সুন্দর বাড়ির স্বপ্ন দেখে না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। বাড়িটি কাঠের কিংবা ইট-পাথরের যা-ই হোক না কেন, দেখতে যেন হয় আকর্ষণীয়। একটি বাড়িকে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে প্রয়োজন সুন্দর ডিজাইন ও নির্মাণে নান্দনিকতা। তবে নজরকাড়া সৌন্দর্যের পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পেইন্টিং বা রং। ভবনের সৌন্দর্যকে রঙিন করে ফুটিয়ে তুলতে রং করা বা পেইন্টিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পেইন্টিং, বলতেই চোখে ভেসে ওঠে সাদা ক্যানভাসে জলরঙে তুলির অজস্র আঁচড়। তবে ক্যানভাসের পার্থক্যের কারণে এই শিল্পের ধরন হয়ে ওঠে ভিন্ন ভিন্ন। কাগজে আঁকলে জলছবি, দেয়ালে আঁকলে দেয়ালচিত্র। ভবন নির্মাতাদের কাছে দেয়ালে পেইন্ট করার গুরুত্ব এক রকম, বসবাসকারীদের কাছে গুরুত্ব অন্য রকম। আবার যাঁরা পেইন্ট করেন, তাঁরা কেউ শখে আবার কেউ পেশাদার হিসেবে করেন। তবে বিল্ডিংয়ে পেইন্টিংয়ের ক্ষেত্রে পেশাদার পেইন্টিং ও পেইন্টারের গুরুত্ব অনেক।
যে কারণে ভবনে পেইন্ট করা প্রয়োজন
সুরক্ষা, মান বৃদ্ধি ও টেকসই ভবনের ক্ষেত্রে পেইন্টিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভবন নির্মাণের পর যেসব কারণে পেইন্টিং করতে হয়, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
পরিবেশগত সুরক্ষা: পেইন্ট ভবনকে বৃষ্টি, বাতাস ও সূর্যের তাপের মতো প্রাকৃতিক বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থেকে সুরক্ষা প্রদান করে প্রতিরক্ষামূলক বাধা হিসেবে কাজ করে।
ভবনের মূল্যবৃদ্ধি: পেইন্টের একটি নতুন কোটিং আপনার সম্পত্তির মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে। আকর্ষণীয় ও টেকসই পেইন্ট সম্ভাব্য ক্রেতা বা ভাড়াটের কাছে ভবনকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
নান্দনিকতা: আকর্ষণীয় টেক্সার কিংবা সঠিক রঙের ব্যবহার একটি বিল্ডিংকে দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় করে তোলে। এ ছাড়া বিভিন্ন মটিফস গ্রাফিতি যেকোনো ভবনকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করে।
অভ্যন্তরীণ বায়ুর গুণমান: উচ্চমানের পেইন্টিং বিষাক্ত ধোঁয়া, রাসায়নিক এবং দূষণের হাত থেকে অভ্যন্তরীণ বায়ুর গুণমান বজায় রাখে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি কমায়।
রক্ষণাবেক্ষণ: নিয়মিত পেইন্টিং করলে ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও কমে। ভবনের স্থায়িত্ব দীর্ঘায়িত করতে পারে ওয়েদার কোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ পেইন্টিং।
পেইন্টের রং যেভাবে তৈরি করা হয়
একটি ভালো কেক তৈরি করতে যেমন অনেক উপাদানের সঠিক ও সূ² সংমিশ্রণ দরকার, একইভাবে বেশ কিছু উপাদানের নিখুঁত সংমিশ্রণ হলেই একটি ভালো পেইন্ট তৈরি হয়। রং তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত উপাদান হলো রঙ্গক, প্রসারক, বাইন্ডার, দ্রাবক/পানি এবং সংযোজনশীল অন্যান্য উপাদান।
রঙ্গক: রঙ্গক একধরনের অদ্রবণীয় উপাদান, যা পেইন্টিংয়ে আলাদা স্তর তৈরি করে এবং অস্বচ্ছতা ও স্থায়িত্ব বাড়ায়।
এক্সটেন্ডার: উৎপাদন খরচ কমাতে পেইন্টের সঙ্গে এক্সটেন্ডার ব্যবহার করা হয়। এক্সটেন্ডার হলো একধরনের অদ্রবণীয় উপাদান, যা রঙের অস্বচ্ছতা বাড়ায়। পেইন্টের পরিমাণ বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এক্সটেন্ডার।
বাইন্ডার: পেইন্টে আঠালো যে উপাদানটি থাকে, তাকে বাইন্ডার বলা হয়। এই উপাদানটি কঠিন তল, যেখানে পেইন্ট করা হবে, তার সঙ্গে রঙ্গক ও প্রসারককে একসঙ্গে আটকে রাখে। সহজে বললে দেয়ালের সঙ্গে রঙের লেগে থাকা অনেক বেশি শক্তিশালী করতে পেইন্ট উৎপাদনের সময় বাইন্ডার ব্যবহার করা হয়। অ্যালুমিনিয়াম সিলিকেট, ম্যাগনেশিয়াম সিলিকেট, সিলিকা, ক্যালসিয়াম কার্বনেট (সিন্থেটিক এবং প্রাকৃতিক) এবং বেরিয়াম সালফেট সাধারণভাবে বহুল ব্যবহৃত এক্সটেন্ডার।
দ্রাবক/পানি: এই উপাদানটি পেইন্টের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে। পেইন্টের অন্যান্য উপাদানকে মিলিয়ে নিখুঁত মিশ্রণ তৈরি করতে পানি অথবা পেট্রোলিয়াম জাতীয় দ্রাবক পদার্থ ব্যবহার করা যায়। ফলে পেইন্টটি ব্রাশ দিয়ে ব্যবহার করে যেকোনো জায়গায় পেইন্ট করা যায়। দ্রাবক ব্যবহারের কারণে ব্রাশ করার পর পেইন্ট খুব মসৃণ হয়ে থাকে।
সংযোজন: পেইন্ট শুকানো এবং শুকিয়ে যাওয়ার পর যেন তা উঠে না যায়, সে কারণে শেষ পর্যায়ে পেইন্টিংয়ে বাড়তি কিছু এজেন্ট যুক্ত করা হয়, যা পেইন্টিংয়ের ওপরের স্তরকে সুরক্ষা দেয়।
উল্লেখিত উপাদানগুলোর একটি বাদ দিলেও পেইন্ট কখনো নিখুঁত হবে না। নিখুঁত রং না হলে তা টেকসইও হবে না।
কখন ভবনে পেইন্ট করা উচিত?
ভবনে যেকোনো সময়ই পেইন্ট করা যায়, তবে সময়ভেদে পেইন্টিংয়ের কিছু সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় পেইন্ট করার সুবিধা এবং অসুবিধা এক রকম আবার শীতে অন্য রকম। তবে অভিজ্ঞদের মতে, গ্রীষ্মকাল বা গরমের সময় পেইন্ট করা সবচেয়ে ভালো। এ সময় উষ্ণতা বেশি থাকায় পেইন্ট খুব দ্রæত শুকিয়ে যায় এবং ফাঙ্গাস পড়ার আশঙ্কা কম থাকে। পেইন্ট করার ক্ষেত্রে আগে ভেতরের অংশে পেইন্ট করা উচিত, কারণ ভেতরের অংশটি ঋতু পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে না। বৃষ্টির দিনে বা বর্ষাকালে পেইন্ট না করাই উত্তম, তাই পেইন্টের জন্য গ্রীষ্মকাল হলো সবচেয়ে উপযোগী সময়। গ্রীষ্মকালে চাইলে বাড়ির ভেতর ও বাইরে একই সঙ্গে পেইন্ট করা যেতে পারে। কিন্তু এই কাজ করতে হবে বাড়ির কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হওয়ার পর। সাধারণত পাঁচ-ছয় বছর পরপর বাইরের দেয়াল পেইন্ট করানো উচিত। যদি শেওলা পড়ে যায়, তবে তিন বছর পর বাইরের দেয়াল রং করানো ভালো। ভেতরের দেয়ালে পেইন্ট করা যেতে পারে চার-পাঁচ বছর পরপর।
পেইন্টিংয়ের ধাপসমূহ
পেইন্টিং এমন কোনো বিষয় নয় যে বাজার থেকে রং কিনে এনেই তা দেয়ালের গাড়ে জুড়ে দিলাম আর পেইন্টিং হয়ে গেল। যেহেতু বিল্ডিংয়ে পেইন্ট করা অনেক ব্যয়বহুল, তাই রঙের দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য প্রথমেই ভবনটিকে সুন্দরভাবে, মসৃণভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে যেন পেইন্ট করার পর রং দেয়ালের গায়ে ভালোভাবে আটকে থাকে। পেইন্টের ধরন, ব্র্যান্ড ও প্রকৃতি অনুযায়ী প্রস্তুতকারক কিংবা পেইন্টারের বিভিন্ন নির্দেশনা থাকতেই পারে। তবে বিল্ডিংয়ের ধরন অনুযায়ী নি¤েœাক্ত বিষয়গুলো সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য।
সারফেস প্রিপারেশন
ইংরেজি সারফেস (ঝঁৎভধপব) মানে হলো পৃষ্ঠ। অর্থাৎ যেকোনো বস্তুর পৃষ্ঠতলকেই সারফেস বলা হয়। যেমন- টেবিলের পৃষ্ঠ, মাটির পৃষ্ঠ, একইভাবে যেকোনো ভবনের পৃষ্ঠ বলতে সাধারণ দেয়ালের ওপরের স্তরকে বোঝায়। ভবন সারফেসের ধরন অনুযায়ী পেইন্টিংয়ের প্রস্তুতি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নুতন পৃষ্ঠের ক্ষেত্রে একধরনের প্রস্তুতি এবং পুরোনো সারফেসের ক্ষেত্রে অন্যরকম প্রস্তুতি নিতে হয়।
নতুন পৃষ্ঠের জন্য পেইন্টিংয়ের প্রস্তুতি
ভবনের নতুন সারফেসের ক্ষেত্রে অনেক সময় লক্ষ করা যায়, দেয়ালের গায়ে প্লাস্টারের কাঠ, পলিথিন ইত্যাদি বস্তু লেগে থাকে। প্লাস্টারের গায়ে লেগে থাকা কোনো পচনশীল পদার্থ থাকলে তা স্ক্র্যাপ দিয়ে তুলে ফেলতে হবে। সারফেসের উঁচু-নিচু, আঁকাবাঁকা, ছিদ্র থাকলে তা সমান করার জন্য ৪০/৬০ নম্বর স্যান্ড স্টোন কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে ৮০ নম্বর স্যান্ড স্টোন দিয়ে ঘষতে হবে। পাথরের পর অধিক মসৃণতার জন্য ১২০/১১০ নম্বর স্যান্ড পেপার/ওয়াটার পেপার (সিরিশ কাগজ) দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে, এর ফলে প্লাস্টারের গায়ে থাকা ধুলো-বালি, তেল, গ্রিজ, ফাঙ্গাস, ছত্রাক ইত্যাদি থাকলে দূর হয়ে যাবে।
পুরোনো পৃষ্ঠের ক্ষেত্রে প্রস্তুতি
পুরোনো বা ক্ষতিগ্রস্ত দেয়াল/সারফেসে রং করার আগে ফাটল, অতিরিক্ত প্লাস্টার কিংবা সিপেজ থাকলে তা মেরামত করে নিতে হবে। পুরোনো রঙের ওপর নতুন করে পেইন্ট করার জন্য পুরোনো রং তুলে ফেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে এবং দুই-তিন দিন রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে শুকিয়ে আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। সারফেসে অত্যধিক শেওলা, ছত্রাক, ফাঙ্গাস থাকলে অ্যান্টি-ফাঙ্গাস সলিউশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রাইমার বা আস্তর
সারফেস প্রিপারেশন হয়ে গেলে প্লাস্টার ও রঙের মধ্যে আঠালো সম্পর্ক তৈরির জন্য এক স্তর আস্তর বা প্রাইমার দেওয়া হয়। এই প্রাইমার দেয়ালের সারফেসকে মসৃণ করে, এ ছাড়া শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং রং আরও সুন্দরভাবে বেশি জায়গায় ছড়িয়ে দেয়। ভেতর ও বাইরের দেয়ালে প্রাইমার ব্যবহারে উপকরণের ভিন্নতা রয়েছে।
ভেতরের দেয়াল
স্নোসোম পাউডার, সিলার যা ওয়াটার সিলার নামে পরিচিত, এগুলো সাধারণত সিমেন্ট বেইজড পেইন্ট ম্যাটেরিয়ালস। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির পাউডার/তরল সিলার পাওয়া যায় যাতে নির্দিষ্ট অনুপাতে পানি মিশিয়ে (৫০:৫০, ৬০:৪০) কার্যোপযোগী করা হয়।
বাইরের দেয়াল
স্নোসোম পাউডার, এক্সটেরিয়র ওয়াটার বেস সিলার/ওয়েদার সিলার, কোম্পানিভেদে ভিন্ন ভিন্ন নামের হয়ে থাকে। এগুলোর সঙ্গেও নির্দিষ্ট অনুপাতে পানি মেশাতে হয়। মনে রাখা জরুরি, বাইরের দেয়ালের জন্য প্রতি গ্যালন প্রাইমার দিয়ে ৪৫ বর্গমিটার/প্রায় ৫০০ বর্গফুট আস্তর দেওয়া যায়। তবে সারফেসের ধরন কিংবা ব্র্র্যান্ডের পার্থক্যের কারণে এই অনুপাতে কিছুটা তারতম্য ঘটতে পারে।
পুটিং
সাধারণত আরসিসি বা প্লাস্টার সারফেসের অসমতল পৃষ্ঠকে সমতল বা মসৃণ করার জন্য কিংবা ফাটল বা ত্রæটি থাকলে তা ঢাকার জন্য পুটিং প্রদান করা হয়। এ ছাড়া পুটিং পেইন্ট ও বেইজের মধ্যে বন্ডিং মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির রেডিমেইড পুটিং পাওয়া যায়। পুটিং ইনার কিংবা আউটার উভয় দেয়ালেই করা যেতে পারে, তবে বাইরের অংশে পুটিং না করাই ভালো। কারণ, বৃষ্টির পানিতে ফুলে ওঠার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভবন নির্মাণের সময় দেখা যায় সাধারণত দুই ধাপে পুটিং করা হয়ে থাকে। সেগুলো হচ্ছে-
লাইম পুটিং: যা পুরো সারফেসের ওপরেই করা হয়ে থাকে। বেইজ কোট প্রদানের এক/দুই দিন পর (শুকানোর পর, কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা) পুরো সারফেসে একবার লাইম পুটিংয়ের প্রলেপ দেওয়া হয়। ক্ষেত্রবিশেষে একাধিক কোটও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে প্রথম কোট পুটিংয়ের প্রলেপ ওপর-নিচে প্রদান করা হলে পরবর্তী কোট আড়াআড়ি টানতে হবে যেন কোনো জায়গা খালি না থাকে।
পুটিং শুকানোর পর (দুই/তিন দিন পর) ১০০-১২০ ঊসবৎু চধঢ়বৎ দিয়ে ঘষে নিতে হবে, যেন হাত দিয়ে স্পর্শ করলে সমতল মনে হয়। বাইরের দেয়ালে খরচ কমাতে চাইলে পুটিংয়ের পরিবর্তে তিন কোট রং অর্থাৎ তিনবার রঙের প্রলেপ দিলেও দেয়াল মসৃণ হবে।
টাচ পুটিং: ঋরৎংঃ ঈড়ধঃ চধরহঃ করার পর পৃষ্ঠের কোথাও গর্ত, ঢেউ বা ক্রটি দেখা দিলে কেবল ওই স্থানে টাচ পুটিং করতে হয়। একই নিয়মে সেটাকে শুকানোর পর ঊসবৎু চধঢ়বৎ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে ফাইনাল কোট প্রদান করতে হয়।
পুটিং তৈরির নিময়মাবলি
প্রথম কোট পুটিং: ১ বস্তা চক পাউডার, ১ গ্যালন এনামেল পেইন্ট এবং ১ গ্যালন প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়।
দ্বিতীয় কোট পুটিং: ১ বস্তা চক পাউডার, ১/৩ গ্যালন এনামেল পেইন্ট এবং ১/৩ গ্যালন প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়।
পেইন্টিং
রং করার আগে সারফেসকে ভালোভাবে শুকনো, পরিষ্কার ও সমতল করে নিতে হবে। প্লাস্টার ভালোভাবে না শুকালে রং করা উচিত নয়। প্লাস্টারের ৩ মাস পর রঙের কাজ শুরু করা উত্তম। কারণ, ৯০ দিনের আগে দেয়ালের পানি ঠিকভাবে শুকায় না। ৯০ দিন আগে সিলার ব্যবহার করলে দেয়ালের স্থায়িত্ব কমে যায়। তবে ৪৫ দিনের আগে রং করা উচিত নয়, রং করার ক্ষেত্রে আর্দ্রতা অবশ্যই ২০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে থাকতে হবে। রং দুই থেকে তিনবার প্রলেপ দেওয়া হয়। প্রথম প্রলেপের পর ছয়-সাত দিন শুকানোর সময় দিতে হবে। এরপর দ্বিতীয় প্রলেপ দেওয়া হয়, তবে এই কোট ৪৮-৭২ ঘণ্টার আগে দেওয়া উচিত নয়।
এতেও যদি রং ভালো না হয়, যেমন-পরিচ্ছন্ন না হয়ে ছোপ ছোপ থাকে বা রং হালকা হয় তাহলে দ্বিতীয় প্রলেপের দুই থেকে তিন দিন পর তৃতীয় প্রলেপ দিতে হবে। প্রথম প্রলেপের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পানি মেশানো হয় (ব্র্যান্ডভেদে তারতম্য হতে পারে)। দ্বিতীয় প্রলেপের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পানি মেশানো হয়।
পেইন্ট যেকোনোভাবেই করা যায়। যেকোনো ব্র্র্যান্ডের রং কিনেও পেইন্ট করা যায়। তবে পেইন্টিংয়ের জন্য ভালো প্রস্তুতি না থাকলে কোনো কিছুতেই ভালো পেইন্ট করা সম্ভব নয়। একটি ভবনের প্রাথমিক মূল্যায়নই হয়ে থাকে পেইন্টের গুণগত মানের ওপর। আমরা খালি চোখে একটি বিল্ডিংয়ের পেইন্টিং কোয়ালিটিই দেখে থাকি সবার আগে। তাই বিল্ডিংয়ে পেইন্ট করার আগে অবশ্যই জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন সময় আপনি পেইন্ট করবেন। কী ধরনের পেইন্ট করবেন? সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে আপনার পেইন্টের প্রস্তুতি কেমন।
রিগ্যান ভূঁইয়া
ৎরমধহনযঁরুধহ৪৩২@মসধরষ.পড়স
প্রকাশকাল: বন্ধন ১৫৩ তম সংখ্যা, মে ২০২৩