১৯৪৭ সালে ঢাকাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঘোষণার পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন বাড়ি ও ইমারতের নিয়ন্ত্রণে এবং ঢাকাকে পরিকল্পিত উন্নয়নে ১৯৫২ সালে ‘দ্য বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট’ এবং ১৯৫৩ সালে ‘নগর উন্নয়ন আইন’ জারি করা হয়। বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট জারি করা হলেও এর প্রয়োগের জন্য আজ অবধি কোনো প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। সে সময় ঢাকায় এই আইনটি প্রয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সরকারের ঈ্ই (কনস্ট্রাকশন ও বিল্ডিং) ডিপার্টমেন্টের ওপর। ১৯৫৬ সালে নগর উন্নয়ন আইনের আওতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘ঢাকা ইমপ্রæভমেন্ট ট্রাস্ট’ সংক্ষেপে ডিআইটি। ডিআইটি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল ঢাকার জন্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও উন্নয়ন মনিটরিং করা এবং সে সঙ্গে এর আলোকে নগরীতে বিভিন্ন ধরনের ইমপ্রæভমেন্ট স্কিমস বা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা। আর ডিআইটি প্রতিষ্ঠার পরপর সিঅ্যান্ডবি থেকে ঢাকায় বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন আইন প্রয়োগের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল ডিআইটির ওপর। পাশাপাশি তখন ডিআইটি ঢাকার পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নেরও উদে্যাগ গ্রহণ করেছিল এবং ‘কলম্বো প্ল্যানের’ আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ঢাকার মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ব্রিটেনের মিনোপ্রিয়ো, স্পেন্সলি এবং পিডবিøউ ম্যাকফারলেন নামক একটি কনসোর্টিয়াম উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান ২০ বছর মেয়াদি ঢাকার প্রথম মহাপরিকল্পনাটি প্রণয়ন করে। ১৯৫৯ সালে এই মহাপরিকল্পনাটি অনুমোদিত ও কার্যকর করা হয়। এই মহাপরিকল্পনার প্রতিবেদনে সুপারিশ ছিল, ঢাকার নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান আর নগরীর উন্নয়নের জন্য আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার। কিন্তু তা করা হয়নি!
ডিআইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের জাঁদরেল অফিসার গোলাম মুহম্মদ মাদানী (জি এ মাদানী)। তিনি মহাপরিকল্পনার কাজ শুরুর পাশাপাশি একই সঙ্গে দিলকুশায় ডিআইটি ভবন নির্মাণ এবং কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে হাত দেন। ডিআইটি প্রথমে পরিচালিত হতো একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ছয়-সাতজনের একটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দ্বারা। পরবর্তী সময়ে আইনে সংশোধনী এনে ডিআইটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজে সদস্য ১৩ জনে উন্নীত করা হয়। প্রথমে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রতিনিধি, ঢাকার জেলা প্রশাসক, ঢাকা পৌরসভার চেয়ারম্যান ও দুজন কাউন্সিলর। পরে এতে যুক্ত হন নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান ও একজন করে কাউন্সিলর, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ অধিদপ্তর ও পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধানরা।
মহাপরিকল্পনার আলোকে জি এ মাদানী গুলশান-বনানী মডেল টাউনের প্রকল্পগুলোর কাজ হাতে নেন। এরপর তিনি নর্থ স্যাটেলাইট টাউন বা উত্তরা উপশহর নির্মাণের জন্যও উপদেষ্টা নিয়োগ করেন। এসব প্রকল্প এলাকার হুকুম-দখলকৃত এলাকায় প্রাথমিক উন্নয়ন শেষে প্রথম দিকে সেখানে সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আকারে প্লট বরাদ্দ করা শুরু হয়। তখন কাঠাপ্রতি মূল্য ধরা হয়েছিল ৫০০ টাকা মাত্র, কিন্তু সে সময় ওই মূলে্য মানুষের প্লট নেওয়ার তেমন আগ্রহই ছিল না বলা যায়! যার কারণে তখন গুলশান ও বনানী এলাকায় অনেক প্লটের মালিক হয়ে যান সেই সময়ে ঢাকায় বসবাসরত পশ্চিম পাকিস্তানের নাগরিকেরা- যেসব প্লটগুলো স্বাধীনতার পর ‘পরিত্যক্ত প্লট’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। এ কথাও প্রচলিত আছে যে জি এ মাদানী তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাদের তাঁর অফিসে ডেকে গুলশান ও বনানীতে তৈরি করা এসব প্লট বরাদ্দ করে দিতেন বা নিতে বাধ্য করতেন।
আবার তখন দেশে চলমান স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এবং অস্থিরতার মধে্য ঢাকার মানুষজন তৎকালীন নগরীর অনেক উত্তর দিকে গুলশান-বনানীতে প্লট বরাদ্দ লাভে খুব একটা আগ্রহীই ছিলেন না! অবশ্য প্রথম দিকে গুলশান-বনানীতে প্লটের সাইজও ছিল অনেক বড় ১-২-৩ বিঘা থেকে ১০ কাঠা পর্যন্ত), যার কারণেও তখন অনেকের পক্ষে এত বড় প্লট বরাদ্দ নেওয়া সহজ ছিল না। অতঃপর এসব এলাকায় প্লটের সাইজ ছোট করে (সাড়ে ৭ কাঠা, ৫ কাঠা ও সাড়ে ৩ কাঠা) গুলশান-বনানী এবং উত্তরায়ও প্লট বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা গৃহীত হয়। আর সে সময় এসব প্লটের জন্য অনেক আবেদনপত্র পাওয়া গেলে তা বরাদ্দের নিমিত্ত ১৯৬৯ সালে প্রথম একটি বরাদ্দ বিধিমালা প্রণীত হয়, যেটি ১৫ ফেব্রæয়ারি ১৯৭০ সালে অনুমোদিত ও গেজেট হয়। উল্লেখ্য, এর আগে শুরুতে কেউ আবেদন করলেই তাঁকে সরাসরি প্লট বরাদ্দ করে দেওয়া হতো।
নগর উন্নয়ন আইন-১৯৫৩ সালের আওতায় (১০২ ধারা মোতাবেক) ডিআইটির এই প্লট বিধিমালাটি প্রণীত হয় এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর যথাযথ নিয়ম অনুসরণে আবেদনকারীদের মধ্যে প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থা করতেন। বরাদ্দ বিধিমালার উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল কোনো প্রকল্প এলাকায় বরাদ্দযোগ্য প্লট চিহ্নিত করে তার সাইজ ও মূল্য স্থিরসহ ডিআইটির নির্ধারিত ফরমে আবেদন করার জন্য জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করা। অতঃপর প্রাপ্ত সব আবেদনপত্র একটি রেজিস্টারে যথাযথভাবে রেকর্ড করে তা বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক গঠিত একটি কমিটির কাছে পাঠানো হতো। কমিটির বিবেচনায় (উবংবৎারহম ধহফ এবহঁরহব-এর ভিত্তিতে) প্লট বরাদ্দ লাভের জন্য চ‚ড়ান্তদের বৈধ তালিকা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অনুমোদনক্রমে তা জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করার নিয়ম।
এই বিধিমালায় ডিআইটির আবাসিক প্লট বরাদ্দ লাভের জন্য আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তরা ছাড়া অন্য সব আবেদনকারীকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা এবং এর প্রভাবিত (ংঁনঁৎনং) বা মহাপরিকল্পনাধীন এলাকায় নিজ ও পরিবারের কারও নামে কোনো জমি বা ঘরবাড়ি নেই, এই মর্মে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের অঙ্গীকারনামা বা অ্যাফিডেভিট প্রদানেরও শর্ত রয়েছে। শুধু এই কারণেই তৎকালীন বা আজকের ঢাকা মহানগরীর অনেক পুরোনো বা বনেদি মানুষ তখন ডিআইটির আবাসিক প্লটের জন্য আবেদন করতে পারেননি। অর্থাৎ তাঁরা ডিআইটির প্লট বরাদ্দ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ডিআইটির কোনো আবাসিক প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। বরং সে সময় (স্বাধীনতার পরপর) বঙ্গবন্ধুর সরকার এই মর্মে এক নির্দেশ জারি করেন, গুলশান-বনানী ও উত্তরায় অবরাদ্দকৃত সব আবাসিক প্লটের সাইজ ছোট করে বেশির ভাগ মানুষকে প্লট বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য। সে সঙ্গে গুলশান-বনানীতে বরাদ্দকৃত পাকিস্তানিদের প্লটগুলো সরকারের পরিত্যক্ত তালিকায় নেওয়া হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নিহতের পর গুলশান-বনানীতে অবরাদ্দকৃত প্লটগুলো ছোট করার নির্দেশটি আর প্রতিপালিত হয়নি!! অপর দিকে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বৃহত্তর ঢাকা এলাকার কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি বিশদ সমীক্ষা হয়। উগঅওটউচ শীর্ষক ওই সমীক্ষাটি করেন যুক্তরাজে্যর ঝযধশষধহফ ্ ঈড়ী. সমীক্ষাটি চুড়ান্ত হওয়ার আগে জিয়াউর রহমানও নিহত হন। ওই সমীক্ষায় স্পষ্ট সুপারিশ ছিল যে ডিআইটিকে বিভাজিত করে ঢাকার নগর পরিকল্পনার জন্য উগচঅ এবং উন্নয়নের জন্য উগউঅ প্রতিষ্ঠার। কিন্তু আজ অবধি এই সুপারিশটি কার্যকর হয়নি!
এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম কয়েক বছর ধরে (১৯৮২-১৯৮৫ পর্যন্ত) ডিআইটির পুনর্গঠন নিয়ে নানা চেষ্টা চলে। তখন ডিআইটি, ঢাকা পৌরসভা ও ওয়াসাকে একীভূত করে একটি বৃহদাকার প্রতিষ্ঠান বানানোর কিছু চেষ্টা হয়। আবার তখন পরিত্যক্ত তালিকা থেকেও সরকারের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে কিছু প্লট ‘নিজস্ব’ লোকজনকে বরাদ্দ করে দেওয়া হয়। ওই অবস্থায় আকস্মিকভাবে ১৯৮৭ সালের ৩০ এপ্রিল ডিআইটির পরিচালনা পর্ষদকে অবলুপ্ত করে একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পাঁচ সদসে্যর ‘আমলাতান্ত্রিক রাজউক’ (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) গঠন করা হয়। তখন রাজউক পরিচালনা- পর্ষদে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই পাঁচজন সদস্য নিয়োগ ছাড়া আর কোনো পর্যায়ে কোনো জনবল নিয়োগ করা হয়নি! ওই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে আরও অনেক আমলা নিয়োজিত করা হতে থাকে, ফলে বর্তমানে রাজউক সম্পূর্ণভাবে একটি আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ লাভ করেছে!!
আসলে ডিআইটির এই পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যই ছিল এর প্লট বরাদ্দ নিয়ে!! জেনারেল এরশাদ তাঁর নিজস্ব কিছু মানুষকে প্লট বরাদ্দের জন্য ডিআইটির চেয়ারম্যান বরাবরে ওসব আবেদন সুপারিশ সহকারে পাঠাতে থাকেন। কিন্তু ডিআইটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ বিধি মোতাবেক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান ও নির্ধারিত আবেদন ফরমে আবেদন করা এবং অঙ্গীকারনামা প্রদান ব্যতিরেকে কাউকে কোনো প্লট বরাদ্দ করার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দেন। শোনা যায়, এতে জেনারেল এরশাদ ডিআইটির ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজকে ভেঙে দিয়ে এবং রাতারাতি নগর উন্নয়ন আইনে সংশোধনী এনে ‘আমলাতান্ত্রিক রাজউক’ গঠন করেন!! সে সঙ্গে রাজউকের প্লট বরাদ্দ বিধিমালা সংশোধন করেন।
এই প্রক্রিয়ায় তখন রাজউককে দফায় দফায় গুলশান-বনানী এলাকার লে-আউট প্ল্যানস সংশোধন করে নতুন প্লটের সৃষ্টি করতে হয়। গুলশান-বনানী লেকসহ কিছু পার্ক ও উন্মুক্ত পরিসর ধ্বংস করে প্লট বানাতে হয়। বারিধারা আবাসন প্রকল্পটি (‘আই’ ও ‘এইচ’ বøক) তখন করা হয়, যেখানে কাটাপ্রতি বরাদ্দ মূল্য ছিল ৫০ হাজার টাকা মাত্র। তখন গুলশান-বনানীতে পরিত্যক্ত তালিকা থেকেও কিছু প্লট বিভাজন করে বরাদ্দ করে দেওয়া হয়। অতঃপর তখন আরো প্লট দেওয়ার জন্য উত্তরা (দ্বিতীয় পর্ব) প্রকল্পটি গৃহীত হয়। সে সময় এই অবস্থা দেখে এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধাচারী রাজনৈতিক দল (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ে) ও জোটগুলো এই মর্মে ঘোষণা দেয় যে ভবিষ্যতে যে দল বা জোট ক্ষমতায় যাবে, তারা রাজউকের প্লট বরাদ্দ বিধিমালার এই সংশোধনীটি বাতিল করবে এবং যথাযথ নিয়মে প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, অদ্যাবধি এই সংশোধনীটি আর বাতিল করা হয়নি, বরং এই বিধির আওতায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় সরকারের আমলে প্লট বরাদ্দ করা অব্যাহত আছে।
১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর কুর্মিটোলা বিমানবন্দরসংলগ্ন জোয়ারসাহারা পুনর্বাসন এলাকায় ‘নিকুঞ্জ’ নামক একটি আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করে। যেহেতু এই এলাকাটি বিমান উড্ডয়নের ফ্যানেল জোনে অবস্থিত, তাই সেখানে ইমারতের উচ্চতা নির্ধারণসহ ছোট সাইজের (তিন কাঠা সমমাপের) প্লট বরাদ্দ করা হয়। অতঃপর এই ধারাবাহিকতায় নগরীর অন্যান্য জায়গায়ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য সংরক্ষিত বাড্ডা, জোয়ারসাহারা, বারিধারা ‘কে’ ও ‘জে’ বøক ইত্যাদি এলাকায় প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এসব এলাকায় এখন প্রায় ৯০% লোকজনই সমাজের সচ্ছল শ্রেণির! এর পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে রাজউকের সব প্লট হচ্ছে নগরীর পরিকল্পিত এলাকায় এবং এসব প্লটের মূল্য আশপাশের এলাকা থেকে অনেক বেশি। একদা গুলশান-বনানীতে কাঠাপ্রতি টাকা ৫০০ টাকা মূলে্য যেই প্লট বরাদ্দ করা হয়েছিল, এখন সেসব প্লটের কাঠাপ্রতি বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা করে। প্রধান সড়কের ধারে চার-পাঁচ কোটিতেও প্লট বেচাকেনা চলছে। আর বারিধারায় তো একেবারে অকল্পনীয়! বারিধারায় এখন প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের মূল্যও ৩০-৩৫ হাজার টাকা করে। শুধু গুলশান-বনানী-বারিধারা বা উত্তরা ও নিকুঞ্জ নয়, নতুন গৃহীত উত্তরা (তৃতীয় পর্ব), ঝিলমিল এবং পূর্বাচল প্রকল্প এলাকায়ও একই অবস্থা, যেখানে শুরুতে (২০০১-০৩ সালে) প্লট বরাদ্দ গ্রহণের জন্য মানুষ বা আবেদনপত্র পাওয়া যায়নি, এখন সেখানে (উন্নয়ন শেষ বা বসবাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আগে) কাঠাপ্রতি বাজারমূল্য কোটি টাকায় এবং অনেক ক্ষেত্রে আরও বেশি! এ জন্যই এখন দল-মতনির্বিশেষে এমনকি সমাজের দালাল-ব্রোকার তথা শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের নজরও রাজউকের প্লটের ওপর!! এমনও শোনা যায় যে কিছু শিল্পপতি-ব্যবসায়ী বা ‘নব্য পয়সাওয়ালারাও একেকজনে পূর্বাচলে অনেক প্লট কিনে রেখেছেন বা ক্রয় কিনে চলেছেন!!
এখানে উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর রাজধানী ঢাকার নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়নসহ অপরাপর বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভবিষ্যতে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের জন্য দেশের প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কিছু টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। তার মধ্যে নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিষয়ে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয় যে অবিলম্বে রাজউকের পুনর্গঠন এবং আলোচ্য প্লট বরাদ্দ উপবিধিটি বাতিলসহ রাজউক কর্তৃক ভবিষ্যতে যেন আর কোনো নতুন আবাসন প্রকল্প গ্রহণ না করা হয় এবং বিশেষ বিবেচনায়ও যেন কোনো প্লট বরাদ্দ করা না হয়। কিন্ত অদ্যাবধি এসব কোনো সুপারিশই কার্যকর করা হয়নি! বরং ১৯৯১ সালে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গিয়ে প্রথমে নিকুঞ্জ পুর্বাসন এলাকায় এবং অতঃপর বৃহদাকার আবাসন প্রকল্প অর্থাৎ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পটি গ্রহন করা হয়, যদিও তখনকার বিরোধী দল (আওয়ামী লীগ) এই প্রকল্পটি গ্রহণের বিরোধিতা করেছিল! যাক, ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক এই প্রকল্পটির অনুমোদনকালে এর প্রথম প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আমি এই জায়গায় ঢাকা শহরের বিকেন্দ্রীকরণের নিমিত্ত পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তখন আমার মতো একজন তরুণ প্রকৌশলীর কথা কে শোনে? অতঃপর বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় সরকারের আমলে পূর্বাচল প্রকল্প এলাকায় ইচ্ছেমতো দলীয় ও নিজস্ব লোকজনকে আবাসন ও অন্যান্য ক্যাটাগরির প্লট বরাদ্দ করা হতে থাকে। সঙ্গে তিন কাটা প্লটকে পাঁচ-দশ কাটায় রূপান্তর/পরিবর্তনের প্রতিযোগিতাও চলে!!
পূর্বাচল প্রকল্পে সংস্থানকৃত প্রায় আবাসিক প্লটই ২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি সরকারের মেয়াদে বরাদ্দ করা হয়ে যায়। অতঃপর বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকারের তিন মেয়াদে সেখানে উপর্যুপরি লে-আউট প্ল্যান সংশোধন করে প্লট বরাদ্দ প্রদান এখনো অব্যাহত আছে। শুধু তা-ই নয়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান ও অঙ্গীকারনামা ছাড়া দলীয় ও নিজস্ব লোকজনের মাধ্যমে প্লট বরাদ্দের নিমিত্তে ২০০৯-১০ সালে বরাদ্দ উপবিধির ১৩অ ধারাকে অধিকতর সংশোধন/সহজতর করে তথা রাজনৈতিক বিবেচনায় ‘যাকে খুশি তাকে প্লট বরাদ্দ করার’ ব্যবস্থা করা হয়। সর্বশেষ এই প্রক্রিয়াকে আরও সহজতর করার নিমিত্তে কিছুদিন আগে আরও একটি সংশোধিত বিধিমালার খসড়া তৈরি করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়! এভাবে আজ অবধি বিশেষ বিবেচনায় রাজউকের বিভিন্ন প্রকল্পে ১৩অ ধারায় মোট কতজনকে প্লট বরাদ্দ করা হয়েছে, তা অজ্ঞাত!!
এই প্রচলিত নিয়মে এখন যেকোনো কেউ কোনো দলের সংসদ সদস্য হলেই বা ক্ষমতাসীন সরকারের কাছে প্রভাবশালী প্রতীয়মান হলেই ঢাকায় তিনি রাজউকের একটি প্লট পাওয়ার যোগ্য! ভবিষ্যতে যখন যাঁরা সংসদ সদস্য হবেন বা ক্ষমতাসীন দলের কাছে কোনো বিবেচনায় উপযুক্ত প্রতীয়মান হবেন, তাঁরাও এই উপধারায় প্লট পাওয়ার যোগ্য হবেন অর্থাৎ সরকারকে তাঁদের ঢাকায় রাজউকের যেকোনো আবাসিক প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ করতে হবে! এ জন্য এখনো রাজউক কর্তৃপক্ষকে বারবার প্রায় প্রতিটা প্রকল্পের (যেমন গুলশান-বনানী, উত্তরা, পূর্বাচল ও ঝিলমিল) লে-আউট প্ল্যানকে সংশোধন আর সংশোধন করে অধিকতর নতুন প্লট তৈরি করতে হচ্ছে! তবে জানা মতে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় অতিরিক্ত প্লট বরাদ্দের কারণে সর্বোচ্চ আদালত পূর্বাচল প্রকল্পের পরিকল্পনার ওপর নাকি স্থগিতাদেশ জারি করেছেন!
অন্যদিকে গুলশান-বনানীতে পরিত্যক্ত তালিকাভুক্ত প্লটগুলো নিয়েও বরাবর একধরনের ‘রাজনীতি’ বা ‘খেলা’ চলে আসছে! জানা মতে, গুলশান ও বনানীতে ‘ক’ ও ‘খ’ ক্যাটাগরিতে প্রায় তিন-চার শর মতো ‘পরিত্যক্ত প্লট’ ছিল! আর পরিত্যক্ত প্লট হিসেবে এসব প্লটের মালিক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু এরশাদের শাসনামল থেকে বিভিন্ন অজুহাতে এসব প্লট থেকে বেশির ভাগই নানা ছুতোই অবমুক্ত করে দেওয়া হয়, যেগুলোর সঙ্গে সব সরকারের আমলের দলীয় কিছু উচ্চপর্যায়ের লোকজনের স্বার্থ জড়িত ছিল বলে প্রকাশ! তারপর কিছু প্লটে বিভিন্ন সময়ে সরকারিভাবে ভবন/অ্যাপার্টমেন্ট বানিয়ে সেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। আবার ২০২১ সালে অনুষ্ঠিতব্য ‘ন্যাম সম্মেলন’কে কেন্দ্র করে ফান্ড জোগাড় করার জন্যও অকশন করে কিছু প্লট বিক্রি করে দেওয়া হয়। এভাবে অবশিষ্ট যেসব প্লট এখনো আছে, তা নিয়ে ক্ষমতাসীন/দখলবাজদের ‘খেলা’ চলছে!!
এসব বিভিন্ন পরিপ্রক্ষিতে, বাস্তবে তথা সংগতকারণেও রাজউক এখন নগরীর পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের চেয়ে প্লট বরাদ্দ, পরিবর্তন ইত্যাদি কার্যক্রমে অধিক মাত্রায় ব্যস্ত! রাজউকের বেশির ভাগ কর্মচারীর লক্ষ্যও তা-ই, কীভাবে এস্টেট বা ভূসম্পত্তি বিভাগে পদায়ন হওয়া যায়! আর এসব কর্মচারীর দ্বারা এস্টেট শাখার প্লটের নথি চুরি বা লুকিয়ে রাখাও একটা নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে! অন্যদিকে হালে অনেক চেষ্টা করেও এখন রাজউক ঢাকায় আর কোনো নতুন আবাসন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারছে না বলেও জানা যায়! সব মিলে ডিআইটিকে তড়িঘড়ি পুনর্গঠন করে রাজউক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, বরাদ্দ বিধিমালা সংশোধন করে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ প্লট বরাদ্দ প্রদান করা, নগর পরিকল্পনা কার্যক্রমকে সংস্থার ব্যাক-বেঞ্চে রাখা, কর্তৃপক্ষের সদস্যপদে পেশাজীবী কেউ না থাকা, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেয়ে রাজউক নিজেই উন্নয়ন কার্যক্রমে জড়িত থাকা, নগরীর উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাজউকের ব্যর্থতা ইত্যাদি নিয়ে এখন নগরীর সর্বমহলে প্রচÐভাবে আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে চলছে!!
আর দৃশ্যত, দল-মতনির্বিশেষে দেশের সব রাজনৈতিক দলই এই সংস্থাটিকে তাদের স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থের জন্য চলমান নিয়মে অকর্ম করার জন্য বহাল রাখতে আগ্রহী। অর্থাৎ যখন যে দল ক্ষমতায় আসে বা আসবে তারা যেন রাজউকের মাধ্যমে তাদের সংসদ সদস্য, দলীয় ও নিজস্ব লোকজনকে প্লট বরাদ্দ করতে পারে! সতি্যকার অর্থে, কোনো দলই চায় না যে এই সংস্থাটি তার আগের অবস্থায় ফিরে যাক এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজ বা পেশাজীবী সংস্থার প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে চলুক, অথবা এই সংস্থাটি আইন অনুসারে চলুক! এমনকি ২০০৭-০৮ সালের সেনাশাসিত ‘১/১১’-এর সরকারের আমলেও এই বিষয়টি দেখা গেছে, যখন রাজউকের প্লট বরাদ্দ লাভ ও সাইজ পরিবর্তন নিয়ে সেনারাও ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন!!
সব মিলে রাজউকের প্লট এখন একটি ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়েছে! রাজউকের ভেতরে-বাইরে একটি গোষ্ঠী এখন সর্বক্ষণ এই কাজ বা ব্যবসায় জড়িত। নথি চুরি যাওয়া বা নিখোঁজও একটা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে! এই কাজের জন্য রাজউকের কিছু কর্মচারীর ‘নিজস্ব’ লোকজনও রয়েছেন, যাঁরা সকাল-সন্ধ্যা রাজউকে অফিস করেন। আর কিছু কর্মচারী তো প্লটের দালালি করে কোটিপতিও হয়ে গেছে! এই সংঘবদ্ধ কাজে বহিরাগতদেরও নিজস্ব দালাল-ব্রোকার, মিডিয়া এমনকি কারও কারও স্থায়ী অফিসও রয়েছে, যাঁদের কেউ কেউ এখন নিয়মিত অনলাইনে ‘রাজউকের প্লট’ বিক্রি বা বেচাকেনার বিজ্ঞপ্তিও দিয়ে যাচ্ছেন! এভাবে বর্তমানে এই কাজে ক্ষমতাসীন ও দলীয় অনেক প্রভাবশালী লোকজনও জড়িত, যাঁদের প্রায় সবাই তদবির করে বা ঊর্ধ্বতনের নাম ভাঙিয়ে বা ‘ম্যানেজ’ করে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন!
প্রসঙ্গক্রমে এখানে আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ্য, যা হলো ডিআইটি বা রাজউকের নগর পরিকল্পনা শাখা সম্পর্কিত। নগর পরিকল্পনা কার্যক্রম এই সংস্থাটির প্রধান দায়িত্ব হলেও অদ্যাবধি এই শাখাটি সংস্থার ব্যাক-বেঞ্চে পড়ে আছে! শুরু থেকে আশির দশক পর্যন্ত ডিআইটির নগর পরিকল্পনা শাখায় মাত্র এক বা দুজন নগর পরিকল্পনাবিদ ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে উগউচ (১৯৯৫-২০১৫) স্ট্রাকচার প্ল্যান প্রণয়নকালে রাজউকে মাত্র কয়েকজন নগর পরিকল্পনাবিদ ছিলেন, যাঁদের অনেকেই আবার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই অজ্ঞাত কারণে রাজউক ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।
অতঃপর এই শতাব্দীর শুরুতে কয়েকজন নগর পরিকল্পনাবিদ রাজউকে যোগদান করেন এবং তাঁদের মাধ্যমে বর্তমানে কোনো রকমে রাজউক চলছে। আর এসব তরুণ পরিকল্পনাবিদের মাধ্যমে মেট্রো ঢাকার ১ হাজার ৫২৮ বর্গমাইল এলাকার ওপর নতুন স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫) প্রণীত হয়। কিন্তু বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এই পরিকল্পনাটি অসামঞ্জস্য বিবেচিত হওয়ায় এখনো এটির অনুমোদন হয়নি। এই অবস্থায় অর্থাৎ স্ট্রাকচার প্ল্যান অনুমোদনের আগে অতি সম্প্রতি নতুন উঅচ (২০২২-২০৩৫) অনুমোদন ও গেজেট হয়ে যায়, যা ছিল সম্পূর্ণভাবে অপ্রত্যাশিত! আর এই নিয়ে বর্তমানে রাজউক একটা বিব্রতকর সময় পার করছে!! তবে একটা ভালো সংবাদ হলো, নতুন এই ড্যাপে ‘প্লটভিত্তিক’ উন্নয়নের চেয়ে ‘বøকভিত্তিক’ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা এর উন্নয়ন করবে, তা ড্যাপ প্রতিবেদনে অস্পষ্ট!!
আসলে উচিত ছিল রাজউকের নগর পরিকল্পনা শাখাকে যথেষ্ট শক্তিশালী করে পুনর্গঠন করার। রাজউককে উন্নয়ন আর প্লট বরাদ্দ করার অপসংস্কৃতি থেকে সরে এসে নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে অধিকতর মনোযোগ দেওয়ার। মেট্রো ঢাকার পরিকল্পিত উন্নয়নে নগর পরিকল্পনা শাখায় কমপক্ষে ১০০ জন নগর পরিকল্পনাবিদের (ঢাকার প্রতি ওয়ার্ডে এক বা দুজন করে) দরকার। সে সঙ্গে নগর পরিকল্পনা কার্যক্রমে সহযোগী হিসেবে পর্যাপ্তসংখ্যক স্থপতি, বিশেষায়িত প্রকৌশলী, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিদ, পরিবেশবিদ ইত্যাদির সংস্থান করার। তা ছাড়া দেশের প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি ও প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল বা ‘প্যানেল অব এক্সপার্টস’ গঠন করাও খুবই প্রয়োজন, যারা ঢাকার নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন।
প্রকৌশলী এমদাদুল ইসলাম
প্রকাশকা:ল বন্ধন ১৫৪ তম সংখ্যা, জুন ২০২৩