বাঁচাও সবুজ, সবুজেই বাঁচো এমবিট হোল্ডিংস্ লিমিটেড

দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ প্রকৃতি। মহানগরী ঢাকা থেকে কবেই হারিয়েছে শীতের সকালের সবুজ ঘাসে জমে থাকা টলমলে শিশির কণা। সবুজ নেই, নেই পাখিদের আনাগোনা। যান্ত্রিক এই শহরে আবাসন ব্যবস্থায় একটু সবুজের ছোঁয়া পাওয়াও এখন কল্পনার মতোই। আপনার এই কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে আবাসন খাতের ভিন্ন মাত্রা এবং সবুজের ছোঁয়া দিতেই নির্মাণ জগতে যুক্ত হয়েছে এমবিট হোল্ডিংস্ লিমিটেড।

‘বাঁচাও সবুজ, সবুজেই বাঁচো’ এই মূলমন্ত্রটি বুকে ধারণ করেই শুরু প্রতিষ্ঠানটির পথ চলা। নির্মাণে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন উপকরণের ব্যবহার এবং আবাসনকে প্রকৃতির কাছাকাছি নেওয়া তাদের প্রধান লক্ষ্য। খোলামেলা পরিবেশ, বর্ষায় বৃষ্টি, রাতে তারাভরা আকাশ, গোধূলি, বিকেল, ঝরনাধারা এ সবই যেন আপনাকে ছুঁয়ে যায় এবং বসবাসে পেতে পারেন অনাবিল আনন্দ, ঠিক সে ব্যবস্থাটিই নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে এমবিট হোল্ডিংস্ লিমিটেড। শুধু তাই নয়, তারা তাদের প্রকল্পে রাখছে বিনোদনের নানা আয়োজন। আর এ সবকিছুর মূলেই রয়েছেন স্থপতি আনোয়ারুল হক। যিনি প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপার্টমেন্ট কনসালটেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।

এমবিট হোল্ডিংসের বৈশিষ্ট্য

এমবিট হোল্ডিংস্ লিমিটেড ভবন নির্মাণে এনেছে নতুনত্ব ও বৈচিত্র্য। বিকল্প চিন্তাধারা, কোলাহলময় নগরীতে নাগরিকদের আবাসন চাহিদা, তাদের রুচি, পছন্দ এবং মনের গভীরের ভালোলাগা ইত্যাদি বিষয়কে কিভাবে এক সুতোয় বাঁধা যায়, নিরন্তর সেই চেষ্টাই অব্যাহত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ভবনে বিশেষ লাল ইটের ব্যবহার

যেহেতু একটি ভবন নির্মাণে এবং এর স্থায়িত্ব নিশ্চিতকরণে অনেক ভূমিকা রয়েছে ইটের, সে জন্য প্রতিষ্ঠানটি এর ব্যবহারে বেশ সচেতন। গতানুগতিক ধারার অন্যান্য কোম্পানি চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে এসে তারা ব্যবহার করছে ভিন্ন ধরনের লাল ইট। এটি মাটি ও কাঠ কয়লার সংমিশ্রণে তৈরি এক বিশেষ ধরনের ইট যা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। এই ইট তৈরি করা হয় বিশেষ এক প্রক্রিয়ায়। কোনো রকম বায়ু দূষণ ছাড়াই এটি প্রস্তুত করা হয়। অন্যান্য ইটের মতো এই ইটগুলোকে শুকানো ও শক্ত করার জন্য আগুনে পোড়ানো হয়। পোড়ানোর ফলে এর জ্বালানি থেকে যে ধোঁয়া বের হয় তার পুরোটাই ব্যবহার করা হয় ইট শুকানোর কাজে। ফলে ধোঁয়া বাতাসে মিশে তা দূষিত করতে পারে না এবং পরিবেশের কোনো ক্ষতি ছাড়াই উন্নতমানের ইট উৎপাদন করাও সম্ভব।

পরিবেশবান্ধব এ ইটের সুবিধা

দেয়ালে লাল ইট ব্যবহারের ফলে বিল্ডিংয়ের বাইরে এবং অভ্যন্তরে রঙ করার প্রয়োজন হয় না। কেননা এই লাল ইটের দেয়াল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এ ছাড়া এই ইট দেয়ালে ব্যবহার করলে তা বাইরের তাপমাত্রা রোধ করে। ফলে গরমের দিনে ভেতর ঠান্ডা রাখে এবং শীতের দিনে ভেতর গরম রাখে। তা ছাড়া বছর বছর রঙ করা, অতিরিক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি নানা ঝামেলার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

বিল্ডিংয়ের আকৃতি

প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরনের ভবন নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে তারা যে বিশেষ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করছে সেটি মূলত ৭ তলা বিশিষ্ট ভবন। এর প্রতিটি বিল্ডিং ২ ইউনিটের ১১২৫ স্কয়ার ফুটের অ্যাপার্টমেন্ট, যার প্রতিটি ভবনে থাকবে ১২টি করে ফ্ল্যাট।

ছাদে সবুজের ছোঁয়া

ভবনের অন্যান্য জায়গার চেয়ে ছাদকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে সৌন্দর্যবর্ধনে। ছাদের চারপাশ যেন সবুজে ঘেরা থাকে তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আম, লিচু, পেয়ারা, লেবু, করমচা ইত্যাদি ছোট ছোট বিভিন্ন গাছসহ নানা জাতের ফুল গাছ ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সাথে থাকছে নানা জাতের অর্কিড। এ ছাড়াও প্রায় পুরো ছাদের আশপাশ যেন সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত থাকে সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। হাঁটাচলার জন্য মাঝখানে বসানো হচ্ছে কাঠের ফ্রেম। যেখাানে সবুজে ঘেরা প্রকৃতিতে ভবনের বাসিন্দারা দু’দন্ড বসতে বা একটু হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন।

ঝুঁকিমুক্ত শৈল্পিক ছাদ 

ছাদের উপরিভাগে বিভিন্ন গাছপালা ও মাটি থাকার ফলে প্রায়ই সেগুলোতে নিয়মিত পানি দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। এ ছাড়া বৃষ্টির পানি মাটির নিচে গিয়ে ছাদ রসের প্রবণতা বাড়ায়। ফলে ছাদের তলদেশ ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে থাকে এবং ছাদ দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এই প্রবণতা এড়াতে ছাদ নির্মাণের সময় তাতে ব্যবহার করা হয় এক বিশেষ ওয়াটার প্রুফ রাসায়নিক। ফলে ছাদ রসের প্রবণতা একদম থাকে না বললেই চলে।

প্রতিষ্ঠানটি ছাদের কিছুটা অংশকে দিয়েছে শৈল্পিক রূপ। টপ ফ্লোরের একাংশে ইট, রড, কংক্রিটের ছাদের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরনের কাচ (tempered glass)। রিমঝিম বর্ষায় উপভোগ করা যাবে বৃষ্টি পড়ার অপরূপ দৃশ্য। এ ছাড়া রাতে উপভোগ করা যাবে তারাভরা আকাশ, রাত জাগা চাঁদ ও চাঁদের জ্যোৎস্না।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা

বর্তমানে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সমস্যার অন্যতম পানি সমস্যা। গবেষণায় দেখা গেছে বিশ বছর পর ঢাকার তলদেশের পানির স্তর বহুলাংশে মাটির আরো অনেক অনেক গভীরে চলে যাবে। দেখা দেবে পানির প্রবল অভাব। বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে রাজধানী। মানুষ পানির অভাবে রাজধানী ছাড়তে বাধ্য হবে। এই প্রবণতার কিছুটা হলেও বর্ষা মৌসুমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই বর্ষার পানি ধরে রাখার জন্য এমবিট হোল্ডিংস্ লিমিটেডের প্রতিটি বিল্ডিংয়ে  ব্যবহার করা হচ্ছে এক বিশেষ প্রক্রিয়া। বসানো হচ্ছে আলাদা পানির ট্যাংক। যেখানে বৃষ্টির পানি রিফাইন করার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। বৃষ্টির এই পানিকে ছাদ থেকে সরাসরি নামিয়ে আনা হবে ১ম তলায় এবং সেখানে পানি জমা হতে থাকবে। পরবর্তীতে সেখান থেকে বিশেষভাবে রিফাইনের পর তা পাঠানো হবে নিচের ট্যাংকে। এভাবে দীর্ঘদিন পানি ব্যবহার করা যাবে। বিশেষ করে বর্ষাকালে নিয়মিত বৃষ্টি হলে ওয়াসার পানি খুব কমই ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে। এতে একদিকে যেমন সাশ্রয় হবে অর্থ অন্যদিকে হবে প্রকৃতির দানের সঠিক ব্যবহার।

বর্ষায় কৃত্রিম ঝরনা

প্রাকৃতিক ঝরনা দেখতে নগরবাসী ছুটে যায় অনেক দূরের পাহাড়ে। কিন্তু সেই ঝরনাটি যদি নিজের ভবনেই থাকে তা হলে নিশ্চয় খুবই ভালো হয়। প্রতিষ্ঠানটি ভবনে ঝরনার অনুভূতি দিতে নিয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ভবনের বাইরে মাঝ বরাবর ছাদ থেকে নিচ পর্যন্ত সাজানো হয়েছে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। করা হয়েছে কাচের ভিন্ন ব্যবহার। যার উপর দিয়ে বৃষ্টির পানি নির্গত হয়ে ১ম তলায় জমা হবে। ভবনের ভেতর এবং বাইরে উভয় দিক থেকে দেখতে ঝরনার মতো মনে হবে যা বর্ষায় একটি কৃত্রিম ঝরনার রূপ পায়।

বিশেষ কমোড

বেশির ভাগ সময় টয়লেটেই বেশি পানির অপচয় হয়। সাধারণত প্রত্যেকটি অ্যাপার্টমেন্টের টয়লেটের কমোডে প্রতিবার ফ্লাশ করলে ৬ লিটার পানি নির্গত হয়। অথচ প্রয়োজন মাত্র ৩ লিটার পানির। পানির এই অপচয় রোধে এর প্রতিটি ফ্ল্যাটে টয়লেটের ফ্লাশে প্রতিবার ৩ লিটার পানি নির্গত হওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রয়োজন মাফিক বেশি ব্যবহার করার সুব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।

অতিরিক্ত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

ভবনের ছাদ, বারান্দা, লন, লবি ইত্যাদি জায়গায় গাছপালা আচ্ছাদিত থাকার ফলে গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে। কমাবে গরমের প্রবণতা।

ব্যবহৃত কাঁচামাল

এমবিটের বিল্ডিং নির্মাণে ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে সেরা জাতের সিমেন্ট, ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত প্রযুক্তির রড, ভালো মানের বালু। বাজারে যাদের সুনাম এবং যেসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য বুয়েট বা বিভিন্ন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মান যাচাই করা হয় শুধু সেসব প্রতিষ্ঠান থেকেই কাঁচামাল সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি। 

যোগাযোগের ঠিকানা

এমবিট হোল্ডিংস্ লিমিটেড

১৫৮, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা 

ফোন : ৯৬১২৬১৪, ৮৫২১২৮৩ 

ফ্যাক্স : ৯৬১২৬১৪ ইমেইল : [email protected]

স্থপতি আনোয়ারুল হক

১৯৯২ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ২০০১ সালে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর থেকে বিল্ডিং সায়েন্সে  মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। সেই সাথে হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বোর্ডে  দীর্ঘ ৫ বছর ও টিএএ আর্কিটেক্টে  ২ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি মানুষকে সবুজ আবাসনের নিশ্চয়তা দিতে এমবিট হোল্ডিংসের সাথে কাজ কাজ করে যাচ্ছেন।

মারুফ আহমেদ

প্রকাশকাল: বন্ধন ২৮ তম সংখ্যা, আগস্ট ২০১২

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top