ডম-ইনো
কম দামে মধ্যবিত্তের ফ্ল্যাট

২০০২ সালের মে মাসে স্থপতি আব্দুস সালামের এক বিকশীত চিন্তাধারায় গড়ে ওঠে ডম-ইনো। উদ্দেশ্য আবাসন সংকট নিরসনের পাশাপাশি মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থায় একটি পরিপাটি ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করা। ডম-ইনো বর্তমানে সাধ ও সাধ্যের আবাসনের অপর এক নাম। নগর জীবনের আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা, মনোমুগ্ধকর সব অ্যাপার্টমেন্টের আকর্ষণীয় ডিজাইন, সেরা অ্যাপার্টমেন্টের নিশ্চয়তা প্রদানের কারণে জনপ্রিয়তার শীর্ষ স্থানটি বহু দিন ধরে ডম-ইনোর দখলেই রয়েছে। বর্তমানে আবাসন প্রকল্পমূলক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক। কিন্তু এত প্রতিষ্ঠানের ভিড়েও ডম-ইনোর পরিচিতি জানা নেই এমন কথা বলাবাহুল্যই বইকি। প্রতিষ্ঠার শুরুতেই ছিল সঠিক  নেতৃত্বের যোগান। এছাড়াও যথাযথ যোগ্যতার সমন্বয়, দক্ষ চিন্তা শক্তির সমন্বয়, আর সাফল্যলাভের তীব্র আকাক্সক্ষা।

আজ থেকে বিগত ১০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই প্রতিষ্ঠানটিকে আজকের এই অবস্থানে আনতে খুব বেশি কাঠ খড় পোড়াতে হয়নি, জানালেন প্রতিষ্ঠানটির এজিএম এনামুল হক। কারণ সাথে ছিল পুরনো কাজের অভিজ্ঞতা যোগসাজশ।

প্রতিষ্ঠান শুরু করার আগে ডম-ইনোর প্রতিষ্ঠাতা দেশের বড় বড় সব কোম্পানির ডিজাইনের কাজ করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম – আমিন মোহাম্মাদ গ্র“প, বিটিআই, রূপায়ন হাউজিং, নগর হোমস্, অ্যামিকাস প্রোপারটিজ লিমিটেড, লিভিং স্টোন ইত্যাদি। যা পরবর্তীতে কার্যক্ষেত্রে যুগিয়েছিল বাড়তি অনুপ্রেরণা। তারই ধারাবাহিকতায় ডম-ইনোর আজকের এই অবস্থান। ডম-ইনোর প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদপ্রাপ্ত হওয়ার ফলে তার উদ্যোগে ছিলো সাফল্য লাভের তীব্র ও বাড়তি অনুপ্রেরণা। ব্যক্তিগতভাবে তিনি একজন স্থপতি হওয়ার ফলে অত্যন্ত সুদক্ষতার সাথে গড়ে তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটি।

ডম-ইনোর সাফল্য

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠালাভের পর পরই ঢাকার ইস্কাটন গার্ডেনের sorel আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে জয়যাত্রা শুরু করে ডম-ইনো। এরপর আর তাদের পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। গত ১০ বছরে ১৭০টি প্রকল্প অত্যন্ত সফলতার সাথে গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করেছে। ৫০টির মতো প্রকল্প আগামী ৬ মাসের মধ্যে গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া আরো ১২০টি প্রকল্পের কাজ চলমান অবস্থায় রয়েছে।

চলমান প্রকল্প

সমগ্র রাজধানী জুড়ে রয়েছে ডম-ইনোর প্রকল্প। রাজধানী ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্প চলমান অবস্থায় রয়েছে। এসব এলাকায় সাধারণত একটু ধনীশ্রেণীর বিলাসবহুল প্রকল্পের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া সমাজের মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক পরিবারগুলোর জন্য তাদের বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে। এগুলো মিরপুর, মোহাম্মাদপুর, কলাবাগান, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, পল্টন, মগবাজারসহ রাজধানী ঢাকার প্রত্যেকটি থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্মিত হচ্ছে।

অ্যাপার্টমেন্টের বৈশিষ্ট্য

প্রতিটি ভবন তুলনামূলকভাবে ১০০০-৩০০০ স্কয়ার ফিট বেশি করা হয়। ভবন নির্মাণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এসিআই (ACI), এএসটিএম (ASTM), বিএনবিসি (BNBC) কোড মেনে প্রতিটি ভবন নির্মাণ করা। এক্ষেত্রে ডম-ইনো শতভাগ নিশ্চয়তা সহকারে কোডসমূহ মেনে ভবন নির্মাণ করে থাকে। ভ‚মিকম্প বা অন্যকোনো কারণে ভবনের ক্ষতির মাত্রা এড়াতে নেয়া হয় বিশেষ কিছু ব্যবস্থা। জার্মান টেকনোলজিক্যাল ব্রেকথ্রুর মাধ্যমে প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হয়। সনদপ্রাপ্ত প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ারদের তত্ত্বাবধায়নে ভবন নির্মাণ কাজ পরিচালনা করা হয়,  জানালেন প্রতিষ্ঠানের এজিএম এনামুল হক। 

সবচেয়ে বড় প্রকল্প

এ পর্যন্ত ডম-ইনোর সব চেয়ে বড় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়েছে শান্তিনগরে ২২ কাঠার একটি আবাসন প্রকল্প PROMESSA এবং গুলশানে রয়েছে ২ বিঘা জুড়ে আরো একটি আবাসন প্রকল্প GRAZIOSO যা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ডম-ইনোর ভাবমূর্তি তুলে ধরে। 

পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সুবিধা 

বর্তমানে বেশ কয়েক বছর যাবত আবাসন প্রকল্পের মূল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা। যা ব্যাপকভাবে আবাসন সেক্টরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। তাই এই সমস্যার কবল থেকে আবাসন গ্রহিতাদেরকে রেহাই দিতে প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্টে ৩ শতাংশ সোলার এনার্জি ব্যবহার করা হয়। পানি সমস্যা সমাধানে হেভি পাম্পের মাধ্যমে পানি উত্তোলনের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয় এবং তা সংরক্ষণেরও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। গ্যাসের ক্ষেত্রে যেন কোনো প্রকার অসুবিধা না পোহাতে হয় সেজন্য পর্যাপ্ত স্পিড পাওয়ার লাইনের সংযোগ নেয়া হয়।

জেনারেটর সুবিধা

এই গ্রীষ্মে বিদ্যুতের আসা যাওয়ার খেলায় নিয়মিতভাবে যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় নগরবাসীকে। বিদ্যুতের অভাবে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে চরমভাবে ব্যাহত হয় সাধারণ জীবনাচরণ। তাই বিদ্যুৎ না থাকলেও তাৎক্ষণিক জেনারেটারের সাহায্যে লিফট, লবি, পার্কিং এলাকা, সিকিউরিটি লাইট, পাম্প দ্বারা পানি উত্তোলন ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও প্রত্যেক ফ্লাটে বৈদ্যুতিক পাখা, বৈদ্যুতিক বাতি, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনসহ বিদ্যুৎচালিত সব ধরনের উপাদানই জেনারেটরের সাহায্যে চালনার নিশ্চয়তা ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের দিয়ে থাকে ডম-ইনো কর্তৃপক্ষ ।

দরজা ও জানালার বৈশিষ্ট্য

প্রতিটি দরজার জন্য উন্নতজাতের ও গুণগতমানের কাঠ ব্যবহার করা হয় এবং একটি সুনির্দিষ্ট মাপের ও আকারের সাইজ অনুযায়ী করা হয়। সেগুলোর অবশ্যই আকর্ষণীয় ডিজাইন নিশ্চিত করা হয়। জানালাতে ৫ মিলিমিটার পুরু কাঁচ ব্যবহার করা হয় যাতে সূর্যের তাপে সহজেই এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে না যায় ।

ইলেকট্রিক ব্যবস্থা

ডম-ইনোর প্রতিটি ভবনে উন্নতমানের বিদেশি সুইচ, সকেট, তারসহ বিভিন্ন উপাদান ব্যবহƒত হয়। নিরাপত্তার জন্য বিশেষ আর্থিং সুবিধাও রাখা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করা হয় যা উন্নতমানের, নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত সেই সাথে ব্যয়বহুল। লোড ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকল্পে ব্যবহƒত হয় উচ্চমানসম্পন্ন সাব-স্টেশন। এছাড়া বর্তমানে প্রতিটি ফ্লাটে ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বন করে সংযোজন করা হচ্ছে ডিশলাইন।

নিরাপত্তা

নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ডম-ইনো বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কারণ বর্তমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা একটি অ্যাপার্টমেন্টের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে থাকে। অ্যাপার্টমেন্টের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য রাখা হয়েছে ২৪ ঘণ্টা কর্মরত অবস্থায় থাকা কেয়ারটেকার ও নিরাপত্তা প্রহরী। যেকোনো সমস্যায় যেন দ্রুত ও সহজেই নিরাপত্তা কর্মীদের পাওয়া যায় সেই জন্য টিএন্ডটি টেলিফোন ব্যবস্থা রাখা হয়। তারা ২৪ ঘণ্টাই অ্যাপার্টমেন্টের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তৎপর থেকে দায়িত্ব পালন করে থাকে। পার্কিং এলাকায় ২৪ ঘণ্টাই নিরাপত্তা কর্মীরা তৎপর থাকে।

প্রকল্প নির্মাণের সমস্যা

বর্তমানে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছে নির্মীয়মান আবাসন প্রকল্পগুলো। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এতে সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না গ্যাসের। এ কথা জানালেন এনামুল হক। তিনি আরো বলেন, এ সমস্যার ফলে আমরা সঠিক সময়ে ক্রেতার কাছে তাদের আকাক্সিক্ষত ফ্ল্যাট হস্তান্তর করতে পারছি না। সে কারণে আমরা আমাদের প্রতিশ্র“তি রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছি। তিনি মনে করেন এই সমস্যা অচিরেই সমাধান করা উচিত। কারণ এই সেক্টরটি একটি সম্ভাবনাময় সেক্টর।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা

দেশে আধুনিক ও মানসম্মত ভবন ও আবাসন নির্মাণকল্পে ডম-ইনোর রয়েছে সূদুর প্রসারী পরিকল্পনা। তবে পরবর্তীতে রাজধানী ঢাকার মত চট্টগ্রামেও আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু করার এবং ব্যবসার পাশাপাশি সমাজ হিতৈষী কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখারও প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন এনামুল হক।

যোগাযোগের ঠিকানা

ডম-ইনো

বাসা # ৩৬, রোড # ১৩

ব্লক # উ

বনানী, ঢাকা- ১২১৩।

ফোন # ৯৮৯১৮৬৯, ৮৮২৯৭৯৭, ৯৮৫১০২৬

ফ্যাক্স # +৮৮-০২-৯৮৭৩১৬৩, +৮৮-০২-৮৮৩৩৯৮২

মারুফ আহমেদ

প্রকাশকাল: বন্ধন ২৬ তম সংখ্যা, জুন ২০১২

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top