২০২২ সালের সাড়া জাগানো যত স্থাপত্য

অগ্রগতির দৃশ্যমান বাস্তবতা হচ্ছে ভৌত উন্নয়ন। আর এই ভৌত উন্নয়নের দৃশ্যমান বাস্তবতা হলো স্থাপনা। প্রতিনিয়ত স্থাপত্যের উৎকর্ষতা বেড়েই চলেছে। স্থাপত্য ও প্রকৌশলবিদ্যার মিলিত প্রয়াসেই অবকাঠামো ও স্থাপনায় আসে নতুনত্ব। ২০২২ সালে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কিছু নতুন স্থাপনা দৃশ্যমান হয়েছে। এর কিছু হয়তো ২০২২ সালেই শেষ হয়েছে, কিছু আবার শেষ সময়ের কাজ চলছে। বিগত কয়েক বছরের কোভিড মহামারি অন্যান্য সেক্টরের মতো নির্মাণ খাতকেও পিছিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। কাজ ব্যাহত হলেও পুরোপুরি থেমে থাকেনি। সে ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের কিছু চমকপ্রদ স্থাপনা এসেছে আলোচনায়। বিশে^র খ্যাতনামা স্থাপত্য পত্রিকাগুলোগুলোতে তুলে ধরা হচ্ছে এসব স্থাপনার আদ্যোপান্ত। বিখ্যাত আর্কিটেকচারাল পত্রিকা দ্বিজেন-এর পছন্দ তালিকা অনুসরণ করে তেমনই কিছু সাড়া জাগানো স্থাপত্যকর্ম ও স্থাপত্য চিন্তাধারা তুলে ধরেছেন স্থপতি খালিদ মাহমুদ

স্থাপত্যচর্চার ধরনটাই পরিবর্তনশীল। নতুন নতুন জ্ঞান ও ধারণার পাশাপাশি উদ্ভাবিত নতুন উপাদান, প্রযুক্তি ও নির্মাণকৌশলের সমন্বয় ঘটছে স্থাপনায়। এ পরিবর্তনের উদ্দেশ্য, নিরাপদ, আরামদায়ক ও ছন্দোবদ্ধ জীবনের জন্য আরও উপযোগী কিছু চিন্তা করা। পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় সামাজিক সচেতনতার প্রতিফলন ও সম্পদের সঠিক ব্যবহার। কোনো কিছুই তাৎক্ষণিক পরিবর্তন নয় বরং দীর্ঘপরিক্রমায় পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যায়। প্রকৃতিকে হারিয়ে কৃত্রিমজগতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া মানুষের প্রথম আকুতিই ছিল আবার কীভাবে প্রকৃতিতে ফেরা যায়। সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে স্থপতিরা শুরু করেছেন ‘বায়োফিলিক’ ডিজাইন। স্টেফানো বেরির করা ‘ন্যানজিং ভার্টিক্যাল ফরেস্ট’ কিংবা হেদারউইক স্টুডিওর নকশায় ‘থাইজেন্ড ট্রিস’ অথবা এমনকি স্থপতি জিন নোভেলের ‘রোজউড টাওয়ার’ এই আকুতির সাম্প্রতিক নিদর্শন। থাউজেন্ড ট্রিস বা সহস্র বৃক্ষ দেখলে সাংহাইয়ের গভীর অরণ্যের সম্প্রসারণ বলেই মনে হবে। সাসটেইনেবল আর্কিটেকচার বা টেকসই স্থাপত্যের যে চর্চা আগে থেকেই শুরু হয়েছে, সেটার বহুমুখী প্রয়োগ এখনকার স্থাপত্যকর্মে পুরোপুরিই দৃশ্যমান। বৃহৎ আবাসন প্রকল্পে পরিবেশবান্ধব, শক্তিসাশ্রয়ী, পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ টেকসই স্থাপত্যের নানা কৌশল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। পাশাপাশি কর্মোপযোগী, মিতব্যয়ী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সহাবস্থান, সহজ রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য এমনকি আর্থিক বিচারে লাভজনক এমন সব গুণবৈশিষ্ট্যকেও টেকসই স্থাপনার বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনায় আনতে হচ্ছে। টেকসই করার স্বার্থেই নিখাদ আবাসিক বা বাণিজ্যিক প্রকল্পকে বহুমুখী ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, জাহা হাদীদের ‘স্টুডিও সিটি’ অথবা জিন নোভেলের ‘হেকলা টাওয়ারে’ আবাসন ইউনিটের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিসরকে সমন্বয় করা হয়েছে। 

সাম্প্রতিক স্থাপত্য ও নির্মাণশিল্পে ‘এন্ডলেস’ বা ‘ফ্রি ফ্লোয়িং’ স্পেসের কনসেপ্ট বহুল ব্যবহৃত। কাঠামোগত বাধা পর্যায়ক্রমে হচ্ছে দূরীভূত। সরাসরি বা দৃশ্যমান সংযোগ বাড়ছে পরিসরের সঙ্গে পরিসরের। ঠিক যেভাবে বৈশ্বিক পৃথিবীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক। এটাকে বলা যেতে পারে বহিঃস্থ ও অন্তঃস্থ পরিসরের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ মিথস্ক্রিয়া। কার্যকারণগত স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই একে অপরের সঙ্গে বিলীন হয়ে যাওয়ার প্রবণতা। মিউজিয়াম বা স্টেডিয়ামের মতো ভারী ও আবদ্ধ কাঠামোকেও এখন অনেক বেশি উন্মুক্ত ও প্রবহমান করে দেওয়া হচ্ছে। তাইপেই পারফর্মিং আর্ট সেন্টার, সিডনি আর্ট গ্যালারি অব নিউ সাউথ ওয়েলস কিংবা ইস্তাম্বুল মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টের মতো আলোচিত মিউজিয়াম প্রকল্পগুলো প্রমাণ করছে, আগের দিনের অন্তর্মুখী ধাঁচকে পরিত্যাগ করে কাঠামোগুলো এখন অনেক বেশি জীবন্ত ও সংলাপমুখর। নির্মাণ উপকরণ ও প্রযুক্তি ব্যবহার সব ধরনের স্থাপত্যের অবয়বকে হালকাও উড়ন্ত ধাঁচের হিসেবে প্রদর্শন করছে। ২০২২ সালের বিদায় এবং ২০২৩ সালের সূচনালগ্নে এসে স্থাপত্যচর্চার পরিবর্তনশীল ধারার পর্যালোচনা করতে গেলে আরও কিছু জনপ্রিয় ‘কি ওয়ার্ড’ এককথায় উঠে আসে। 

স্থাপত্য ধারার নতুন প্রয়াস হিসেবে ‘নিউ মিনিমালিজম’ শব্দটি সম্প্রতি বেশ জনপ্রিয়। এটা হচ্ছে অত্যাধুনিক অথচ ন্যূনতম সম্পদ ব্যবহার করে খুবই সাধারণ অথচ সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতার অবকাঠামো। বায়োফিলিক ডিজাইনের কাঠামোগত গবেষণা থেকে জন্ম হয়েছে ‘বায়োমিমেটিক স্থাপত্য’। ‘প্যারোমেট্রিক’ আরেকটি উল্লেখযোগ্য ট্রেন্ড, যা অ্যালগরিদম অনুসরণ করে বাহ্যিক কাঠামোর জন্ম দেয়। ভিন্ন সমালোচনা থাকলেও স্থাপত্য ও প্রযুক্তির যোগসূত্রকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কেঙ্গো কুমা অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের করা ক্যসা বাটো স্মৃতি জাদুঘরের অন্তঃসজ্জা বা প্রযুক্তির উৎকর্ষতার ধারাবাহিকতায় পুরোদমে শুরু হয়েছে থ্রি-ডি প্রিন্টেড স্ট্রাকচার। প্রিফেব্রিকেটেড স্ট্রাকচার ব্যবহার করে স্থাপনার নির্মাণ ঝামেলা এবং সময় ও শ্রম সাশ্রয় করা হচ্ছে, ত্রিমাত্রিক কাঠামো হয়ে উঠছে হস্তান্তর বা পরিবহনযোগ্য। নতুন নতুন স্থাপনার ডিজাইন, নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ, সম্প্রসারণ ওং রূপান্তরে এ ধরনের বিভিন্ন পরিকল্পনা ও প্রযুক্তি মুখ্য হয়ে ওঠে। আর্কডেইলি, দ্বিজেন, আর্কিটাইজার ইত্যাদি জনপ্রিয় স্থাপত্য ও নির্মাণবিষয়ক ম্যাগাজিন ও বøগগুলোতে বিগত বছরের বিভিন্ন সাড়া জাগানো এবং বিশেষ স্থাপত্যকর্মগুলো প্রকাশিত হয়েছে। চলুন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দাঁড়িয়ে যাওয়া এমন কিছু স্থাপনা ঘুরে আসা যাক।

তাইপেই পারফর্মিং আর্টস সেন্টার, তাইওয়ান 

অনেক জল্পনা-কল্পনার পরে ২০২২ সালে দ্বার উন্মোচন হলো তাইপেই পারফর্মিং আর্টস সেন্টারের। তাইওয়ানের রাজধানীতে সাংস্কৃতিক এ অবকাঠামোটি আরও আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন জটিলতায় সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৩ সালে তাইপেবাসীর জন্য এটি হবে আনন্দের উপলক্ষ। নেদারল্যান্ডের রটেরডামভিত্তিক স্থাপত্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অফিস ফর মেট্রোপলিটন আর্কিটেকচার (ঙগঅ) ২০০৯ সালে এর ডিজাইন ও নকশা উন্মুক্ত করে। 

স্থপতি ডেভিড গিয়ানোটন ও রেম কুলহাসের যৌথ ভাবনায় একটি কেন্দ্রীয় কাচের ভবনকে মূল হিসেবে রেখে তিন পাশে তিনটি আলাদা কাঠামো যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে স্থান পেয়েছে তিনটি অনন্য থিয়েটার। প্রতিটি থিয়েটারের স্থাপতিক প্রকাশভঙ্গি ভিন্ন। এর মধ্যে ডিম্বাকৃতির কাঠামোটি খুব চিত্তাকর্ষক। ৮০০ আসনবিশিষ্ট অত্যাধুনিক থিয়েটার হল এটি। প্রধান থিয়েটার একটি অপ্রতিসম ভবন, যাতে ১ হাজার ৫০০ আসন রয়েছে। তৃতীয় থিয়েটারটি একটি এক্সপেরিমেন্টাল হল। প্রচলিত থিয়েটার বা কনভেনশন হলগুলোতে ব্যাকস্টেজ বা পশ্চাৎ ক্রিয়া পরিসরকে একটু আড়াল রাখা হলেও এই সেন্টারে কাচের ভবনের স্বচ্ছতা আড়ালের কাজকে উন্মুক্ত ও দৃশ্যমান রাখবে। 

তাইপে সেন্টারের অভিনব কাঠামোবিন্যাস অবশ্য কারও কারও কাছে সমাদৃত নয়। রীতিমতো বিরক্তিকর বলেও উচ্চকিত কেউ কেউ। তবে বিভিন্ন স্থাপত্য সংস্থা ও ম্যাগাজিনগুলোর বিচারে এটি অন্যতম আলোচিত প্রকল্প হিসেবে থাকছে।  

জিয়াং ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল সেন্টার, চীন

২০২৩ সালের এএফসি এশিয়ান ফুটবল টুর্নামেন্ট টার্গেট করে চীনের জিয়াংয়ে একটি অত্যাধুনিক স্টেডিয়ামের পরিকল্পনা করা হয়। যদিও কোভিড পরিস্থিতির এখনো উন্নতি না হওয়ার কারণে গত বছর চীন বাধ্য হয়ে আয়োজক হওয়ার পরিকল্পনা ত্যাগ করে। তবে স্টেডিয়াম নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হয়ে যায় তার আগেই। বিশ্বখ্যাত স্থপতি জাহা হাদীদ এর ডিজাইন করেন। 

সুউচ্চ কলাম ও একটি অত্যধিক ঝুলন্ত ছাদ এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য। লম্বা স্প্যান ছাদটি একটি অতিহালকা কেবল-নেট কাঠামোর সমন্বয়ে ডিজাইন করা হয়েছে, যা কি না দক্ষিণমুখী একাধিক গ্রিন টেরেসের বা সবুজ উন্মুক্ত ছাদের জন্য আশ্রয় তৈরি করবে। পুরো জিয়াং শহর এবং এমনকি কিং পর্বতের দৃশ্য দেখা যায় এখানে বসে। ৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্যাডল আকৃতির মূল অবকাঠামো ডিজিটাল মডেলিং ব্যবহার করে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে সব আসন থেকে খেলার সময় দর্শকদের জন্য বাধাহীন এবং সবচেয়ে আকাক্স্ক্ষিত দৃশ্য নিশ্চিত হয়। উত্তর দিকের বাতাস থেকে স্টেডিয়ামকে রক্ষা করার জন্য সম্মুখভাগের নকশা করা হয়েছে। প্রাকৃতিক আলোকে মাঠে প্রাকৃতিক আচ্ছাদনের বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক আলো একটা পূর্বশর্ত। সেটা নিশ্চিত করেই দর্শক আচ্ছাদন এবং অন্যান্য উল্লম্ব ও আনুভ‚মিক দেয়াল ও ছাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্টেডিয়ামটিতে জনসাধারণের জন্য কিছু গণপরিসর এলাকা, বিনোদন ও খাবারের সুবিধাও থাকবে। মোট কথা, স্টেডিয়াম হলেও সারা বছরের দর্শনার্থীদের জন্যও আকর্ষণীয় করে রাখা হবে এই প্রকল্পকে।  

সিডনি মডার্ন আর্ট গ্যালারি, অস্ট্রেলিয়া

সিডনি মডার্ন আর্ট গ্যালারি অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী শহরের একটি অনন্য সাংস্কৃতিক স্থাপনা, যাকে সিডনি অপেরা হাউসের পরে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে পূর্বতন গ্যালারি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের স¤প্রসারণ কাজের পরিকল্পনা করা হয়। ২০১০ সালে প্রিটজকার পুরস্কার বিজয়ী স্থপতি কাজুয়ো সেজিমা ও রিউ নিশিজাওয়ার নেতৃত্বে সেজিমা অ্যান্ড নিশিজাওয়া অ্যাসোসিয়েটস (ঝঅঘঅঅ) স্টুডিও নিউ সাউথ ওয়েলসের আর্ট গ্যালারির স¤প্রসারণের নকশা করেছে।

সংস্কারের প্রোগ্রামটি তিনটি মূল দিক নিয়ে গঠিত। যথা, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনের পুনরুজ্জীবন এবং কিছু বড় ল্যান্ডস্কেপিং কাজ। সিডনি আর্ট গ্যালারির নতুন অবকাঠামো পরিকল্পনায় বিদ্যমান গ্যালারির নিও-ক্ল্যাসিক্যাল স্থাপত্য ধারার প্রভাব এড়িয়ে একটি নতুন, উন্মুক্ত এবং প্রবেশগম্য পরিসরের নির্মাণে গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা হবে শীর্ষস্থানীয় অস্ট্রেলিয়ান ও আন্তর্জাতিক শিল্পীদের শৈল্পিক কাজ ধারণ করার উপযোগী গতিশীল গ্যালারি এবং সবার উপভোগ করার জন্য বিস্তৃত বহিরাঙ্গন স্থান নিশ্চিত করে, যা আধুনিক পার্কল্যান্ডের জন্য সংবেদনশীল। 

প্রদর্শন এলাকাকে কাচের দেয়ালযুক্ত অনেক প্যাভিলিয়নের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে, যাতে ভেতে ও বাইরের মধ্যে অবিচ্ছিন্ন দৃষ্টি সংযোগ তৈরি হয়। এভাবে প্রদর্শনী স্থানকে দ্বিগুণ করা সম্ভব করেছে এবং একই সঙ্গে সব দর্শকের জন্য আরও আকর্ষণীয় বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি অব্যবহৃত তেল ট্যাঙ্কে রূপান্তরিত করে ভূগর্ভস্থ গ্যালারি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ডিজাইন ও নির্মাণ ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা করে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম আর্ট মিউজিয়াম হিসেবে সর্বোচ্চ পরিবেশবান্ধব ও টেকসই রেটিং দেওয়া হয়েছে। 

এসবার্গ মেরিটাইম সেন্টার-ল্যান্টার্ন, ডেনমার্ক

মেরিটাইম সেন্টারটি প্রকল্প হিসেবে খুব বড় নয়, তবে কমিউনিটিতে অবদান এবং নকশা ও নির্মাণশৈলী একে ২০২২ সালের উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটি মূলত জলক্রীড়ার ও সামুদ্রিক বিনোদনের জন্য একটি কেন্দ্র, যা স্থানীয় পানিবর্তী সমাজের ঐতিহ্যকে ধারণ করে। স্নোহেটা ও ওয়ার্ক আর্কিটেক্টার (ডঊজক অৎশরঃবশঃবৎ)-এর ডিজাইনে ডেনমার্কের এসবার্গের উপকূলে নির্মিত ভবনগুলোকে নৌকোর জ্যামিতি ও কারুকার্য দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সাজানো হয়েছে, যা সামুদ্রিক ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা জানায়। সম্মুখভাগের প্রচ্ছদে বড় বড় মুক্ত প্রবাহ রাখা হয়েছে, যা দর্শকদের পানির দিকে আহŸান করে।

ভবনটিতে একাধিক ওয়াটার স্পোর্টস ক্লাব, বোট স্টোরেজ, প্রশিক্ষণ সুবিধা, একটি বড় ওয়ার্কশপ ও সামাজিক জায়গা থাকবে। স্নোহেটারের মতে, ‘নকশাটির উদ্দেশ্য হলো এমন একটি ভবন তৈরি করা, যা তার নিজস্ব অনন্য শহুরে স্থান তৈরি করে এবং অন্যান্য শহর থেকে আলাদা।’ 

দর্শনার্থীরা ভবনের প্রতিটি কোণ থেকে প্রবেশ করতে পারবে। উন্মুক্ততার এই অনুভূতিটি তার বাইরের চারপাশে স্থাপন করা বড় জানালা দ্বারা উন্নত করা হবে, যার মুখ হবে সমুদ্রের দিকে। জানালাগুলো রাতে বিল্ডিংটিকে আলোকিত করার উদ্দেশ্যেও তৈরি করা হয়েছে, যাতে এটি একটি বাতিঘরের মতো হয়। ভবনের বৃত্তাকার আকারে আশ্রয়প্রাপ্ত সোপানটি ল্যান্টার্নের কেন্দ্রস্থল তৈরি করবে এবং প্রশিক্ষণ সুবিধা ও এর ঘেরের চারপাশে অবস্থিত ক্লাবরুমগুলো ব্যবহার করে দর্শকদের জন্য একটি সাধারণ স্থান প্রদান করবে।

আরকানসাস ফাইন আর্টস মিউজিয়াম, যুক্তরাষ্ট্র

স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান স্টুডিও গ্যাং (ঝঃঁফরড় এধহম) এবং ল্যান্ডস্কেপ পরামর্শক ঝঈঅচঊ-র দায়িত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লিটল রকে আরকানসাস মিউজিয়াম অব ফাইন আর্টসের নতুন নকশাভিত্তিক পুনর্নির্মাণ সম্পন্ন হয়। এর মূল স্থাপনা ১৯৩৭ সাল থেকে চলমান। কংক্রিটের পাতলা ঢালাই করা ভাঁজযুক্ত একই ধাঁচের ছাদগুলো কয়েকটি আলাদা আলাদা বাঁকানো প্যাভিলিয়নের কাঠামোকে একীভূত করার লক্ষ্য পূরণ করে। ১২ হাজার ৩০০ বর্গমিটার আয়তনের এই মিউজিয়াম ১১ একর ল্যান্ডস্কেপড পাবলিক পার্কে ঘিরে আছে। ভাঁজ করা কংক্রিটের ছাদ দ্বারা শোভিত নতুন ভবনগুলো জাদুঘর কমপ্লেক্স পার করবে এবং একটি কেন্দ্রীয় অক্ষ গঠন করবে। স্টুডিও গ্যাং বলেন, ‘একটি উদ্ভিদের কাÐের মতো’ অভিনয় করে, একদম শেষ প্রান্তে কংক্রিটের ছাদ প্রশস্ত হয়ে এন্ট্রির কাঠামো তৈরি করেছে। উত্তরে যেখানে মিউজিয়াম শহরের দিকে মুখ করা, সেখানে ছাদ একটি কোর্টইয়ার্ডকে ঘিরে বাঁকানো এবং একটি ফ্লোর থেকে ছাদ পর্যন্ত গøাস করা দ্বিতল ভবনের ফ্রেম তৈরি করেছে। ১৯৮২ সালে স্থানীয় শিল্পী বেঞ্জামিন ডি ব্রান্টলি দ্বারা খোদাই করা মূল আর্ট ডেকো চুনাপাথরের সম্মুখভাগকে স্টুডিও গ্যাং পুনরায় ডিজাইনের অংশ হিসেবে শহরের পাশের প্রবেশদ্বারে পুনরায় স্থাপন করে। অন্য প্রান্তে, কাচের দেয়ালঘেরা প্রবেশপথটি ছাদের নকশার প্রতিধ্বনি করার জন্য পাপড়ি আকৃতির বাগানে সাজানো ৫০টি দেশীয় প্রজাতির গাছপালা সমন্বিত একটি রেস্তোরাঁ, বাগানসহ একটি ছাদের ওপর খুলবে।

ডিজেআই হেডকোয়ার্টার, চীন

ফস্টার+পার্টনারর্সের ২০২২ সালে সমাপ্ত তালিকায় বেশ কয়েকটি প্রকল্প থাকলেও বিশেষ একটি প্রকল্প চীনের শেনঝেনে ডিজেআই রোবোটিক কোম্পানির জন্য করা সদর দপ্তরটি। এতে ইস্পাত ট্রাস তৈরি দুটি টাওয়ার রয়েছে, যা ড্রোন প্রযুক্তি প্রদর্শনের জন্য ডিজাইন করা একটি বাঁকা ঝুলন্ত সেতু দ্বারা সংযুক্ত করা হবে। ডিজেআই কোম্পানি ফিল্ম ও ফটোগ্রাফির কাজে ব্যবহারের জন্য কোয়াডকপ্টার তৈরি করে থাকে। 

টাওয়ারগুলোতে অফিস ও পাবলিক ডিসপ্লে এলাকার পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়নের স্থান থাকবে। নিচের লেভেলে রয়েছে একটি এক্সিবিশন হল। এ ছাড়া আছে বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যের জন্য স্থায়ী প্রদর্শন এলাকা এবং কর্মকর্তাদের জন্য জিম ও রোবট ফাইটিং রিসোর্সের মতো সুবিধা। অফিস এলাকাটি একটি ২৭০ ডিগ্রি কাচের প্রাচীরসহ কলামমুক্ত এবং নমনীয় স্থানের একটি বড় স্প্যান উপভোগ উচ্চপ্রযুক্তির অনুভূতি তৈরি করে। ভূমি থেকে ১০০ মিটার ওপরে টুইন টাওয়ারের সঙ্গে সংযোগকারী আকাশ সেতুটি শক্তিশালী বাতাসের জন্য বেশ সংবেদনশীল। এটা বিবেচনায় নিয়েই সেতুর নান্দনিকতার পাশাপাশি, কাঠামোগত স্থিতিশীলতা ও ভূমিকম্প প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এমনকি সেতুতে গণনামূলক তরল গতিবিদ্যা সিমুলেশন এবং বায়ু-প্ররোচিত অস্থিরতাকে দমন করার জন্য বিশেষ বায়ু প্রকৌশল নকশা করা হয়েছে। 

সানবি স্কুল, ডেনমার্ক 

২০২২ সালের সম্ভাব্য তালিকায় একটি শিক্ষামূলক ভবন হলো একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি হেনিং লারসেন আর্কিটেক্টস দ্বারা ঝকঅখঅ, ঊঞঘ আর্কিটেক্টস, গঙঊ, অঁঃবহং ও ইঙ-ঐটঝ-এর সহযোগিতায় ডিজাইন করা হয়েছে। এটি একটি হাঁটার যোগ্য ছাদ ও অভিযোজিত অভ্যন্তর দ্বারা বৈশিষ্ট্যমÐিত। সানবি স্কুলে বাচ্চাদের রাখার জন্য কোনো কাঠামোগত বাধা নেই। স্কুলের বৃত্তাকার আকৃতির মাঝখানে একটি প্রতিরক্ষামূলক স্থান তৈরি করে, যেখানে শিশুরা খেলতে পারে। শহরের প্রান্তে অবস্থিত, স্কুলের নকশা প্রকৃতির সান্নিধ্যের সুবিধা নেয় এবং এর উদ্দেশ্য হলো বাইরের পরিবেশকে ভেতরে আনা। স্থাপনার বৃত্তাকার ছাদ একটি ঢাল তৈরি করে, যার ওপর দিয়ে আপনি সূর্যাস্ত দেখতে বা শীতকালে ¯েøজিং করতে যেতে পারেন। দেখে মনে হবে মাটি থেকে ওপরে ঠেলে পাহাড়ের মতো একটি ছাদ তৈরি করা হয়েছে। এভাবে স্কুল স্থাপনাটি সামগ্রিক ভূমিরেখার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে এবং এটি অ্যাডভেঞ্চারের জন্য একটি জেনারেটর, যা স¤প্রদায়ের প্রত্যেকের দ্বারা ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্কুল তৈরি করার সময় একটি স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন স্থানীয় স¤প্রদায়, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক জীবনের মধ্যে একটি সেতু তৈরি করতে পারে। মূল্যবান শিক্ষাদানের জন্য স্থান তৈরি করতে এবং স্কুলের কর্মচারীদের জন্য সর্বোত্তম কাঠামো তৈরি করতে সক্ষম হবে। নতুন স্কুলে আছে একটি লাইব্রেরি, ক্যাফে, খেলাধুলা ও সংগীত সুবিধা, যা কেন্দ্রীয়ভাবে অবস্থিত এবং বাইরের দিকে থাকবে ও স্কুলের সময়ের পরেও স্থানীয় স¤প্রদায়কে ভেতরে আমন্ত্রণ জানাবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ডেনমার্কের প্রথম শিক্ষায়তন স্থাপনা, যেটিকে অভ্যন্তরীণ জলবায়ু, রাসায়নিক এক্সপোজার ও টেকসই উপাদান ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন পরামিতির ওপর ভিত্তি করে ‘নর্ডিক ইকোলাবেল’ প্রদান করা হবে। নর্ডিক ইকোলেবেল এই অঞ্চলের পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের জন্য একটি সরকারি স্বীকৃতি, যা শক্তি সাশ্রয় ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণ উপাদান ব্যবহারের মতো বিষয়গুলোকে পর্যালোচনা করে প্রদান করা হয়। 

নানজিং কেন্দাল হিমালয় সেন্টার, পূর্ব চীন

আরেকটি মিশ্র ব্যবহারের ভবন নানজিং কেন্দাল হিমালয় সেন্টার, যেটি ২০২০ সাল থেকেই অপেক্ষমাণ প্রকল্পের তালিকায় আছে এবং বারবার পরিকল্পনা হচ্ছে সমাপ্ত করার জন্য। যদিও এটি সমাপ্তির পথে, তবে আনুষ্ঠানিক ব্যবহারে আসতে হয়তো ২০২৩ সালে পা দেবে। পূর্ব চীনের নানজিংয়ে, ৫ লাখ ৬০ হাজার বর্গমিটার কমপ্লেক্সে বেশ কতগুলো বহুতল আবাসিক ভবনের সমন্বয়ে গঠিত। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অবস্থানে আছে কিছু ছোট ভবন, সবুজ স্থান ও ঢেউ খেলানো হাঁটাপথের মিশ্রণ। এগুলো ঝরনার মতো নি¤œগামী ল্যুভার্স সহযোগে পাহাড়ের মতো টাওয়ার দ্বারা সীমানাযুক্ত। স্থপতি মা ইয়ানসংয়ের নেতৃত্বে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান গঅউ দ্বারা এটি ডিজাইন করা হয়।  

মূল ধারণা ছিল ভবিষ্যৎ বাসিন্দাদের জন্য একটি গ্রামের মতো জনপদ তৈরি করবে। বাসিন্দাদের অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এখানে বাণিজ্যিক অফিস, হোটেল, দোকান ইত্যাদি সন্নিবেশ করা হবে। পাহাড়সদৃশ টাওয়ারগুলো কমপ্লেক্সের চারদিক ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে এবং বাঁকানো পথ, সেতু ও করিডর বাণিজ্যিক এলাকা এবং গণপরিসরে ও সবুজ বাগানে অধিবাসীদের পদচারণ নিশ্চিত করেছে। 

প্রকৃতির একটি বিমূর্ত অবস্থান রয়েছে এই স্থাপত্যের পুরোটাজুড়ে। পরিকল্পনায় পুকুর, ছোট নদী, ঝরনা, পুল ইত্যাদি রাখা আছে। গাছপালা ও সবুজে ঢাকা স্থাপনার অবস্থান অতি আধুনিকতা ও কৃত্রিমতার একঘেয়েমি ভেঙে দিয়েছে। সাদা কাচের ল্যুভরস টাওয়ারগুলোর উদ্দীপক ফর্ম তৈরি করে, যেগুলোকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেন তারা সহস্রাব্দ ধরে বাতাস ও পানি দিয়ে আকৃতি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ও ছিল মূল অনুপ্রেরণা। স্থাপতির ভাষায়, নানজিং কেন্দাল হিমালয় সেন্টার মননশীল স্থানগুলোর একীকরণের মাধ্যমে মানবতা এবং প্রকৃতির মধ্যে আধ্যাত্মিক সাদৃশ্য পুনরুদ্ধার করতে চায়, যা প্রকৃতিতে বাসিন্দাদের নিমজ্জিত করে, একই সঙ্গে আধুনিক দিনের জীবনযাপনের সুবিধাগুলো পূরণ করে। 

সান পেলেগ্রিনো ফ্ল্যাগশিপ ফ্যাক্টরি, ইতালি

সান পেলেগ্রিনো ফ্ল্যাগশিপ কারখানাটি নর্দান ইতালির একটি পার্বত্য উপত্যকায় তৈরি করা হয়েছে। বার্ক ইনজেল গ্রæপ (বিআইজি) স্টুডিও একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এ প্রকল্প ডিজাইন করার জন্য নির্বাচিত হয় এবং এর প্রায় পাঁচ বছর পরে বাস্তবতার মুখ দেখে। ১৮৯৯ সাল থেকে চলমান বর্তমান কারখানাকে না ভেঙে আলাদাভাবে ১৭ হাজার বর্গমিটারের ফ্যাক্টরি কমপ্লেক্স নতুন করে নির্মাণে ৯০ মিলিয়ন ইউরো বাজেট ধরা হয়েছে। কোমল পানীয় কোম্পানি সান পেলেগ্রিনোর সদর দপ্তর ও বোতল কারখানা এখানে অবস্থিত। 

ঐতিহ্যবাহী ইতালিয়ান স্থাপত্যকে সম্মান করে নদীর তীর ধরে সারি সারি খিলান, একটি দর্শনীয় তোরণ ও পোর্টিকোর মতো অংশগুলো সংযুক্ত হয়েছে। সান প্যালেগ্রিনোর ভাষ্যমতে, খিলান, হাঁটাপথ, প্রবেশ ও পোর্টিকো অনুসরণযোগ্য একটি স্থাপত্য পরিবেশ তৈরি করেছে। এ পরিবেশ উৎপাদন ও উপযোগ, প্রকৃতি ও স্থাপত্য, ভেতর ও বাইরে এবং তৈরি ও অনুভবের মধ্যে এমন নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করবে, যা কারখানার কর্মচারী ও দর্শনার্থীদের মধ্যে আবেশিত হবে। ২০১৮ সালে নির্মাণ শুরু হয়। ধাপে ধাপে পার্কিং লট এবং কারখানার সংযোগকারী ব্রিজ, কারখানার উত্তরাংশে অফিস ভবন, কারখানা ও ল্যাবের নির্মাণ সম্পন্ন হয়। এখান থেকে যেকোনো দর্শনার্থী দেখতে পারবে কীভাবে খনিজ পানি উত্তোলন ও পরিশোধন হয়। সমগোত্রীয় কারখানা ভবন এবং খিলানের ফ্রেমে বাঁধা পড়েছে আলপাইনের সুদৃশ্য ভ‚বৈচিত্র্য। প্রকৃতির কোলে স্বয়ং কারখানা কমপ্লেক্সটি নিজেই শরতের ফুল হয়ে ফুটে আছে। স্থানীয় মেয়র ভিট্টরিও মিলেসি আশা করছেন যে এই ন্থাপনা পর্যটক আকর্ষণেও ভ‚মিকা রাখবে। 

ভ্যালি, নেদারল্যান্ডস

নেদারল্যান্ডসে ৭৫ হাজার বর্গমিটার ভ্যালি কমপ্লেক্স তিনটি মিশ্র-ব্যবহারের বহুতল ভবনের সমন্বয়। পাথর মোড়ানো সারিবদ্ধ জানালা এবং বারান্দা দ্বারা বৈশিষ্ট্যমÐিত ভিন্ন উচ্চতার তিনটি ভবনের চূড়া মিলে একটি উপত্যকার অনুভ‚তি তৈরি করেছে। নিচের অংশে পোড়িয়াম ও মুক্ত ছাদ। ডেভেলপার কোম্পানি এজ টেকনোলজিস ২০১৫ সালে একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে গঠজউঠ-কে পছন্দ করে ডিজাইনের জন্য। ২০০ আবাসিক ইউনিট ও অফিস, দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট, বার ইত্যাদি সুবিধাসংবলিত ভবনটির নির্মাণকাজ এক বছর আগে শেষ হয়ে গেলেও ১৩ হাজার গাছপালা ও গুল্মগুলোর সবুজ স্তর বড় হওয়ার জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করা হয়েছে। অবশেষে ২০২২ সালের উদ্বোধনের পর পর্যায়ক্রমে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। লম্বা চূড়া ১০০ মিটার উঁচু এবং দুটি ফ্লোর মিলে বার অবস্থিত। প্রতিটি টাওয়ারের বিভিন্ন পাশ আলাদা আলাদাভাবে বিন্যস্ত।

কাচের দেয়াল ও পাথরের দেয়ালগুলো টেরাস, বে জানালা, ব্যালকনিসহকারে এমনভাবে বিন্যস্ত হয়েছে যেন পাহাড়ের অনিয়মিত ঢালের মতো হয়। খাড়া ধারগুলোতে মুক্ত ছাদে সবুজ স্তর তৈরি হয়েছে। প্রতিটা আবাসন ইউনিট থেকে বিভিন্ন স্তরে নেমে আসার সুযোগ রাখা হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যখন গাছপালা ওং গুল্ম-লতা বড় হবে, তখন পুরো ভবনটিকে সবুজ পাহাড় বললেও ভুল হবে না। ভবনের বাসিন্দাদের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করবে। উপত্যকার কেন্দ্রে মূল লবি ও কমন পরিসর। দিনের আলোর সুব্যবস্থা করা হয়েছে।

শযধষরফথধৎপয০১@ুধযড়ড়.পড়স

প্রকাশকাল: বন্ধন ১৪৯ তম সংখ্যা, জানুয়ারি ২০২৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top