসের মতে, ভূগর্ভ থেকে প্রতিবছর যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে তা বৃষ্টি ও বন্যার মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে না বলেই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা
প্র্রথমত ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমানো। কিন্তু এটি সহজসাধ্য নয়। এটি করতে গেলে প্রয়োজন নদীভিত্তিক পানি সরবরাহ।
চিত্র : একটি নদীভিত্তিক পানি সরবরাহ ব্যবস্থা
সাধারণত একটি শহর যে নদীকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠে তার উজান থেকে পানি সংগ্রহ করে তাকে পরিশোধন করে নগরের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করা হয় যেমন গৃহস্থালি, বাণিজ্যিক ভবন, কল-কারখানা ইত্যাদি। এসব থেকে নিষ্কাশিত পানি আবার দূষিত পানি পরিশোধন কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়। সেখান থেকে পরিশোধিত পানি আবার নদীর ভাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। এই জাতীয় পরিশোধন কেন্দ্রের প্রাথমিক খরচ অনেক। সুতরাং নদীভিত্তিক পানি সরবরাহ করতে হলে একটি শহরকে সেই খরচ বহন করতে হবে।
ঢাকাতে পানি সরবরাহ নদীভিত্তিক করতে গেলে তা হতে হবে বুড়িগঙ্গাভিত্তিক। কিন্তু ইতিমধ্যে বুড়িগঙ্গার পানির গুণগতমান এতটাই নিচে নেমেছে যে তা পরিশোধনের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে মেঘনা নদী থেকে পানি আনা যেতে পারে। সেটি অর্থনৈতিকভাবে কতটা লাভজনক হবে সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
ভূগর্ভের পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে আগামী ১০ বছরে ১৩৭ কোটি লিটার পানি শোধনের মাধ্যমে সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে ওয়াসা। এর মধ্যে রয়েছে পাগলার ৪৫ কোটি লিটার, খিলক্ষেতের ৫০ কোটি লিটার এবং সায়েদাবাদের ২টি ইউনিটে ৪২ কোটি লিটার নদীর পানি পরিশোধনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। তবে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে দাতাদের দিকে। রাজধানীর আশপাশের নদীর পানি মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে দাতারা এ খাতে অর্থ জোগান দিতে আগ্রহী নয়।
দ্বিতীয়ত ভূগর্ভস্থ পানির আয়তন বাড়ানো। আর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর উপরে তুলতে গেলে এক্যুইফারে পানির ইনপুট বাড়াতে হবে। এটি করা যাবে দু’ভাবে।
প্রাকৃতিকভাবে নিম্নাঞ্চল বা জলাভূমিকে সংরক্ষণ করে।
কৃত্রিমভাবে বৃষ্টির পানি ভূগর্ভে প্রবেশ করিয়ে যাকে বলা হয় ‘রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং।’ রেইন ওয়াটার হারভেস্টিংয়ের মাধ্যমে ঢাকা শহরের বিভিন্ন আচ্ছাদিত স্থান (পিচ বা সিমেন্টের নিচে আচ্ছাদিত এলাকা) ও বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে সংগৃহীত পানি পাইপ দিয়ে প্রবাহিত করে শহরের উন্মুক্ত মাঠ বা পার্কে কূপ খনন করে তা ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করানো। একমাত্র ঢাকা ওয়াসা ভবনের ছাদে এক সময় এ ব্যবস্থা চালু করা হলেও পরবর্তীকালে তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে বেসরকারি উদ্যোগে কিছু প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ভবনে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করে আসছে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বৃষ্টির পানির সংরক্ষণ ও ব্যবহারের বিধান থাকলেও তা বাধ্যতামূলক নয়।
অবিলম্বে ভূগর্ভ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন বন্ধ করে সেচ কাজের জন্য ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া। এ জন্য সারাদেশে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মজা খাল-নদী পুনর্খনন করে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।
শিল্প-কারখানার, পয়ঃবর্জ্য, বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং আবর্জনা প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনার বর্জ্য নদী বা জলাশয়ে ফেলা বন্ধ করতে হবে। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস এবং ভূপৃষ্ঠের পানির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রণয়ন। নদীর পানির অপসারণ রোধ এবং সাগরে নদীর পানির স্বাভাবিক প্রবাহকে অক্ষুন্ন রাখতে হবে। নদীর পানি ব্যবহার, নদীর গতিধারা পরিবর্তনে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প, নদী তীরে নির্মিত বিভিন্ন শিল্প-কলকারখানা নির্মাণে বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করতে হবে।
বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে পানি প্রকল্পসমূহ যথাযথভাবে পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে এবং পানিপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সর্বোপরি পানির ইনপুট বাড়ানোর সাথে সাথে আউটপুট কমানোটাও একটা কার্যকরী উপায়। রাজধানীর ডিসেন্ট্রালাইজেশন তাই এখন সময়ের দাবি। গার্মেন্টস, বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। পানির অপচয় কমানোর জন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে। সরকার যেভাবে আয়কর দিবস পালন করল, পানি ব্যবহারে পরিমিতিবোধ বিষয়ক দিবস পালন করা যেতে পারে।
তথ্য সহায়ক পঞ্জি
- Mohammad A. Hoque, M. Mozzammel Hoque, Kazi Matin Ahmed Declining groundwater level and aquifer dewatering in Dhaka metropolitan area, Bangladesh : causes and quantification, Hydrogeology Journal (২০০৭) ১৫: ১৫২৩–১৫৩৪
- The Updated Groundwater Zoning Map of Bangladesh by BADC engineers with the technical support of Bangladesh University of Engineering and Technology (BUET).
- Roy Pinaki ‘Dhaka’s groundwater level at the lowest in 11 yrs’ Down to Earth (2008).
- Dhaka WASA Statistics by Hydrogeology Journal (2007)
- ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম)।
- বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ((বিএডিসি)।
- ক্ষুদ্র সেচ তথ্য সার্ভিস, ঢাকা।
‘দি প্রোগ্রাম অব ফোরকাস্টিং স্যালাইন ওয়াটার ইরিগেশন, ইরিগেশন ওয়াটার কোয়ালিটি অ্যান্ড ওয়াটার লগিং ইন সাউদার্ন এরিয়া প্রজেক্ট’ (২০০৯-১০)।
শরীফ আহমেদ
ভূতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট, বুয়েট।
প্রকাশকাল: বন্ধন ২২ তম সংখ্যা, ফেব্রুয়ারি ২০১২