সিমেন্ট মর্টারের ওপর সালফিউরিক এসিডের আক্রমণ এবং ধান থেকে পরিত্যক্ত তুষের সমন্বয়ে সৃষ্ট ফলাফলের গবেষণাপত্র।
সারাংশ
জলবায়ু পরিবর্তন পৃথিবীর পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে। এর প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন ভবন এবং এর নির্মাণ সামগ্রির ওপরেও। পরিবেশগত কারণ ছাড়াও মানব সৃষ্ট নানা কারণেও ভবনসমূহ ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। শিল্পকারখানা এবং গৃহস্থালি হতে উৎপন্ন বর্জ্য পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করছে। এ দূষিত পানির প্রভাবে বিল্ডিং মেটিরিয়েল বিশেষ করে কংক্রিট এবং মর্টারের ওপর রাসায়নিক প্রক্রিয়ার প্রভাব বেড়ে যাচ্ছে। ফলে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহারের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। ধানের তুষ কৃষিজাত দ্রব্যের একটি উপজাত দ্রব্য (By product) যা কংক্রিট এবং মর্টারের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। ধান থেকে সৃষ্টি তুষকে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে তাপকে আয়ত্তের মধ্যে রাখা যায়। গলানোর জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় স্বয়ংক্রিয় আঁধার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পরীক্ষাটিতে যে মর্টার কিউবটি ব্যবহার করা হয়েছে তার মাপ ৫০ মি. মি. এবং কিউবটি জমানোর জন্য আংশিক সিমেন্টের ব্যবহার যথাক্রমে ০%, ৫%, ১০%, ১৫% এবং ২০% ও তুষের মাপ ছিল ০.০৭৫ মি. মি.। পানিতে একে দুই ধরনের সালফিউরিক এসিডের মধ্যে রাখা হয়েছিল যার পিএইচ (হাইড্রোজেন আয়ন কনসালটেশন) ছিল ২.০০ এবং ৩.০০। কিউব তৈরি হওয়ার পর এর শক্তি পরীক্ষা (Comprosuce Atrength) করার জন্য এটাকে ৩, ৭, ২৮, ৬০ এবং ৯০ দিন রাখা হয়। এ পরীক্ষায় দেখা গেছে যত দিন যাচ্ছে মর্টারের শক্তি ধীরে ধীরে কমেছে পক্ষান্তরে RHA (তুষ) এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরীক্ষাটি দুই ধরনের এসিডিক পরিবেশে করা হয়েছে যেখানে এসিডের পিএইচ যথাক্রমে ৩ এবং ২।
ভূমিকা
পৃথিবীর সর্বত্র ধান থেকে সৃষ্ট তুষ নানা কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অনেক দেশ এটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে এবং এমন অনেক দেশ আছে যেখানে এটি পরিত্যক্ত দ্রব্য হিসেবে ফেলে দেয় যাতে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ভালো থাকে। পরিবেশ ভালো রাখার স্বার্থে তুষকে পুড়িয়ে ফেলা হয় দুটি কারণে। প্রথমত নতুন শক্তি উৎপন্ন করার জন্য এবং দ্বিতীয়ত শক্তিকে পুনরায় ব্যবহার করার জন্য। ধান থেকে তুষ আলাদা করার পর তুষকে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পোড়ানো হয় এবং তা থেকে ছাঁই উৎপন্ন হয়। পরবর্তীতে যা ইমারত তৈরির সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। (mehta 1994a, Zhauget at 1996 of Barkakate at all 1994).
ধানের তুষ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাসায়নিক একটি পযোল্যানিক (pozzolanic) পদার্থ যা লাইম-পযোল্যানার মিশ্রণ এবং পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের প্রতিস্থাপিত পদার্থ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ধানের তুষে সিলিকন ডাই-অক্সাইড থাকে এবং দুইটি কারণে এটা লাইম এর সাথে মিশ্রিত হয়। যদি সিলিকনটা দানাবিহীন হয় (nan-ergstalline) নতুবা এটি মসৃণ হয়ে থাকে। ধানের তুষকে ৬০০০ সেন্টিগ্রেডের নিচে পুড়িয়ে প্রথমে অদানাদার হিসেবে তৈরি করা হয়। যাতে এতে সিলিকন ডাই-অক্সাইড এর গুণাগুণ থাকে এবং হাইড্রোস কোনোরূপ না গলে সিলিকাতে পরিণত হয়। অনেক সময় সামান্য পরিমাণ অপরিশোধিত দানাদার থাকতে পারে যেমন- কোয়াটজ, ক্রিসটো বেলাইক এবং ট্রাইডাইমিট জাতীয় পদার্থ। তুষকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে পোড়ানো পর যে ছাঁই হয় তাতে দানাদার ছাই এর পরিমাণ বেশি থাকে। এবং সেটাতে পযোল্যানিক গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে। যদি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ এবং সঠিক তাপমাত্রায় ধানের তুষকে পোড়ানো যায় তবে তা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রাসায়নিক যৌগ হিসেবে উৎপন্ন করা সম্ভব হবে। (Cook ১৯৮৬)
বিগত বছরগুলোতে কলকারখানা, কৃষিখাত এবং থার্মোইলেকট্রিক প্ল্যান্টে তুষ বেশি ব্যবহৃত হয়েছে কংক্রিট তৈরি করার জন্য। উচ্চমানসম্পন্ন কংক্রিট তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের পদার্থ ব্যবহার হচ্ছে যাতে এর পযোল্যানিক গুণাগুণ অটুট থাকে। প্রতিবছর হাজার টনেরও বেশি তুষের ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন শিল্প-কারখানায়। তাছাড়া উপজাত (By product) হিসেবেও অনেক পণ্য অহরহ তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে প্রতি বছর এর ব্যবহার বাড়ছে এবং এতে দেশের অর্থনীতি, কারিগরি, শক্তি এবং পরিবেশগতভাবে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।
সিমেন্ট গবেষকগণ মনে করেন, ধান থেকে সৃষ্ট তুষ বিভিন্ন সামগ্রীতে যত বেশি ব্যবহার হচ্ছে তারচেয়ে কম ব্যবহার হচ্ছে অন্যান্য দ্রব্য থেকে পাওয়া উপজাত সামগ্রী দিয়ে। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন টনেরও বেশি পরিমাণ তুষ সিমেন্ট এবং কংক্রিট কারখানায় ব্যবহার হচ্ছে (Mehta 1992). দ্বিতীয়ত, পশুদের খাদ্য হিসেবে ধানের তুষ উপযুক্ত নয়; কারণ এতে খাদ্য উপাদানের গুণাগুণ থাকে না এবং অমসৃণ থাকাতে হজমের অসুবিধার কারণ হয়। যা থেকে নানান ধরনের পেটের পীড়া দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি সঠিকভাবে ধানের তুষ পোড়ানো হয় তবে গড়ে প্রতি টনে ২০০ কেজি তুষের উৎপাদন করা সম্ভব। অন্য কোনো কৃষিজাত পণ্যে বিপুল পরিমাণ ছাঁই উৎপাদন করতে পারে না। যেমনটি ধানের তুষ থেকে করা সম্ভব। (Mehta 1992) তৃতীয়ত: অনেক উন্নত বিশ্বে সিমেন্ট সামগ্রীতে ধানের তুষের পরিমাণ অনেক বেশি যেখানে পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের সরবরাহ কম; কিন্তু ধানের প্রাপ্যতা সহজ।
গুঁড়া ছাঁই, ব্লাস্ট ফার্নেসের লোহার গলিত অবশিষ্টাংশ, দ্রবীভূত সিলিকা এবং ধানের তুষ দ্বারা সৃষ্ট উপজাত পদার্থে পযোলেনিক এবং সিমেন্টের গুণাগুণ থাকে। উপরোক্ত তথ্যটি 73-SBC RILEM কমিটি দ্বারা সনাক্তকৃত। উচ্চমান সম্পন্ন কংক্রিট তৈরি করতে পযোল্যানিক পদার্থ এবং অন্যান্য মিনারেল পযোল্যানিক গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে। যেমন ফ্লাইএ্যাশ, দ্রবীভূত সিলিকা ফিউম, ব্লাস্ট ফার্নেসের স্ল্যাগ ইত্যাদি।
পযোল্যানিক যুক্ত হলে কংক্রিটে ছিদ্রময়তা (porosity) কমে যায়, বিশেষ করে যখন সিমেন্ট এবং কংক্রিট পারস্পরিক যুক্ত হয়ে পেস্ট হওয়ার সময় যেটা কংক্রিট স্ট্রাকচার তৈরির সবচেয়ে দুর্বল দিক। ধানের তুষ (RHA) এর ব্যবহার কংক্রিট সিমেন্টে নতুন কোনো বিষয় নয়। এ বিষয়ে অনেক তথ্য এবং উপাত্ত রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কংক্রিটে তুষের ব্যবহার সাধারণ নিয়ন্ত্রিত কংক্রিটের তুলনায় দেখা গেছে যদি ১০ শতাংশ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের বদলে যদি তুষের ব্যবহার করা যায় তাহলে আশাতীত ভালো ফল পাওয়া যায়।
শিল্প কারখানার বা কৃষিজাত প্রকল্পের উপজাত (By-product) পদার্থ সিমেন্টের প্রতিস্থাপিত উপাদান। এটা নি:সন্দেহে একটি সহনীয় (see stainable) উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে পরিগণিত হয়। কংক্রিটের যান্ত্রিক গুণাগুণ উন্নতি করা সম্ভব কেবল কেমিক্যাল একটিভেটর (activator) মিশ্রণের মাধ্যমে। কেমিক্যাল সক্রিয় যোগ (activator) যেমন পটাসিয়াম সালফেট (K2SO4), সোডিয়াম সালফেট (Na2SO4), সোডিয়াম সালফাইট (Na2SO3) এবং ক্লোরাইড ব্যবহার করে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মাধ্যমে তুষের সাথে কংক্রিট সংমিশ্রণে দেখা গেছে প্রাথমিকভাবে দারুণ শক্তিবৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।
কংক্রিটের অভ্যন্তরীণ কাঠামো নির্ভর করে কতটুকু উপাদান সংমিশ্রিত হয়েছে। কংক্রিট ভঙ্গুর হওয়ার পেছনে কি কারণ রয়েছে তা প্রথমে খুঁজে বের করতে হবে। তুষের সাথে কংক্রিটের মিশ্রণের ফলে যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কংক্রিটের নমুনা তৈরি করা হয়, তার গুণাগুণ নির্ভর করবে যান্ত্রিক ব্যবহারের ওপর। গবেষকরা ধারণা করছেন, তুষের সংযোগ কংক্রিটের শক্তিবৃদ্ধি করে বিশেষ করে কম পানি/শক্তি ধরে রাখার অনুপাতের ওপর।
কংক্রিটের অকৃতকার্য নির্ভর করে তুষ মিশ্রিত কংক্রিটের অবকাঠামোর ভঙ্গুরতার (brttle) ওপর। একই শক্তিসম্পন্ন কংক্রিটের ১০ শতাংশ নিচে শক্তি কমে যাবে মসৃণ এবং কোর্স (course) এগ্রিগেট (aggregate) ব্যবহার করলে। গবেষণা করে দেখা গেছে, পলিভিনাইল অ্যালকোহল যদি সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্টে ব্যবহার করা হয় তবে এর ধারণক্ষমতা শক্তি বেড়ে যাবে; কিন্তু ছিদ্রময়তা (parosety) কমে যাবে। শক্তির ধরন নির্ভর করবে পলিভিনাইল অ্যালকোহল (PVA) কতটুকু সিমেন্টের সাথে মিশতে পেরেছে। যা পরবর্তীতে হয়তো কোনো নতুন যৌগ উৎপন্ন করে এর ছিদ্রময়তা কমিয়ে এর বন্ডিং (Bonding) ব্যবস্থাটা আরো মজবুত করবে। এখানে উল্লেখ্য, কোনো গবেষণাতেই তুষ মিশ্রিত করে এসিডের ওপর মর্টার প্রয়োগ করা হয়নি।
ফলাফল এবং আলোচনা
গবেষণার প্রয়োজনে মোট ২৫৫টি কিউব তৈরি করা হয়েছিল। যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছিল সাধারণ পানিতে; অন্য এক-তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছিল সালফিউরিক এসিডে যার পিএইচ ছিল ২ এবং সর্বশেষ এক-তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছিল সালফিউরিক এসিডে যার পিএইচ ছিল ৩। নমুনাগুলো তিনটি মাধ্যমে রেখে পরীক্ষা করা হয়েছিল যথাক্রমে ৩, ৭, ২৮, ৬০ দিনে। এতে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা গ্রাফের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। চিত্রের ১ হতে ৫ নং পর্যন্ত মর্টারের কম্পেসিভ শক্তি দেখানো হয়েছে যেখানে সিমেন্টের ব্যবহার যথাক্রমে ০%, ৫%, ১০%, ১৫% এবং ২০% হয়েছিল তুষের সাথে এবং সাধারণ পানি এবং সালফিউরিক এসিড যার পিএইচ ছিল ২ থেকে ৩ এর মধ্যে। প্রতিটি চিত্রে দেখা যায়, যতই এসিডিক পরিবেশ বিরাজ করছে ততই মর্টারের কম্পেসিভ শক্তি কমে যাচ্ছে। এটার ফলাফল অন্যদের মতোই হয়েছে যারা আগে এ ধরনের গবেষণা করেছে। (Bakharelz) শক্তি কমে যাওয়ার একটি কারণ হচ্ছে মর্টারের ওপর এসিডির পরিবেশের ওপর। মর্টারের ওপর মরিচা পড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে সালফিউরিক এসিডের দুইটি ধাপ। একটি হচ্ছে প্রথম ধাপে সালফিউরিক এসিডের রাসায়নিক বিক্রিয়া হয় হাইড্রেশন যৌগ দ্বারা যেমন ক্যালসিয়াম হাইড্রোঅক্সি (CH) এবং ক্যালসিয়াম সিলিকেট হাইড্রেট (C-S-H) জিপসাম (Caso4, LH20) তৈরি করে। দ্বিতীয় ধাপে জিপসাম বিক্রিয়া করে ট্রাইক্যালশিয়াম এলুমিনেটের সাথে (C3A) এবং তৈরি হয় এট্রিম গাইট (C8A53H32)। এটি যেভাবে তৈরি হয় তা নিম্নের সমীকরণ দ্বারা দেখানো হয়েছে।
Ca(OH)2+H2SO4 CaSO4.2H2O
CaO.SiO2.2H2O+H2SO4 CaSO4+Si (OH)4+H2O
3CaO.Al2O3.12H2O+3(caSO4.2H2O)+14H2O
3CaO.Al2O3.3CaSO4.32H2O
জিপসাম এবং এন্ট্রিনগাইট এর খুব কম কাঠামোগত কম্প্রেশন ক্ষমতা আছে। দেখা গেছে, মর্টারের শক্তি বৃদ্ধি পায় যদি তুষের ব্যবহার বেশি হলে এবং শক্তি হ্রাস পায় এসিড পরিবেশের ওপর যদি RHA (তুষ) ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা হতে পারে তুষ বেশি পরিমাণ দিয়ে কম ঈধড় তৈরি হয় এবং পরিশেষে C-S-H কম হয় অর্থাৎ কম কম্প্রেসিভ শক্তি হয়। মর্টারে এসিডের পরিবেশ বজায় থাকলে সবচেয়ে বেশি শক্তি পাওয়া যায় যদি কম পক্ষে তিন দিন পর্যন্ত কিউরিং (curing) করা যায়। মর্টারের ভেতর এসিডের প্রবেশ আগে অনেক কম ছিল। যতদিন যাচ্ছে মর্টারের ভেতর এসিডের প্রবেশ দিন দিন বেশি হচ্ছে। তাই C-H এবং C-S-H তৈরি হয় যা জিপসাম এবং এন্ট্রিংগাইট হতে সহায়তা করে। আগে কম সময়ে কিউরিং করলে মেটালে বর্ধিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। পরে তা উন্নতি করা হয়েছে কিউরিং (curing) সময় বাড়িয়ে। তাতে দেখা গেছে, আগের থেকে আরো বেশি শক্তি রাখার ক্ষমতা থাকে। এক্ষেত্রে পিএইচ যথাক্রমে ২ এবং ৩ রাখা হয়েছিল। যতই পিএইচ (PH) কম হবে শক্তিশালী হওয়ার ক্ষমতা বেশি থাকবে। slander et 1991) আগে শক্তি ক্রমান্বয়ে ন্মিমুখী ছিল যখন মর্টারে ২৮ দিন কিউরিং করা হতো। পরবর্তীতে ৯০ দিন কিউরিং করা মর্টারের শক্তি এসিডিক পরিবেশে মোটামুটি ঠিক ছিল। এটা হতে পারে জিপসাম (CaSO4, 2H2O) তৈরি হওয়াতে যা ক্যালসিয়াম হাইড্রো-অক্সাইড (CH) এবং ক্যালসিয়াম হাইড্রোটের (C-S-H) এবং এন্ট্রিগাইট সমন্বয়ে। সবচেয়ে বেশি শক্তি কমেছে পিএইচ যখন ২ ছিল এবং এসিডিক পরিবেশ তুষের ছিল ০%, ৫%, ১৫% এবং ২০% এবং তুষ ছিল ১২.৪৫%, ১১.০২%, ১১.১৭%, ১১.২৩%, ৯.৩৬% এবং পিএইচ যখন ৩ ছিল এবং এসিডিক পরিবেশ ছিল ১০%, ১৩.৬২%, ১২.৯১%, ১৩.৩১% ও ১০.৬৭% গ্রাফ থেকে দেখা গেছে মর্টারের শক্তি কমার প্রবণতা ৯০ দিন পর খুব ধীর গতিতে হয়।
উপসংহার
উপরে উল্লিখিত বিভিন্ন পরীক্ষার মধ্যে দেখা গেছে, মর্টারে কম্প্রেসিভ শক্তি নির্ভর করে তুষের ব্যবহার এবং পরিবেশে সালফিউরিক এসিডের ওপর ও যেখানে পিএইচ ২ থেকে ৩ এর মধ্যে থাকে। গবেষণায় প্রধান বিষয়গুলো ছিল মর্টারে কম্প্রেসিভ শক্তি এসিড এবং পানির পরিবেশে কেমন হয়। মর্টারের কম্প্রেসিভ শক্তি নিম্রগামী হবে যদি মর্টারটি এসিডিক পরিবেশে থাকে এবং কম পরিমাণ তুষের ব্যবহার হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে শক্তিবৃদ্ধি হয় যদি তুষের ব্যবহার বেশি হয় এবং এসিডিক পরিবেশ কম থাকে। মর্টার সবচেয়ে বেশি শক্তি সম্পন্ন হয় যদি তিন দিন সঠিকভাবে কিউরিং (curing) করা যায়। তুষের মাত্রা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ এবং পিএইচ ৩ পর্যন্ত থাকলে মোটামুটি ভালো কম্প্রেসিভ শক্তি পাওয়া সম্ভব হবে। সর্বোচ্চ কম্প্রেসিভ শক্তি অটুট থাকবে যখন অন্তত ১০ শতাংশ সিমেন্ট প্রতিস্থাপন যোগ্য হবে।
মূল রচনা : বি সি মন্ডল
ভাষান্তর : প্রকৌশলী মহিউদ্দীন আহমেদ
প্রকাশকাল: বন্ধন ২৪ তম সংখ্যা, এপ্রিল ২০১২