নানা রকম দূষণে বিষিয়ে উঠেছে আধুনিক নাগরিক জীবন। শব্দ, বায়ু, পানিসহ হরেক রকম দূষণের সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে আলোক দূষণ। কখনো শুনেছেন আলোও দূষিত হয়? হয়তো হয় না। তবুও আধুনিক যান্ত্রিক এমনটিই হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। ছোটবেলায় তারাভরা আকাশ দেখেছি কিন্তু ইদানীং তা দেখতে পাই না। নতুন প্রজন্মের কাছে এ যেন এক রূপকথারই গল্প। বাড়ন্ত আলোর দূষণে আমরা ইতিমধ্যেই ডুবে গেছি। এই দূষণ শুধু মানবজীবনেই নয়, প্রাণীর জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। আলোক দূষণের নানা ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেছেন
সারোয়ার আলম
আলোক দূষণ কী
কোনো স্থানে প্রাকৃতিক আলো ছাড়া অতিরিক্ত যেকোনো কৃত্রিম আলোকসজ্জাই আলোক দূষণ। ইন্টারন্যাশনাল ডার্ক-স্কাই অ্যাসোসিয়েশনের মতে, কৃত্রিম আলোর অনুপযুক্ত বা অতিরিক্ত ব্যবহারই আলোক দূষণ। খুব সামান্য আলো হয়তো পরিবেশের তেমন ক্ষতি করে না, কিন্তু রাস্তাঘাটের উজ্জ্বল ল্যাম্পপোস্ট, কোনো বহুতল ভবনের বা বিশেষ স্থানের আলোকসজ্জা ইত্যাদি পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আর একেই আলোক দূষণ বলে। ব্যাপক অর্থে বললে দৃশ্যমান অতিরিক্ত আলোই মূলত আলোক দূষণের মূল উৎস। আমাদের জীবনের সব ক্ষেত্রেই আলোর উপস্থিতি রয়েছে, তবে যে অতিরিক্ত আলো চোখে পড়ে তা থেকে নির্গত তাপ পরিবেশকে উত্তপ্ত করে, মহাকাশের মিল্কিওয়ের ওপরও ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। সে কারণেই অতিরিক্ত আলোর উপস্থিতিকেই মূলত আলোক দূষণ বলে বিবেচনা করা হয়।
নতুন নির্মাণ প্রকল্প, নগরায়ণ, উৎসব আয়োজনে প্রচুর আলোর উপস্থিতি থাকে। এতে আলোক দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যদিও এই ধরনের দূষণ সারা দিন থাকতে পারে। তবে রাতের অন্ধকারে এর প্রভাব বৃদ্ধি পায়। অনুমান করা হয়, বিশ্বের ৮৩ শতাংশ মানুষ আলোক দূষিত আকাশের নিচে বাস করে এবং ২৩ শতাংশ ভূখÐ স্কাইগেøা দ্বারা প্রভাবিত হয়। কৃত্রিম আলোকসজ্জা প্রভাবিত এলাকায় আলোক দূষণ বাড়তে থাকে। নগরায়ণের একটি প্রধান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে, স্বাস্থ্যদূষণ, বাস্তুতন্ত্র ব্যাহত এবং নান্দনিক পরিবেশ নষ্ট করার জন্য আলোক দূষণ অনেকাংশেই দায়ী।
আলোক দূষণের ফলে যেসব ক্ষতি হয়
আলোক দূষণ শুধু পরিবেশেরই ক্ষতি করে না, জীববৈচিত্র্যেও নানা জটিলতা ঘটাতেও ভূমিকা রাখে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির অপেরা হাউসের ওপরের আকাশে প্রায়ই কৃত্রিম উজ্জ্বল আলোয় প্রলুব্ধ হয়ে অনেক পাখি উড়ে চলে আসে। মূলত এগুলো দিগ্্ভ্রান্ত পাখি। উজ্জ্বল আলোর ঝলকানিতে পাখিগুলো রাতকে দিন মনে করে। দিগ্্ভ্রান্ত হয়ে অনেক ওড়াউড়ির পর ক্লান্ত পাখিগুলো আছড়ে পড়ে অপেরা হাউসের বিশালাকার বহিরাবরণের ওপর। তবে এমন ঘটনা শুধু যে এখানেই ঘটে তা কিন্তু নয়। আবার শুধু যে পাখিদেরই এমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, তাও নয়। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে আলোক দূষণের অহরহ এমন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, যার ভুক্তভোগী প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান।
আমাদের জানা উচিত আলোক দূষণ কেন হয়। আলোক দূষণ মূলত কৃত্রিম আলোর জন্য হয়ে থাকে। অথবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত আলোর কারণেও হতে পারে। কৃত্রিম আলো বলতে প্রাকৃতিক আলো (চাঁদ ও সূর্যের আলো) ব্যতীত যেকোনো আলোকেই বোঝায়। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক বাতি আমাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু তা আবিষ্কারের পর থেকে ব্যবহার দিন দিন বেড়েছে ব্যাপক হারে। নিত্য ব্যবহৃত নানা ওয়াটের বাল্ব, টর্চলাইট, স্ট্রিটল্যাম্প, বিল বোর্ড বা গাড়ির হেডলাইট থেকে আলোক দূষণ বাড়ছে। তা ছাড়া কেরোসিন ও ডিজেলচালিত বিভিন্ন কৃত্রিম উৎস তো আছেই। কৃত্রিম আলোর উৎস যেমন বিভিন্ন রকম, একইভাবে আলোক দূষণের প্রকারভেদও ভিন্ন ভিন্ন।
বিভিন্ন প্রকার আলোক দূষণ এবং কারণ
অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় আলো বিভিন্নভাবে আমাদের পরিবেশ ও প্রকৃতির ক্ষতি করে। এর ক্ষতিকর প্রভাব মানব বসতির ওপর মারাত্মক। আলোর বিভিন্ন রকমের দূষণের মধ্যে তিন ধরনের দূষণ সবচেয়ে বেশি পরিচিত এবং প্রভাব বিস্তারকারী।
অতিরিক্ত উজ্জ্বলতা: এই আলোক দূষণটি ঘটে মূলত কৃত্রিম আলোক উৎসের অপব্যবহারের ফলে। অপ্রয়োজনীয় এবং অতিরিক্ত কৃত্রিম আলো কোনো স্থানে অস্বাভাবিক উজ্জ্বলতা তৈরি করতে পারে। রাস্তাঘাটে ব্যবহৃত ল্যাম্পপোস্ট বা ফ্লাডলাইট, অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা ইত্যাদি কারণে একটি স্থানের উজ্জ্বলতা বেড়ে গিয়ে ওই স্থানের স্বাভাবিক আলোর ভারসাম্য নষ্ট করে। যুক্তরাষ্ট্রের টাইমস স্কয়ার, সিডনির অপেরা হাউস এমন কৃত্রিম আলোর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
আলোক ঝলকানি: এটি হলো কৃত্রিম আলোর অতিরিক্ত ঝলক, যা স্বাভাবিকভাবে চোখে দেখলে অস্বস্তির কারণ হতে পারে। অন্ধকার রাস্তায় গাড়ির হেডলাইটের আলো, নষ্ট হয়ে যাওয়া টিউব লাইটের আলো, মঞ্চে বিভিন্ন রঙের আলোর ঝলকানি ইত্যাদি এই প্রকার আলোর দূষণের উদাহরণ।
আলোক অনুপ্রবেশ: অপ্রয়োজনেও অনেক সময় আমাদের কাছাকাছি আলোর উপস্থিতি দেখা যায়। রাস্তার পাশে যাদের বাড়িঘর, তাদের ঘরে অনেক সময় রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের আলো প্রবেশ করে অনিচ্ছা সত্তে¡ও। এ ধরনের আলোর অনুপ্রবেশের ফলে ঘরের পরিবেশ যেভাবে নষ্ট হয়ন তা-ই হলো আলোক অনুপ্রবেশ।
আলোক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব
আলোক দূষণ তাৎক্ষণিক কোনো ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার না করলেও কখনো কখনো এ দূষণ মারাত্মকও হতে পারে। পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের ওপর আলো দূষণের সরাসরি প্রভাব রয়েছে। নেচার স্টাডিজ সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর তথ্য অনুযায়ী যেসব ক্ষেত্রে আলোক দূষণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, তা এক ঝলক দেখে নিই চলুন-
আলো দূষণ মানুষের ঘুমের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। আমাদের দেহে মেলাটোনিন নামক একটি হরমোন রয়েছে, যা সরাসরি ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। রাতের আঁধারে দেহে এই হরমোনটি নিঃসৃত হয়, যা দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও প্রদাহ কমিয়ে দেয়। পর্যাপ্ত পরিমাণের ঘুমের জন্য মেলাটোনিন নিঃসরণ প্রয়োজন। কিন্তু আলোদূষণে মেলাটোনিন নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটে। রাতের বেলায় আমরা যে কৃত্রিম আলো ব্যবহার করি, বিশেষ করে নীল আলোর এলইডি লাইটের উপস্থিতিতে মেলাটোনিন নিঃসরণ কমে যায়। ফলে ধীরে ধীরে আমাদের ঘুমের সমস্যা শুরু হতে থাকে। অনিদ্রা, মাথাব্যথা, অবসাদ, চিন্তা, মানসিক অশান্তি প্রভৃতি সমস্যাগুলো ক্রমান্বয়ে দেখা দিতে শুরু করে।
বর্তমানে স্তনক্যানসার নারীদের একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাধি। এর একটি অন্যতম কারণ মেলাটোনিনের নিঃসরণ কমে যাওয়া। তাই কৃত্রিম আলোর আধিক্যতার কারণে স্তনক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিউট ও ন্যাশনাল ইনস্টিউট অব এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সার্ভিসের এক জরিপে প্রকাশ পায়, রাতের কৃত্রিম আলো স্তনক্যানসারের জন্য দায়ী। আর এ কারণে নাইট শিফটে যেসব নারী কাজ করেন, তাঁদের স্তনক্যানসারের ঝুঁকি বেশি থাকে।
উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি থেকে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজের ওপর সরাসরি আলো এবং অন্ধকারের উপস্থিতির প্রভাব থাকে। আলোদূষণের কারণে রাতের বেলায়ও উদ্ভিদের স্টোমাটা সারা রাত খোলা থাকছে। এতে উদ্ভিদ তার প্রয়োজনীয় রস বাষ্প আকারে হারাচ্ছে। ফলে পাতা হয়ে পড়ছে বিবর্ণ।
আমরা জানি, বিভিন্ন মৌসুমি উদ্ভিদের ফুল ও ফলের ফলন দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যরে ওপর নির্ভর করে, সহজ কথায় আলো ও অন্ধকারের স্থায়িত্বের ওপর। কিন্তু আলোদূষণে কৃত্রিম আলোর পরিমাণ ও উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় অন্ধকার সময়ের দৈর্ঘ্য আর দিনের আলোর দৈর্ঘ্যরে পরিমাণের তারতম্য হচ্ছে। ফলে উদ্ভিদের ফুল ও ফল উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটছে।
অনেক উদ্ভিদ আছে, যাদের রাতের বেলায় পরাগায়ন ঘটে। রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন পতঙ্গ ফুলে ফুলে ঘুরে পরাগায়ন করে থাকে। কৃত্রিম আলোর উপস্থিতি এসব পতঙ্গের রাতে চলাফেরায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, যা উদ্ভিদের পরাগায়নও কমিয়ে দিচ্ছে।
রাস্তার ল্যাম্পপোস্টে যে আলো জ্বলে তা থেকে ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে অতিবেগুনি রশ্মি বের হয়, যা ছোট পোকামাকড়ের জিনগত পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। আলোর প্রভাবে কোষের ভেতরে ডিএনএর মধ্যে থাইমিন নামক যে যৌগ থাকে, তা পরিবর্তন করে দেয়, যার ফলে ডিএনএতে পরিবর্তন আসে। এতে তাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য যেমন গায়ের রং, চোখের রং ইত্যাদির পরিবর্তন আসতে পারে। এমনকি প্রজননক্ষমতাও হ্রাস পায়।
আমরা জানি, জোনাকি পোকা আলো জ্বালে। তবে এই আলো কিন্তু এমনি এমনিই জ্বালে না। এর পেছনে রয়েছে অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্দেশ্য, তা হলো বংশবিস্তার। জোনাকি পোকা আলো জ্বেলে বিপরীত লিঙ্গের জোনাকিদের আকর্ষণ করে বা বিপরীত লিঙ্গের আবেদনে সাড়া দেয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে অধিক হারে আলোক দূষণ জোনাকি পোকার বংশবিস্তারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছে। রাতের বেলায় কৃত্রিম আলোর প্রভাবে তাদের তৈরি আলো সঙ্গীর কাছে পৌঁছাতে পারছে না। ফলে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে জোনাকির প্রজননের হার এবং প্রজাতিটির সংখ্যা।
সামুদ্রিক কচ্ছপের ওপর আলোক দূষণের প্রভাব আরও মারাত্মক। কচ্ছপ অধিকাংশ সময় সমুদ্রে থাকলেও প্রজননের সময়ে সমুদ্রপারে ডিম পাড়তে আসে। যখন রাতের বেলায় ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় চাঁদের আলোয় রাতের আকাশের উজ্জ্বলতা আর সমুদ্রের অন্ধকারাচ্ছন্নতার ওপর নির্ভর করে বাচ্চা কচ্ছপ সমুদ্রের দিক নির্ণয় করে। কৃত্রিম আলোর আকর্ষণে ভুল পথে চলে আসে বাচ্চা কচ্ছপ। ফলে কোনো দিন সমুদ্রের দেখা পায় না, মারা যাচ্ছে অনেক কচ্ছপের বাচ্চা। বাসা বাঁধা কিংবা ডিম পাড়ার জন্য মা কচ্ছপ অন্ধকারময় তীরে আসে, আলোকিত জায়গা এড়িয়ে চলে। যেসব সমুদ্রতীরে কৃত্রিম আলো বা শহর রয়েছে, সেসব সমুদ্রতীরে কচ্ছপরা বাসা বাঁধতে ও ডিম পাড়তে পারে না।
পাখিদের ওপর আলোদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব শুরুতেই কিছুটা আলোচনা করা হয়েছে। তবে এটুকুই শেষ নয়। মার্কিন পাখি বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন গবেষণা চালিয়ে দেখতে পান, আলোর প্রভাবে উত্তর আমেরিকায় প্রায় ২০০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি তাদের গতিপথে পরিবর্তন এনেছে। বিশ্বব্যাপী ৫৬ প্রজাতির চবঃৎবষ পাখি আলো দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাদের ব্যবহার ও বৈচিত্র্যে পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
উভচর ও সরীসৃপদের মধ্যেও আলোক দূষণের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। কিছু প্রজাতির ব্যাঙ ও সালামান্ডার আলোর ওপর নির্ভর করে দিকনির্ণয় করে চলাচল করে। অন্ধকারে কৃত্রিম আলো মেলাটোনিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণের ওপর প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া এসব প্রাণী গভীর রাতে কিংবা ভোরের দিকে শিকারে বের হয়। কৃত্রিম আলোর ফলে এদের শিকার ব্যাহত হয়। তা ছাড়া কৃত্রিম আলো চোখের রেটিনার ক্ষতি, স্পার্ম উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া, এমনকি জেনেটিক মিউটেশনও ঘটাতে পারে।
সমুদ্রের নিচে বসবাসকারী অনেক প্রাণী কৃত্রিম আলো দ্বারা প্রভাবিত হয়। বেশির ভাগ মাছই সাদা আলো এড়িয়ে চলে। গবহধর ঝঃৎধরঃ-এ এক জরিপ থেকে দেখা যায়, গুগলি জাতীয় শামুক (ইধৎহধপষব) জাহাজ বা বন্দর থেকে ভেসে আসা কৃত্রিম আলো দ্বারা আকর্ষিত হয়। যা প্রায় ৩০৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের ক্ষতিসাধন করে থাকে।
ক্ষুদ্রাকৃতির প্রাণী জুপ্লাংটন দিনের বেলায় পানির গভীর স্তরে থাকে, রাতের বেলা ওপরের স্তরে উঠে আসে এলজি খাওয়ার জন্য। কৃত্রিম আলোর উপস্থিতি ওপরের স্তরে উঠে আসতে বাধাগ্রস্ত করে, অন্যদিকে এলজির সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যায়, ফলে জলজ পরিবেশ ভারসাম্য হারায়। সামুদ্রিক কোরাল অমাবস্যা পূর্ণিমার ওপর নির্ভর করে ডিম দেয়। যদি চাঁদের আলো কৃত্রিম আলো দ্বারা প্রভাবিত হয়, তাহলে এরা সঠিক সময়ে ডিম দিতে পারে না, ফলে বংশবিস্তার ব্যাহত হয়।
শারীরিক ও মানসিক প্রভাব
অযাচিত, অত্যাধিক, অনিয়ন্ত্রিত কিংবা বিপত্তিপূর্ণ কৃত্রিম আলোই বড় শহরগুলোয় আলোক দূষণের বড় কারণ। এর ফলে নিদ্রাহীনতায় ভোগে মানুষ। এতে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। হতে পারে হৃদ্্যন্ত্রে সমস্যা, দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগ। বিভিন্নভাবে আলোর দূষণের শিকার হওয়ায় এর ছন্দপতন ঘটছে মাত্রাতিরিক্ত। যদিও এ দূষণ কেউ উপলব্ধি করে উঠতে পারে না। এক গবেষণায় অবশ্য দেখা গেছে, মানুষের শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়ার ছন্দ বা সার্কাডিয়ান রিদম নির্ভর করে প্রাকৃতিক আলোর ওপর। সেই সঙ্গে মেয়েদের প্রজননক্ষমতার অনুক‚ল পরিবেশ তৈরিতে বিশেষ করে ভ্রƒণ বৃদ্ধির জন্য অন্ধকার খুবই জরুরি। মস্তিষ্কের পিনিয়াল গ্রন্থি মেলাটনিন নামের একধরনের হরমোন নিঃসরণ করে। আর অন্ধকারেই এটি বেশি কার্যকরী। শুধু তা-ই নয়, রাতের উজ্জ্বল আলো মেয়েদের ফার্টিলিটি হরমোনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এতে তাদের সন্তানধারণের ক্ষমতা কমে যায়।
বর্তমান যুগের এলইডি আলোর ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে চিকিৎসকেরা বেশ উদ্বিগ্ন। সাধারণত আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৩৯৭-৭২৩ ন্যানোমিটারের মধ্যে থাকলে তা ক্ষতিকর নয়। তবে অধিকাংশ এলইডি বাল্বের তরঙ্গ ৩৯৭ ন্যানোমিটারের কম, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। চিকিৎসকদের দাবি, নীল এলইডি থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মি চোখের লেন্সকে অস্বচ্ছ করে দেয়, যাকে বলা হয় চোখের ছানি। এ ছাড়া কর্নিয়ার ওপর টেরিজিয়াম নামে একটি পাতলা আবরণ পড়ে। তখন সামনের একটি জিনিসকে মনে হয় দুটি। গাড়ি চালকদের ক্ষেত্রে এটি খুবই বিপজ্জনক। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, তীব্র কিন্তু দুর্বল নকশার এলইডি বাতির নীল আলো মানুষের ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন মেলাটোনিনের ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
সব সমস্যার পাশাপাশি রাতের কৃত্রিম আলো মানুষের শরীরে ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। রাতে কৃত্রিম আলো আমাদের দিন ও রাতের পার্থক্য ভুলিয়ে দেয়। সে কারণে আমরা রাতকে আর উপলব্ধি করতেই পারি না। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে কৃত্রিম আলোর ক্ষতিকর প্রভাবে আমরা বেশ কিছু জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
ঘুমের সমস্যা
বিষণœতা
স্থূলতা
ডায়াবেটিস
হৃদ্্রোগ
ক্যানসার ও অন্যান্য
বিপন্নে প্রাণবৈচিত্র্য
জার্মানির লিবনিজ ইনস্টিটিউট অব ফ্রেশওয়াটার ইকোলজি অ্যান্ড ইনল্যান্ড ফিশারিজের (আইজিবি) পরিবেশবিদ ফ্রাঞ্জ হোলকেরের মতে, রাতের যে কৃত্রিম আলো ব্যবহার করা হয়, তাতে স্বাভাবিক আলোকচক্র বাধাগ্রস্ত হয়। বাড়িয়ে দেয় আলোর দূষণ, যা পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। মেরুদÐী প্রাণীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ নিশাচর এবং অমেরুদÐীদের মধ্যে তা ৬০ শতাংশের বেশি। তারা কৃত্রিম আলোয় নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে বদলে যাচ্ছে তাদের আচার-আচরণ। পোকামাকড়, মাছ, পাখি, বিভিন্ন উভচর প্রাণীসহ জীববৈচিত্র্যের ওপরও এর প্রভাব পড়ছে; বিশেষ করে তাদের প্রজনন ও চলাচলের ক্ষেত্রে। এ ছাড়া ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীব এবং গাছের পক্ষেও কৃত্রিম আলো যথেষ্ট ক্ষতিকারক।
আলোকমাত্রা ও আমাদের পরিবেশ
আলোকমাত্রা বলতে সাধারণতই বোঝানো হয় আলোর তাপমাত্রাকে। আর আলোর তীব্রতার সঙ্গে সম্পর্ক হলো আলোর তাপমাত্রার। বেশি তাপমাত্রার আলো খুব বেশি উজ্জ্বল ও প্রখর হয়। এমন উৎস থেকে সৃষ্ট আলো যেখানেই পড়বে, সে জায়গারই তাপমাত্রা বাড়াবে। তাপের একক কেলভিন। আলোর ক্ষেত্রে শুধু আলোর তাপমাত্রাকে নির্দেশ করতে এবং তাপমাত্রা নির্ধারণ করতে কেলভিন (ক) ব্যবহার করা হয়। আলোর কেলভিন যত বেশি হবে এবং যে উৎস থেকে সে আলো উৎপন্ন হবে, সেই উৎসের কাছাকাছি এলাকা সবচেয়ে বেশি উষ্ণ থাকবে। প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম দুই উৎসের আলোতেই কেলভিন বিদ্যমান। সূর্য আলোর একমাত্র প্রাকৃতিক উৎস। দিনভর সূর্যের আলোর ভিত্তিতেই আমরা আলোকিত হই। এ সময় সূর্যের তাপমাত্রা বা আলোকমাত্রার তারতম্যের জন্য পরিবেশ অতি উষ্ণ, কম উষ্ণ, নাতিশীতোষ্ণ কিংবা শীতল থাকে। দিনে সূর্য থাকবে, রাতে থাকবে অন্ধকার- এটিই প্রাকৃতিক নিয়ম। তবে জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে পৃথিবীর রাতের চেহারা। যেখানে রাতে আলো থাকার কথা নয় কিংবা চাঁদ ও তারার মৃদু আলো থাকার কথা, সেখানে অপরিমেয় কৃত্রিম আলোর তাপমাত্রা আমাদের পরিবেশের তাপমাত্রাকে দিনের পাশাপাশি রাতেও বাড়িয়ে রাখছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে জীবজগৎ। বিশেষ করে নিশাচর প্রাণী ও কীটপতঙ্গের জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে। সাদা চোখে আমরা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম আলোর তাপমাত্রার পাথর্ক্য সহজেই অনুমান করতে পারি না। কেলভিন স্কেলের চিত্রটি আশা করি আমাদের সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা দেবে।
আলোর উৎসের সঙ্গে তাপমাত্রার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। একেক উৎসের আলোর তাপমাত্রা একেক রকম। রাতে রাস্তার আলোর আধিক্যের কারণে আমরা অন্ধকার তারাভরা আকাশ দেখতে পাই না। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থাপনা, মিল-কারখানায় কৃত্রিম আলোয় আলোকসজ্জার কারণে গ্যালাক্সিতে তা মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলে। রাস্তায় ব্যবহৃত বিভিন্ন উৎসের আলোর প্রভাবে কীভাবে আকাশের প্রাকৃতিক আলো দূষিত হচ্ছে তার একটি নমুনা নিচের তালিকায় দেওয়া হলো। (লাইট সোর্স ইমেজ হবে।)
আমরা গোটা পৃথিবীকে একসঙ্গে দেখতে পাই না। শুধু স্যাটেলাইটে তোলা ছবি থেকেই পৃথিবীর চিত্রের একটি ধারণা পাই। তাই সারা পৃথিবীতে কোথায় কতটুকু আলোকসজ্জা হয় তাও দেখতে পাই না। পৃথিবীতে কে বা কারা সবচেয়ে বেশি আলোক দূষণের জন্য দায়ী, তা বোঝার জন্য অবশ্যই একনজরে পৃথিবীকে দেখলে বোঝা যাবে। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে সবচেয়ে বেশি আলোক দূষণকারী দেশগুলোর একটি ধারণা আমরা পেতে পারি।
(সোর্স: ফধৎশংশু.ড়ৎম)
আলোর তীব্রতা
আলোর তাপমাত্রাকে সহজেই কেলভিন দিয়ে প্রকাশ করা হলেও আলোর পরিমাণকে মাপতে হয় লাক্স দিয়ে। আলোর পরিমাপের একক লাক্স (খটঢ)। একটি পৃষ্ঠের ওপর পতিত দৃশ্যমান আলোর পরিমাণ পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয় এই একক ব্যবহার করা হয়। এটি আলোকসজ্জার তীব্রতাকে প্রকাশ করে এবং প্রতি ইউনিট এলাকায় ছড়ানো আলোর পরিমাণ পরিমাপ করে। পরিমিত আলোর পরিমাণকে প্রকাশ করা হয় লাক্স পরিমাণ আলো হিসেবে। শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশে^ সবচেয়ে বেশি আলো জ¦ালাতে হয় কারখানায়। আমরা প্রায়ই দেখি আকারে বড় কারখানায় প্রচুর শ্রমিক কাজ করে এবং তাদের কাজের সুবিধার ক্ষেত্রে প্রচুর আলোও জ¦ালাতে হয়। দিনের বেশির ভাগ সময় এসব কারখানায় আলো জ¦লতেই থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা আলো জ¦লে। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে এসব কারখানায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত কৃত্রিম আলো জ¦ালানো হয়। কাজের আগে এও পরে এসব কারখানার শ্রমিকেরা অল্প আলোয় এবং কাজের সময় বেশি আলোয় কাজ করে। অল্প আলো ও মৃদু আলোয় ট্রানজিশনের জন্য তাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়াও হয় মস্তিষ্কে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, উজ্জ্বল আলো, দামে কম এবং টেকসই হওয়ায় কারখানায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এলইডি লাইট শ্রমিকদের কীূ ক্ষতি করে তা আমাদের অনেকেরই অজানা।
লাইট এমিটিং ডিওডেডস বা এলইডি লাইট অ্যালুমিনিয়াম গ্যালিয়াম আর্সেনাইড নামে বিশেষ একধরনের ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিন দিয়ে তৈরি হয়, যা মানবদেহের জন্য মোটেও ভালো নয়। একাধিক প্রাণীর ওপর এই টক্সিক উপাদান প্রয়োগ করে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা সত্যিই ভয়ানক। গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘদিন ধরে এই বিশেষ ধরনের টক্সিক উপাদানের সংস্পর্শে এলে কিডনি এবং লাঞ্চ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, শুধু তা-ই নয় নারীদের ক্ষেত্রে তা প্রভাব বিস্তার করে সবচেয়ে বেশি। নারীদের বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়।
এ ছাড়া এলইডি লাইটের করণে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়। যদিও এই ক্ষতি এক দিনে হয় না। দীর্ঘ দিন ধরে এমন আলো সরাসরি চোখে লাগতে থাকলে রেটিনার কর্মক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। আর একবার রেটিনা সেল খারাপ হতে শুরু করলে সেগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুনরায় আর সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয় না। তাই আমাদের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। স¤প্রতি প্রাকাশিত এক গবেষণায় উল্লেখ রয়েছে এই ধরনের লাইট থেকে একধরনের নীল আভা বের হয়, যা চোখের ক্ষতি করে থাকে। সে করণেই বিশেষজ্ঞরা এলইডি লাইটের ওপর ফিল্টার ব্যবহারের পরামর্শ দেন, এমনটা করলে নীল আলো সরাসরি আমাদের চোখে এসে পড়ে না। ফলে ক্ষতিকর আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে আসে। প্রসঙ্গত, একজন মানুষের চোখ এক বছরে প্রায় ৬০০০ ঘণ্টা খোলা থাকে। এই পুরো সময়টা যদি কেউ এলইডি লাইটের আভার মধ্যে থাকে, তাহলে চোখের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। শিল্পকারখানায় একজন শ্রমিক দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে এবং একইভাবে দীর্ঘ বছর কাজ করলে তার অনেক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এসব কারখানায় এলইডি আলোর চেয়ে বড় সমস্যা হলো আলোক তীব্রতা অনেক বেশি। অর্থাৎ বেশি লাক্স পরিমাণ আলো কারখানাগুলো ব্যবহার করে। আমরা কি আসলেই জানি কোথায় কেমন পরিমাণ আলো দরকার? জানি না বলেই আমাদের অনেক সমস্যা। চলুন জেনে নিই কাজের ধরন অনুযায়ী আলোক তীব্রতার চাহিদা কেমন।
পড়া কিংবা কাগজ-কলমের কাজ করার সময় লাক্স-এর মাত্রা ২০০-এর কাছাকাছি বজায় রাখা ভালো
অফিসের জন্য স্ট্যান্ডার্ড লাক্স স্তর বজায় রাখার জন্য, যেখানে লোকজন কম্পিউটার, ল্যাপটপে কাজ কওে, সেখানে আলোর তীব্রতা ৪০০-৫০০ লাক্স-এ বৃদ্ধি করা দরকার
দোকানে, শোরুমে লাক্স-এর মাত্রা ৫০০ রাখতে হবে
কর্মশালায় লাক্স লেভেল ৬০০-৭০০ রাখতে হবে
হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের মতো জটিল কাজের জন্য ১০০০-এ লাক্স স্তর উন্নীত করা প্রয়োজন
এরকম জীবনের নানা ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মাত্রায় আলো ব্যবহার না করলে আলোক দূষণ বাড়ার পাশাপাশি আমাদের শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যাও দেখা হবে। আমরা প্রতিনিয়তই দূষণ করছি। কখনো শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, মাটিদূষণসহ আরও নানা রকমের দূষণ, যা আমরা চোখে দেখি বা সরাসরি উপলব্ধি করতে পারি। আলোর দূষণ এমনই একধরনের দূষণ, যা বুঝতে আমাদের অনেক সময় দরকার, তত দিনে একটি জেনারেশন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমরা বুঝতেই পারব না।
অনেক শহরে পরিষ্কার আকাশেও ভালোভাবে তারা দেখা যায় না। আলোদূষণের কারণে রাতের বেলায়ও উজ্জ্বল হয়ে থাকছে বায়ুমÐল। এমন উজ্জ্বল আলোর আভায় আকাশের অনিন্দ্য সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছি না। শহুরে অনেক শিশুরই মিল্কিওয়ে দেখার সৌভাগ্য হয় না বা হবে না। আলোক দূষণকে আমরা যতটা হালকাভাবে দেখি, এটি ততটা এড়িয়ে যাওয়ার মতো বিষয় নয়। এর প্রভাবগুলো কিছুটা ধীরগতির হওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিই না। কিন্তু ক্ষতিকর প্রভাবের দিক দিয়ে এটি কোনো অংশেই অন্যান্য দূষণের চেয়ে কম নয়। সুতরাং এখনই যদি সচেতন না হই, অদূরভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।
ংনহংধৎধিৎ@মসধরষ.পড়স
প্রকাশকাল: বন্ধন ১৫৯ তম সংখ্যা, নভেম্বর ২০২৩