ট্রেনে কক্সবাজার স্বপ্নের যাত্রা

কক্সবাজার। শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশাল এক সমুদ্র; বালুকাময় সৈকত! দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রটি তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও বিশালতার জন্য বিখ্যাত। বিশে^র দীর্ঘতম সৈকতটি যেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষকে হাতছানি দেয় সারাক্ষণ। কিন্তু দেশের সর্বদক্ষিণের জনপদ হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের উত্তর-পশ্চিম জেলাগুলো থেকে বেশ দূরে এর অবস্থান। বাসে যাতায়াত যেমন সময়সাপেক্ষ, কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যয়বহুলও বটে। এবার ভ্রমণপিপাসুদের জন্য স্বপ্নের দ্বার খুলছে। উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ‘দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন’। কম খরচে বিলাসবহুল রেলে চড়ে পর্যটকেরা ভ্রমণ করতে পারবেন স্বপ্নের কক্সবাজার। এই রেল প্রকল্পটি চালু হলে পর্যটনশিল্পে ঘটবে নতুন বিপ্লব। শুধু রেল লাইনই নয়, কক্সবাজারে একটি অত্যাধুনিক আইকনিক রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই রেল প্রকল্প ও আইকনিক রেলস্টেশনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরছেন গোলাম মোর্শেদ

শুরুর কথা

২০১০ সালে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের নিকটবর্তী ঘুমঘুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। পর্যটননগরী কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করার পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। তবে রামু থেকে ঘুমঘুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ মিয়ানমারের অসম্মতির কারণে বন্ধ আছে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ (১০৩.৫) কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ দিয়েছে ১৩ হাজার ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বাকি ৪ হাজার ৯১৯ কোটি ৭ লাখ টাকা অর্থায়ন হয়েছে সরকারি তহবিল থেকে।

প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে কাজটি করছে। প্রথমে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ঠিক করা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। পরে দুই বছর সময় বাড়িয়ে মেয়াদ হয় ২০২৪ সালের জুন। কিন্তু প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সরকারের মেয়াদকাল পূর্ণ হওয়ার আগেই ট্রেন চালু করতে চায় প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সর্বশেষ (আগস্ট-২০২৩) তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের অগ্রগতি (লট-১) ৮৭ শতাংশ এবং (লট-২) ৯৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে ৮৯ শতাংশ। যদিও এই রেলরুট প্রকল্পটি সেপ্টেম্বর মাসেই উদ্বোধনের পরিকল্পনা ছিল প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের কিন্তু ব্যাপক পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় রেললাইনের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এই রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনে চলাচল শুরু হবে। আর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে উদ্বোধন হবে স্বপ্নের এ রেললাইনের। তবে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে লাগবে আরও কয়েক মাস। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে আগ্রহী যাত্রীদের। 

রেল প্রকল্পের যত সুবিধা

এই রেললাইনের মাধ্যমে দেশের ৪৫তম জেলা হিসেবে রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে যাচ্ছে কক্সবাজার। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত আগে থেকেই রেললাইন আছে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথের কাজ চলছে। প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ঢাকা থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার, উভয় রুটে ২টি ও পরে ১০টি করে ট্রেন ডুয়েল গেজ ট্র্যাকে চলবে। ঢাকা থেকে মাত্র সাড়ে ৭ ঘণ্টায় এবং চট্টগ্রাম থেকে আড়াই ঘণ্টায় ট্রেনে করে পৌঁছানো যাবে কক্সবাজারে। প্রতিদিন এক লাখেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন। এ ছাড়া মাছ, শুঁটকি, লবণ ও অন্যান্য পণ্য কক্সবাজার থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহনের জন্য থাকবে বিশেষ রেফ্রিজারেটেড ওয়াগন সার্ভিস। 

সবচেয়ে বড় ব্যাপার, রেল চালু হলে কক্সবাজারে উন্মোচিত হবে পর্যটনের নতুন দিগন্ত। কম সময়ে, কম খরচে আরামদায়কভাবে যাতায়াত করতে পারবেন পর্যটক ও সাধারণ যাত্রীরা। সহজ ও দ্রæত যাতায়াতব্যবস্থা হওয়ায় প্রচুর পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আগ্রহী হবে। এই রেলপথে নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং স্বাভাবিক চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য থাকছে বিশেষ সুবিধা। তা ছাড়া এ রেলপথ চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও ব্যাপক উন্নয়ন হবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে এসব জনপদের মানুষের কর্মসংস্থানের। যোগাযোগব্যবস্থা ও শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের অন্তত আটটি উপজেলার যাতায়াতব্যবস্থা সহজ হওয়ার পাশাপাশি এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করবে। নয়টি স্টেশনকে ঘিরেও কর্মচঞ্চলতা ও অর্থনৈতিক কর্মকাÐ বাড়বে, যা দেশের অর্থনীতির গতি বাড়বে বহুগুণে।

কক্সবাজারে আইকনিক রেলস্টেশন 

রেল প্রকল্পের পাশাপাশি কক্সবাজারে নির্মিত হচ্ছে অনন্য স্থাপত্যশৈলী ও দৃষ্টিনন্দন এক আইকনিক রেলস্টেশন। এর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। রেলস্টেশনের ডিজাইন করা হয়েছে ঝিনুকের আদলে। যেন বিশাল এক ঝিনুক! স্টেশন ভবনের ঠিক সামনেই গড়ে তোলা হয়েছে একটি ঝিনুকের ভাস্কর্য; ঝিনুকের পেটে মুক্ত দানা! তার চারপাশে ফোয়ারা। স্টেশনটি ডিজাইন ও নির্মাণ করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করেই। দেখে মনে হবে উন্নত বিশ্বের কোনো আধুনিক স্টেশন। সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে চান্দেরপাড়া এলাকায় ২৯ একর জায়গাজুড়ে এই স্টেশন। মূল স্টেশন ভবনের আয়তন ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুট। স্টেশন ভবনটি ছয়তলাবিশিষ্ট। এর চারদিকে বসানো হয়েছে কাচ। ক্যানোপি আদলের ছাউনিটা পুরো কাঠামোকে ঢেকে রেখেছে। স্টেশনের ওপরের ছাদ রাখা হয়েছে খোলা। এতে থাকবে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। দিনের বেলা বাড়তি আলো ব্যবহার করতে হবে না এই রেলস্টেশনে। ফলে সব সময় ভবনটি সহনীয় তাপমাত্রায় থাকবে। স্টেশনটির ছাদও ঝিনুক আকৃতির। নির্মাণাধীন আইকনিক ভবন ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১২ মিটার প্রস্থের তিনটি প্ল্যাটফর্ম। এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন ৪ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবেন। এ ছাড়া স্টেশনসংলগ্ন একটি রেলওয়ের আবাসিক এলাকাও গড়ে তোলা হয়েছে। রেলস্টেশনটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২২৫ কোটি টাকা। 

নান্দনিক এই স্টেশনে থাকছে পর্যটকদের জন্য নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা, যা বাংলাদেশে প্রথম। প্রথমবারের মতো কক্সবাজারে আসা পর্যটকেরা পাবেন ভ্রমণে অন্য রকম এক স্বাদ। সমুদ্র দর্শনে এসে প্রথম দর্শনেই সামুদ্রিক একটা আবহ পাওয়া যাবে গোটা স্টেশনে। থাকছে আবাসিক হোটেল, ক্যানটিন, শপিং মল, গাড়ি পার্কিংসহ নানা সুবিধা। পর্যটকেরা যেন কক্সবাজারে দিনে এসে ঘুরে আবার ফিরে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। কক্সবাজারে পর্যটকদের বড় অংশ আসেন এক দিনের জন্য। এ সময় তাঁরা নিজেদের মালপত্র রাখার নিরাপদ জায়গা পান না। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে স্টেশনে রাখা হচ্ছে লাগেজ ও লকার সিস্টেম। লকারে লাগেজ রেখে সারা দিন সমুদ্রসৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। এ ছাড়া থাকছে সাধারণ ও ভিআইপিদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ড্রপ এরিয়া; বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস এবং থ্রি হুইলারের জন্য আলাদা পার্কিং এরিয়া; থাকছে ফার্মেসি, এটিএম বুথ, পোস্ট অফিস, টুরিস্ট ইনফরমেশন বুথ, লিফট, চলন্ত সিঁড়িসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবাকেন্দ্র। দৃষ্টিনন্দন এই রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণের কাজ ৯০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে।

অন্যান্য রেলস্টেশন

আইকনিক রেলস্টেশন ছাড়াও রেললাইন প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার থেকে দোহাজারী পর্যন্ত আরও ৮টি রেলস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব স্টেশনে থাকবে রিলে ব্যাটারি, জেনারেটর রুম, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা এবং সৌরবিদ্যুতের মতো জ্বালানিসাশ্রয়ী সুবিধা। স্টেশনগুলো হচ্ছে- 

রামু

ইসলামাবাদ

ডুলাহাজারা

চকরিয়া

হারবাং

লোহাগাড়া

সাতকানিয়া ও

দোহাজারী

প্রকল্প নির্মাণে যত চ্যালেঞ্জ

অগ্রাধিকারভিত্তিক হওয়ায় রেল কর্তৃপক্ষের জন্য এই প্রকল্পটি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। নির্মাণকাজ শুরু হলে প্রথম ধাক্কাটি আসে করোনা মহামারির সময়ে। এ ছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এই রেললাইন নির্মাণে নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। নির্মাণে ব্যবহৃত প্রায় সব উপকরণের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি আমদানি করা মালামালের সরবরাহও কমেছে। তা সত্তে¡ও সেসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। বিদেশ থেকে যেসব উপকরণ আনতে হয়, তা-ও মজুত আছে। এ রেললাইনে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি বড় রেল সেতু। এ ছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে ৬টি বিশেষ সেতু, ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু, ২২৩টি কালভার্ট। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় তৈরি হচ্ছে একটি ফ্লাইওভার, রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং। হাতি ও অন্যান্য বন্য প্রাণীর চলাচলে ৫০ মিটারের একটি ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে। তা ছাড়া পাহাড়ি ঢল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্য পরিবেশে নানা প্রতিক‚লতার মধ্যে কাজ করতে হয়েছে। উদ্বোধনের আগে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় রেললাইনের প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এটা মেরামত করতেও বেশ সময়ক্ষেপণ হয়।  

তবে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে উঠেছিল ঝুঁকিপূর্ণ কালুরঘাট সেতু। রেল কর্তৃপক্ষ সেতুটি ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারকাজ হাতে নেয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পরামর্শক দলের সুপারিশ অনুযায়ী চলছে সংস্কারকাজ। এত দিন সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারি রেললাইনে ১০ টন ভারী ইঞ্জিন চলাচল করত। সেতু পার হওয়ার সময় গতি থাকত সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। তবে কক্সবাজারগামী ইঞ্জিনের ওজন হবে ১২-১৫ টন। ট্রেনের গতি হবে ৬০-৮০ কিলোমিটার। ট্রেন লাইন চালু হওয়ার পর সেতুর অবশিষ্ট কাজ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। সেতুটির আধুনিকায়নও করা হবে। 

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল ও উদ্বোধনের পরিকল্পনা ছিল প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু আগস্ট মাসের শুরুতে ভারী বর্ষণ ও ব্যাপক পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় নির্মাণাধীন রেললাইনের বেশ কিছু অংশ বেঁকে যায়; বন্যার পানিতে ভেসে যায় রেললাইনের পাথর ও মাটি। এতে উঁচু-নিচু হয়ে পড়ে রেললাইন। ¯িøপারের মাঝে পাথর সরে গিয়ে তৈরি হয় বড় বড় গর্ত। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাতকানিয়ার তেমুহনী এলাকায় আধা কিলোমিটারজুড়ে। এতে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়া নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। রেলে ঢাকা-কক্সবাজার যাওয়ার আশায় অপেক্ষায় থাকা অনেকেই নতুন রেললাইনের ভগ্নদশায় হন হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলে সমালোচনা। প্রশ্ন ওঠে, হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের এ মেগা প্রকল্প কতটা জলবায়ুবান্ধব, টেকসই আর পরিকল্পিত।

এলাকাবাসীর দাবি রেললাইনের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ আটকে যাওয়ায় তাদের বাড়িঘর ডুবে গেছে; নষ্ট হয়েছে ফসল। এখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। ১৯৯৭ ও ২০১৯ সালেও এই জনপদে বন্যা হয়েছিল। তবে এতটা ভয়াবহ ছিল না। এবার অন্তত তিন-চার হাত পানি বেশি হয়েছে। ঘরের চালে পর্যন্ত উঠেছে পানি। এলাকাবাসী মনে করেন, যদি রেললাইনে পর্যাপ্ত কালভার্ট ও সেতু নির্মাণ করা হতো, তাহলে এত ক্ষতি হতো না। কয়েকটি অতিরিক্ত কালভার্টের জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছিল।

তবে এ ক্ষতিকে নগণ্য হিসেবে দেখছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ক্ষতির কারণ হিসেবে রেকর্ড বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলকেই দায়ী করছেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক পরামর্শকেরা বিগত ১০০ বছরের বন্যা, জলোচ্ছ¡াস ও বৃষ্টির হিসাব করেই এ প্রকল্পের ডিজাইন করেছেন। সম্ভাব্যতা যাচাই থেকে শুরু করে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ১০০ বছরের বন্যার বিষয়টিও হিসাবে রাখা হয়েছিল। যে অংশে রেললাইন ডুবেছে, সেখানে প্রায় ২০ ফুট উঁচুতে লাইন করা হয়। কিন্তু এবার সব রেকর্ড ভেঙে দুই দিনে এক মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। পর্যাপ্ত সেতু ও কালভার্ট তৈরি হয়েছে। সাড়ে চার কিলোমিটার জায়গা পানি নিষ্কাশনের জন্য ওপেন রাখা হয়েছে। তা ছাড়া রেললাইন বেঁকে যায়নি বরং যেসব জায়গায় এখনো জয়েনিং ও ওয়েল্ডিংয়ের কাজ শেষ হয়নি, সেখানে কিছু জায়গায় ডিসপ্লেস হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে দ্রæততম সময়ের মধ্যেই রেল চলাচল সম্ভব হবে। আর এই ব্যয়ের পুরোটাই বহন করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ভাবনা

রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতির জন্য কেবল অতিবৃষ্টিকে দায়ী করলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। ক্ষতিকে সামান্য দাবি করা হলেও এটিকে মোটেও খাটো করে দেখতে চান না বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের বৃষ্টিপাত এখন আর অস্বাভাবিক নয়। তাহলে এই যে রেললাইনটা বানানো হয়েছে, যেটা উত্তর-দক্ষিণে প্রলম্বিত আর পানির ঢল নেমে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এসে সাগরে যাবে। এটা ডিজাইন করার সময় এই বিষয়টা বিবেচনা করার প্রয়োজন ছিল। রেললাইন প্রকল্প পরিকল্পনার সময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়নি। কম সময়ে অধিক বৃষ্টিপাতের বিষয়টি নজরে রাখা হয়নি। রেললাইনের ক্ষতি এবং বন্যা ও জলাবদ্ধতার ক্ষয়ক্ষতির কারণে প্রচুর ওপেনিং রাখার দরকার ছিল, যাতে পানি বেরিয়ে যেতে পারে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ঠিকমতো রাখা হয়নি। তাই যেটা ঘটে গেছে সেটা কেন ঘটেছে, সে হিসাব-নিকাশ করা হোক। জাতীয় কমিটি হওয়া উচিত। আমাদের দেশের কালচার হচ্ছে ভাঙলে তা আবার পুনর্র্নির্মাণ করা। কেন ভেঙেছে এই কারণটা খুঁজে বের করে ভবিষ্যতে যাতে এই ভুলের মধ্যে না পড়ি, সেটা ঠিক উচিত। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. মো. শামসুল হক বলেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে ছোট ছোট কালভার্ট রাখা হয়েছে। কিন্তু তা পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। এই অঞ্চল দিয়ে পাহাড়ি এলাকার ঢল দ্রæত নেমে এসে সাগরে গিয়ে পড়ে। পানি নিষ্কাশনের পথে রেললাইনের মাধ্যমে বাঁধ দেওয়ায় পানি নামতে পারেনি। যেহেতু রেললাইন হয়ে গেছে, তাতে সংশোধনের তেমন কোনো সুযোগ নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন এ ধরনের বৃষ্টি আরও হবে। তখন রেললাইন আবার ডুববে। এতে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ প্রশ্ন তুলবেন রেলওয়ে পরিকল্পিতভাবে রেললাইন নির্মাণ করেনি।

নদী ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অন্য অঞ্চলে প্রাকৃতিক পানির প্রবাহ উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী হয়ে থাকে। কিন্তু এই অঞ্চলের পানির ¯্রােত ও পাহাড়ি ঢল পূর্ব থেকে পশ্চিমমুখী। আর রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী। এতে নির্মীয়মাণ নতুন রেললাইন পানির ¯্রােতের মুখোমুখি হয়ে চাপ নিতে ব্যর্থ হয়। এর মাধ্যমে যথাযথ পরিকল্পনার অভাব এবং প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে যে দুর্বলতা ছিল, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ফলে এর ভিত্তিতে প্রকল্পের যে নকশা করা হয়েছে, তাও ত্রæটিপূর্ণ হয়েছে। পানির গতিপথের আড়াআড়ি রেলপথ করা হলেও যে সংখ্যায় ও আকারের ওয়াটারপাস বা পানিপ্রবাহের পথ করার দরকার ছিল তা করা হয়নি। ১০০ বছরের বন্যার তথ্য পর্যালোচনা করে এই প্রকল্প পরিকল্পনা করা হয়েছে বলা হলেও এই ক্ষয়ক্ষতি মূলত পর্যালোচনার অসারত্বকে সামনে নিয়ে এসেছে। এবারের অভিজ্ঞতা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনটি সংস্কার বা মেরামতের স্থায়ী সমাধানে নজর দেওয়ার পরামর্শ তাঁদের।

রেললাইন নির্মাণে পরিবেশের যত ক্ষতি

এশিয়ান হাতির অন্যতম আবাসস্থল এবং প্রাকৃতিক প্রজননকেন্দ্র লোহাগাড়ার চুনতি অভয়ারণ্য; শতবর্ষী মা গর্জনগাছসমৃদ্ধ বিশাল বনাঞ্চল। মোট হাতির ৫৭ শতাংশের দেখা মেলে এ বনে।  চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চকরিয়া ও বাঁশখালী এলাকায় ১৯ হাজার ১৭৭ একর জমি নিয়ে চুনতি সংরক্ষিত অভয়ারণ্য এলাকা। ২০১২ সালে বন ও পরিবেশরক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় জাতিসংঘের ‘ইকুয়েটর পুরস্কার’ লাভ করে। সংরক্ষিত এ বনে বর্তমানে ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫৩ প্রজাতির পাখি, ৭ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১০৭ প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। সেই অভয়ারণ্যের বুক চিরে (কোর জোন) নির্মাণ করা হয়েছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ রেলপথ চুনতি অভয়ারণ্যের ভেতর মিরিখিল সুফিনগর এলাকা থেকে হারবাং পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং ফাঁসিয়াখালী বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য ও মেধাকচ্ছপিয়া ন্যাশনাল পার্কের ভেতর দিয়ে ১৭ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। ওই রেললাইনের ২১টি স্থানে রয়েছে হাতির বসতি ও চলাচলের পথ। এই প্রায় ২৭ কিলোমিটার বন্য হাতির জন্য মরণফাঁদে পরিণত হবে। এ ছাড়া কাটা পড়বে বনটির শতবর্ষী ৫০টি গর্জনগাছসহ লক্ষাধিক গাছ। রেললাইন তৈরির জন্য কাটা হয়েছে অভয়ারণ্যের অসংখ্য পাহাড়। ব্যবসার জন্য পাল্লা দিয়ে নির্বিচারে পাহাড়-টিলা কেটেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। পাহাড়-টিলার মাটি ও গাছ বিক্রি করেছেন বিভিন্ন চক্র। মাটি ও গাছ পরিবহনের জন্য পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তাও। ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে অভয়ারণ্যের বন্য প্রাণী। 

তবে প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের দাবি, হাতির চলাচলের জন্য পরিবেশবান্ধব ওভারপাস এবং বন্য প্রাণীর জন্য কিছু জলাধার তৈরি করা হচ্ছে। রেললাইন স্থাপন করতে গিয়ে কাটা পড়া কয়েক লাখ গাছের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রেলরুটের দুই পাশে রোপণ করা হচ্ছে ৬ লাখ বনজ, ফলদ, ঔষধি গাছ। ইতিমধ্যে কক্সবাজার ও চকরিয়ায় বিপুলসংখ্যক গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। 

পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন ও বিশেষজ্ঞের মতে, পৃথিবীর কোনো দেশে সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে রেললাইন নিয়ে যাওয়ার নজির নেই। ভারতে বনের ভেতর দিয়ে সামান্য পরিমাণ রেললাইন হলেও তাতে দুর্ঘটনায় হাতি মারা যাওয়ার নজির আছে। একটা অভয়ারণ্যের কোর জোনের (প্রধান অংশ) ভেতর দিয়ে যেখানে মানুষের প্রবেশ নিষেধ, সেখানে রেলপথ নিয়ে যাওয়া কোনোমতেই উচিত নয়। এত গাছ কেটে রেলপথ তৈরিতে অভয়ারণ্যের সুদূরপ্রসারী ক্ষতি হবে। হুমকিতে পড়বে এ অভয়ারণ্যের বিশাল জীববৈচিত্র্য। কাটা পড়া গাছের মধ্যে যদি কোনো বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী কিংবা বিপন্ন উদ্ভিদ থাকে, তাহলে ওই প্রজাতিটির সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে বিলুপ্তির আশঙ্কা তৈরি হবে। বৃক্ষনিধন, শব্দদূষণ ও ভীতির কারণে হারিয়ে যেতে পারে শতবর্ষী গাছে বাস করা বিলুপ্তপ্রায় বহু পাখিসহ নানা বন্য প্রাণী। অথচ রেলপথ নির্মাণের আগে তাঁদের পরামর্শ ছিল, এ অভয়ারণ্যকে রেহাই দিয়ে চুনতি বাজার থেকে হারবাং পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পূর্বদিকে রেলপথ তৈরি। তাতে অন্তত বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা পেত।

রেল চলাচলের প্রস্তাবিত সময়সূচি 

পূর্বাঞ্চল রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনের জন্য দুটি সময়সূচি প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সময়সূচি নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত সূচিগুলো হচ্ছে-

প্রস্তাবনা-১: ঢাকা থেকে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। ট্রেনটি কক্সবাজার পৌঁছাবে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে। ফিরতি পথে কক্সবাজার থেকে সকাল ১০টায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে।

প্রস্তাবনা-২: ঢাকা থেকে ট্রেনটি রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে কক্সবাজারে পৌঁছাবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে। ফিরতি পথে একই ট্রেন কক্সবাজার থেকে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাবে রাত ১০টায়।  

সম্ভাব্য ভাড়ার হার

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগ সূত্রে, প্রাথমিক হিসাবে, ট্রেনে মানভেদে প্রতি টিকিটের দাম ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পড়বে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার ৩৯৭.৬ কিলোমিটার দূরত্বে যেতে বর্তমানে নন-এসি বাসে প্রতি সিটের খরচ ১ হাজার ১০০ টাকা ঢাকা-কক্সবাজার এবং এসি বাসে তা ২ হাজার টাকার আশপাশে। আর বিমানে যেতে ৫-১০ হাজার টাকা গুনতে হয় যাত্রীদের। ট্রেনের এসি কোচে বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে লাগে ১ হাজার ১৭৯ টাকা এবং নন-এসি কোচে ৩৪৫ টাকা। আবার একজন যাত্রীকে চট্টগ্রাম থেকে এসি বাসে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে যেতে খরচ হয় ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। নন-এসি বাসে এই খরচ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। তবে এই দূরত্বে ট্রেনের প্রস্তাবিত ভাড়া নন-এসি কোচে ১০০ টাকা এবং এসি কোচে ৪০০ টাকা। 

একনজরে রেল প্রকল্প

প্রকল্পের নাম: সাউথ এশিয়ান সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন চিটাগং (এসএএসইসি)    কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্ট ফেজ-১

রেলপথের দৈর্ঘ্য: ১০৩.৫ কি.মি

রেলপথের ধরন: সিঙ্গেল লাইন ডুয়াল গেজ

রেলস্টেশন: ৯টি

রেলপথ বাঁধ নির্মাণ: ১০.০২ মিলিয়ন ঘন মিটার

অন্যান্য অবকাঠামো: ৬ বিশেষ সেতু, ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু, ২২৩টি কালভার্ট

ভূমি অধিগ্রহণ: প্রায় ১৪০০ একর 

হাইওয়ে ক্রসিং: ২টি

হাতিসহ বন্য প্রাণী চলাচলব্যবস্থা: ১টি ওভারপাস ও ৩টি আন্ডারপাস

ঢাকা-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই রেলপথ চালু হলে পর্যটনের নতুন দিগন্ত সূচিত হবে। কম খরচে বিলাসবহুল রেলে চড়ে পর্যটকেরা বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত দেখার সুযোগ পাবেন।

প্রকাশকাল: বন্ধন ১৫৮ তম সংখ্যা, অক্টোবর ২০২৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top